somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কঠিন সত্য মেনে নিয়ে নিজের ভবিষ্যতকে সু-প্রসন্ন করুন।

২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুখে থাকাই জীবনের চরম সার্থকতা নয়,
বরং কাউকে সুখে রাখতে পারাটাই হল জীবনের সবচেয়ে বড় সার্থকতা।

কিন্তু উদারচিত্তে কাউকে সবকিছু উজাড় করে দেয়াটা বোকামি ছাড়া কিছু না।
আসলে সহনশীল মানুষগুলা একটু বোকা প্রকৃতির হয়, আর সেই সুযোগটা কাজে লাগায় উৎ পেতে থাকা স্বার্থবান মানুষেরা।

সাধারনত অন্যের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার আগে নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া খুব জরুরী।
কারন অন্যের দায়িত্ব পালন করতে নিজেকে নিঃস্ব করে একদিন আপনি নিজেই অন্যের বোঝা হয়ে কারো না কারো ঘাড়ে বসে থাকতে হবে।
হয়তো তখন আপনার প্রতি কেউ দায়িত্বশীল হবে না। তিরষ্কার আর লাঞ্চনা ছাড়া হয়তো ভাগ্যে কিছু জুটবেনা।
এই তিরষ্কার লাঞ্চনা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে প্রবাসীদের কপালেই জুটে,
একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে-
একটা পরিবারের একজন সদস্য প্রবাসে কিন্তু পরিবারের বাকি সদস্যরা বেকার কমিটির সদস্যের আওতাভুক্ত।
যেমন এক ভাই প্রবাসে বাড়িতে দুই ভাই বেকার এক ভাই ভার্সিটিতে লেখাপড়া করে, আবার বিয়ের উপযুক্ত তিনটি বোন একটি বোন মাত্র প্রাইমারীতে ভর্তি হয়েছে।
মা বাবা সহ নয় জন সদস্যের সংসারে একমাত্র ভরসা একজন প্রবাসী।
একজন প্রবাসী নয়জন সদস্যের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজের জীবনকে বিসর্জন দেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না।
হ্যা দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্যবোধ আবশ্যক।
কিন্তু দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্যবোধে সম-অধিকার থাকা ও আবশ্যক।

বিপত্তি আমাদের এখানেই দায়িত্ববোধে সম অধিকার।
কিন্তু কেন নয়????
একজন মানুষ নিঃস্বার্থে নিজের জীবনকে বিপন্নের দিকে ঠেলে দিয়ে নয়জন মানুষকে সমাজে প্রতিষ্টিত করে বসবাসের উপযোগী করে দিলো, কিন্তু সেই মানুষটা যখন বয়সের ভারে রোগাক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরে গেলো তখন সে সবার কাছে অবহেলিত হয়ে বেচে থাকতে হয় বাকিটা জীবন।
সহনশীল মনোভাব তো দুরের কথা, উল্টো প্রতিহিংসার স্বীকার হতে হয় সেই নিবেদিত মানুষটাকে।
তখন প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয় পরিবারের সকলের কাছে।
যাদের জন্য নিঃস্ব হলো তারাই বলে কত টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স জমা করেছো?
শশুর বাড়িতে কত বিঘা জমি কিনেছো?
বউয়ের একাউন্টে কত টাকা ডিপোজিট আছে?

বউ বেচারি প্রশ্ন করে তোমার ভাইদেরকে প্রতিষ্টিত করেছো তারা তোমাকে কি দিচ্ছে?
সন্তানরা বলে আমাদের জন্য কি জমা করেছো?
আজ কেন আমরা অন্যের হাতপানে চেয়ে থাকবো?
চাচাত বোন মাসে ৩/৪ টা জামা কিনে,
আমাকে বছরে কয়টা জামা কিনে দিচ্ছো?
চাচাত বোন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে,
আমি কেন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তে পারবো না?
গল্প শুনেছি একসময় সংসারে অর্থ যোগান দিয়েছো তুমি,
তাহলে আজ তুমি সহ আমরা সংসারে এত অবহেলিত কেন?
কেন মায়ের সাথে সবাই রুঢ় আচরন করে?
দাদা দাদু কেন কথায় কথায় বলে আমাদেরকে সংসার থেকে পৃথক করে দিবে?
তাহলে সংসারের জন্য কি তুমি কিছু করো নাই?

নিস্তব্দতায় নিস্ফলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে আর শ্রবন করতে থাকে অবাঞ্চিত প্রশ্নগুলো।
উত্তর দেয়ার মত ভাষা তার কাছে নেই।
উত্তর দিতে পারতো যদি নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হতো। কিন্তু এখন আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই নেই।
কারন সময় ফুরিয়ে গেছে।
সময় মানুষকে কখন কোন পরিস্থিতিতে ঠেলে দেয় সেটা সময়ই ভালো জানে।
আসলে সময় বড়ই নিষ্টুর, সময় থাকতে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে না চললে কপালে দুঃখ ছাড়া কিছুই জোঠেনা।

অবশ্যই আমরা নিজেরা নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়াটা খুবই জরুরী।
নিজের ভবিষ্যতকে সুপ্রসন্ন করে অন্যের ভবিষ্যতের কান্ডারী হওয়া সমিচীন। নিজেকে স্বার্থন্বেষী পরিচয় দেওয়া সঠিক নহে, কিন্তু নিজের প্রতি দায়িত্ববান হওয়া উন্নত মানসিকতার চিন্তাধারা।
নিবেদিত মানুষগুলোকে সুখের সঙ্গী নাই বা করলে, কিন্তু দুঃখের সাগরে ঠেলে দেওয়া ঠিক নহে।
আর এই দুঃখের সাগরে ভাসমান কচুরিপানা হয় একমাত্র প্রবাসীরা।
প্রসঙ্গত প্রবাসীরা একটু বেশী আবেগ প্রবন, প্রবাসে এসে একা থেকে থেকে পরিবার পরিজনের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালবাসা বেড়ে যায়।
কিন্তু এই মাত্রাতিরিক্ত ভালবাসা প্রবাসীদের ভবিষ্যতকে সাগরের কচুরিপানা বানিয়ে তোলে।
একটা কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা।
পৃথিবীতে টাকার কাছেই সবকিছুই হার মানে।
তাই এখন আপনার টাকা আছে সবাই আপনাকে বুকে টেনে নিবে, আপনার যখন টাকা থাকবেনা তখন আপনি কেমন আছেন কেউ জিঙ্গেস করবেনা।

সুতরাং কঠিন সত্য মেনে নিয়ে নিজের ভবিষ্যতকে সু-প্রসন্ন করাই শ্রেয়।
আর যারা এই কঠিন সত্যকে মেনে নিতে কষ্ট হয় তাদের ভবিষ্যত সাগরে ভেসে থাকা কচুরিপানার মত।
প্রমানিত.............
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×