সাম্প্রতিককালে নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে রাজনৈতিক দলের কোনও সদস্য যদি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান তবে তাকে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে এতে করে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বিরাজমান রাজনীতিকীকরণের দুষ্ট প্রভাব দূরীভূত হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞা অনুযায়ী এটা একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এটাকে বলা হয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিকাশের সূতিকাগার। শেরে বাংলার মতো জাতীয় নেতার রাজনীতির হাতেখড়ি হয় কলকাতা সিটি করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠানে।
স্থানীয় সরকারের অনেক সমস্যার মধ্যে রাজনীতিকীকরণও অবশ্যই একটি সমস্যা। কিন্তু' এভাবে কী সে সমস্যার সমাধান হবে? এ প্রসঙ্গে দুটি উদাহরণ দিতে চাই, (১) অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী একটি দল থেকে পদত্যাগ করে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। যখন তিনি একটি স্বতন্ত্র ভাবমূর্তি দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন, তখনই তিনি পদটি হারিয়েছেন, (২) প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ কখনও বিএনপি দলীয় সদস্য ছিলেন না। কিন্তু' উনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করে কীভাবে নিজের এবং দেশের সর্বনাশ করেছিলেন তা আমরা সকলেই জানি।
সুতরাং দল থেকে পদত্যাগ কোনও সমাধান নয়। দরকার দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতার পরিবর্তন এবং তারও কিছু প্রক্রিয়া আছে। নির্বাচন কমিশনের এই সুপারিশকে যদি সরকার আইনি কাঠামোর আওতায় আনে, তবে একদিকে এটি যেমন হবে সংবিধানের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী। অন্যদিকে ঠিক তেমনই হবে ভঙ্গুর ও দুর্বল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সিডরের আঘাত। সুতরাং বিষয়টি সকলের ভাবনার জন্য উপস্থাপন করলাম।