somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

71 Into The Fire- কোরিয়ান ওয়ার মুভি (মুভি রিভিউ)

৩০ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ওয়ার মুভি বরাবরই পছন্দের। আর সেটা কোরিয়ান হলে তো কথাই নেই। ওয়ার মুভি মেকিংএ তাদের টপকে যাওয়া দুঃসাধ্য নয়, অসম্ভব ও বটে। অনেক কষ্টার্জিত স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি ওদের আবেগটা একটু বেশিই। যেটা তাদের ভাল মানের মুভি তৈরীতে রসদ যোগায়। কোরিয়ান ওয়ার মুভিগুলোতে কোরিয়া যুদ্ধের ঘটনা গুলোই বেশি স্থান পায়। ওদের যুদ্ধের মুভিগুলো এত নিখুঁত, দেখে মনে হয় সরাসরি যুদ্ধ প্রতক্ষ্য করছি। 71 into the fire এমনই একটি মুভি যেটি নিখুঁত চিত্রায়ন, অসাধারণ অভিনয় এবং নির্মাণশৈলীর জন্য স্থান করে নিয়েছে সেরা ওয়ার মুভিগুলোর মাঝে।

Movie Title: 71 Into the fire
Release Year: 2010
Director: Lee jae-han
Cast: Choi Seung-hyun, Cha Seung-won, Kwon Sang-woo, Kim Seung-woo, Park Jin-hee, Kim Sung-ryung
Genre: War
Country: South Korea
Language: Korean
Running Time: 120min
IMDB rating: 7.4/10
Release Date: 16 June, 2010
Box Office: $20,967,660
Award: 5 wins & 5 nominations.

71 into the fire কোরিয়ান যুদ্ধ চলাকালীন একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। মাত্র ৭১ জন অপেশাদার, প্রশিক্ষণবিহীন ছাত্র দল কিভাবে একটি সাঁজোয়াযান, ট্যাংক ও ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ৭৬৬ নং নর্থ কোরিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলল তার গল্প। এই ৭১ জন তরুণ, যারা ইতোপূর্বে বন্দুক হাতে নিয়ে পর্যন্ত দেখেনি, টানা ১১ ঘন্টা যুদ্ধ চালিয়ে পোহান ডং গার্লস স্কুলকে রক্ষা করেছিল। যাদের কথা পুরো কোরিয়াবাসী আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।
১৫ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে কোরিয়া জাপান থেকে স্বাধীন হয়। ৩৮ ডিগ্রি অক্ষাংশ কমিউনিস্ট উত্তর এবং ইউ, এস অধ্যুষিত দক্ষিণ কোরিয়ার সীমানা নির্ধারিত হয়। জুন ২৫, ১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধ শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ছিল প্রথম বড়মাপের সংঘর্ষ। তুমুল যুদ্ধে দক্ষিন-কোরিয়ান বাহিনী বারবার পরাস্থ হয়ে শুধু পিছুই হটছে। নাকডং নদীর তীর রক্ষা করাই এখন তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। এর দখল হারালে পরাজয় প্রায় নিশ্চিত।
অন্যদিকে পোহান এলাকাও কম গুরুত্বপুর্ন নয়। কিন্তু সেখানে দেয়ার মত সৈন্য নেই। সবাই নাকডঙ নিয়োজিত। তাই ৭১ জন ছাত্র নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়। যার কমান্ডার করা হয় জামবীওমকে [ অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র গোলাবারুদ আনা নেয়ায় সীমাবদ্ধ]। অস্ত্র চালনার নিয়মকানুন শিখিয়ে দিয়ে এদের পোহান গার্লস স্কুলে রেখে যাওয়া হয়। খাবারের চিন্তা না থাকায় হৈ- হুল্লোড় করে ভালই সময় কাটছে তাদের। এক রাতে ১০ – ১২ সদস্যের একটি আকস্মিক বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। এটাই ছিল তাদের প্রথম অস্ত্র চালনা। পরদিন এক নর্থ-কোরিয়ান সৈন্যের গুলিতে তাদের দুজন মারা যায়। পিছু নিতে গিয়ে ……

তাদের একজন ধরা পড়ে নর্থ-কোরিয়ানদের হাতে এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর জেনারেল পার্ক মু-রাং তাকে নিয়ে আসে পোহান গার্লস স্কুলে। পার্ক মু-রাং তাদের ২ ঘন্টার সময় দেয়। এর মধ্যে যদি তারা স্কুলের সামনে সাদা পতাকা টাঙায় তাহলে বাঁচতে পারবে। অন্যথায় পুরো স্কুলসহ তাদের উড়িয়ে দেয়া হবে।
মু-রাং যাওয়ার পর ছাত্রদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কাপ-জো বলে, “এখানে থাকলে আমরা নির্ঘাত মারা যাব। তারচেয়ে নকডং এ মূল সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করে বীরের মত মারা যাওয়া অনেক ভাল।”
ওজাম্বীও কথা, “সেই কাপুরুষ, যে প্রয়োজনের সময় নিজের জায়গা ছেড়ে পালায়।” তাদের তর্কাতর্কি চলতে থাকে এবং এক সময় তা মারামারিতে গড়ায়। এদিকে সময় যে খুব কম………..

অবশেষে তারা কি সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিল? কি করেছিল, আত্মসমর্পন না কী শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আজই দেখে ফেলুন মুভিটি।
যুদ্ধের মুভির সবচেয়ে বড় ব্যাপার ছিল পুরো পরিবেশটাকে যুদ্ধের মত করে তৈরী করা। চারদিকে ধোঁয়াশা, বারুদময়, ধ্বংসযজ্ঞ, বিদ্ধস্ত ঘরবাড়ি। সবমিলিয়ে অন্যরকম একটা পরিস্থিতি। যা দর্শক মনে যুদ্ধের ভয়াবহ অনুভূতি সৃষ্টী করতে পারে। পরিচালকে এক্ষেত্রে পুরোপুরি সফল বলতে হবে। যুদ্ধের দৃশ্যগুলো এত সুন্দরভাবে চিত্রায়িত হয়েছে যে কোন কোন জায়গায় তা “ saving privet Rayan” ও “parl herbour” কে ও ছাড়িয়ে গেছে। যুদ্ধের বীভৎস কিছু চিত্র এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে সরাসরি যুদ্ধ না দেখলেও এর ভয়াবহতা আঁচ করা যায়।

মুভিটি সম্পর্কে এক ভিউয়ারের কমেন্ট ছিল এমন,
“The biggest thing for me is that it is a true story and is dramatised well. Without being too political, with the ongoing problems in Korea, they could have made the North out to be animals, but they don't.”

এক ফ্রেন্ড মুভিটা দেয়ার সময় বলেছিল, “এটা দেখ, তোর টপলিস্ট চেঞ্জ হয়ে যাবে।” হয়েছিলও তাই। মুভি দেখা শেষে আমার মাঝে পরস্পর বিপরীতমুখী অনুভূতির সৃষ্টি হল। একবার মনে হল, “এত সুন্দর মুভি এতদিন কেন দেখলামনা? আবার মনে হল, আহহ, অসাধারণ মুভিটা দেখে ফেললাম। আবার কবে এমন মুভি পাব, আধৌ পাব কিনা সন্দেহ।”
মুভিটার প্রতি আমার বিশেষ অনুরাগ আছে। এর মাধ্যমেই আমার সামনে করিয়ান মুভি জগত উন্মোচিত হয়। শেষ দৃশ্যে জেনারেল মু-রাঙের বিদ্রুপের হাসিটা ছিল আমার দেখা সেরা হাসি গুলোর একটি।

কিছু মজার তথ্য :
➤ প্রথমে এটির নাম দেয়া হয়েছিল 71. তারপর Into The Gunfire.
➤ কোরিয়া যুদ্ধে প্রাণ দেয়া ছাত্রদের আত্মত্যাগের স্মৃতি স্বরূপ মুভিটি কোরিয়া যুদ্ধের ৬০তম বার্ষীকিতে মুক্তি পায়।
➤ এর অর্থায়ন করেছিল দক্ষিণকোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
➤ থিয়েটারে এটি ৪০ লক্ষেরও বেশি দর্শক টানতে সক্ষম হয়।
➤ এটি ছিল ২০১০ সালের ৫ম ব্যবসা সফল করিয়ান মুভি।
➤ মুভিতে জেনারেল মু- রাঙের হাতে দেখানো ঘড়িটি ছিল ১৯৭০ এর দশকের।

এমন মাস্টারপিস মুভির বাংলা সাবটাইটেল না থাকায় অনেকে মুভিটি মিস করেছেন। এবার আশাকরি আর মিস হবেনা। আপনাদের জন্য বাংলা সাবটাইটেল নিয়ে এলাম। আশাকরি সাবটাইটেল দিয়ে সবাই মুভিটি দেখবেন এবং আপনাদের মতামত জানাবেন।

বাংলা সাবটাইটেল লিঙ্কঃ http://goo.gl/QRhuyK
আমার সব সাবটাইটেল লিঙ্কঃ http://goo.gl/0p9tmI

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×