somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিল্কসিটির পথে পথে ....... রাজশাহী ( ছবিব্লগ )

১০ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



২০০৪ সালে জানুয়ারি মাসের শীতের এক সকালে গিয়ে প্রথম পৌছাই রাজশাহীতে । বাস থেকে নেমে ভেবেছিলাম বিভাগীয় শহর নিশ্চয় অনেক কোলাহল , রাস্তায় ভীড় লেগেই থাকবে , অথচ অবাক হয়ে গেলাম এসবের কিছুই নেই এ শহরে । কী সুন্দর নীরবতা , ছিমছাম শান্ত এক শহর । এ শহরের বেশির ভাগ মানুষই যেন নম্র ভদ্র শান্তিপ্রিয় । এরপর দীর্ঘ ছয়বছর থেকেছি এ শহরে , কিন্তু একবারের জন্যও মনে হয়নি এ শহর আমার নয় । মন খারাপ হলেই গিয়েছি পদ্মার পাড়ে , উঠেছি নৌকায় বা বসে বসে দেখেছি মৃত পদ্মার ক্ষয়ে যাওয়া শরীরটা । এত ভালো লাগা মিশে থাকা শহরটি এবং সেখানকার সরল মানুষগুলোর জন্য সবসময় আমার শুভকামনা থাকবে । প্রিয় এ শহরটিকে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম ছবিতে ছবিতে



পদ্মা নদী


রাতের পদ্মা



পুঠিয়া রাজবাড়ী



জিয়া পার্কের গেট







পদ্মার পাড়ের প্রাচীন বটগাছ





রাজশাহীর গজা এবং খাজা এবং জিলাপি






নির্মানাধীন পদ্মা পাড়ের পার্ক







একদিন পদ্মার এক নদী বন্দর রামপুর-বুয়ালিয়া কত মানুষের ভিড়ে গম গম করতো। উত্তর বঙ্গের প্রায় সব জায়গা থেকে কত না লোক এসে জড় হতো এই বন্দরে। নৌকার পর নৌকা বোঝাই হয়ে চালান যেত নীল আর কাঁচা রেশম। সমৃদ্ধির সেই যুগে মুনাফা করার জন্য তাই হাজির হয়ে গিয়েছিল ওলন্দাজ সওদাগররা। এখনও বড়কুঠির অট্টালিকা তার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিংবদন্তি আছে এই পদ্মা পাড়েই ভয়ংকর দর্শন কুমিরের পিঠে আসীন হয়ে এই শহরে প্রথম পা রেখেছিলেন শাহ মখদুম রুপোষ। এসেছিলেন তুরকান শাহ। দরগা পাড়ায় তার মাজার ঘিরে এখনও ওরশ হয়। ইতিহাসের ভুলে যাওয়া, মুছে যাওয়া অক্ষরের বিপরীতে এই সব কিংবদন্তি ধরে রেখেছে সেই সব মানুষের স্মৃতি, যারা তাঁদের জীবনের প্রখর আলোতে আশপাশ আলোকিত করে তুলেছিলেন। ক্রমে এই বন্দরটিকে কেন্দ্রে রেখে বেড়ে উঠতে শুরু করলো বসতি। নাটোর, দিঘাপাতিয়া আর পুঠিয়ার জমিদারদের পাশাপাশি নাম না জানা শত শত মানুষ ঘর তুলেছিল এই বসতিতে। পদ্মার প্রমত্ত স্রোতের সাথে লড়াই করে টিকে থাকা এই নাম না জানা মানুষগুলোই ছিল রাজশাহীর প্রথম অধিবাসী।









পদ্মার উত্তাল মূর্তি যেমন রুজি-রুটি জুগিয়েছে তেমনি অকস্মাৎ ছোবল দিতেও পিছ পা হয়নি। পদ্মার গ্রাসে কত ঘর, কত পাড়া বিলুপ্ত হয়েগেছে তার হিসেব নেই। এখনকার সাহেব বাজার সংলগ্ন সাহেবগঞ্জ একদা এরকম ভাবেই হারিয়ে গেছে পদ্মার গর্ভে। তবু এই নদীর সাথে রাজশাহীর মানুষের আত্মীয়তা। এখন সেই উত্তাল রূপ আর নেই। বর্ষার কয়েকটা মাস বাদ দিলে আদিগন্ত বালুচরের ধু ধু শূণ্যতা একদার প্রমত্ত পদ্মার অশরীরি দীর্ঘশ্বাস ফেলতে থাকে। তবু কি এক আকর্ষনে মানুষ এখনও ছুটে আসে নদীর কাছে। হয়তো নদীই টানে। এখন আর পদ্মায় সেই ব্যবসা-বানিজ্য নেই, রুজি-রুটির সম্পর্কও নেই। তবু কিন্তু পদ্মা আছে। পদ্মার পাড়ে গিয়ে বসার ইচ্ছেটা আছে। বন্ধুদের সাথে উত্তাল আড্ডা আছে নদীর ধারে। মন উদাস হেঁটে বেড়ানোর জন্যও আছে এই নদী। আর আছে বুকের গহীন কন্দরে লুকিয়ে থাকা এই নদীর ছলাচ্ছল শব্দ। শহর ছেড়ে, দেশ ছেড়ে গেছেন যারা তাদের বুকে এখনও তোলপাড় তোলে এই নদী।




মাজার







রাজশাহীর নাটক পাড়া হিসেবে পরিচিত এই মঞ্চ






বরেন্দ্র জাদুঘর , দেশের প্রথম জাদুঘর



বড়পুকুড়







পুনর্ভবা নদী , রহন পুর









শহরে এরকম অনেক পুরানো স্হাপনা খুজে পাবেন



রাজশাহীর ভাষা সৈনিকদের সম্মানে নির্মিত সৌধ



মানচিত্র



বর্তমানে টিকে থাকা শহরের একমাত্র সিনেমা হল



ভদ্রা মোড়



রাজশাহীর বিখ্যাত ঢোপকল , এগুলো পানি খাওয়ার কাজে ব্যবহার হতো



এমন ঘোড়ার গাড়িও চোখে পড়বে মাঝেমাঝে




রাজশাহীর আম

এ ছবিগুলো শুধু আমার একার তোলা নয় , বিভিন্ন সময়ে তোলা এই ছবি গুলো দিয়ে সাহায্য করেছেন বন্ধু ,
শুভ্র সামসুদ্দোহা
মিরাজ কামরান
ইমতিয়াজ আবেদিন
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৪৮
৩২টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×