সুন্নতে খৎনা বা মোসলমানী ইসলাম ধর্মীয় একটি বাধ্যবাধকতা। ইতিহাসবিদ এলিয়ট স্মিথ গ্রাফটনর এর মতের প্রায় ১৫০০০ বছর পূর্বে এই ব্যাবস্থা দক্ষিণ ও ভূমধ্যসাগরের পূর্ব দেশ সুদান ও ইথিওপিয়া দিয়ে শুরু হয়ে প্রাচীন মিশর এবং সিরীয় জাতিসমূহের মধ্যে চালু ছিল।বান্টু আফ্রিকান ,ওশেনিয়া, অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসী এবং পলিনেশিয়ানদের মধ্যে ও এর চর্চা ছিল ।এছাড়াআমেরিকায় অ্যাজটেক মায়া সভ্যতার মধ্যেও চালু ছিল এ প্রথা।
পরাজিত যুদ্ধ বন্দীদের স্থায়ীভাবে খোজা বানিয়ে দাস বানানো হত আফ্রিকান কিছু দেশে । মারাত্মক হওয়ায় পরে শুধু লিঙ্গ চর্ম কর্তন করেই ছেড়ে দেওয়া হত।
বিবর্তনের ইতিহাসের ধারায় ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা হিসেবে ইহুদীরাই খৎনা প্রথা চালু করে যা হিব্রু বাইবেল এর আদিপুস্তক তওরাত এর ১৭ অধ্যায়ে পাওয়া যায় । কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ইহুদী ধর্মে একটি নবজাত ছেলের জীবনের অষ্টম দিনে খৎনা করানো হয় ।।
এক ইহুদী শিশুর খৎনা দৃশ্য :
খ্রিস্টধর্মে খৎনা নিষেধ করা নেই। কপ্টিক খ্রিস্টানদের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে খৎনা চালু আছে।ক্যাথলিক চার্চে বর্তমানে অধর্মীয়(ধর্মের অংশ নয়) খৎনা অনুশীলনের উপর একটি প্রথা চালু আছে।
যিশু খ্রিস্টের খৎনার কল্পিত দৃশ্য:
ইসলাম ধর্মে কুরআন শরিফে খৎনা পদ্ধতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা না হলেও ইসলামের শুরুর দিকে নবী মুহাম্মদ (সা এর মাধ্যমে সরাসরি প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং তাই তাঁর অনুশীলনের কারনে এটিকে একটি সুন্নতে হিসেবে বিবেচনা করা হয় । ধর্মান্তরিত মুসলিমদের জন্য কিন্তু এর প্রয়োজন নেই ।
মুসলমানদের সুন্নতে খৎনা বা মোসলমানীর দৃশ্য:
নবজাতক ,অপ্রাপ্তবয়স্ক বা অপরিপক্ক সন্তানের এইরুপ খৎনা পদ্ধতি নিয়ে অনেক দেশে বিতর্ক আছে ।আন্দোলন ও হয়েছে বিভিন্ন দেশে।অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলির অনেক স্থানে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী একে বেআইনি বলে মনে করা হয়।আন্দোলনকারীদের মতে অবুঝ শিশুদের উপর চাপিয়ে দেওয়া এটি একটি নির্মম অত্যাচার।এটি কোন শারিরীক ত্রুটি নয় যে এটি কেটে বাদ দিতে হবে ।যার শরীর তারই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিকার থাকতে হবে ।
বিভিন্ন দেশে আন্দোলনের কিছু দৃশ্য:
অতএব দেখা যাচ্ছে সুন্নতে খৎনা বা মোসলমানী ইসলাম ধর্মীয় একটি বাধ্যবাধকতা হলেও আসলে এটি ইহুদী ধর্ম থেকে ধার করা একটি ব্যবস্থা মাত্র।