জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ে বহুল প্রত্যাশিত নতুন রাজনৈতিক দল আসছে আগামি ২৮শে ফেব্রুয়ারী । অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামই হচ্ছেন নতুন এই দলের প্রধান। নাহিদ আজ পদত্যাগ করে ছাত্র -জনতার কাতারে দাড়ানোর ঘোষনা দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া নাহিদ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সমন্বকেরা এই নতুন দলের নেতৃ্ত্ব স্থানীয় পদে থাকবে। আসিফ ও মাহফুজ ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে এখনো অন্তবর্তী সরকারে থাকবে। তবে পরবর্তীতে তারাও পদত্যাগ করে এই নতুন দলে যোগ দেবে।
বৈষম্যবিরোধি আন্দোলন নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নাই। পুরো জাতি এই আন্দোলনের প্রত্যক্ষদর্শী। কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা বারবার বলছে যে, এই অভুতপুর্ব আন্দোলনের সাফল্যের দাবীদার ছাত্র জনতা সবাই। কিন্ত এই আন্দোলনের সাফল্যের দাবীদার হিসাবে অনেকেই ইদানিং আবির্ভুত হচ্ছে এবং ইনিয়ে বিনিয়ে সব ক্রেডিট তাদের বলে জাহির করতে চাইছে। যাইহোক কে কি বলে তাতে আসলে কিছু যায় আসে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রচলিত হাতিয়ার হচ্ছে মিথ্যাচার। এই মিথ্যাচারে রাজনৈতিক দলগুলো কেউই কারো চাইতে কোন অংশে কম যায় না। তাই নতুন দলকে প্রতি মুহুর্তে লড়তে হবে মিথ্যাচারের সাথে।তবে তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি তারুন্য । তারুন্য সব সময়ই সত্যের সঙ্গ দেয়। কাজেই তাদের যে কোন মূল্যে সত্যের সাথে থাকতে হবে। তাহলে তারা জনগনকে বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সময় যেভাবে পাশে পেয়েছিল, রাজনৈ্তিক ময়দানেও সেভাবে পাবে।
নতুন রাজনৈ্তিক দলকে কিংস পার্টি হিসেবে আখ্যায়িত করে দমাতে চাইছে অনেকেই। সত্য বলতে কি দেশের ভালর জন্য যদি আসলেই কিং এর সহায়তায় এই দল গঠিত হয় , তবে সবচেয়ে উপকৃত হবে এই দেশের অভাগা জনগন। আর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরিবার তন্ত্রের লুটেরা ডাকাতেরা। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ডক্টর ইউনুস কেবলই শুভাকাংখী হবেন এই নতুন দলের কিন্তু সরকারী কোন সাহায্য তিনি দেবেন না। কারন উনি ডঃ ইউনুস । ক্ষমতাকে তিনি প্রচলিত দুই রাজনৈ্তিক দলের মত পারিবারিক সম্পত্তি মনে করেন না।
নতুন এই রাজনৈ্তিক দল এ দেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভুত হতে যাচ্ছে। এক ঝাক অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও নতুন এই দলে যোগ দিয়েছেন। তারা তাদের সামরিক জ্ঞান ও কৌশল দিয়ে দলকে সহায়তা করতে চান। সামনে হয়ত আরো অনেক নতুন নতুন চমক দেখা যাবে নতুন দলে। মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। যে কোন মূল্যে দেশে আইনের শাষন দেখতে চায়। ৩৫শে জুলাই নাহিদরা যে এক দফা দাবি জানিয়েছিল, তা ছিল ফ্যসিবাদ এর বিলুপ্তি এবং নতুন রাজনৈ্তিক বন্দোবস্তের ঘোষনা। জুলাই এর শহীদের রক্ত ছুয়ে যে প্রতিজ্ঞা তারা করেছিল, তা বাস্তবায়ন করতে তারা বদ্ধ পরিকর।
৫৩ বছরে অনেকতো দেখলাম রাজনৈ্তিক দলগুলোর কুৎসিত রাজনীতি। সিস্টেমকে এমন এক পর্যায়ে এরা দাড় করিয়েছে যেখানে আইন শৃংখলা বাহিনী ও বিচার বিভাগ ক্ষমতাসীন দলের সেবাদাসে পরিনত হয়ে দেশকে পরিনত করেছে অপরাধের স্বর্গ রাজ্যে। অপরাধীদের এই দেশে পুলিশ ধরলেও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয় , মামলা হলেও বিচারকরা তা নিয়ে বানিজ্য করে। যেভাবেই হোক এই গলে পচে যাওয়া সিস্টেমকে ভেঙ্গে নতুন এক সিস্টেম তৈরী হতে হবে যেখানে দেশের নাগরিকেরা এই ভয়ঙ্কর বিশৃংখলা থেকে মুক্তি পাবে। পরিবারতন্ত্র থেকে জাতি মুক্ত হতে পারলেই সম্ভব এই নতুন রাজনৈ্তিক বন্দোবস্ত কায়েম হওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:৫৮