somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পারিনা জীবন তা আবার কয়েক বছর আগে নিয়ে জেতে...?

০৮ ই নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীটা এতো নিস্থুর কেন?
মানু্ষের কাছ থেকে শুধু নিতে জানে দিতে জানেনা। মানুষের জীবনে সুখ দিলেও তা কেড়ে নিতে সময় লাগে না। এমনটা হয় কেন কি কারনে???
কেউ কি তার জবাব দিতে পারবে??
মনে হয় না...
তিন বোন এক ভাই এর মধ্যে আমি ছিলাম সবার ছোট। এবং অনেক দুষ্টও। আমার বড় ছিল আমার এক মাত্র ভাই। ছোট কালে ভাইয়ার আমার ছোটখাট বিষয় নিয়ে সবসময় লেগেই থাকতাম। ভাইয়া ছিল আমার দাদার পরিবারের এক মাত্র ভাই। তাই ছিল সবার আদরের। সবাই ওকে মাথায় তুলে রাখত। ওর সব দাবি চাওয়া দাওয়া কে প্রাধান্য দেয়া হত। ওকে নিয়ে তাই আমার সবসময় হিংসাও হত। মনে হত কেন আমি ছেলে হয়ে জন্মালাম না। ভাইয়া আমার চার বছরের বড় ছিল। মনে আছে আমার সেই ছোটবেলার কথা আমি আর ভাইয়া বারান্দায় দুইজন মিলে ক্রিকেট খেলতাম। ভাইয়া বল করত আমি ব্যাট করতাম। প্রায়ই ওর সাথে ঝগড়া লেগেই থাকত। মাঝে মধ্যেতো ওর সাথে আমার মারামারিও হত। এর পর আমার দুই বোনের বিয়ে হয় গেল। বাসায় ছিলাম আব্বু আম্মু ভাইয়া আর আমি। ভাইয়া আমাকে ওর সব কথা শেয়ার করত। এর মধ্যে ভাইয়া কলেজে ওঠল আমিও ওঠলাম। একি কলেজে থাকায় এক সাথে দুই ভাইবোন আসা যাওয়া করতাম। এর পর আমার এইচ এস সি পরিক্ষা শেষ হল। আবার একদিন ওর সাথে ঝগড়া। এর পর প্রায় তিন বছর ভাইয়ার সাথে কথা হইনি। একি বাশায় থাকতাম কিন্তু ভাইয়ার সাথে কথা বলতাম না। তারপর আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। এর পর ওর সাথে কথা বলিনা। যেদিন আমার গায়ে হলুদ সেই দিন বুজলাম ভাইয়া আমাকে কত ভালবাসে। আমাকে ধরে যে ওর কান্না সে কান্না আর শেষ হয় না। বিয়ের পর যখন শশুর বাড়ি চলে আসি তখন খুব খারাপ লাগত সবার জন্য। বিয়ের ভাইয়ার সাথে আবার আমার ফ্রেন্ড এর মত সম্পর্ক হয়ে যায়।

ভাইয়া ওর নতুন নতুন বান্ধবীদের সাথে আমাকে পরিচয় করায় দিত। আর বলত ওকে তোর কেমন লাগে ? ওই মেয়েকে তোর কেমন লাগে। প্লিজ অরে ফোনে ভাবি বলে ডাকবি। এরকম সব কথাই আমার ও আমার হাসবেন্ড এর সাথে শেয়ার করত। এর পর আমার মেয়েটা হল। ভাইয়া ত রীতিমত আমার মেয়ের জন্য পাগল ছিল। আমি বাসায় যাব শুনে প্রায়ই গলির সামনে এসে দাঁড়ায় থাকত। ও আর ওর বান্ধবী মিলে আমার মেয়ের আরেকটা নাম রাখল সৃষ্টিমনি। আমার বিয়ের পর ভাইয়া আমার সাথে এমন ভাবে আবদার করত যেন ও আমার ছোট ভাই। অপি ৫০ টা টাকা দেয়না। অপি চা বানায়া দেয়না। অপি তোর হাতের নুদুলসটা খুব টেষ্ট হয় একটু রান্না করে দেয়না। তোর বাসায় দাওয়াত দিবি কবে? মাঝে মধ্যে ওর বান্ধবীদের আমার বাসায় নিয়ে আসত নাশতা খাওয়ানোর জন্য।
গত বছর ৬ই মার্চ আমি আম্মুর বাসায়। বিকালে কোথাথেকে এসে বলল অপি ২০টা টাকা দেয় রিক্সা ভাড়া দিব। দিলাম এরপর সেই রাতে আমি রাঙ্গামাটি যাযচ্ছিলাম। ভাইয়া শুনেত খুশি হল। বলল অপি তাহলে আমাকে একটা ৫০ টাকার মোবাইল কার্ড কিনে দেয়। আমি দিলাম কিনে। আমাদের বাস ছিল রাত সারে ১০টায়। আম্মুর বাসা থেকে বের হচ্ছিলাম ভাইয়া ওর রুম থেকে বের হয়ে বলল তোমরা চলে যাযচ্ছ? আমি বললাম হুম। ভাইয়া বলল সৃষ্টিমনি কই? আমি বললাম ঘুমাইগেসে। ভাইয়া বলল ও ঘুমায় ওর সাথে আর দেখা হল না। আমার কাছে তখনই যেন শুনে কেমন যানি লাগল। বাসে ওঠলাম বাস ছাড়ল। রাত সোয়া ১২ টায় আব্বু কল দিল। আমিতো ভয় পেয়ে গেলাম এত রাতে আব্বু কেন কল দিতেসে। ফোন রিসিভ করতেই আব্বু বলল তোমরা কোথায়? আমি বললাম আব্বু মনে হয় এখন কুমিল্লায়। আব্বু বলল একটা শোক সংবাদ আছে তাড়াতাড়ি ঢাকায় চলে আস। আমি বললাম কি হইসে আব্বু? আব্বু বলল তোমার ভাইয়া আর নেই......

ভাইয়া আর নেই

শুনেত বিশ্বাস হয় না।

যাকে বাসায় এই মাত্র দেখে আসলাম সে আর নেই?

এত কষ্ট
আমার একটাই ভাই
আর নেই
কার সাথে আমি ঝগড়া করব?
কাকে আমি ভাইয়া বলে ডাকব?
ভাই না থাকা যে কি কষ্টের তা আমি জানি
জানি কোনোদিনেও ভাইয়াকে ভুলতে পারবনা।
ভাইয়া তুমি যেখানেই থাক আমরা তোমাকে অনেক ভালবাসি।
এই কলিজাটা যদি একবার দেখাতে পারতাম তোমাকে কত ভালবাসি
বেচেঁ থাকতে কখনো ভুঝিনি ভাই কি জিনিস?
এখন বুজতেসি
যদি ভাইয়ার সাথে ছোটকালে ওই ঝগড়া না করতাম
ভাইয়া
ভাইয়া
তুমি শুনতে পাচ্ছ?
তোমার এই ছোট বোন তোমাকে ডাকছে
ভাইয়া তুমিকি আবার আমাদের মাঝে আসবা?
আর কখনো তোমার উপর রাগ হবনা।
তুমি আমাদের এত বড় কষ্ট দিতে পার না
তোমার জন্য আব্বু আম্মু প্রায় পাগল হয়ে গেসে
তুমিকি ভাইয়া দেখতে পাও?
তুমি যা চাবা তাই হবে ভাইয়া
শুধু একবার আস।
একবার
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:২৯
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×