somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুরআনে প্রযুক্তি [পর্ব-০১] :: দুধ উৎপাদনের বিস্তারিত

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুরআনে প্রযুক্তি [পর্ব-০১] :: দুধ উৎপাদনের বিস্তারিত


দুধ মানুষের জন্য এক অপূর্ব নিয়ামত আধুনিক বিজ্ঞান বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যেমে বর্ণনা করছে যে, দুধে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা জমিনের উপরে অন্য কোন খাদ্যে পাওয়া যায় না। রাসূলুল্লাহ সা. যে কোন খাদ্য খাওয়ার সময় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলতেনঃ
اللهم بارك لنا فيما رزقتنا وارزقنا خيرا منه .(ابن ما جة .)
হে আল্লাহ তুমি যে রিযিক আমাদের কে দান করেছ, তাতে তুমি বরকত দাও এবং এর চেয়ে উত্তম রিজিক আমাদেরকে দান কর। (ইবনে মাজা)

আর যখন তিনি দুধ পান করতেন তখন বলতেনঃ
اللهم بارك لنا فيما رزقتنا وزدنا منه . (ابن ما جة )
হে আল্লাহ তুমি যে রিজিক আমাদেরকে দিয়েছো, তাতে তুমি বরকত দাও এবং তা তুমি আমাদেরকে বেশী বেশী দান কর।

এখানে তিনি এই দুধের চেয়ে উত্তমের কামনা করেননি। কারণ মানুষের খাদ্য তালিকায় দুধের চেয়ে উত্তম কোন খাদ্য নেই।
ডা. আলমিযা ইয়াজী বলেন - জীব বিজ্ঞানীগণ পরীক্ষা করেছেন যে, গাভী খাদ্যের মাধ্যমে যে সব প্রোটিন খায় তা হিসেব ও ওজন করেছেন এবং গাভীর থেকে যে দুধ বেরিয়ে আসে সেই দুধের প্রোটিন ও ওজন করে দেখেন যে দুধের থেকে যে প্রোটিন পাওয়া গিয়েছে তার ওজন ঐ সব প্রোটিন যা গাভী তার খাদ্যের মাধ্যমে ভক্ষণ করেছে তার চেয়ে বেশী। তাহলে প্রশ্ন দেখা দেয় যে, দুধের এই অতিরিক্ত প্রোটিন কোথা থেকে আসল।

আধুনিক বিজ্ঞান বর্ণনা করছে যে, প্রাণীর পাকস্থলিতে বেশ কিছু ক্ষুদ্র জীবাণু রয়েছে। সেই সব জীবাণু এমন খাদ্য গ্রহণ করে সেগুলোতে প্রোটিন নেই এবং সে গুলোকে প্রোটিনে রূপান্তরিত করে যা মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই দুধে মানব শরীরের প্রয়োজনীয় সব ধরনের খাদ্য উপাদান রয়েছে। তাই এই দুধ সন্তানের জন্য যেমন উপকারী তেমনি উপকারী যুবক, বৃদ্ধ সহ সকল মানুষের জন্য। আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি যে, এই দুধ কি করে সৃষ্টি হয়? এ সম্পর্কে আল্লাহতা‘আলা বলেন -
وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْأَنْعَامِ لَعِبْرَةً نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِهِ مِنْ بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خَالِصًا سَائِغًا لِلشَّارِبِينَ (سورة النحل ৬৬)
“নিশ্চয়ই চতুস্পদ প্রাণীর মধ্যেও তোমাদের জন্য শিখবার বিষয় রয়েছে। আমি তোমাদেরকে পান করাই এদের শরীর থেকে তাদের মলমূত্র ও রক্তের মধ্যবর্তী বস্তু থেকে নিঃসৃত দুধ যা পানকারীদের জন্য উপাদেয়।” (সূরা নাহল- ৬৬)

এ আয়াত সম্পর্কে ডা. মুহাম্মাদ গোলাম মুয়ায্যাম বলেন, প্রাণীর মলমূত্র ও রক্তের মধ্যবর্তী অবস্থা থেকে দুধ সৃষ্টি কথাটি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক তথ্য ভিত্তিক, যদিও বিজ্ঞান এ জ্ঞান অর্জন করেছে কুরআন নাজিলের প্রায় ১২০০ বছর পর। গরু, মহিষ, উট, ছাগল, দুম্বা ইত্যাদি দুধ প্রদান কারী প্রাণী ঘাস ও তৃণলতাদি খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে যা তাদের পরিপাক যন্ত্রে হজম হয়।

খাদ্যের পরিত্যাজ্য বস্তুগুলো মল বা গোবর হিসেবে পরিত্যক্ত হয়। গ্রহণযোগ্য বস্তুগুলো অন্ত্র থেকে রক্তে প্রবেশ করে। রক্ত শরীরের সকল জীবনকে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দ্রব্যাদি সরবরাহ করে এবং কোষ থেকে দৃষিত পদার্থ গ্রহণ করে প্রশ্বাস ও মূত্রের মাধ্যমে করে। সুতরাং পূষ্টিকর বস্তুগুলো রক্তে প্রবাহিত হয়। যে সমস্ত গ্রন্থি (যেমন দুধের বাট, পিটু, হটারী) দুধ সৃষ্টিতে অংশ গ্রহণ করে সেগুলোর জীব কোষসমূহ তাদের প্রয়োজনীয় বস্তুগুলো রক্তের মাধ্যমেই পেয়ে থাকে। এমনিভাবে দুধের মাখন, চিনি, ভিটামিন, প্রোটিন ইত্যাদি রক্ত দ্বারা সরবরাহ করা হয়। রক্তের এ বস্তুগুলো খাদ্য থেকে আসে, তা থেকে মল ও মূত্র পরিত্যক্ত হয় আর রক্ত দুধের প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করে সেসব গ্রন্থি থেকে চলে যায়।

সুতরাং মল-মুত্র ও রক্তের মধ্যবর্তী অবস্থা থেকেই দুধের সৃষ্টি হয়ে থাকে। কত সুন্দর করে এবং কত সংক্ষেপে আল্লাহ এ কুদরতের বর্ণনা দিলেন। কুরআনের এ ধরনের আয়াত বৈজ্ঞানিকদেরকে আরও গবেষণার প্রেরণা দেবে। স্মরণ রাখা প্রয়োজন এ বৈজ্ঞানিক তথ্যটি প্রায় ১৪০০ বছর পূর্বে নিরক্ষর নবীর উপর নাজিল করা কুরআনে সর্ব প্রথম উদ্ঘাটিত হয়। এমনিভাবে আল্লাহ মানুষকে বস্তুজগতে বহু বিষয়ের অর্থাৎ বিজ্ঞান সম্বন্ধে ইঙ্গিত করেছেন যা কুরআনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।

পরিমার্জনে- শাহরিয়ার আজম
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×