somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এরেঞ্জ মেরেজ হলে ও পাত্র/পাত্রীর চাহিদা বিবেচনা করা উচিত অভিভাবকদের"এরেঞ্জ মেরেজ হলে ও পাত্র/পাত্রীর চাহিদা বিবেচনা করা উচিত অভিভাবকদের"

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"এরেঞ্জ মেরেজ হলে ও পাত্র/পাত্রীর চাহিদা বিবেচনা করা উচিত অভিভাবকদের"

অপেক্ষার প্রহর শেষ, কাংখিত সেই বাসর ঘরে কলির অবস্থান। কিন্তু অচেনা অজানা মানুষ গুলোর কথাবার্তা শুনে কলির উৎকন্ঠা আরো বেড়েই চলেছে। কেমন জানি বিদঘুটে পরিস্থিতি। তবু ও মনে মনে অপেক্ষা করছে বরের।
ঘড়ির কাটায় রাত ১২:২০ মিনিট, হঠাৎ আগমন বরের।
ঘোমটার আড়ালে আড় চোখে দেখছে মোটাসোটা একজন জলহস্তির মত দানব। কলির বুকটা ভয়ে ধুরু ধুরু করে কাপছে।
কলির পাশে বসে থাকা বরের দুইজন ভাবীর উদ্দেশ্যে এই তোরা এখানে কি করছিস,যা ঘুমাতে যা।
কথা গুলো শুনে কলির মনের ভয় আরো বেড়ে গেলো,বড়দের সাথে এমন আচরন কখনো উপলব্ধি করেনি কলি। তবে এখন থেকে প্রতিনিয়ত এমন আচরন উপলব্ধি করতে হবে।
ঘর থেকে সবাই চলে গেলো, খড়াক করে দরজার ছিটকি বন্ধ করে দিলো তার বর।
ভয়ে তরতর করে কাপছে কলি, বেসুরা সুরে আওয়াজ এলো এই তুই বসে আছিস কেন?
তোর মা বাবা কি তোকে ভদ্রতা শিখায়নি?
বাসর রাতে স্বামীর পা ছুয়ে সালাম করতে হয় জানিস না?
বেয়াদব অশিক্ষীত কোথাকার।
কলির শরীরের কাপন দ্বিগুন হয়ে গেলো,
তবু ও ভয়ে খাঠ থেকে নেমে স্বামীর পা ছুয়ে সালাম করবে ঠিক তখনি বজ্রপাতের মত বাম গালে বজ্রপাত ঘটলো।
চড় খেয়ে মাঠিতে পড়ে গিয়ে বেহুশ হয়ে গেলো, কিছুক্ষন পর যখন হুশ ফিরলো চোখ মেলে দেখতে পেলো সে মাটিতে শুয়ে আছে আর তার বর পায়চারি করছে।
কলি তার বিবাহিত বান্ধবীদের কাছে গল্প শুনতো বাসর রাত খুব রোমান্টিক হয়, কিন্তু তার বাসর রাত বজ্রপাত দিয়ে শুরু হলো।
তবু ও নিজেকে সামলে নিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি করার চেষ্টা করলো। কারন সে খুব অসহায়,যাকে দিয়ে বজ্রপাত শুরু হয়েছে জীবনের বাকি সময় তাকে নিয়েই কাটাতে হবে।
চুপচাপ খাটে বসে রইলো, চোখের পানি ঝরার আগেই চোখ মুছে নিচ্ছে। যাতে তার বর না বুঝে সে কাদছে।
এভাবে বেশ কিছুক্ষন কেটে গেলো, হঠাৎ করে তার বর তাকে ধাক্কা দিয়ে খাটে শুয়ে দিল।
কলি অচেতন অবস্থায় পড়ে রইলো খাটের এক পাশে, চোখ মেলে দেখছে চারিদিকে শুধু অন্ধকার। মনে মনে ভাবছে আমি কি ধর্ষিত হলাম নাকি রোমান্টিকতার স্বীকার হলাম।
এটাই কি বিবাহিত জীবনের আসল রুপ নাকি আমার বরের আসল রুপ?
তবু ও বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।
এভাবে চার মাস চলতে থাকলো, মা বাবা জানতে চায় স্বামীর সংসার কেমন?
কষ্টকে আড়ালে রেখে বলে হ্যা ভালোই,
কলি ভাবে যদি মন্দ বলে তাহলে মা বাবা কষ্ট পাবে,তার উপরে এত টাকা খরচ করে বিয়ে দিয়েছে। আবার দুইটি বোন ঘরে রয়েছে,যদি এই নিষ্টুরতাকে মেনে না নেয় তাহলে বোনদের গায়ে ও কলংকের দাগ লেগে যাবে।

কলির স্বামী চলে গেলো তার কর্মস্থলে,দিন যায় সপ্তাহ যায় মাস ও কেটে গেলো। কিন্তু একটি বারের মত ফোন করে জিঙ্ঘেস করলো না কলি কেমন আছো।
এদিকে কলির গর্ভের বয়স ছয় মাস, গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শের প্রয়োজন,টাকার প্রয়োজন। কিন্তু যে কেমন আছো জানতে চাচ্ছেনা সে টাকা কেমনে দেবে।
কলি বাধ্য হয়ে ফোন দিয়ে বললো টাকা না দাও তবে আমি কেমন আছি এটাতো জানার দরকার আছে তোমার।
তোমার সন্তান আমার গর্ভে তার খবর ও তো জানার দরকার আছে, আমার শরীরের অবস্থা ভালো না ডাক্তার দেখানো খুব জরুরী হয়ে গেছে।
কিছু টাকা দাও আগামী সপ্তাহে ডাক্তার দেখাবো।
প্রতিউত্তরে তার সোহাগিনী স্বামী বললো দুই হাজার টাকা দিচ্ছি ডাক্তার দেখাও,আর হ্যা ভালো কথা যে সন্তানটা প্রসব করবে সেটা যেন ছেলে হয়, না হয় তোমার খবর আছে।
মরার উপর খাড়া ঘা!!!
যত সময় যাচ্ছে সবকিছু কেমন অন্ধকার অন্ধকার লাগছে কলির।

প্রসব ব্যাথায় ছটফট করছে কলি,ঘর ভর্তি সবাই আছে কিন্তু কেউ বলছে না হসপিটাল নিয়ে যাওয়ার কথা।
অবশেষে কলির বাবা মেয়েকে হসপিটাল নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিলেন।
কিন্তু আল্লাহর অশেষ কৃপায় কলির একটি ছেলে সন্তান ভুমিষ্ট হলো।

কলির স্বামীর সংসারের ছয় বৎসর চলতেছে, আলাপচারিতায় জানতে চাইলাম ছয় বৎসর তো সংসারের হয়ে গেলো। অবশ্য এতদিনে সংসারটাকে খুব ভালো গুছিয়ে নিয়েছো।
তা এখন কেমন আছো?
এবং ভবিষ্যতে তোমার সন্তানকে নিয়ে কি পরিকল্পনা?

হ্যা সংসারের অনেক দিন কেটে গেছে,
যেমন ছিলাম তেমন আছি,কিন্তু আমার স্বামীকে নিয়ে ভেবে সময় কাঠেনা। সময় কাটে আমার সন্তানকে ভেবে,সন্তানের ভবিষ্যত ভেবে।
যদি বেশি না পারি অন্তত এস এস সি পাশ করানোর চেষ্টা করবো আমার সন্তানকে।
আর বিয়ের ব্যাপারে আমাদের চাহিদার চেয়ে সন্তানের চাহিদাকে বেশি গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করবো।
কারন আমার বাবার সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে গিয়ে আমার জীবনকে মরুভুমিতে পরিনত করেছি। আমি চাইনা আমার সন্তানের ভবিষ্যত এমন হোক।

শুধু সুন্দর মোটাসোটা হলে মন সুন্দর হয় না,
শুধু টাকা পয়সা থাকলে সংসার সুন্দর হয় না।
সংসারে সুখের জন্য থাকা চাই সুন্দর মন।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×