অনেক দিন আগের।
"স্বপ্ন নিয়ে"
১২.০৪.২০১৪
মাইজদী।
আমি আমার পরিচয় আর কোথাও দিতে চাইনা।
এতদিন যে যে পরিচয় দিতাম তারসাথে বর্তমান
পরিস্থিতির সাথে কোনও মিল নেই। মানুষের
হাতে নাকি সময় স্বল্প। মানুষ নাকি সময় স্বল্পতার
জন্য অনেককিছুই অসমাপ্ত রেখে যায়। সময়-স্রোত
নাকি কারো জন্য অপেক্ষা করে না। কত
কি নিতি বাক্য! সবই বইয়ের পাতায় শোভন। আমার
সময় অবিরাম। বিগত এক বছর যাবত আমার সময় পুরোয়
না। সময় অফুরন্ত। আমার সময় মূল্যহীন/ ভ্যালুলেস।
আমি আমার এই সমস্ত ভ্যালুলেস টাইম ওয়েস্ট করি।
আমার স্থলে কোনও কর্মঠ মানুষ থাকলে কি করতেন!!
অনেক কিছুই, অনেক কিছুর জন্যই
নিজেকে ভালোকরে প্রস্তুত করে নিত। বর্তমান
প্রতিযোগিতার বাজারে নিজের সত্তা উপরের
বিশেষ অবস্থানে রাখার জন্য সকল কর্ম
পরিকল্পনা সম্পন্ন করতো। পারফেক্ট ম্যান!! মুখে সকল
নিতি বাক্য ঠিকই চলে, কাজের বেলায় ঠমঠম! সব
কিছুই জানি, বেশ ভালোই বুঝি কিন্তু উপলব্ধি নেই।
সবাই বলে আমি আবেগে তাড়িত। সিদ্ধান্ত গ্রহণের
ক্ষেত্রে আবেগের প্রভাব অনেক। বাস্তবিকতা নামক
স্বার্থপর এখানে তুচ্ছ। “আমার চারপাশে অসময় যখন
প্রকট, মানুষিক শক্তি লজ্জিত, ধৈর্য তখন অবান্তর,
আমার প্রশান্তি তখনও প্রশান্ত” !!! ভাগ্য
দেবী আমার কাছে এখন কুটনি বুড়ি। তার উজ্জ্বল
হাস্য এখন আমার কাছে অলীক। আসল
কথা হচ্ছে আমি বেকার। অকাজের মাতব্বুর।
অকাজকে কাজ বানিয়ে আমড়া কাঠের ঢেঁকি আমি।
আমার করার মত ডায়েরীতে কোন কাজ জমা নেই।
অনেক দিন যাবত করার মত কাজ না থাকলেও,
একটি প্রাণ(রোজ) কে কেন্দ্র করে কোনও এক নূতন
ভাবনার ভুবনে নিমজ্জিত আছি। “কত কি ভাবনা!
ভাবনা গুলো আমায় কত কি বানায়! কত কাজ করায়!
কত অনুপ্রেরণা যোগায়, সুদূরের ভবিষ্যৎ এর
হাতছানি দেয়, জীবনের লক্ষ্য(গোলgoal) নির্ধারণ
করে। কাছে ডাকে, আসে। স্বপ্নাতুর বিলাসী আমি।
বাস্তবতার জঞ্জাল আমায় ছোঁয় না। বাস্তবতায় এমন
কিছু নেই ছোঁয়ার মত। এমন যে বৃষ্টির
মাঝে আমি হাঁটছি অথচ বৃষ্টি আমায় ভেজায় না।”।
আমি স্বপ্ন দেখছি। নিশ্চিত এটা সু স্বপ্ন। অসংখ্য
বিশ্রী বাস্তব অভিজ্ঞতার ফাঁকে সুস্বপ্ন মন্দ না।
নিরঙ্কুশ অনুপ্রেরণা, জীবনকে সুন্দর সুচারু করার
প্রত্যয়। জীবনের অগ্রগতি/প্রগতিতে আত্মবিশ্বাস
যোগানোর মোক্ষম হাতিয়ার।
কখনো বা প্রতিটা নিঃশ্বাসের চালিকাশক্তি।
মাঝে মাঝে আমি নিজেই জানতে চাই, স্বপ্ন!!! তুই
কি মানুষের ভবিষ্যৎ এর দেবতা? ভালো রাখার
দেবতা? তুমি আস কোথা থেকে? তুমি অধরা কেন
থাক?
স্বপ্ন সবাই দেখে, দেখা উচিত! “স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যৎ
নির্ধারণ করা ঠিক/ ভবিষ্যৎ এর
কথা চিন্তা করে যুতসই স্বপ্ন দেখতে হবে?”।
আমাকে স্বপ্ন কে দেখায়? আমার ভবিষ্যৎ
কে নির্ধারণ করে রেখেছে? আমি জানি! আজ
আমি কোন বিষয়ে স্বপ্ন দেখব?? চিন্তা ও
মননশীলতায় যদি আমার কোথাও ভুল না থাকে মানুষ
একই স্বপ্ন বার বার তখনই দেখে যখন কোন
একটি বিষয়ের উপর জল্পনা, কল্পনা, কর্ম-
পরিকল্পনা চলতে থাকে। বিষয়টি জীবনের
সাথে গাঁথনোর জন্য সচেষ্ট হওয়া শুরু করে। আবেগের
তীব্রতা নয়, স্বপ্নাতুর বিলাসিতা নয়, বাস্তবতার
মহিমা। আত্মবিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ নিয়ে স্বপ্ন
চূড়া আরোহণের চেষ্টায় অংকুরোণ। হয়তোবা ভুল,
হয়তবা বাহ্যিক অযাচিত অনুপ্রেরণায়
আনন্দে উদ্দীপিত পরিচর্যায় অঙ্কুরিত বীজ সময়ের
ব্যবধানে কল্পনার পরিপূর্ণ উদ্ভিদ হতে চলছে।
কখনো দ্বৈত চেষ্টা, কখনো একক
অপচেষ্টা (আসলে চেষ্টা)। যথোচিত পরিচর্যার ফসল
বৃক্ষ একদিন ফল প্রদানে উপযুক্ত হবে।
একঘেঁয়ামি হয়ে গেল তাইনা! ইদানীং আমার
বিশ্রী বাস্তব জীবনের অটলতায়
স্বপ্নগুলো মহিমা হীন, কুয়াশাচ্ছন্ন, মরিচাভরণ
শ্রীহীন। বেকার মানুষ, অবশ্যই অকর্মা। জগত-
সংসার, আপন-পর একটা সময় পর সকল কিছুই
মনে হচ্ছে লবণহীন নিরসিক পন্থায়
রান্না করা খাবারের বস্তু। কোনও না কোনোও
ভাবে গলাধঃকরণ সম্ভব। তাই তো সম্ভব করে নিচ্ছি।
মিলিয়ে নিচ্ছি। না পাওয়া কিছুকে হারিয়ে ফেলার
অদ্ভুত অনুভূতি। ব্যাপারটা এমন যে আমি অন্ধ।
হাতি দেখলাম, হাইকোর্ট দেখলাম, সাদা বকের
সারি সারি উড়ে যাওয়া দেখলাম। সব কিছুকে আবার
বিনষ্ট হতে দেখায় এখন আমায় কষ্ট দিচ্ছে। হাতির
মত বড় অট্টালিকার জন্য আমার খারাপ লাগছে,
হাইকোর্ট এর মত বড়প্রাণির জন্য বুকের মাঝে বড়
মায়া জমেছে, বকের দৌড়ানোর মত
করে উড়ে যাওকে মিস করি। মানুষ জনের
একটা কথাকে আজ বড়ই অহেতুক মনে হচ্ছে, “মুদ্রার
এপিঠ ও পিঠ দুটোই আছে”। সবারই এপিঠ আসবে, ওপিঠ
ও আসবে। থাক না আমার এ পিঠ ই থাকুক, অন্য
পিঠে যাওয়ার বাসনা বাদ দিলাম। শেষ সকালের
বিরক্ত সূর্য জোর করে কষে দু’গালে চড় দিয়ে স্বপ্ন
ভঙ্গ করতে চাইল। সবই বালির বাদ হয়ে যাবে, স্বপ্ন
ভাঙ্গতে শুরু করলে। না আমি স্বপ্ন দেখব, স্বপ্ন
ভালবাসব। আমার স্বপ্ন ভাঙ্গেনি,
বিশ্বাসে এখনো চিড়ও ধরেনি। আমি বিধাতায়
বিশ্বাস করি। পাপ-পূর্ণ বোধ আমার মাঝে নেই
যে তা নয়। বললাম না উপলব্ধি কম। মানুষের স্বপ্ন
জানার জন্য আমার আগ্রহ অপ্রতুল ছিলনা। অনেক দিন
আগে কথা হয়েছিল কোন এক স্বপ্ন বিলাসিনীর
সঙ্গে। তিনি স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করতেন।
বাস্তবতা তার ভালোলাগেনা।
তিনি দুনিয়াতে বাস্তবতা নিয়ে ভাবতে আসেননি।
খুবই ভালোলাগতো তাকে(এখন তো কত কিছু যোগ হল)।
তাঁর স্বপ্নের কথা ভাবতে ভাবতে কখন
যে আমি নিজেই স্বপ্ন মায়াজালে আচ্ছন্ন হয়েছি,
খেয়াল রাখিনি।
তিনি ভার্সিটিতে প্রেসার ছিলেন তখন। এখন
যে সফোমোর হল, তা নয়। তার ছোট্ট স্বপ্ন ছিল সুন্দর
পরিপাটি সাজানো-
গোছানো একটি ভার্সিটি ক্যাম্পাস জীবন।
সবাইকে খুশি রেখে সে নিজে খুশি থাকতে খুবই পছন্দ
করে। খুববেশি প্রত্যাশা নয় বন্ধু, ভালো বন্ধু,
পরিবারের তত্তাবধানে চারটি স্টেপ সম্পূর্ণ করা।
মাত্রতো প্রথম স্টেপে। স্বপ্ন পূরণে এখনো অনেক
কিছুই, অনেক সময় বাকি। মাঝে মাঝে খুব
ইচ্ছে করে বিধাতার কাছে জানতে তার ভবিষ্যৎ, তার
স্বপ্ন পূরণ। ইশ আমার যদি ইচ্ছা পূরণের একটা যাদুর
প্রদিপ সহ যাদুর দৈত্য থাকত। অবশ্যই আমি প্রদিপ-
দৈত্যর মালিকানা তাকে হস্তান্তর করে দিতাম।
স্বপ্ন বিলাসিনীর স্বপ্নাতুর স্বপ্নের জগত সবই তার
বাস্তবে চলে আসত। দেন সব কিছু ঠিকঠাক। আমি শুধু
একটি ইচ্ছে পোষণ করতাম, মন্দ ভাগ্যের ব্যর্থ স্বপ্নের
মাঝে কখনোই সে যাতে আমায় খুঁজে না পায়।
প্রয়জনে আমি উপযুক্ত
পরিবেশে হারিয়ে যেতে দ্বিধা করবোনা,
ক্ষতি কি সেতো দেখলনা, জানলনা। এইবার
আমি দূর্গম নির্জন পাহাড়ের কাছে গিয়ে দেখলাম
তাদের অটলতা ভাব। যুগের পর যুগ কালের সাক্ষ্যি,
জমিনের খুঁটি। ধরণীকে তারা খুটির মতই
ধরে রেখেছে। কত মহান! আমি তো শুধুই পাহাড়
দেখছি; পর্বত, পর্বত মালা কেমন? তাদের
কে যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কত মহান। সেই মহান
সত্তার কাছে আমি আজ সনির্বদ্ধ আবেদন কারি,
তিনি(স্বপ্ন বিলাসিনীর) যেন সব সময় স্বপ্ন
নিয়ে থাকতে পারে। হে মহান সত্তা তাকে অনেক
অনেক স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা দিন। স্বপ্ন বিলাসিনীর
স্বপ্ন গুলো বাস্তবতায় পরিণত করে দিন।
তাকে প্রিয়জনদের সাথে হাসিখুসি রাখবেন সর্বদা।
নশ্বর পৃথিবীতে তাকে স্মরণীয় করে রাখবেন।
তারপর ও আপনি স্বপ্ন দেখবেন, আমৃত্যু স্বপ্ন দেখবেন।
আমি জানি স্বপ্ন মানুষের জীবনকে অনেক অনেক
সুন্দর করতে সহায়তা করে। স্বপ্ন দেখা কখনো মিস
করবেননা। কারণ স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেলে মানুষ স্বপ্ন
দেখাতে ভুলে যায়, অনুপ্রানিত করতে ভুলে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৩২