somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মকথন - ফিরে দেখা (২০১০ সাল)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ৮:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(অনেক কারণে আমার কাছে ২০১০ সাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।প্রচুর আনন্দ,কষ্ট দিয়েছে আমাকে এ বছরটা।কতকিছু শিখেছি এ সময়টাতে!কত বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার!কোন কিছুই ভুলবার নয়।যদি আমি বড় হয়ে ভালো কিছু করতে পারি,তবে এর পিছনে এ বছরটা দায়ী থাকবে।তাই এ বিশাল সময়টাকে অবহেলা করি কিভাবে?
আজ সকালে ভাবছিলাম এ বছরটা সম্পর্কে কিছু একটা লিখব।তখন মাথায় এল সামুর কথা।মনে হল অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপাতত সামুই বেষ্ট।তাই আমি এখন এ পোষ্ট দিচ্ছি।পরবর্তীতে আরো লেখার ইচ্ছা আছে।)



২০১০ সালটা আমার কাছে শুরু হয় এসএসসির উত্তেজনা নিয়ে।উত্তেজনা না বলে উপদ্রব বলাই মনে হয় ভালো হবে।কয়েকদিন পরেই পরীক্ষা শুরু,সবাই তাই ধুমিয়ে পড়ছিল।এদিকে আমি পরীক্ষার কারণে বেশ বিরক্ত।কারণ এর কারণে আমি আমার স্বাভাবিক জীবনধারা হারিয়ে ফেলেছিলাম।ভোরে ঘুম থেকে উঠে কোন সাবজেক্টের বই নিয়ে পড়তে হত ঘন্টার পর ঘন্টা।বেশ বিরক্তিকর ছিল ব্যাপারটা।আমি এভাবে আগে কখনো পড়িনি।তাই ফাঁকি মারার চেষ্টা করতাম।অল্পেকটু পড়ে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যেতাম।আমাদের ডাইনিং টেবিলের পাশের দেয়ালে একটা বনসাইয়ের ছবি টাঙানো আছে।আগে সেদিকে অতটা নজর দিইনি।কিন্তু তখন খুব ভালো লেগেছিল সেটা।পড়ার ফাঁকে ফাঁকে সেদিকে তাকাতাম,আবার পড়া বাদ দিয়েও তাকাতাম।আর মনে মনে বলতাম,‘এত সৌন্দর্য এতদিন কোথায় ধারন করেছিলে তুমি হে বৃক্ষ!’

অন্যদিকে স্কুলে চলছিল মডেল টেষ্ট।সবাই বুক ফুলিয়ে পরীক্ষা দেয়,আর আমি মুখ লুকিয়ে দিতাম।কারণ প্রস্তুতি তেমন ভালো থাকত না।কোনমতে পরীক্ষা দিয়ে বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে চলে আসতাম।তারা যখন জিজ্ঞেস করত,“পরীক্ষা কেমন হল?”তখন দার্শনিকের মত মুখ গম্ভীর করে বলতাম,“এ পরীক্ষা দিয়ে কি হবে?এতে যদি ভালো করে মেইন জায়গায় গিয়ে খারাপ করি,তাহলে হবে?”তারা মাথা নেড়ে বলত,“তা অবশ্য ঠিক।”তবে অনেকে এত সহজে ছাড় দিত না।তখন আসল কথা বলতে হত,“এই ত মোটামুটি হয়েছে।”

জানুয়ারীর ১২-১৩ তারিখ মা-বাবা হঠাৎ করে ঢাকা চলে গেল।আমি পুরো বাসার মধ্যে একা হয়ে গেলাম।আমার মা মনে করেছিল আমি একা বাসায় থাকতে পারব না।তাই যাবার সময় আমার থাকা ও খাওয়া-দাওয়ার জন্য দাদুর বাসায় রেখে গেল।দাদুর বাসা আমাদের বাসার কাছে ছিল।তাই যেকোন সময় সেখান থেকে বাসায় চলে আসতে পারতাম।বাসায় এসে গোসল করতাম,টিভি দেখতাম।এরপর বই-খাতা নিয়ে আবার চলে যেতাম সেখানে।

সেখানে যাবার পরও কিন্তু আমি পড়তাম না।বাসায় না পড়লে মা এসে ধমক দিত।কিন্তু দাদুর বাসায় কেউ কিছু বলত না।আমি তাদের বাসায় একটা লেখার প্যাড নিয়ে বসে থাকতাম,কিছু মাথায় এলেই সাথে সাথে লিখে ফেলতাম।তখন মাথায় এক ভূত চেপেছিল,‘প্রথম আলো’র গল্প প্রতিযোগিতায় গল্প পাঠাতে হবে।এমন গল্প পাঠাব যে নির্বাচকরা পড়লে একেবারে উল্টে যাবে!ঠিক করেছিলাম কেবলমাত্র সংলাপ দিয়ে একটা গল্প পাঠাব।সেটাই লেখার চেষ্টা করতাম তখন।কিছুদূর লিখেওছিলাম,কিন্তু শেষ করতে পারিনি।

একদিন মা-বাবা ফিরল ঢাকা থেকে,সম্ভবত ১৬ তারিখ।আমি তাদের সাথে গোমড়া মুখে রওয়ানা দিলাম বাসার উদ্দেশ্যে।কারণ আবার পড়তে হবে।বিরক্তিকর!

একদিন টিভি দেখছিলাম,সম্ভবত চ্যানেল ওয়ান।চ্যানেলের নিচে বিভিন্ন খবরের হেডলাইন দিচ্ছিল।হঠাৎ করে দেখলাম,“এশিয়ান গেমসের কারণে 'এসএসসি পরীক্ষা ২০১০' ১০ দিন পিছিয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে আরম্ভ হবে।”
আমি এ খবর পড়ে সাথে সাথে চাপা একটা চিৎকার দিই ‘হুররে!’ বলে।কারণ ওই ১০ দিন আমি দেরি করে ঘুম থেকে উঠতে পারব-এ চিন্তাটা করেই আমার বুকে প্রশান্তির হাওয়া বইছিল হু হু করে।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:১৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×