somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গান্ধী

০৮ ই মে, ২০০৯ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে খুব ডুমুর খেতে ইচ্ছে করে। সবুজ কঁচি ডুমুর কান্ড থেকে ছিঁড়লেই দুধের মত সাদা কষ বের হত। লবণ আর মরিচের সাথে একটু তেঁতুল মিশিয়ে সেটাই খেতাম। এখানে বাংলাদেশী কচুর লতা, কচু মূখী, লাউয়ের ডগা সব পাওয়া যায়। কিন্তু কেন যেন দোকানী আমার মনের কথাটা ধরতে পারে না। কাঁচা ডুমুর সে এখনো আমদানী শুরু করে নাই।
মনের ভেতর কাঁচা ডুমুরের অভাবে কচি ব্যাথাটা এখনো গুমরে গুমরে কাঁদে। আহা যদি পেতাম! কাঁচকী মাছ, কচুর লতি, লাউয়ের লতা, কাজী পেয়ারার থলেটা টেবিলের নীচে রাখতে রাখতে খবরের কাগজটার উপর চোখ পড়ল। অবশ্য সেটা এমন কোন দরকারী জিনিস নয় বলে আমি কখনো কিনি না। দরকারী কফির কাপে চুমুক দিয়ে কাগজে চোখ বুলাচ্ছি, সেটা দেখেই ম্যাডামের মেজাজ একটু ‘তারা’র দিকে। অবশ্য এখনও কিনিনি তাই ‘রাগ’ এখনো ‘মুদারা’র ঘরে। কাগজ কিনলে একেতো পয়সা গেল; সেটা পড়তে আবার সময় যাবে। আমি খুব দ্রুত চোখ বুলিয়ে সব দরকারী খবর পড়তে পারি না। একটু আরাম করে, মনে মনে উচ্চারণ করে পড়ি। তাতে সময় আরো বেশী লাগে; এর মধ্যে পরিচিত কেউ কিছু বললে সেটা শুনিই না, জবাব দেয়াতো দূরের কথা। অভদ্রতার চরম! ম্যাডাম এই নিয়ে বেশ বিরক্ত।
অনেকদিন আগে খবরে পড়েছিলাম দুই বাংলাদেশী গার্মেন্টস শ্রমিকা জার্মানে এসেছেন। এদেশের মানুষকে তাদের কষ্টের কথা বুঝিয়ে বলতে। রাবারের তালি দিয়ে জিন্সের হাল ফ্যাশনের প্যান্ট সেলাই করতে করতে তাদের একজনের আবার ক্যান্সার হয়েছে। সে রাজ রোগের চিকিৎসা করাতে পারবেন এমন আয় তারা করতে পারে না। কোন রকমে বেঁচে থাকা যায়, এমন তাদের রোজগার। অথচ এখানে অনেক দামে তাদের শ্রমে সেলাই করা প্যান্ট বিক্রি হচ্ছে। অবাক হয়ে তারা সেটা দেখছে!
অবশ্য এর পেছনে কাপড়, সেলাই মেশিন, ট্রান্সপোর্ট খরচ কতকিছু আছে! সে সব দেখার চোখতো আর এদের নেই। কাজেই দামতো বেশী হবেই। পুঁজি খাটানোর কথা না হয় বাদই দিলাম।
তো সেদিনের কাগজটা কিনেই পড়েছিলাম। ম্যাডামও কিছু বলেননি। বছরে এমন দুএকবার আমার ঘোড়া রোগ সহ্য করেন তিনি। আর আমাদের দেশের খবর এরা একদম ছাপে না। যদিও দৈবাৎ এমন ঘটনা ঘটে তখন সেখানে পড়তে পারব-“ট্রান্সাপারেন্সী ইন্টারন্যাশনালের দাবী অনুযায়ী বাংলাদেশ দুর্নীতিতে তৃতীয় বারের মত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান ! মেজাজ খারাপ হয়। চাপা বাজির আর জায়গা পায় না। শতকরা আশি ভাগ মুসলমানের দেশে এসব কেউ করে নাকী! আমাদের দেশে কত লোক আল্লাহর আইনে চলে! সৎ লোকের শাসনও আমরা দেখেছি। যত্তসব ফাইজলামী!
কিন্তু আজকের কাগজে তেমন কিছু নেই। একটা সুসংবাদ আছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের জন্য। সে দেশের এক বেক্কল লোক জীবনে একজোড়া চটি একটা থালা আর একটা চশমা রেখে গেছেন তার সন্তানদের জন্য। অবশ্য এই তিনটি জিনিস আমেরিকা থেকে নিলামে কিনে আনতে ব্যাঙ্গালোরের এক সফ্টয়্যার কোম্পানীর মালিককে আঠার লাখ ডলার খরচ করতে হয়েছে! যে কিনা সেই বেক্কল ভারতীয়েরই সন্তানতুল্য! ভাবলাম বাঁচা গেল। দেশের জিনিস দেশে এল! অহিংসার পরিত্যক্ত পথে হাঁটতে গিয়ে বেক্কল লোকটার জানটা গেল! আর এখন তার চশমা দিয়ে দুনিয়া দেখতে গিয়ে, তার দেশের কৃতি সন্তানেরা লাখ লাখ ডলার খরচ করছে! কপাল ভাল যে তারা অহিংসার পথে পা বাড়ায় নি! অর্থ বৈভব না কামালে এই চশমাটা কিনতে পারতো! ইশ লোকটা যদি আরো কিছু এমন জিনিস রেখে যেত!
ভারতের এটম বোমা আছে; মহাকাশেও কি যেন একটা পাঠিয়েছে। এত উন্নতির দিকে এগুতে গিয়ে ক্ষেতের ফসল ফলানো চাষীদের কথা মনে ছিল না। আকাশ থেকে খবর পাওয়া গেল- ঋণের দায়ে ভারতের লাখে লাখে কৃষক গলায় দড়ি দিয়েছে। অবশ্য ফাঁসিতে ঝোলা কৃষকের সংখ্যা বেক্কল লোকের চশমার দামের তুলনায় অনেক কম! ভাগ্যই বলতে হবে!
১৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×