somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজনৈতিক দলগু্লোর সাথে এক বৈঠকে ড. ইউনুস বলেছেন, “আপনারা কে কোন সংস্কার চান, সেটা লিখে দেন, আমরা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবো। যদি আপনি সংস্কার চান, সেটাও প্রকাশ করবো, অথবা যেটা চান না, সেটাও প্রকাশ করবো।কোন দলের কোথায় কী আপত্তি এবার দেখা যাক''

জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবের সবচেয়ে সুবিধাভোগী দল হচ্ছে বিএনপি ও জামাত। বিগত ১৭ বছরে আওয়ামিলীগের তুমুল দমন নীপিড়নের শিকার এই দুই দল আওয়ামিলীগের পতনের পরপরই মুক্তি পেয়েছে জুলুমের হাত থেকে। তবে বেশি সুবিধাভোগী দল হচ্ছে বিএনপি। আমরা দেখেছি খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক জিয়ার বিভিন্ন মামলা থেকে অব্যাহতি, মির্জা আব্বাস, বাবর সহ অনেক নেতার কারামুক্তি, সালাহউদ্দিন আহমেদের দেশ ফিরত, চট্রগ্রামের মেয়র, বেশিরভাগ প্রসিকিউটর, সচিব অর্থাৎ আমলাদের প্রায় ৮০%ধরতে গেলে বর্তমানে বিএনপির। অথচ আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধে কোন প্রকার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অক্ষম এই দলটি শেষের দিকে পরিনত হয়েছিল '' ঈদের পরে আন্দোলন '' ঘোষনা করা করা একটা জোকার দলে।

দেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের অপরিসীম দেশপ্রেম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দৃঢ় নেতৃত্বে এক ভয়ঙ্কর মাফিয়া রেজিমের হাত থেকে দেশ উদ্ধার পাবার পর গর্তে থেকে বেরিয়ে এসেছে আমাদের সকল রাজনৈ্তিক দলের নেতবৃন্দ। কিন্ত গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেই বিএনপি এক ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো শুরু করেছে - '' নির্বাচন চাই , নির্বাচন চাই''!!! একটা দল ১৭ বছরে দেশের সম্পদ লুট করে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, দেশের সকল সিস্টেম নষ্ট করে রাস্ট্রকে একটা ব্যার্থ রাস্ট্রের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। আমাদের দেশের অনেক সৌভাগ্য যে ডঃ ইউনুস এই দেশে জন্ম গ্রহন করেছেন। উনার আন্তর্জাতিক কানেকশন ব্যবহার করে উনি মাত্র ছয় মাসে যে পরিমান দেশের উপকার করেছেন, যা বিগত ৫৩ বছরে হয়নি। দেশটাকে সংস্কার করে একটা পর্যায়ে পৌছিয়ে নির্বাচন দিতে চান ডঃ ইউনুস। কিন্ত এতে প্রবল আপত্তি বিএনপির। তাই ডঃ ইউনুস একেবারে সরাসরি বিএনপির আসল চেহারাটা উন্মোচন করে দিয়েছেন।

সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে এতে কোন সন্দেহ নাই যে, বিএনপি ইলেকশন ইঞ্জিয়ারিং এর মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে দুর্নীতিবাজ তারেক রহমানকে ক্ষমতায় বসাবে। আর দেশের অবস্থা যেই লাউ সেই কদুই থাকবে। টাকা পাচার এই দেশ থেকে শুধু আওয়ামিলীগ করেনি, বিএনপিও করেছে । বিএনপি টাকা পাচারের এই ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। তাই তাদের দরকার ক্ষমতা। বর্তমানে টাকা পাচার বন্ধ। তাই অসুবিধা শুধু আওয়ামিলীগের নয়, বিএনপিরো হচ্ছে। তাই তাদের তর সইছে না। ডঃ ইউনুসের প্রস্তাবিত সংস্কার হতে দিলে তাদের এইসব অবৈধ কাজ কারবারে বাধা সৃষ্টি হবে। আর তাইতো সরকারের প্রস্তাবিত সংস্কার এবং ছাত্র- জনতার সকল দাবীতেই তাদের প্রবল আপত্তি। আসুন দেখি বিএনপির আপত্তি নামা-

১.সংস্কারে আপত্তি!
২.আনুপাতিক হারে নির্বাচনে আপত্তি!
৩.আগে স্থানীয় নির্বাচনে আপত্তি!
৪.৭২ এর সংবিধান বাতিলে আপত্তি!
৫.আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে আপত্তি!
৬.ইস্কন নিষিদ্ধে আপত্তি!
৭.চুপ্পুর অপসারণে আপত্তি!
৮.ছাত্রদের নতুন দল মানতে আপত্তি!
৯. প্রথম আলো নিষিদ্ধে আপত্তি!
১০.জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা পত্রে আপত্তি!
১১.জুলাই বিপ্লবীদের স্বীকৃতি দিতে আপত্তি!
১২.আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আপত্তি!

এই বিএনপির সাথে কি আপনি আওয়ামিলীগের তেমন কোন পার্থক্য দেখছেন ? আসলেই তেমন কোন পার্থক্য নাই। এতে কোণ সন্দেহ নাই যে, ক্ষমতায় বিনা বাধায় চুরি ডাকাতি বজায় রাখতে তারাও ভারতীয় আধিপত্যবাদকে মেনে নিবে। ভারতও এরপর আওয়ামীলীগের প্রতি একতরফা সমর্থন প্রত্যাহার করে আওয়ামিলীগ / বিএনপির পর্যায়ক্রমে ক্ষমতায় বসার প্রহসনমুলক গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন দিবে। মাঝখান থেকে এই দেশের আমজনতার হাল যেমন ছিল, তেমনই থাকবে।

এখনই সময় দেশের সকল নাগরিকের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হবার। আমাদের সন্তানসম ছাত্ররা রক্ত দিয়ে যে নতুন স্বাধীনতা এনেছে , তা আমরা কোনভাবেই ব্যার্থ হতে দিতে পারি না। দুই পরিবারের কবল থেকে মুক্ত করতে হবে আমাদের কলুষিত রাজনীতিকে। দেশের ক্ষমতায় যেতে হবে আমজনতার প্রতিনিধিকে। ভারতেই দিকেই তাকিয়ে দেখুন। এই যে মোদি এত জনপ্রিয় ভারতে , কেন? কারন সাধারন পরিবার থেকে ক্ষমতায় যাওয়া মোদি কোন বিশেষ পরিবারের সদস্য নয়। মোদির কাছে ভারতের স্বার্থই মূখ্য। আমাদের দেশেও এক নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তই পারবে সেরকম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের রাস্ট্রের ক্ষমতায় নিয়ে যেতে যাদের কাছে দল নয়, পরিবার নয় কেবল দেশের স্বার্থই মূখ্য হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী কম পায় না, বরং সবটাই পায়—নিজের জন্য

লিখেছেন বক, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:৩৫



ভাই নাঈম আর বোন নাবিলা
নাঈম ও নাবিলা দুই ভাই-বোন।
তাদের বাবা মারা গেলেন এবং রেখে গেলেন উত্তরাধিকার হিসাবে ১৮ লাখ টাকা।

ইসলামি বণ্টন অনুযায়ী:

ভাই নাঈম পাবেন: ১২ লাখ টাকা

বোন নাবিলা পাবেন:... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। একাত্তুর থেকে চব্বিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:২০




সমাজকল্যাণ ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন হলো। কিন্তু এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তাদের সুস্থ করতে পারিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একটু সৃজনশীল হও=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৬


খেয়ে দেয়ে আরামসে ঘুম, এ জীবন বুঝি
খাও দাও ঘুমাও এ কর্ম রোজই,
টিকটকে ভিডিও, ফেসবুকের রিল,
তাতেই করছো সুখ ফিল?

সাজুগুজু, প্রাশ্চাত্যের ড্রেসাপ, হাই হিলে হাঁটা
ব্যস! এমন অহমে পূর্ণ জীবনে ঝাঁটা
নেই সংসার গুছানোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিসি বিল্ড বিষয়ে টেকি ভাইদের সাহায্য চাই

লিখেছেন জাহিদুল ইসলাম ২৭, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭

দেড় বছর ধরে ডেস্কটপ পিসিটি নষ্ট।ব্লগ লেখা হয় না।ব্লগে আসাও তেমন হয় না।মোবাইল থেকে খানিকক্ষন ব্লগ পড়লে মোবাইল সেটটি বিট্রে করে।আর মোবাইল থেকে কমেন্টের প্রত্যুত্তরও করা যায় না।

এখন রাইজেন ৫৬০০... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার কি পদক্ষেপ নিবে ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৭


আওয়ামী লীগের মিছিলের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ঢাকার ডেমরা-উত্তরা- বাড্ডা - মিরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল করছে। প্রায় তিনমাস ধরে রাস্তায় মিছিল নামানোর প্রস্তুতি ছিলো। মিছিলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×