somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইভি লীগ (Ivy league)

২৪ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আইভি লীগ। এটা কোন রাজনৈতিক দলের নাম না, এটা হচ্ছে আমেরিকার সবচেয়ে এলিট ৮টা ইউনিভার্সিটির লীগ।

হলিউডের মুভি দেখতে গেলেই মাঝে মধ্যে ‘আইভি লীগ’ কলেজ এর কথাটা শোনা যায়। এই কলেজগুলোর খ্যাতি, প্রভাব এবং চাহিদা এতোই বেশি যে আপনি যদি আইভি লীগ কলেজে পড়েন, তবে ধরে নেয়া হবে যে আপনি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক হোমরা-চোমরাদের কেউ হতে যাচ্ছেন। কারণ, এখানে যারা চান্স পায় তাদের হয় ঈশ্বর-প্রদত্ত মেধা থাকে অথবা, তাদের বাপ-দাদার নাম, ক্ষমতা এবং প্রচুর টাকা-কড়ি থাকে, অথবা দু’টোই। গরীব ঘরের জন্ম হলে ধরে নিতে পারেন যে আপনি এই ভার্সিটিগুলোতে পড়ার সুযোগ পাবেন না। ২০১৩ সালে ফোর্বস পত্রিকার জরিপে দেখা যাচ্ছে এই কলেজগুলোর ৪৬% ফ্রেশম্যান স্টুডেন্ট এসেছে আমেরিকার টপ ৩.৮% ধনী ফ্যামিলি থেকে। এই ফ্যামিলিগুলোর ইনকাম বছরে ২,০০,০০০ (দুই লাখ) মার্কিন ডলার বা তারও বেশি।

আলোচনার সুবিধার্থে প্রথমেই এই আটটা কলেজের নাম জানিয়ে রাখি:

১. হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি (ম্যাসাচুসেটস)
২. ইয়েল ইউনিভার্সিটি (কানেটিকাট)
৩. প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি (নিউজার্সি)
৪. কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি (নিউ ইয়র্ক)
৫. ব্রাউন ইউনিভার্সিটি (রোড আইল্যান্ড)
৬. ডার্টমাউথ কলেজ (নিউ হ্যাম্পশার)
৭. ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া ওরফে ‘পেন’ (পেনসিলভানিয়া)
৮. করনেল ইউনিভার্সিটি (নিউ ইয়র্ক)

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাপে কলেজগুলোর অবস্থান খেয়াল করলে দেখবেন এগুলোর সবই আছে উত্তর-পূর্ব কোণায় সাগরের ধার ঘেঁসে। এর কারণ, এই কলেজগুলোর সাতটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো আমেরিকা স্বাধীন হবার আগে, ব্রিটিশ কলোনিগুলোতে। এই সাতটা কলেজের শুরুর ইতিহাসকে ‘ডি নোভো’ বলা হয়, কারণ, এদের কোন প্যারেন্ট অর্গানাইজেশান ছিলো না। ( de novo অর্থ: নতুন থেকে শুরু করা)।

বুঝতেই পারছেন, এই কলেজগুলো খুবই পুরোনো, আর পুরোনো হলেই ভাব-গাম্ভীর্য বাড়ে। তবে, টাকা-পয়সা, জনপ্রিয়তা যা আছে সেটা এসেছে একটু ভিন্ন জায়গা থেকে এবং অনেক পরে। সেটা হলো ইন্টার-ভার্সিটি অ্যাথলেটিকস টুর্নামেন্ট। হ্যাঁ, এই ভার্সিটিগুলো আজকে যে অবস্থানে তার মূল কারণ হলো খেলা-ধুলা।

ঠিকঠাক বলতে গেলে, ১৯৫৪ সালে ন্যাশনাল কলেজিয়েট অ্যাথলেটিকস অ্যাসোসিয়েশান-এর ‘ডিভিশান ওয়ান’ গঠন করার পর থেকে। এই খেলায় স্পন্সর এবং ডোনারদের দেয়া টাকা থেকেই কলেজগুলো দ্রুত প্রতিপত্তি এবং সম্মানে বাড়তে শুরু করে। ‘আইভী লীগ’ কথাটার লীগ শব্দটা এসেছে এই খেলার ডিভিশান থেকেই। ফুটবলে যেমন প্রিমিয়ার লীগ, স্প্যানিশ লীগ আছে, তেমন।

তবে এই আইভি শব্দটার ইতিহাস অনেক পুরোনো। ১৮০০ সালের দিকে ঐ ‘ডি নোভো’ ভার্সিটিগুলোতে ‘প্লান্টিং দ্য আইভি’ নামে একটা ট্রাডিশান চালু করা হয়। এই ট্রাডিশানটা হলো নতুন অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার শুরুর দিনে ভার্সিটির দেয়ালের পাশে আইভি লতার গাছ লাগিয়ে ‘ক্লাশ ডে’ পালন করার উতসব।

এই আইভি রোপন উতসব পালন করা ভার্সিটিগুলোকে ১৯৩৩ সালে নিউইয়র্ক ট্রিবিউনের ক্রীড়া সাংবাদিক স্ট্যানলি উডওয়ার্ড একশব্দে বলেন ‘আইভি কলেজেস’। এটাই ঐ কলেজগুলোকে বোঝাতে আইভি শব্দটার প্রথম প্রয়োগ। আর আইভি লীগ কথাটা প্রথম ব্যবহৃত হয় ১৯৩৫ সালে ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর পত্রিকায়। সেখান থেকেই আইভি লীগ কথাটা চলে আসছে।


যাহোক, এটা নিশ্চই বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই কলেজগুলো শুধু নামের উপর ভর করে চলে না, এগুলো থেকে যেসব গ্রাজুয়েট বের হয় প্রত্যেক বছর তাদের সবাই পৃথিবীর কোন না কোন জায়গায় অবদান রাখে। আলবার্ট আইনস্টাইন ছিলেন প্রিন্সটনের শিক্ষক আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ জন প্রেসিডেন্ট কোন না কোন আইভি লীগ কলেজের গ্রাজুয়েট। কোন ভার্সিটি থেকে কত জন নোবেল জিতেছেন সেই লিস্টে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি একেবারে প্রথমে (১৩৩ জন)। দ্বিতীয় স্থানে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি (৯৮ জন)। প্রথম দশের ভেতর ইয়েল আর করনেল আছে। প্রিন্সটন আছে চৌদ্দ নম্বরে।

আরেকটা ব্যাপার খেয়াল করেছেন কি না, এম.আই.টি. এবং ক্যালটেক কিন্তু আইভি লীগ কলেজের কাতারে পড়ে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৭ দুপুর ২:২৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×