ব্রিটিশরা নিজেদের অজ্ঞতাহেতু প্রাচ্যদেশীয় নামগুলোকে বিকৃত করে অভিহিত করতো। যেমন ষোড়শ শতকে এদেশে আসা ইংরেজ পরিব্রাজক রালফ ফিচ মুঘল সম্রাট জালাল উদ্দীন মোহাম্মদ আকবরের নাম লিখেছিলেন 'জেবালদিম ইচেবর'। মসনদ-ই-আলা ঈসা খানের নাম হয়েছিলো ইসাকান (Issacan)। নবাব সিরাজ উদ দৌলার নাম যেরকম করে লেখা হয়েছিলো, তার পাঠ ছিলো স্যার রজার ডওলার (Sir Roger Dowler)!
প্রারম্ভিকভাবে ব্রিটিশরা হিন্দুদের জেন্টু আর মুসলিমদের মুর বা মোহামেডান নামে অভিহিত করতো। ব্রিটিশদের মিত্রতা লাভ করায় হিন্দুরা তাদের নাম সংশোধন করতে সমর্থ হলেও পরাজিত শক্তি হবার দরুন সেই সৌভাগ্য মুসলিমদের ছিলোনা। ফলে সরকারীভাবেও মুসলিমরা মুর বা মোহামেডান হয়েই ছিলো বিগত শতকের ত্রিশের দশকের শেষ পর্যন্ত। ১৯৩৭ সালে প্রথমবার ক্ষমতাসীন হয়েই বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক এর সুরাহা করতে উদ্যোগী হন। তাঁর প্রচেষ্টাতেই বাংলায় সরকারী দস্তাবেজে মোহামেডান শব্দের পরিবর্তে মুসলমান (Mussalman) শব্দ ব্যবহারের আইন জারী হয়। অবশ্য এর জন্য বাংলার প্রধানমন্ত্রীকে দুয়োধ্বনী আর তাঁর বাড়ীকে পচা ডিমের বর্ষণ হজম করতে হয়। ফজলুল হক এমনি এমনিই শেরে বাংলা খেতাব পাননি।
সেই Mussalman পরে Muslim হয়ে আল্লাহ ফজলে একটি স্বাধীন দেশও বাগিয়ে নেয়। ভাবতে কৌতুকই লাগে, ৭৫ বছর আগেও যাদের নামও আইনিভাবে স্বীকৃত ছিলোনা, আজ তারাই ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে যৌনমিলন করছে আর ঠোঁট ঝোলানো উটের মতো হাসছে...!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২০