somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিঠি -পর্ব-২(বাবার কথা)

১৪ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চিঠি
পর্ব-২(বাবার কথা)

চারিদিক থমথমে নীরবতায় ছেয়ে গেছে।একটু আগেই যে ঝড় বয়ে গেছে তা বুঝার বিন্দুমাত্র উপায় নেই।মোটামুটি বড় হলরুমটার সাদা দেয়ালে ছোপ ছোপ রক্ত।নাহ,বেশি না,অল্পই।তারপরেও তো টকটকে লাল রক্ত।ঘরের দুই কোনাতে দুইজন পড়ে আছেন।আরেকজন আহত হয়েছিলেন তাকে কিছুক্ষন আগে এম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হল।
এমন তো হতেই পারে।হ্যা,হতেই পারে তবে কিনা দেশসেরা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বিভাগীয় প্রধানের অফিসে এরকম?সেটা কি হয়?না সেটা শোনা যায় না।আমাদের দেশে ছাত্র দের হাতে শিক্ষক নিহত হয় সেই খবর পানসে হয় গিয়েছে কিন্তু শিক্ষক দের নিজেদের মাঝে হাতাহাতির খবর টা এখনো খুব বেশি প্রচার পায় না।উচ্চ শিক্ষায় টাকাও নাই,উচ্চ শিক্ষার কোন খবর ও নাই।

জাহান সাহেব প্রচন্ড বিরক্ত সহকারে মেঝে থেকে উঠে দাঁড়ালেন।জাহান সাহেব ১ম পর্বের সেই রাশিকের বাবা।সিগারেট ধরালেন।ধোয়া ছাড়লেন।রুমের চারিদিকে তাকালেন এককোনায় জবুথুবু হয়ে তার স্ত্রী বসে আছেন।অবশ্যি বর্তমান স্ত্রী।আগের স্ত্রী অর্থাৎ রাশিকের মা এর সাথে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে তাও বেশ কিছুদিন হল।ভীত চোখে জাহান সাহেবের স্ত্রী আশেপাশে তাকাচ্ছেন,জাহান সাহেবের সাথে চোখাচোখি পর্যন্ত করছেন না।কিছুক্ষন এদিক ওদিকে তাকিয়ে মুখ ঢেকে ফেললেন তিনি।

জাহান সাহেবের এই স্ত্রীর নাম ইশরাত।মাস্টার্স শেষ করেছেন দুই বছর হচ্ছে।মাস্টার্স শেষ হওয়ার ৬ মাসের মাঝে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।সেই নিয়োগের পিছনে কলকাঠি নেড়েছিলেন জাহান সাহেব ও তাঁর প্রথম স্ত্রী আয়েশা।জাহান সাহেব এবং আয়েশা ম্যাডাম উভয়েই একই ডিপার্টমেন্টের ছিলেন।ইশরাত দুই জনের ছাত্রী ছিলেন,একদম সরাসরি।দুইজনের চিন্তা ছিল দুইরকম।

আয়েশার ম্যাডামের কথাই না হয় আগে বলি।এই লেখার পাঠকরা ফেসবুকে অনেক বালছাল,চ্যাটের বালের গরীব থেকে বড় কিছু হওয়ার গল্প সবাইরে দেখানির ব্যবস্থা করেন।যারা এগুলা সবাইরে দেখানোর লাইগা শেয়ার মারেন তারা নিজেরা এইসবের স্বপ্নই দেখতে থাকেন।মাইনষেরে বিরক্ত করেন কেন?ব্যাপারটা অনেকটা বাসে যৌন রোগের হার্বাল চিকিতসার ফ্লায়ার গুলার মতন।কোন কামে আসেনা,বিরক্তির উদ্রেক করে আবার চোখেও পড়ে।

আয়েশা ম্যাডাম গ্রামে বড় হচ্ছিলেন।তাঁর পরিবারের সবাই কট্টর মুসলিম লীগার। ১৯৭১ সালে দেশে শুরু হল যুদ্ধ।আয়েশার বাবা হলেন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান।তো ঘটনা পেচ লেগে গেল।আয়েশার দুই ভাই ছিলেন তাঁদের বাবার থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন মতের।দুই ভাই চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধে।এই শকে কিংবা শোকে আয়েশা ম্যাডাম মুসলীম লীগার বাবা আরো কড়া পাকিস্তানপন্থী হয়ে গেলেন এবং আর্মি আসার সাথে সাথে নিজের মেয়েকে তুলে দিলেন আর্মিদের মন জয়ের আশায়।সেইবার প্রথম ধাক্কায় এসেছিল জুনিয়র অফিসার রা বাংলাদেশে।তখনো সবকিছুই তাদের চোখে নতুন।এই লম্বা শ্যামলা সুন্দরী সদ্য কৈশোর পেরোনো মেয়েকে পেয়ে তারা আর নিজেদের ধরে রাখলোনা।মোটামুটি সব ধরনের কৌতুহল মিটিয়ে আবার সব রকমের সুখের আস্বাদ নিয়ে নিল।আয়েশার শরীর টা ঠান্ডা মাটিতে পড়ে থাকল আর সারা শরীরে হাজারো হাতের অদৃশ্য ছাপ,কামড়ের দাগ,বীর্যের ছড়াছড়ি।পরের দিন আবার এই একই অবস্থা।ঘরের উপরে কোনার দিকে ছোট কোনা দিয়ে আলো আসতো।একা থাকলে ওই আলোর দিকে হাত বাড়িয়ে দিন কাটতো।একমাসের মাঝে একাকীত্ব মোটামুটি কমে গেল আয়েশার।আরো ৭-৮ টা মেয়ে তার সাথে যোগ দিল এই অত্যাচারের অংশীদার হওয়ার জন্য।পাকিস্তানী আর্মিদের একটা মহিলা ছিল যে কিনা এসে প্রতিদিন মেয়েদের কে দেখে যেতো।তাঁদের শরীরের খবর নিত।কে আজকে ফুর্তির অংশ হবে সেটা যাচাই করতো।এই মহিলার ব্যবহার ছিল ভয়ংকর।সারা শরীরের টিপে টুপে ধরে তার উপর চড় থাপ্পড় লাথি ঘুষি তো ছিলই।বাংগালি এই মহিলা ছিলেন মুসলীম লীগের মহিলা এম পি।

এভাবেই মোটামুটি অত্যাচার চলছিল।দুইটা মেয়ে মারাও গেল।একজনের লাশ তো পচে গন্ধ বের হওয়া শুরু হল।একদিন বৃষ্টির ভিতর হঠাত ঘটনাপ্রবাহের পরিবর্তন।ঠাস করে দরজা খুলে গেল।কড়া আলো না থাকলেও সবার চোখ ধাধিয়ে গেল।পাকিস্তানি এক সিনিয়র অফিসার দাঁড়িয়ে।উর্দু ভাষায় চিতকার করছে।সবাই ভীতদৃষ্টিতে অফিসারের দিকে তাকিয়ে।আয়েশা আগের রাতের অত্যাচারের ব্যথায় উঠে দাড়াতে পারছেন না।হঠাত চারিদিক থেকে গুলির আওয়াজ আসা শুরু করলো। একটু থেমে থেমে গুলির শব্দ ভেসে আসছে।আয়েশা আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন,কিন্তু পারেননা।আশেপাশে তাকিয়ে দেখে বাকিদের ও একই অবস্থা।দুই তিন জন বের হতে পেরেছে।

পানির বালতি হাতে সেই মহিলার আগমন।সেই পানি ছুড়ে দেওয়া হল সবার শরীরে।বদ্ধ ঘরটার গুমোট-দূষিত বাতাস ভারী হয়ে এল সবার আর্ত চিতকারে।সবারই শরীর ক্ষত-বিক্ষত খামচি-কামড় থেকে আরো কত না বলা আঘাতে।সবারই শরীর জুড়ে ছোপছোপ রক্ত।গায়ে পানির ছিটা লাগার সাথে আগুনের মত সারা শরীর জ্বলে যাওয়ার যন্ত্রনার চিতকারের প্রতিধ্বনি যেন কিছুক্ষনের জন্য হলেও বুলেটের আওয়াজকে হারিয়ে দিলো।

সবাই উঠে দাড়ালো।উঠে না দাড়ানো ছাড়া আর কিছুই কি করার ছিল?ওই মহিলা আর জুনিয়র এক অফিসার এসে লাথি ঘুষি দিয়ে হাত টেনে সবাইকে উঠালো।সিনিয়র অফিসার তখনো চিতকার করে যাচ্ছেন।উনি নিজেও এসে সবাইকে বের করলেন।বের করে এনে মহিলাকে এবং জুনিয়র অফিসারকে আংগুল তুলে শাসালেন দুই টা থাপ্পড় ও দিলেন।মেয়েদের আটকে রাখার ব্যাপারে যেন তিনি অসন্তুষ্ট।নাহ,আয়েশাদের মোটেও ভালো লাগেনাই।এতদিনের যন্ত্রনা দুইটা থাপ্পড়ে শোধ হয় না।

বাইরে আনতেই দুইটা ছেলে এসে আয়েশাকে ধরে একটা জীপে উঠালো।আয়েশা ঘোরের ভিতর থেকে এতটুকুই বুঝলো এই ছেলেগুলো তার দুই ভাই।বন্দুক হাতে আর তাদের কে বাবার ভয়ে ভীত কিশোর দের মতন লাগছে না।পরিবেশ পারে মানুষ কে বদলাতে।বাবার সামনে আগে আয়েশাই কথা বলার সাহস রাখতো আর তার এই দুই ভাই চুপ করে মাটির দিকে চেয়ে থাকতো আর আজ আয়েশা শত চেষ্টায় মুখ দিয়ে আওয়াজ ও করতে পারছেনা।ঘোরের ভিতর আয়েশা দেখলো জীপ টা এসে তাদের বাড়িতে থামলো।

-বুবু,আয় নাম,দেখ।
আয়েশা ঘোরের ভিতরে শব্দের উতসের দিকে হাত বাড়ায়।হাত টা চলে যায় শক্ত লোহার স্টেনগানের নলে।এখনো হালকা উষ্ণ।আয়েশা হাত সরিয়ে নেয়।একটু হেটে যায় সামনে।এইবার আয়েশার ঘোর কাঁটে।
মাটিতে সাদা পাঞ্জাবী,মাথায় টুপি আর লাল লুংগি পড়া মাটিতে শুয়ে আছে আয়েশার বাবা।সাদা পাঞ্জাবীর বুকের উপর পুরোটাই লাল।রক্তের লাল।দৃষ্টিহীন চোখ দুটো চেয়ে আছে ঠিক আয়েশার দিকে।
-বুবু তোরে নিয়ে আব্বায় মিলিটারীর কাছে দিয়ে আসছে এইটা আমাদের পাশের বাড়ির এক পোলার কাছে শুনছি।তাই জোর করে এইখানেই আসছি।তোরে ছুটাইবার জন্য।দেরী হইয়া গেছে আমাদের মাফ কইরা দে।
বলে বসে পড়লো দুই ভাই আয়েশার পায়ের কাছে।
-উফফ,খুব মুত লাগছে রে।কি করবো।
একটা অপরিচিত কন্ঠের আওয়াজ শোনা গেল।তারপর ছড়ছড় করে পেশাবের আওয়াজ ভেসে এল।আয়েশা তাকিয়ে দেখে বাবার লাশের উপর বন্দুকধারী এক লোক পেশাব করছে।
-রাজাকারের বাইচ্চা।খা মুত খা।
আয়েশা যেন দেখেও দেখলো না।
এরপরের ব্যাপারটা সংক্ষেপে বলা যায়।
আয়েশার উপর এক ধনী সন্তানহীন বিদেশী পাগলাটে দম্পতির চোখ পড়ে।রেড ক্রসের পক্ষ থেকে তাঁরা দুইজন এসেছিলেন ভারতে শরনার্থীদের সহায়তা করতে।
আর আয়েশার দুইভাই যুদ্ধের পর চোরাচালানীর সময় বিডিআর এর হাতে নিহত হয়।বিডি আর এর লোকজন ও সব মুক্তিযোদ্ধা।

আয়েশা কিছু বছর বাইরে থেকে আবার দেশে ফিরে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যায় সেখানেই জাহান সাহেবের সাথে পরিচয়,পরিনয়,বিয়ে এবং বিচ্ছেদ।

তো আবার বর্তমানে ফিরে যাওয়া যাক।
জাহান সাহেবের বর্তমান স্ত্রী ইশরাতের কথায় ফিরে যাওয়া যাক।আয়েশা ম্যাডাম ভেবেছিলেন ইশরাতের রিসার্চ পটেনশিয়াল ছিল,স্পষ্টবক্তা মেয়ে হিসাবে ভিসি,ডিন সাহেব সবার কাছে গিয়েই তিনি ইশরাতের নিয়োগের জন্য চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।
এদিকে জাহান সাহেবের সাথে ইশরাতের চলছিল ভালোবাসা-ভালোলাগা। প্রথমদিনেই জাহান সাহেবের ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল ইশরাত।বর্তমান ভাষায় প্রথম দেখায় ক্রাশড একদম।কিন্তু আয়েশা ম্যাডাম এর সাথে পরিচয় হয়ে দমে গেল ইশরাত।তারপরেও চেষ্টা চলল মন জয়ের।ইশরাত ছাত্রী হিসাবে বেশ ভালো ছিল।
জাহান সাহেবের ক্লাস গুলোয় চমতকার পার্ফরমেন্স দিয়ে এবং সবসময় সামনে বসে মন জয়ের চেষ্টা চলতে থাকল।এরপর অফ টাইমে গিয়ে রিসার্চের নামে অনেক আড্ডাবাজি আলাপ করে যেতে লাগলো ইশরাত।
রাতে আবার কোপা পড়া দিতো যাতে জাহান সাহেব এর ক্লাস এ রেস্পন্স করতে পারে এবং রিসার্চে সাহায্য করে কাছে থাকতে পারে।

কিন্তু ঘটনা অন্যদিকে ঘুরে যাবে তা ইশরাত ঘুনাক্ষরেও ভাবে নি।ততদিনে ইশরাত মাস্টার্সে থিসিস করছে তার প্রিয় জাহান স্যারের সাথে।স্যারের বাসায় গিয়ে তাজ্জব হয়ে যেতে হল ইশরাত কে।
আয়েশা ম্যাডাম এর চোখ দুটো ফুলে আছে।সারারাত কান্না কাটি করেছেন নির্ঘুম থেকে বুঝাই যাচ্ছে। জাহান সাহেব খুড়িয়ে হাটছেন।রাশিক একদিকে বসে আছে।
-মা,যেও না।
রাশিক ভাংগা গলায় বলে উঠল।
-চুপ থাক।আমার সাথে না গেলে চুপ থাক।
আয়েশা ম্যাডামের তীক্ষ্ণ চিতকার।বসন্তের বাতাসে চুল উড়ছে।লাল চোখের উন্মাদীনীর মতন লাগছে উনাকে।
-মা,প্লীজ।
-চুপ কর।এত বড় সাহস? আবার কথা বলিস?
-আয়েশা থাকো প্লীজ।
জাহান সাহেবের এই প্রবল অসহায় আকুতির উত্তরে আয়েশা ম্যাডাম চোখ মুখ ঠান্ডা করে একটা উত্তর দিলেন
-এত ছোট কলিজার ছোট লোকের সাথে আমি থাকবোনা আর।আমি তোমার সেই টিপিকাল বাংলার বৌ হতে পারবো না।রান্না করে করে খাওয়াবো,ঘরের কাজ করে দিবো,তুমি রিসার্চ করবা আর আমি পোলাপানের যত্ন নিবো?এত সহজ?তাও ওর মতন এত বাজে একটা ছেলের জন্য?কি পারো তুমি রাশিক?না পারো ছবি আকতে,না পারো গান বাজনা, না পারো লিখালিখি কিংবা ফটোগ্রাফি।
পড়ালেখাতেও ঘোড়ার ডিম।বাংলাদেশে থাকবি আর যতসামান্য কিছু করেই ভাবতে থাকবি কত রাজা উজির মারছি।টিপিক্যাল বাংগালী হবি?অনেকদিন সহ্য করছি আর না।আমার ফ্লাইট তিন দিন পর ইচ্ছা করলে আসিস,আমেরিকায় আমি টিচিং এর জব টা নিবো আর তোকে ঠিকমতন মানুষ করব যাতে fucking idiot না হোস।
আয়েশা ম্যাডাম অনেকদিন বাইরে থাকায় কথায় কথায় প্রচুর ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করেন।
সি এন জি এসে দাড়ালো।
আয়েশা ম্যাডাম সি এন জি তে উঠতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়।ইশরাতের চোখের দিকে তাকায় আর বলেন “তুমি আমার মেয়ে হলে ভালো হত”।
আরেকবার রাশিক আর জাহান সাহেবের দিকে তাকিয়ে আয়েশা সি এন জি তে উঠে বসেন।
ইশরাত,রাশিক আর জাহান সাহেব সি এন জি র পানে চেয়ে থাকলো।এইভাবে চলে কেউ চলে যেতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করাটাই কষ্টকর।

সময়ের ঘোরপাকে রাশিক ভালো ছাত্র হয়ে উঠে এবং বাবার সাথে থেকে বাবারই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হল বেশ ভালো করেই আর ওদিকে ইশরাতের বিয়ে হয়ে গেলো জাহান সাহেবের সাথে।মানুষের জীবনের বাঁক গুলাতেই আসলে সব অন্ধকার কেন লুকিয়ে থাকে সেটা চিন্তা কিংবা গবেষনার বিষয়।আমাদের প্রথম কিস্তির মূল চরিত্র রাশিক তার বাবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে সত্য,কিন্তু সেটা দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটা।মানে,একটা ব্রাক্ষনী ব্যাপার স্যাপার আছে এখানে পড়ার সক্ষমতা অর্জনে।সব মেয়েরা প্রেম করতে চায়,সবার মেয়ের মায়েরা বিয়ে দিয়ে দিতে চায়, সে এক বিশাল যজ্ঞ। কিন্তু রাশিকের বাবার সাথে ছাত্রীর বিয়ের পর ব্যাপার টা উলটো হয়ে দাঁড়ালো। রাশিক কে মোটামুটি আংগুল দেখায় সবাই ফিসফাস শুরু করে দিতো ও যেখানেই যাক না কেন।করবেই না বা কেন?বাংগালী তার নিজের নাম-ইজ্জত রক্ষা করবেনা তা কেমনে হবে?

খেলাধুলায়-শিল্প-সাহিত্যে সারা বিশ্বের সবার কাছ থেকে পিছিয়ে থেকেও বড় বড় কথা বলতেই হবে,নিজের মেয়েরা কলেজে থাকতেই প্রেগন্যান্ট হয়ে গেলে কিংবা ছেলে মাদকের জন্য চুরি করলেও পাশের বাড়িতে কি হয় সেটাই আসল চিন্তা।জাহান সাহেব কিভাবে,কেন ইশরাত কে বিয়ে করলেন সেটাই একমাত্র চিন্তা হয়ে গেল সবার।

ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারের খামার নিয়ে বসে থেকেও দেশের মানুষ চিকিতসার জন্য ছুটে বিদেশে,ফ্লাইওভার পরে ভেংগে,চলতে থাকে অপরিপক্ক্ব মস্তিষ্কের কল্পনা প্রসূত উন্নয়ন কর্মসূচি,যারা ভালো চাই নিজের তারা বিদেশে পালিয়ে বাঁচি।বাংগালী সবই করে সবই পারে।

এই মানসিক চাপ না নিতে পেরে রাশিক পরবর্তী বছরে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিয়ে গ্রামের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিয়ে বাঁচার পায়তারা করলো,তার কি হবে সেটা নাহয় পরেই জানা যাবে।

আমরা ফিরে যাই জাহান সাহেবের জীবনে।জাহান সাহেব ছিলেন বোকা বাঙালি।বিদেশের পড়ানোর সুযোগ পেয়েও দেশমাতার আহবানে সাড়া দিয়ে চলে আসেন সেবা করার নিমিত্তে।কিন্তু এইদিকে দেশ মাতার কুলাংগার দের অনেক ছানাপোনা হয়েছে এবং তাদের সাথে টেক্কা দেওয়ার চিন্তাটা তিনি আর করেননি।অপরিকল্পিত পরিবার যেমন ভালো না(এর কারনে দেখবেন সবচে ঘনবসতি সম্পন্ন দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের কোন বলার মত সাফল্য নেই),অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তও আত্মঘাতি হতে দেরি হয় না।নিজের হাতে গড়ে তোলা বিভাগের সকল অবকাঠামো দিয়ে এবং নিজের হাত দিয়ে বের হয়ে আসা মানুষেরা যখন জাহান সাহেবের বিরূদ্ধাচারন করলো তখনই তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পারলেন কিন্তু তখন তিনি আয়েশা ম্যাডামের সাহায্যে মানুষের বিরূদ্ধাচারন রুখে দাঁড়ালেন। আয়েশার সাথে হল ছাড়াছাড়ি,ইশরাতের সাথে বিয়ে হওয়ার পর বিরূদ্ধাচারন রূপ বদল করে ব্যাক্তিগত আক্রমনের রং ধারন করলো।

-“আপনার কথা শুনে কি করবো?আপনার কথার দাম আছে?দেখছি তো কি করছেন”।
- “ও ছাত্রী ভালো কে বলছে?নাকি ওকেও বিছানায় নিবেন?আপনার তো রেকর্ড খারাপ।”
-“নিজের ছেলের খবর নাই,নিজের বিভাগের খবর কি রাখবেন?”
- “আপনার রুমে ছাত্রীদের রিসার্চের কাজে পাঠাই কেমনে?অতীত কি বলে আমাদের তো সব মনেই আছে”

তো এইসব আলাপ শুনে জাহান সাহেব আর ক্রোধ সংবরন করার প্রয়োজনীয়তা পেলেন না।উঠে চেয়ারটাই ছুড়ে মারলেন,মিটিং এর মাঝেই।তারপর যা হওয়ার হলো...

মিটিঙয়ের দিন সন্ধ্যায়,
কথোপকথন চলছে
-না,জাহান সাহেব।আপনি এইটা বলতে পারেন না।
-আমার বিয়ে আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপার,ভিসি সাহেব।
-আপনি আমার দলের শিক্ষকের গাঁয়ে চেয়ার ছুড়ে মেরেছেন সেটা আমার ব্যাপার।আপনার করা একটা কাজের কারনে পড়ালেখার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে সেটা আমার দেখার ব্যাপার।
-আমার কারনে??আপনার পোষা ছাত্ররা শিক্ষকদের গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারে তখন কি হয়?
-প্রমান নেই সেইটার।
-রাখেন।আমি আপনার দলের মানুষ,সেটা মনে রাখবেন।
-জাহান সাহেব,এইটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমি আপনাকে চাকরীচ্যুত করতে পারিনা,কিন্তু মাথায় রাখবেন আপনি নিজের কলিগকে বিয়ে করেছেন সেটা সত্য কিন্তু ডিভোর্স দিয়ে সন্তানতুল্য ছাত্রীকে বিয়ে করে কাজটা মোটেও ঠিক করেন নি।

ওরে দলবাজ চো*** পুত তুই খুব ভালো??নিজের বিভাগের চেয়ারম্যানের মেয়েকে পটায় বিয়ে করিস নি তুই?বিয়ের রাতে তো সব এসাইনমেন্ট,টার্ম পেপার,বাসে উঠতে না দেওয়ার কষ্ট,রেজাল্ট দেরী হওয়ার,সেশন জ্যামের সব দুঃখ ভুলে যাওয়ার জন্য, ভাইভার অপমানের কষ্ট দূর করার জন্য প্রতিটা ঠাপ মারিস নাই?প্রতিটা ঠাপের সাথে সাথে এইসবের নাম ধরে চিতকার করিস নি ?এখন ন্যায়ের অবতার সাজিস??কি দুর্নীতি করে ভিসি হইছিস আমি জানি না?কি দুর্নীতি করিস তা কি আমি জানিনা?
যাই হোক ডারউইন নামক ভদ্রলোকের বিবর্তনবাদের উপর সম্মান প্রদর্শন করে পশুত্বভাব বাদ দিয়ে জাহান সাহেব এত কিছু না বলে শুধু বললেন “ভিসি সাহেব,আপনি কিভাবে ওই চেয়ারে আছেন তার সবই আমার জানা,দয়া করে আমার সামনে ন্যায়ের কথা বলা আপনার জন্য ভালো হবেনা।আসি,ভালো থাকবেন”।
এরপর বের হয়ে চলে আসলেন।বৃষ্টির ভিতর ১৫ মিনিট হেটেই ঘরে ফিরলেন।
ঘরে এসে দেখেন ইশরাত এর চোখ ভেজা।হাতে দুইটা ব্যাগ।সিএনজি দাড়িয়ে ঘরের সামনে।
জাহান সাহেবের দেজা ভ্যু হল।আয়েশার চলে যাওয়ার দিনের কথা মনে হলো।
জাহান সাহেবের মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিলো।নষ্ট হাতঘড়ির কাটার মতন স্থির হয়ে গেলো।
-কি করো তুমি ইশরাত?
চোখ মুছতে মুছতে ইশরাত বলে
-ঢাকা যাচ্ছি।আমি আর পারছিনা।
-কি পারছোনা?
-তোমার সাথে একসাথে সংসার করতে।
-কেন?
-মানুষের এত কথা আমার শুনতে হবে কেন?আমি তো তোমাকে বিয়ে করেছি।আমার ক্লাসমেট ছেলেটা যে কিনা এখনো বিদেশে এম এস করছে মাত্র তাকে বিয়ে না করে তোমাকে বিয়ে করেছি কারন শুধু একটু শান্তি চাই।কিন্তু??
-কিন্তু কি?
-কিন্তু কি মানে???তুমি কি কিছুই বুঝোনা??কিস জিজ্ঞাসা করো আমাকে তুমি?
-হুম বলো।
-আমি একটু সম্মান খুজেছিলাম এই জীবনে,একটু শান্তিই চেয়েছিলাম।এর চেয়ে বেশি কিছু না।কিন্তু তোমার সাথে কাটানো প্রতিটা দিন আমার নরকের মতন কেটেছে।ডানে বাঁয়ে সামনে পিছে কোথাও যেতে পারিনি।সবাই বাঁকা চোখেই আমাদের দিকে তাকিয়েছে।আমি পারিনি সমাজের সেই সম্মানের শিখড়ে যেতে।আমি ভেবেছিলাম মানিয়ে নিতে পারবো।তোমার উপর ক্রাশ আমার সেই কবে থেকে,তোমাকে মনে মনে ভালোবাসি সেই কবে থেকে।
-তো ভালোবাসা আর নেই?
-আমারি দোষ বুঝিনি ভালোবাসা আর জীবন এত কঠিন।অনেক কষ্ট হলেও ছেড়ে যেতে হবে তোমাকে।
বালের কথা না বলে চলে যাও।তুমি তো আসছো শুধু টিচার হইতে।আর কি??
নাহ জাহান সাহেব এই কথাগুলাও মনের ভিতর রাখলেন।
-হুম।ভালোবাসা-জীবন-সংসার খেলার পুতুল কিংবা ফেসবুকের স্ট্যাটাসের মতন না এই শিক্ষা আমাদের জেনারেশন কলেজে পেয়েছে আর তোমাদের জেনারেশন মনে হয় না কোনদিন শিখবে...
তো এখন কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
ইশরাত মাথা নিচু করে ফেললো।
-ভাইয়ের বাসায় যাই,উত্তরায়।
-কেন?
-ও প্রাইভেট ভার্সিটি খুলছে ওইখানকার টিচার হিসেবে আমাকে ঢুকিয়ে দিবে বলেছে।
-ভালো।আমি দিয়ে আসবো?
-নাহ।
-ঠিক আছে,আর এসো না তাহলে।
ইশরাত আবার হতবাক।এরপর নীরবেই সি এন জি তে উঠলো।
বৃষ্টিতে সি এন জি আস্তে আস্তে চলে গেল।জাহান সাহেব সিএনজির চলে যাওয়া দেখলেন।রাস্তা জুড়ে সিএনজির আলোর প্রতিফলন দেখলেন।এরপর কানে ফোনটা লাগালেন।ছেলেকে কল দিলেন।
-হ্যালো বাবা।
-কি রে তোর গলা এমন শুনাচ্ছে কেন?
রাশিকের গলা তখন ভার হয়ে আছে।
পাশে থেকে মেয়েলী গলায় কে যেনো বলে উঠলো
-রাশিক এমন করছো কেন?তোমার বাবা ফোন করেছে তো।
জাহান সাহেব ধাক্কার মতন খেলেন।
-আর কতক্ষন টানবি ফোন ধর বেডা।
আরেকটা গলা শোনা গেল। এইটা পুরুষালি অবশ্য।
-বাপে ফোন করছে তোর।
আরেকটা গলা ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো।
-আস্তে বল,শুনে ফেলবে।স্টিকটা এদিকে দে।
-হ্যা,বাবা।বলো।কি হইছে?
-পরে কথা হবে।থাকো বাইরে।
জাহান সাহেব এইবার ছেলে নেশাগ্রস্থ এই জিনিসটা বুঝতে পেরেও খুব বেশি কিছু চিন্তা করলেন না।কি হবে আর চিন্তা করে?সব কিছুর শেষ তো এখানেই তাই না? কি আর আছে?বাবা নাই,মা নাই,দুই বৌ চলে গেল,ছেলে নেশাখোর আর কি?

জাহান সাহেব নিজের টেবিলে বসলেন।কাগজ-কলম নিলেন।নিজের ছেলেকে চিঠি লিখবেন।

প্রিয় বাবা রাশিক,

আমি জানি তুমি আমার এই চিঠি তুমি ফেলায় দিবা।দেখবাও না হয়তোবা।কিংবা টয়লেট পেপার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারো।কে জানে? কথা গুলা যা বলবো সেগুলা যে খুব একটা জরুরি তা নয়।চিঠির সাথে সাথেই তুমি আমার উইল পাবে।বশির আংকেল এগুলা দিবে তোমাকে।চিন্তার কোন কারন নেই।অবশ্য তুমি আমার দেওয়া কিছু নিবে কিনা আমি তাতে সন্দিহান।যাই হোক, আমি আসলে জীবনে এই মুহুর্তে চমতকার একটা সংকটের মাঝে আছি।আমেরিকানরা সবকিছুর গাল ভরা নাম দেয় হয়তো আমার এই অবস্থাটাকেও একটা নাম দিয়ে থেরাপিতে বসাই দিতো।কিন্তু এইটা বাংলাদেশ আর সবার মতন আমাকে আবার চাকরীতে ফিরে যেতে হবে।হতাশাগ্রস্থ হওয়াটা কোন অপশন নয়।তবে হ্যা,আমার তো আর স্ত্রীও নেই,পরিবার ও নেই আমার আর কি চিন্তা,হ্যা ইশরাত আজকে আমাকে রেখে চলে গিয়েছে।

ব্যাংকের টাকা নিয়ে চলে যাওয়াই যায়।কিন্তু তাও কেমনে হয়?ব্যাংকের টাকা তো আগেই বিভিন্ন জনকে দান করে দিয়েছি আর পেনশনের বেশির ভাগ টাকা দিয়ে দিয়েছি বিভাগের বই –অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজে।এইগুলাই মনে হয় জীবনের বড় ভুল।নিজের দিকে,পরিবারের দিকে,তোমার দিকে তাকানো আর হয় নি।নিজের স্বার্থ এর দিকে নজর দেওয়া শিখে উঠিনি।জীবন বুঝিনি।আমার প্রবাসী বন্ধুরা ছবি পাঠায় তাদের সন্তানদের এওয়ার্ড পাওয়ার আর আমি পাঠাই আমার ছাত্র-ছাত্রীর এওয়ার্ড প্রাপ্তির পর আমার সাথে তোলা ছবি।হায় জীবন।পেশা এভাবেই সৎ মানুষকে পিষে ফেলে,গিলে ফেলে,হজম করে ফেলে পরে চিবিয়ে সব শুষে ফেলে ছোবড়ার মতন করে রাস্তাঁর আস্তাকুড়ের আবর্জনার মতন করে থুতুর সাথে ছুড়ে ফেলে।তোমার জীবনের সবচে বড় আঁধারের উতস আমি,যেখানে পথ দেখানোর আলো নিয়ে আগানোর কথা ছিল আমার।


মাফ চাওয়া বোকামী,তাও যদি মনে হয় মাফ করে দিও। আমি যাই দেখি ফ্যানের মিস্ত্রিরা ঠিকমতন ফ্যানটা ঠিক লাগিয়েছে কিনা,আর সেই সাথে নতুন তোয়ালের কাপড় টা কেমন তাও দেখবো।ভালো থাকার চেষ্টা করো...
ইতি
তোমার বাবা(যদি এখনো সেই জায়গাটা দাও আর কি,মানুষ হিসেবে শুধুই বায়োলজিকাল সম্পর্ক মুখ্য রাখা বোকামি)

পরের দিন জাহান সাহেবের প্রিয় বন্ধু ও কলিগ বশির সাহেব দরজা খোলা পেয়ে ঢুকে দেখেন ফ্যানের সাথে জাহান সাহেবের গলাটা বাধা।ওইখান থেকে উনি ঝুলছেন।প্রান নেই দেহে কিন্তু হাতে শক্ত করে একটুকরো কাগজ ধরা...
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৭
১টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×