somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাকার্তা ভ্রমন ব্লগ - শেষ পর্ব

৩১ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গুগলে জাকার্তায় দর্শনীয় স্থান কি আছে , তা চেক করতে গিয়ে দেখলাম জাকার্তার ওল্ড টাউন একটা টুরিস্ট স্পট। ঔপনিবেশিক আমলে ডাচদের তৈরী বেশ কিছু প্রাচীন ইমারত আছে সেখানে। তবে আমি জাকার্তার ওল্ড টাউন ও নিউ টাউনের পার্থক্যও দেখতে চাইছিলাম। ট্যক্সি নিয়ে সোজা চলে গেলাম ওল্ড টাউনে। মুল শহর থেকে বেশ দূরে। প্রায় এক ঘন্টার জার্নি। তবে কোন প্রকার ট্রাফিক জ্যাম না থাকা এই শহরে ভালই লাগছিল চারপাশ দেখতে দেখতে এই ট্যক্সি রাইড। পৌছানোর পরে ড্রাইভারকে বললাম ডাচদের তৈরী বিল্ডিং এর কাছে নিয়ে যেতে। ড্রাইভার কিছুই বুঝতে না পেরে ফ্যলফ্যল করে চেয়ে রইল। মোবাইল ফোনে তাকে দেখালাম ছবি। সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল ‘’ ওহ রেড বিল্ডিং ‘’ !! যাই হোক ডাচদের ইমারতগুলো খুব দর্শনীয় কিছু মনে হয়নি। এইদিক দিয়ে এগিয়ে আছে ইংরেজরা। কলোনিয়াল পিরিয়ডে ইংরেজদের তৈরী ইমারতগুলোর নির্মানশৈলী আসলেই দর্শনীয়। কয়েকশত বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের তৈ্রী ইমারতগুলো দেখলে মনে হয় যে ইট পাথরের বিন্দুমাত্র কোন পরিবর্তন হয়নি। ঢাকার কার্জন হল এর উৎকৃষ্ট উদাহরন।



জাকার্তার ওল্ড টাউন ঘুরে বেড়াতে গিয়ে মনে পড়ল আমাদের পুরান ঢাকার কথা। কি আকাশ পাতাল পার্থক্য দুই জায়গার! জাকার্তার ওল্ড টাউনের বাড়ীঘর পুরাতন ঠিকই কিন্ত ঘিঞ্জি নয় মোটেই। ওল্ড টাউনে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে দেখলাম সেখানকার সাধারন মানুষের জীবনযাত্রা। পোষাক আশাকে কাউকে দরিদ্র বলার উপায় নেই জাকার্তায় , সবার পরনেই পরিষ্কার কাপড় চোপড়। পোষাকবীহিন ছিন্নমুল ভেসে বেড়ানো মানুষের দেখা পাইনি সারা জাকার্তার কোথাও।




আমাদের যেমন প্রধান খাবার ভাত, ইন্দোনেশিয়ার মানুষের প্রধান খাবার মনে হয় নুডলস। রাস্তার ধারে স্ট্রীট ফুডগুলোর মাঝে নুডলস এর দোকানই বেশি। বেশিভাগ দোকানের পেছনেই দেখলাম বড় বড় চাদর বিছানো। সাধারন মানুষ দল বেধে পিকনিকের কায়দায় একসাথে বসে খাচ্ছে দাচ্ছে, গল্প গুজব করছে।



সিজনাল ফল জামরুল, আম ।



এই খাবারটা যে কি তা ঠিক বুঝতে পারিনি। তবে দেখলাম ঠোঙ্গায় করে বিক্রি হচ্ছে।



গরীবের বার্বিকিউ। আইটেম পছন্দ করে অর্ডার দিলে সঙ্গে সঙ্গে বার্বিকিউ করে দেবে। পানির মত সস্তা দেখলাম এই স্টীট ফুডগুলো।



দুই দিন ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী শহরটি ঘুরে বেরিয়ে দেশটি সম্পর্কে আমার বেশ ভাল ধারনা জন্ম নিয়েছে যেটা এর আগেরবারের ভ্রমনে হয়নি। মুসলিম একটি দেশ যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগন বেশ উন্নত জীবন যাপন করছে বলেই মনে হয়েছে আমার । দুর্নীতিপরায়ন সুকর্ন ও সুহার্তোর পতনের পর দেশটির নেতৃত্বে এসেছে সত্যিকার অর্থে একজন আদর্শ দেশপ্রেমিক রাস্ট্রপতি যার নাম জোকোউয়ি উইদোদো । পরপর দুইবার জনগনের ভোটে নির্বাচিত এই রাস্ট্রপতি জনগনের প্রিয়পাত্র হবার মুল কারন হচ্ছে তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান। আসলে যে কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রধান শর্তই হচ্ছে দুর্নীতিকে শক্তহাতে কন্ট্রোল করা।

এয়ারপোর্টের দিকে যেতে যেতে চোখে পড়ল, ইন্দনেশিয়ার বিখ্যাত মসজিদ ইশতিকাল মসজিদ। রাতের অন্ধকারে মসজিদটির চমৎকার নির্মানশৈলীর আলোকসজ্জা দারুন লাগল। ভাঙ্গা ইংরেজিতে ট্যক্সি ড্রাইভার জানালো এটাই তাদের দেশের সবচেয়ে বড় মসজিদ। গুগল সার্চ দিয়ে দেখলাম শুধু ইন্দোনেশিয়ায় নয়, দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় মসজিদও এটিই।



এয়ারপোর্টে পৌছে অবস্য মেজাজ কিছুটা খারাপ হয়ে গেল শুনে যে, ফ্লাইট কয়েক ঘন্টা লেট হবে। কি আর করা ! বিশাল এয়ারপোর্টের ভেতরেই ঘুরে বেড়ালাম , মজার মজার ইন্দোনেশিয়ান খাবার খেলাম।

আমার জাকার্তা ভ্রমন ব্লগের এখানেই সমাপ্তি। এই ব্লগের একজন ব্লগার আমরা জেনেছি দীর্ঘকাল জাকার্তায় ছিলেন। তিনি ইন্দোনেশিয়া নিয়ে একটি সিরিজ লেখাও শুরু করেছিলেন। সেই সিরিজ পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম ---

ছবি সুত্র ঃ ডাচদের তৈ্রী বিল্ডিং ও ঈশ্তিকাল মসজিদ ছবি দুটো অনলাইন থেকে নেয়া , বাকি ছবিগুলো আমার মোবাইলে তোলা।

জাকার্তা ভ্রমন ব্লগ -পর্ব ১
জাকার্তা ভ্রমন ব্লগ - পর্ব ২






সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:৪০
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×