আমার সাথে মায়ের কোন ছবি নেই । নার্সারি'র পর থেকে মা'র সাথে হয়ত সিঙ্গেল কোন ছবি তোলা হয়নি । তিনি একটু কমই ছবি তোলেন। তাই সবার মত দিতে ইচ্ছে করলেও কেন যেন দেয়া হয় নি।
উনি এমন একজন মানুষ যার জন্য আজকের আমি । এক সময় শিক্ষকতা করতেন । আমার জন্য তার ক্যারিয়ারেরও ইতি ঘটান তিনি ।
এমনও দিন দেখেছি যে আমাকে পিটিয়ে সপ্তাহে গোটা চারেক জালি বেত ভেঙ্গে ফেলেছিলেন । আবার কান্নায়ও ভেঙ্গে পড়তে দেখেছি ।দেখেছি কিভাবে একটি সংসারকে রাঙ্গিয়ে তুলেছেন পরম মমতায় । দুই ভাই হলেও মা'র চিন্তাটা আমার জন্য একটু বেশিই । বংশের বড় ছেলে একটু এড়েঁ কিনা তাই চোখে চোখে রাখেন আর কি ।
মায়ের চিন্তাটা আমার জন্য কি রকম তার দু'টো উদাহরণ দেই-
গতকার রাতে আমাকে নিজ হাতে ভোজে বসিয়ে তিনি কি কারনে হেসেঁলে গেলেন । মিনিট পাচেঁক পর দেখি মা'র কন্ঠ, '' এই পড়তে বয়, সারাদিন কি কি করিশ , খালি ফোন ল্যাপটপ ! যা তাড়াতাড়ি যা । '' একটু অবাক না হয়ে পারলাম না । ডেকে বলার পর দেখি হাসঁছেন ।
ক্লাস নাইন এবং টেন তিনি আমাকে চার বার বলেছিলেন, তুই এবার পাশ করতে পারবি না। এবং ঠিক ঠিক আমি চারবারই পাশ করিনি । এস এস সি তে বলেছিলেন, '' তোর রেজান্ট ভালোই হবে , মন বলছে।'' ঠিক তাই হয়েছিলো । ঠিক এতোটাই চিন্তা করেন আমার জন্য।
আসলে তার চাপ একতু বেশিই । মধ্যবিত্ত পরিবারের মায়েরা তাদের সাধ্যের সবটুকু করতে চায় । কখনো এমন হয়েছে সামান্য উটকো কাটিং চুলে মারা জন্য বেধড়ক মার খেয়েছি । আবার কখনো পাশের বাড়ির জানালার গ্লাস ভেঙ্গে জরিমানা দেবার সময় আমার কাচুমাচু মুখ দেখে এতটুকুও বকেন নাই ।
মা'কে আমার বন্ধু মহলের বেশির ভাগ মানুষই ভয় পায় । রাশভারি চলনের জন্য হয়ত । আমার বাবা-মা দুই জনেই মাশআল্লাহ রাগীমানুষ । তবে মা যতটা দেখায় ঠিক ততটাও না । কিন্তু এমন ভয়ই দেখায় যে পিলে চমকে ওঠার মতো । এই পোষ্ট লিখার সময়ও দু'বার আগুন চক্ষু'র সাথে অমৃতবানী শুনিয়েছেন ।
উনিই আমার '' মা '' । আমার পরম শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার '' মা '' তার জন্য আমার সব হাজির। মা দিবসে শুভেচ্ছা জানিয়ে ছোট করব না।উনার জন্য ভালবাসা আজীবন ।
আর কিছু চাইনা, শুধু মাথার উপর বটবৃক্ষ হয়ে থেকো মা ।
অনেক ভালবাসি তোমায়
- শিহাব আল মামুন
Shihab A. Mamun
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৬ রাত ১:২৬