দেশ স্বাধীন হইবার পরের ঘটনা। মোল্লারা তখন সুতার কারবার করিত। মোকাম হইতে সুতা আনিয়া রং করিয়া তাহা গঞ্জের হাটে বিক্রি করিত। হাটের দিন সুতা বিক্রি করিবার সময় একদল লোক আসিয়া মোল্লাদের দুই ভাইকে গলা কাটিয়া হত্যা করিল। দিনে দুপুরে শতশত লোকের সম্মুখে এই ঘটনা ঘটিলেও কেউ প্রতিবাদ করিতে সাহস করিল না। ডাকাতদল নির্বিঘেœ ঘটনা ঘটাইয়া বীরদর্পে চলিয়া গেল। সেটা কি শুধুই ডাকাতির ঘটনা ছিল নাকি এর ভিতরে অন্য কিছু লুকাইয়া রহিয়াছে?
দত্তবাড়ীর রাধাকান্ত দত্ত। বিশাল বাড়ীতে পাকা দালান, আম-কাঠালের বাগান, বাড়ীর সম্মুখের নদীর ঘাটলা শানবাঁধানো। পাশেই নদীর তীরে বিশাল মঠ। অঢেল সহায়-সম্পত্তি রাখিয়া রাতের আঁধারে তাহারা দেশ ত্যাগ করিল। কেন?
সিদ্ধাবাড়ির মেলা। প্রতি বৎসর শীতকালে বর্ষার পানি যখন কমিতে কমিতে পুকুর ডোবায় ঠাই পাইত তখন এই মেলা হইত। মেলায় ভক্তদের দেওয়া চাল-ডাল-তেল-লবন-মসলা মিশাইয়া এক ধরনের খাবার রান্না করা হইত। লোকে বলিত লাবড়া। রান্না হইতো বড় বড় ডেকচিতে। রান্নার আয়োজন এত বিশাল ছিল যে রান্না করা সেইসব লাবড়া রাখিতে কোষা নৌকা-ডিঙ্গি নৌকার খোল ব্যবহার করিতে হইতো। সন্ধ্যার পর সেই লাবড়া সংগ্রহ করিতে মানুষের ঢল নামিত।
সবুজ মাঠ। মাঠের ভেতর দিয়া একদল বালক ছুটিয়া চলিয়াছে। মেলা দেখিতে যাইবে, ধামাইল উৎসব দেখিবে। দুরন্ত শৈশবে বালক মনের মেলা দেখিতে যাইবার সে উচ্ছাসের ছবি কি পাঠক মনে নাড়া দিবে?
বছু পাগলার গলায় ফাঁস দিয়া মরিবার গল্প! ঝাইকান্দার চরে ডাকাতের কবলে পড়িয়া গণি মাঝির চোখ হারানো। ঝড়ের রাত্রিতে ঘরের চালা উড়িয়া যাওয়ায় ছেলে-মেয়ের সামনে বিব্রত হওয়া দুঃখিনী মায়ের গল্প।
আরও কত কি! সব কিছু লিখিতে ইচ্ছা করে। এইসব কি পাঠক পাঠ করিবে? যুগের অতল গহবরে হারাইয়া যাইবে নাতো?
সমাপ্ত
.....