somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ কোন উন্নতিই করতে পারেনি - জিওফ্রে বয়কট; ওমা, তাই নাকি? জানতাম না ত! X( X( X(( X(( B-)) B-))

২৫ শে মার্চ, ২০১১ রাত ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বিকেল ৫ টায় গণিত প্রাইভেট ছিল। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ছুটি পাই। প্রাইভেটের জায়গাটা থেকে আমাদের বাসা ১৫ - ২০ মিনিটের হাঁটার পথ। তাই আজ হেঁটেই এলাম। সাথে ছিল শুভ দাস নামের এক ক্লাস ফ্রেন্ড।

আসার সময় নানা বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল; বেশিরভাগই ছিল বিশ্বকাপ প্রসঙ্গিত। কখনো সাউথ আফ্রিকাকে নিয়ে, কখনো নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে, আবার কখনো নভজিৎ সিং সিধুকে নিয়ে। এরকম নানা কথা হতে হতে হঠাৎ সে আমাকে বলে, “"আজকে পেপারে জিওফ্রে বয়কটের কথাটা ......।"” আমি তাকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বলি, "পড়েছি"।” তখন সে বলে, “"তুমি ত এখন কিছুই বলছো না! যদি কালকে ইন্ডিয়া হারত, তাহলে ত ব্লগে লিখে ভরিয়ে ফেলতে! আজকে কিছু বল না কেন?”"

বলাবাহুল্য, সে কথাগুলো ঠাট্টার ছলেই বলছিল। আমি হাসতে হাসতে তার কথা শুনি। আমার এই বন্ধুটির ধারণা কিছু হলেই আমি ব্লগে হাবিজাবি লিখে ভরিয়ে ফেলি; সেটা ক্রিকেট সম্পর্কে হলেই হল।

সে ত আর জানত না যে আমি কতটা আনন্দ পেয়েছি বয়কটের এই মন্তব্য পড়ে! কারণ পাগল কত কিছুই ত বলে, সব কি আর গনায় ধরতে হয় নাকি!

এক পোষ্ট আগের কথা। আমি জিওফ্রে বয়কটের এক মন্তব্য নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। আমি জানি আমার এই ক্ষুদ্র লেখা তার দৃষ্টিগোচর হবে না, তবুও লিখেছিলাম। বলা যায় লিখে শান্তি পেয়েছিলাম। কারণ আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক সমালোচকের মন্তব্যের ক্ষুদ্র প্রতিবাদ হলেও করেছি, তাতেই বা কম কি!

সেবার সে বলেছিল, "“বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে হুট করে দুই – একটা ম্যাচ জিতবে ঠিকই; কিন্তু তারা বিশ্বকাপ জিতে নেবে, এমন কথা কি বলেছে কেউ?”"

নিতান্তই এক ছোট কথা, খানিকটা বিরক্তিকর এবং তার চেয়েও বেশি অপ্রিয় সত্য কথা। আমি জানতাম ২০১১ বিশ্বকাপ বাংলাদেশ জিতবে না, কিন্তু তবুও তারা ভাল করবে সেই স্বপ্ন দেখছিলাম। তাতে কেউ এভাবে সরাসরি আঘাত হানবে তা আমি ঠিক মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই সেদিনই ব্লগে কিছু কথা লিখে নিজের প্রতিবাদটুকু করি। আমার সাথে অনেকেই গলা মেলান, যেমন - "“ডিজিটাল কলম”", "“শূন্য উপত্যকা”", “"নাহিয়ান বিন হোসেন"”। তাদের বেশির ভাগেরই আশা ছিল বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে। তা না হলেও বাংলাদেশ ভালো করবে এবং সমালোচকদের উচিৎ সাজা দিবে।



এরপর কেটে গেছে প্রায় দুই মাস। মাঝে দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হয়ে শেষ হবার পথে। কতক রোমাঞ্চকর মুহূর্ত উপহার দিয়ে এখন তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল চলছে। আর মাত্র ৪ টি ম্যাচ, এরপরই বিশ্বকাপ শেষ! এরপর আবার ৪ বছরের অপেক্ষা।

হ্যাঁ, বাংলাদেশও দেশের মানুষকে অপেক্ষায় রেখেছে ভালো ক্রিকেট দেখাবার আশায়। তারা বিশ্বকাপে যে খুবই খারাপ করেছে, তা নয়। ৬ টা ম্যাচে ৩ জয় আর ৩ হার। মন্দ কি! ৩ জয়ের মধ্যে যেমন আছে শিরোপা প্রত্যাশী ইংল্যান্ড, তেমন আছে হুমকি হয়ে উঠা আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট টিম। সাথে তামিমের ভারতের বিপক্ষে ৭০, সাকিবের ৫৫, শফিউলের দুর্দান্ত ম্যাচ কন্ট্রিবিউশান প্রতিটি জয়ী ম্যাচে;– নাহ্‌, সব মিলিয়ে বলা যায় খারাপ হয়নি বাংলাদেশের ২০১১ বিশ্বকাপ মিশন।

কিন্তু এত কথার মাঝে যে একটা শুভঙ্করের ফাঁকি আছে, তা সবাই বুঝতে পারবে। ৩৭০ রানের বদলে ২৮৩; নট ব্যাড। বাংলাদেশের পক্ষে এটা অবশ্যই একটা ভালো খবর যে ব্যাটিংটা ভাল হয়েছে। তাই প্রথম ম্যাচেই ভারতের কাছে হারার পরেও সকলেই খুশি ছিল। কিন্তু ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রান ও সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৮ এ অলআউট -– একে কি বলা যায়? সর্বনাশা ব্যাটিং নাকি প্রতিপক্ষের বোলাদের দানব হয়ে উঠা? কোনটা?

আসলে কিছুই হয়নি। বিশ্বকাপ মিশন শেষে বিচার করে দেখা গেছে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিশ্চিত হার মেনে খেলেছিল বিধায় বড় স্কোর করতে পেরেছিল। বাকিগুলোতে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস তাদের ধ্বংসের কারণ। এ সকল বাজে পারফর্মেন্সের কারণে বাংলাদেশের "বলে কয়ে" ইংল্যান্ড বধের কথা কেউ মনে রাখেনি। এখন তাই কাউকে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বলে, "“আরে ভাই, কি বলেন! এটা একটা টিম হল! ভারতকে দেখেন, কি খেলে! পাকিস্তানকে দেখেন, কি ফাইন খেলছে! আর বাংলাদেশ! ধুর!”"

এই হল আমাদের ক্রিকেটের সমর্থক।


যাই হোক, বাংলাদেশের এহেন কান্ডে জিওফ্রে বয়কটের মুখ আবার খুলে গেছে। সে আজকের কালের কন্ঠে বলেছে, “ "... ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এত বেশি টাকা খরচ করেও বাংলাদেশ মোটেও উন্নতি করতে পারেনি। সেই শুরুর মতোই রয়ে গেছে ওরা। অথচ আইসিসির সহযোগী দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি টাকা খরচ করেছে বাংলাদেশ। আইসিসির এসব দেখার এখনই সময়।"

এই মহান ব্যক্তিটি আরো বলেছে, “ "... আয়ারল্যান্ড (যারা প্রতিটা ম্যাচেই বিস্মিত করেছে সবাইকে) ও নেদারল্যান্ডসের মতো দলের ঘরোয়া ক্রিকেটের উন্নতিতে আরো বেশি টাকা খরচ করা দরকার। এত বেশি টাকা খরচের পর বাংলাদেশের এগিয়ে যেতে না পারাটা অনুচিত। ওদের কয়েকটা ম্যাচের ব্যাটিং তো রীতিমতো ভয়ংকর ছিল। আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসে অনেক কম মানুষ ক্রিকেট খেলে তারপরও ওরা বিনোদন দিয়েছে সবাইকে। আর যে কারো চেয়ে এই দুটো দেশের বেশি সহযোগিতা দরকার এখন।”"

অতি উত্তম কথা। ক্রিকেটের বিশ্বায়নের যুগে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া অবশ্যই উচিৎ আইসিসির। এই সংগঠনটি আবার তাদের মতও বদলাতে যাচ্ছে। যেখানে এতদিন তারা বলে আসছিল ২০১৫ বিশ্বকাপ ১০ টি দল নিয়ে হবে, এখন তারা বলছে, “"সেটি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে!”" সত্যিই সেলুকাস!

এখন আসি জিওফ্রেতে। এই লোকটি আবার বাংলাদেশকে নিয়ে খোঁচাখুচি করছে। এত খোঁচালে কারো ভালো লাগে! এই লোকটিকে কে বোঝাবে যে দুই তিনটা ম্যাচে ভালো খেললেই কোন টিম ভালো হয় না, আবার কয়েকটি ম্যাচে খারাপ করলেই কোন টিম খারাপ হয় না। যে বাংলাদেশ এক শুক্রবারে ৫৮ রানে অলআউট হয়ে ৯ উইকেটে হেরে আরেক ম্যাচে ২ উইকেটে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে, তাকে কি করে বাজে দল বলা যায়? আবার এহেন জয়ে তেমন কোন চমকও ছিল না। কারণ বাংলাদেশ নিজের মাটিতে যথেষ্ট ভালো, তা সকলেই জানে। যেখানে ভারতের সাথে প্রথম ম্যাচেই সৌরভ গাঙ্গুলি বলেছিল, “"আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ২০% আর ইন্ডিয়ার ৮০%”," সেখানে এই কথা হয় কিভাবে? বাংলাদেশ যদি আগের মতই থাকত, তাহলে এই সম্ভাবনার হিসেব দাঁড়াত ইন্ডিয়া ৯৯% আর বাংলাদেশ ১%! পাশাপাশি ইংল্যান্ডকে হারালে তা হত এক্সিডেন্ট বা বিশাল এক আপসেট। কই, তা ত হয়নি! ইংল্যান্ডের সাংবাদিকরা বরং এটাই অনেকটা স্বাভাবিকের সাথে গ্রহণ করেছে। তাছাড়া ......


নাহ্‌, আর ফালতু বকে মনে হয় কাজ হবে না। বুঝতে পেরেছি, ইংল্যান্ডকে হারানোতে আপনার নাক উঁচু আত্মসম্মানে আঘাত লেগেছে মি. বয়কট।

তবে ইংল্যান্ডকে নিয়েও ত দেখি আপনার তেমন আশা নেই। তাদের সম্পর্কে বলেছেন যে কোয়ার্টার ফাইনালে নরম দল পড়লে তারা হেরে যেত! কি আজগুবি কথারে বাপ! পাশাপাশি অষ্ট্রেলিয়াকে নিয়েও কথা বলতে ছাড়েননি।


এই আধ পাগলা মানুষটাকে কিভাবে যে ক্রিকেট বিশ্ব সহ্য করে আমি বুঝি না। মনে হয় পাবনার চিকিৎসা লাগবে তার, নয়ত সাড়বে না!

শেষটা করি এক বাংলাদেশির প্রতিবাদ দিয়ে -

" বিশ্বনিন্দুক বয়কট (নামের কী মাহাত্ম্য, বিশ্বক্রিকেট তাকে বয়কটই করেছে) বাংলাদেশের কোনই উন্নতি দেখছেনা। না দেখারই কথা। চোখের সামনে মুষ্টিবদ্ধ হাত রাখলে হিমালয় পর্বতও দেখা যায়না। হিংসুক বয়কট নিজেকে ছাড়া আর কাউকেই খেলোয়াড় মনে করেনা যদিও প্রথম ওয়ান ডে খেলতে নেমে প্রথম বলেই আউট হয়েছিলো। সেই হলো তার ডিফেন্সের কেচ্ছা। যাহোক, আমাদের আনন্দ হলো, বয়কটের ইংল্যান্ডকে তো হারিয়েছি!! এনাফ।"


সত্যিই এনাফ!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১১ রাত ৮:৪৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×