somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মেঘবতীর গল্প...

২৮ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- বাসায় একা পেয়েছিস বলে এভাবে অত্যাচার করবি ?
- ইশ! এখন আমার দোষ সব তাই না ? তুই তুলসি পাতা?
- হুম থাক হয়েছে , আর বলতে হবে না ।
- হ্যা হ্যা ! সেটাই , বেশি কিছু তো করিই নি , শুধু ঐ একটু...
- যাহ ! বেহায়া । চুপ কর
আমি মেঘ , আর ও আমার মেঘবতী। আমাদের সম্পর্কের গভীরতা এখান থেকেই । খুনসুটি গুলো যে কখন ভালোবাসায় রুপ নিয়েছে আমার জানা ছিলো না। হয়ত মেঘবতীও জানে না । আসলে আমাদের বাস্তবিক অর্থে কোন সম্পর্কই নেই । সবার কাছে আমরা শুধু বন্ধু মাত্র। উহু , শুধু বন্ধু না হয়ত হৃদয়ের অর্ধেকটা জুড়ে ও । আমার মেঘবতী , মেঘবতীর আসল নাম নীলা । নীলা নামের সাথে কাজ গুলোও যেন ঐশ্বরিকভাবে মেলানো । সব কিছুতেই যেন নীল পছন্দ তার । যেন হিমুর রুপা’র মতন । তবে আমার কাছে “মেঘবতী” । এ নামই আমার ভালো লাগে ।
আমাদের সম্পর্কের শুরুটা একটু দুষ্টুমির মাধ্যমেই । ফেসবুকে একদিন খুজে খুজে মেঘবতীদের রিকোয়েস্ট দিচ্ছিলাম । মজার বিষয় হচ্ছে কেউই রিকোয়েষ্ট এক্সেপ্ট করেনি । শুধু নীলা বাদে । এরপর ফেসবুক থেকে ওয়াটস তারপর কথা বলার শুরু ।
প্রথম দিকে নীলা খুব ডিপ্রেসড ছিলো , তার পুরোনো প্রেমিককে নিয়ে । আমিও ছিলাম আমার পুরোনো প্রেমিকা কে নিয়ে । এককথায় দুকথায় দেখি দু’জনের বেশ মিল । আমি যেমনটাচাই ও ঠিক তেমনই , একটু কিউট , একটু দুষ্ট , মিষ্টি খুনসুটি ,বার বার জ্বালানো সবই ছিলো ওর মাঝে । নীলাও আমাকে বেশ পছন্দ করতো । হয়ত ও আমার মতোই কাউকে চেয়েছিলো ।
ফোনে কথা হবার প্রায় মাস আটেক পর ওর সাথে প্রথম সাক্ষাত । একবৃষ্টির দিনে । সাদা’র মাঝে নীল পোষাকে ওকে বেশ মানিয়ে ছিলো । ঠিক যেমনটা চেয়েছিলাম আমি । নীলক্ষেতে গিয়ে বই কিনেছিলাম সেদিন । হুমায়ুনের- “আশাবরী” । নীলা কেন যেন আরও একটু সময় থাকতে চাচ্ছিলো । যদিও বই কেনা পর্যন্ত কথা ছিলো । সময় কাটানোর জন্য ধানমন্ডি লেকে চলে যাই নীলাকে নিয়ে । হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি । আমি ভিজতে চাচ্ছিলাম না । নীলা জোর করে ভিজলো আমাকে নিয়ে ।হাত ধরে বেশ কিছুক্ষন হাটঁলাম । কাক ভেজা অবস্থায় দু’জন । রিকশা খুজছি । গন্তব্য মিরপুর । এমন সময় ব্যাচেলর অবস্থার দরুন আমার চটি জুতোর একখানা কুটুস করে ছিড়ে গেলো । একটু লজ্জা পেয়েছিলাম বটে । তবে নীলা হেসেই উড়িয়ে দিলো । অবশেষে রিকশা পেলাম। তাও এমন রিকশা যেটায় ঢাকবার জন্য কোন প্লাস্টিকের কাগজ নেই । উঠতেই হল শেষমেষ । পরে যদি না পাই এ ভেবে । আগত্যা খেয়াল করলাম নীলাকে অপরূপ লাগছে , যেন স্বর্গ থেকে স্নান করে নেমে আসা অপ্সরী। ইচ্ছে করছিলো ওর টোল পড়া গালে এখনি চুমু দিই একটা ।
- এই শুনছিস?
- হুম বল
- তোকে যদি এখন হুট করে চুমু দিই খুব রাগ করবি ?
- যাহ ! কি যে বলিস!
- না, আমি সত্যিই বলছি । তোর ঐ টোল পড়া গালে চুমু না দিতে পারলে জীবন ব্যার্থ রে...
- দুষ্টুমি করিস না তো । মানুষজন দেখবে ।
- চোখ বন্ধ কর...
- এটা কি হলো ?
- তুই তো লজ্জা পাচ্ছিলি হ্যা বলতে তাই করেই দিলাম ।
- ওরে বদমাশ রে!! তোর আজকে একদিন তো আমার একদিন

ইংরেজীতে কি যেন আছে না ? ‘’ first sight of love ‘’ অমনি কিছু একটা হয়েছিলো সেই প্রথম দেখার দিন । নীলার কিছু হয়েছিলো কিনা বুঝতে পারিনি । আমার চোখে তখন রঙ্গিন দুনিয়া ও কিভাবলো তা ভাবার সময় পাইনি । সেদিন একসাথে দুপুরে খেয়ে ওকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে এসেছিলাম । এটা ছিলো রোজকার বিনাবেতনে চাকরি । যদি বের হই , তো রাজরানীকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসতেই হবে ।
প্রণয় যেন ধীরে ধীরে ভালবাসায় রুপ নিলো । বুঝতে পারিনি । আমরা শুধু খুব ভালো বন্ধুই মনে করতাম । দু’জন দু’জনকে হয়ত ভালবাসতাম । বলিনি কখনো । রোজদিনই দকেহা যেন সন্ধ্যা বেলা চন্দ্রিমা উদ্দ্যানে সবার সাথে আড্ডা জমিয়েছি । নীলা হয়ত প্রতিদিনও কোন না কোন গান গেয়ে শোনাতো । মেঘবতীর গানের গলাও ছিলো অসাধারন । নেশা ধরিয়ে দিতো । অপার্থিব সুর ছিলো ওর গলায় । শুনেছিলাম ভালো নাচতেও পারে । কখনো দেখা হয়নি যদিও ।
আমার মেঘবতী’র গুন না থাকলে কি হয় । তবে এখনো আমার দু’হাতে যেন ওর রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলো খুজে পাই । যতদিন দেখা হয়েছে । ঠিক ততদিন দিন দু’তিনটা খামচি’র দাগ আমার দু হাত রাঙ্গিয়ে দিয়েছে । কখনো কখনো খারাপ লাগলেও কিছু বলতাম না। এ জিনিসটা আমার বেশ ভালো লাগতো । হয়ত খুব বেশি ভালবাসি বলে । খুনসুটির সাথে রোমাঞ্চ ও কম ছিলো না। দু’জনেই ভালো কথার জালে নিজেদের ফাসিঁয়ে নিতাম । আশেপাশের সব মানুষ আমারদের দেখে ঈর্ষান্বিত হতো । এতো ভালো সম্পর্ক দেখে । শুধু খারাপ লাগতো তখনই যখন নীলা ওর মন খারাপের সময় গুলোতে আমার থেকে দূরে সরে থাকতো জিজ্ঞেস করলেও বলতো না খুব একটা । এজন্য ওকে আর আমার কষ্টগুলো শুনিয়ে কখনো ওর মন খারাপের কারণ হতামনা । আর ভালো সময় গুলোতে নীলার অভিযোগ প্রায়শই যে আমি নাকি তাকে একটুও সময় দেইনা । মাঝে মাঝে খুব রাগ হলেও , মনে মনে খানিক হেসে নিতাম । নীলার বাচ্চামি গুলো আমার হৃদয়কে বেশি নাড়া দিতো । আর কথায় কথায় চলে গেলাম , বাই ফরেভার , আর কখনো কথা হবে না এগুলোতো ছিলোই । যদিও জানতাম অভিমানে কথা ওগুলো সত্যি না । শুধু এতটুকুই বলেছিলাম যে “ আমি যদি কখনো বলি যে চলে যাবো , তখন কিন্তু আমাকে আর ফেরাতে পারবি না “
অনেক দিন ছিলাম এভাবে । বেস্ট ফ্রেন্ড নাম নিয়ে । ভাবলাম এবার বলেই দেবো ভালবাসার কথা । একদিন ডেকে বলেও ফেললাম,
- আমি যে তোকে খুব ভালোবাসি এটা জানিস?
- খুব জানি তো ! এটা কি বার বার বলে বোঝাতে হবে ?
- উহু! আমি কিন্তু খুব সিরিয়াসলি বলছি ।
- হুম!
- কি হুম ? কিছু তো বল?
- আসলে দেখ আমার বাসায় আমাকে সব থেকে বেশি আদর করে । আমি আমার মা-বাবকে কষ্ট দিতে পারবো না। তোর সাথে রিলেশন করে । আর তোকেও পারবো না ।বাসায় কোনভাবেই সেইম এজ রিলেশন মেনে নিবে না । কিন্তু আমি তোকে অনেক ভালোবাসি । তোর কাধে মাথা রাখলে এতোটা শান্তি লাগে যে বলে বোঝা তে পারবো না ।
- এই বোকা! চোখে পানি কেন ?
- তুই আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবি নাতো ?
- হুম যাবতো ! যদি তুই চলে যাস তাহলে যাবো ।
- এখনো ফাজলামো !
- ভালোবাসিরে অনেক ভালোবাসি তোকে ।
- (_____) এই নে ভালবাসা ।
- ভালো দুষ্টুমি শিখেছিস । ঠোটঁ গুলো ভেজানোর ইচ্ছে হলে আগে বললেই পারতি ।
- চুপ ! একটা কথাও বলবিনা । এখন তোর কাধে মাথা রেখে আকাশ দেখবো ।

নিজেকে সব থেকে সুখীদের একজন মনে হচ্ছিলো । ভালবাসা কি এমনই হয়? অন্তরে যেন কেউ বরফ ঢেলে সুরসুরি দেয় ।

দু’জনই হুমায়ুন আহমেদের প্রায় অন্ধ ভক্ত ছিলাম । তাই ঠিক করেছিলাম যে হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিনের দিন আমি হিমু আর ও রুপা সেজে বের হবো । ওকে নিল চুড়িও কিনে দিয়েছিলাম নীল শাড়ির সাথে ম্যাচ করে পড়বার জন্য । সেদিন বেরও হয়েছিলাম আমরা হিমু আর রুপা’র সাজে । নেচেছি গেয়েছি । সাথে ছিলো হাজার খুনসুটি আর রোমন্টিকতার অপুর্ব মিশ্রণ ।
ব্যাচেলর সময়ে প্রেম করার সব থেকে বড় বাধা হচ্ছে টাকা । আবার যদি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হয় তাহলে তো কথাই নেই । মাসে শেষে টাকা ধার পাওয়া যেন অমাবস্যার চাদঁ । এমন সময় মেঘবতীর জন্মদিন ছিলো । হাজার হোক ভালবাসার মানুষ । জ্বর ছিলো কিছুদিন ডাক্তার মশাই বেশ কিছু পরীক্ষা করাতে দিয়েছিলো । তা আর করা হয় নাই । মেঘবতীর পুতুলের অনেক শখ। বিশেষ করে আদুরে টেডি বিয়ার গুলো । প্রমাণ সাইজের একটা কিনেই ফেললাম । জন্মদিনের দিন ঘন্টা খানেক আগ থেকেই ফোন হাতে নিয়ে বসে ছিলাম । যেন কেও আমার আগে উইশ না করতে পারে । পরের দিন দেখা করে টেডি বিয়ার ওর কোলে তুলে দিয়েছিলাম । আর বলেছিলাম “ ওটার ভেতর কিন্তু আমার আত্মা পুড়ে দিয়েছি । ওটাকে সব সময় কাছে রাখবি । আদর করবি । মনে হবে যেন আমিই তোর সাথে আছি ।“ ওর তখনকার তৃপ্তির লাজুক হাসি এখনো মনে পরে । প্রতিটিক্ষনে মনে পড়ে।
একদিন রিকশায় আসার সময় ওর থেকে ওর বন্ধু দের কথা শুনছিলাম । এরপর ওর পরিচিত এক বড়ভাইয়ের কথা বলল । ঐ ভাই নাকি খুব ভালো মনের মানুষ । আমার সাথে দেখা করাবে বলল। সাথে ওর স্বপ্ন ভবিষ্যতের চিন্তা সবই শুনলাম ।
বেশ কিছুদিন থেকেই ওর আমার সাথে কথা বলা বা মেসেজিং করার পরিমাণ খুব কমে গেলো । আমি অনেক একা একা অনুভব করা শুরু করলাম । জিজ্ঞেস করলে বলতো মন খারাপ । তাই একা থাকছে । আমিও বেশি জ্বালাতামনা । অনেকটা চাপা অভিমান নিয়েই দিনগুলো পার করতে শুরু করেছিলাম । দেখতে দেখতেও আমার জন্মদিনটাও চলে আসলো । ভেবেছিলাম নীলা সবার আগেই আমাকে উইশ করবে । কিন্তু তিন দিন পার হবে যাবার পরও তার আমার কথা যেন মনেই ছিলো না । অভিমানের মাত্রা তখন প্রকট । তবুও সব কিছু মেনে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম মানুষ মাত্রই ভুল । হতেই পারে এরকম ।
কখনো এতটুকু জোরে কথা বলিনি যাতে নীলা কষ্ট পায় । কখনো কোন ইচ্ছে অপুর্ণরাখিনি ওর। যখন দেখা করতে চেয়েছে যেভাবেই হোক করেছি । এমনও দিন ছিলো সারাদিন অভুক্ত ছিলাম । বাসায় ফিরে যে নাস্তা করবো তাও করা হয়নি । ওর ফোন পেয়ে ছুটে ওর কাছে চলে গিয়েছি। এতোটাই ভালবাসতাম ওকে । কখনো ভাবতেও পারতাম না এমন একটি সম্পর্ক কখনো ভেঙ্গে যেতে পারে । ওর জন্য যা যা দরকার হয় সব করার চেষ্টা করতাম । স্টাব্লিশ হয়ে ওকে বিয়ে করারও স্বপ্ন দেখতাম । আমাদের সন্তান হলে তাদের নামও ঠিক করে ফেলেছিলাম আমরা । আমাদের ভালবাসাটা এতটাই গাঢ় ছিলো ।
হঠাৎ করেই এমন অবস্থা থেকে যে সব কিছুর ধ্বংসাবশেষের ভষ্ম দেখতে হবে ভাবিনি । ভেবেছিলাম ভালোবাসা দিবসে এবার খুব বড় করে ওকে আমার ভালবাসার কথা জানাবো । বড় একটি সারপ্রাইজ দিয়ে । সব কিছু ঠিক করেও ফেলেছিলাম । রাতে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি আর প্লান বানাচ্ছি । এমন সময় নীলার মেসেজ , “ দোস্ত , I am in a relationship “ । মাথার উপরে আকাশ ভেঙ্গে পড়লো । আর চোখে ভাষতে লাগলো সেই খুনশুটি গুলো । আমিও ফিরতি মেসেজে লিখে দিয়ে দিলাম , ‘’ best of luck ‘’ . । এর পর শত খানের ফোন আর মেসেজ টোকা দিচ্ছিলো ফোনের স্ক্রীনে , কিন্তু ওগুলোর ডাকে সাড়া দেবার মতো শক্তি ছিলো না আমার । শেষ কলটি ধরেছিলাম , জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন এমন করলি?
- দেখ দোস্ত আসলে আমি তোকে শুধু বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতাম অনু কিছু না । আর আমরা সেইম এজ আমাদের রিলেশন সম্ভব না।
- তাহলে ও দিন গুলো কেন আমার এতোটা কাছে এসেছিলি ?
- তুই কাছে আসতে বাধ্য করেছিলি । আবেগ ছিল ওগুলো...
- ও আচ্ছা! উহুম ঠিক তাই তো । আমারই ভুল । চলে যাচ্ছি আমি তোর জীবন থেকে ভালো থাকিস ।
- না ! দেখ প্লিজ , তোকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না , তুই একবার দেখা কর আমার সাথে । কাল । প্লিজ...
- ওকে।
আমি সেদিন শেষ দেখা করবো ভেবেই দেখা করেছিলাম। সেই একই কথা বার বার । সেইম এজ , আবেগ , সম্ভব না কিন্তু সে আমাকে ভাল বন্ধু হিসেবে পাশে চায় । কিন্তু তা কি আর হয় । নীলা বলেছিলো ও কখনো কোন মেয়ের সাথে আমাকে শেয়ার করতে পারবেনা । আমি কোন বান্ধবীর সাথে কথা বললে হিংসায় জ্বলে যেত । আজ সেই মেয়ে নিজেই অন্য একজনের সাথে চলে যাচ্ছে । তাও সেই ছেলের সাথে যে ছেলেকে বড় ভাই হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো আমার সাথে । ও কান্না করছিলো কথা বলতে বলতে । আমি ওর কান্না কখনোই সহ্য করতে পারতাম না । বুকে জড়িয়ে নিলাম । চোখ মুছে দিলাম । আর বললাম, “ যদি কখনো কোন প্রয়োজন হয় , যদি মনে করিস আমি ছাড়া তোকে কেউ উদ্ধার করতে পারবে না সেদিন জানাস । আমি তোর পাশেই থাকবো । কিন্তু আমি তোর কাছ থেকে চিরদিনের জন্য চলে যাচ্ছি। ভালো থাকিস ‘’ । শুধু মাত্র নিজের স্বার্থে নিজের ভবিষ্যত ভালো দেখে অন্য জনের কাছে চলে গিয়েছে নীলা। ভাবতেই অবাক লাগে । হয়ত একদিন আমিও স্ট্যাব্লিশ হতে অনেক সুখে সংসার করতে পারতাম ।
এর বেশি একটা কথাও মুখ দিয়ে বের হয়নি আমার । মুহূর্তেই উঠে চলে এসেছিলাম । নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি আমি । আমি মেঘ আজ মেঘবতী থেকে অনেক দূরে চলে এসেছি । হয়ত আমার কোন ছায়াও তার মনে নেই । কিংবা আমার ভালবাসার কথা গুলোও মনে নেই । আমি অনেক ভাল আছি। মেঘ কখনো খারাপ থাকেনা। শুধু ভালো থাকার পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে বৃষ্টি হয়ে বেরিয়ে আসে ।
মেঘের চিকিৎসা চলছে । মেঘ , একজন সিজোফ্রেনীয়া রোগী । রোগটির কথা কম বেশি সবাই জানে । রোগী বাস্তব এবং কল্পনাকে এমনভাবে মিশ্রিত করে যেন বোঝার কোন উপায় নেই কোনটা বাস্তব কোনটা কল্পনা । মনের কথা গুলো প্রায় সবাইকেই এভাবে শোনাত মেঘ । হাসপাতালের অনেকেই এ কথা গুলো শুনে অভ্যস্ত । মেঘের মন গড়া কথা গুলো খুব মজার ছিলো । অনেক গুছিয়ে বলতে পারতো মেঘ । কারো মন খারাপ হলে মেঘের কাছে চলে যেত হাসপালের মানুষ । কল্পনা এবং বাস্তব মিশ্রিত কথা গুলো অনেকটা রম্য গল্প শোনালেও আলাদা চিন্তা’র পর্যায়ে নিয়ে যেত মেঘ ।যেন রুপকথার প্রেমের রাজ্যে ভাসছে কেউ। মেঘের এরকম মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারন অনেক চেষ্টা করেও কেউ বের করতে পারেনি ।
আজ মেঘের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী।মেঘের বুক সেলফের লুকোনো তাকে একটি ডায়রি পাওয়া যায়। লিখাগুলো মেঘ নিজের ডায়েরিতে খুব যত্ন করে লিখেছিলো মেঘ । যদিও বয়সের ছাপ ডায়রিতে খুব ভালোভাবেই পড়েছিলো । দীর্ঘ সাত বছর বিদেশের মানসিক উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকার পর মেঘ মারা যায় । হয়ত মেঘের মানসিক ভারসাম্যহীনতার জন্য এই ডায়েরীর ঘটনাই দায়ী । কিংবা এটাও হতে পারে মেঘের কল্পনা-বাস্তবের মিশ্রনে কোন অবাস্তবিক ঘটনা......
ভালবাসার জয় হোক......

www.facebook.com/notes/shihab-a-mamun/আমার-মেঘবতীর-গল্প/1199014216783202

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×