somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুজুগে বাংগালি আর ড: ইউনুসের সমালোচনা!

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাংলাদেশে কিছু লোক আছে যারা কিছু না বুঝেই পাব্লিক সেন্টিমেন্টের সাথে মাথা দুলাতে শুরু করে, কিন্তু ভিতরটা তলায় দেখে না!

ওহ ভুলেই গিয়েছিলাম এই জন্যে বাঙ্গালীকে বলে "হুজুগে বাঙ্গালী", খেয়াল করবেন কিন্তু কোন জাতিকেই কিন্তু এই শব্দে ভুষিত করা হয়ে না, শুধুমাত্র বাঙ্গালী কেই।

প্রমান চান এই নির্মম সত্যের?

আরে আপনি গত ৬ মাসের ফেসবুক দেখলেই প্রমান পেয়ে যাবেন! যা কিছু নিয়ে ঘটনা হয়েছে, সেইটা নিয়েই পাব্লিক হুজুগে ফাল পাড়সে! পজিটিভ ঘটনা মূহুর্তে হয়ে গেছে নেগেটিভ! সবার চোখের মনি হয়ে গেছে জাতীয় শত্রু!

আমি যেটা বুঝি ডঃ ইউনুস কে নিয়ে যে সমালোচনা সেটাও এই হুজুগে বাঙ্গালীর চিলে কান নিয়েছে টাইপ কর্মতৎপরতার ফল। দেশের যেই অংশ ডঃ ইউনুসের সমালোচনা করে, আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি সেই অংশ কোনদিন গ্রামীন ব্যাংক কি করেছে তা নিজে দেখা নাই। তাদের বৃহৎ অংশ গ্রামেই যায় নাই! তারা এমন কি জানে না হাট কি বা পানি সেচা কি বা কাকে বলে! কিন্তু তারা ফেসবুকের সামনে বসে থেকে দেশ উদ্ধার করে ফেলে, একজন স্কলারকে তুলাধুনা করে ফেলে যেনো তারা নিজেরা কোন MIT বা Harvard গ্রাজুয়েট! প্রকৃত পক্ষে তাদের কারো কারো মার্কশীট পাব্লিকের সামনে আনার মত নয়, কেউ কেউ তো ভার্সিটিতে পা ই রাখতে পারে নাই! অথচ আমার পর্যবেক্ষন বলছে, যারা দেশের বাইরে আছে বা বাংলাদেশী স্কলার তারা সর্বদা ডঃ ইউনুস কে খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখে, হয়তো তারা জানেন একেকটা একাডেমিক ক্রেষ্ট কত কষ্ট করে, কত রিসার্চ, থিসিস জমা দিয়ে নিয়ে আসতে হয়। এতো আর দেশের চিপা গলির প্রাইভেট ভার্সিটি না, যে সেমিষ্টার ফী টা যোগাড় হলেই সার্টিফিকেট দিয়ে দিবে বা রাজনৈতিক ক্যাডার হলেই ফর্ম ফিলাপ করতে দিবে!

বাংলাদেশে ঋন ব্যবস্থা খুবই আগোছালো একটা ব্যাপার। এই ব্যপারটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া ও তৃনমূল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলো গ্রামীন ব্যাংক। আপনি যে কোন ব্যাংকের সাথে, বিশেষত সরকারী ব্যাংকের সাথে তুলনা করুন, হাজারে হাজার ঋন খেলাপীর ভারে এত ন্যুজ্ব, অথচ গ্রামীন ব্যাংকের ঋনখেলাপী গ্রাহক যথেষ্টই কম! হ্যাঁ বলতে পারেন এরা পাওনা আদায় যথেষ্টই কঠোর, কিন্তু বিপরীত দিকটা কিন্তু কেউ দেখে না! গ্রামীন ব্যাংক থেকে কিন্তু ঋন পাওয়া তুলনা মূলক সহজ, এখন সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আপনি ঋন নিবেন, কিন্তু তা পরিশোধ না করে হাউজি খেলে বেড়াবেন, তা তো হয় না! প্রত্যেকটি কর্মেরই প্রতিফল আছে তাই না?বেশ কিছুদিন আগে আমি একটি ছেলে কথা জেনেছিলাম, সে কৃতজ্ঞ কারন তার বিদেশ যাবার অর্থ দিয়েছিলো গ্রামীন ব্যাংক, খুবই অল্প সময়ে। একবার ভাবুন তো কোন কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে এই অর্থ নিতে হলে আপনাকে ঠিক কত গুলো কাগজ দিতে হতো, সাথে কত গ্যারান্টি?

ফেসবুকে Arif R Hossain ভাই একটা কথা বলেছেন, খুবই সত্যি কথা, সেটা হলো "“খালি পেটে, দেশপ্রেম হয় না”। আমি স্বীকার করি গ্রামীন ব্যাংক কোন দাতা সংস্থা না, কিন্তু তাদের তো প্রতিষ্ঠান চালাতে হচ্ছে। তারা দেশের তৃনমূল পর্যায়ে কাজ করছে, মানুষের স্বনির্ভরতার জন্য কাজ করছে,আর এই পর্যায়ে তারা এসেছে ডঃ ইউনুসের দক্ষ পরিচালনায়। আজ ১ বছরে মাথায় সরকার গ্রামীন ব্যাংক ভেঙ্গে ১৯ টুকরা করছে, একবার ভাবুন তাহলে গত বিশ বছরে সরকার একে কয় টুকরা করতো?

আমদের সমস্যা হলো, আমদের যখনই প্রয়োজন ফুরায়ে যায় আমরা যে কোন ব্যাক্তিকেই আস্তাকুরে ছুড়ে ফেলতে খুবই পারদর্শী! যুগে যুগেই সেই পারদর্শীতা আমরা দেখিয়ে এসেছি, এখন এই মনোভাব থেকে আমদের বের হয়ে আসা দরকার। যদি না পারি, তাহলে আমরা নিজের দায়ী করাও সুযোগ পাবো না! তার আগেই ইতিহাস পুরা বাংলাদেশকেই আস্তাকূঁড়ে ঠাই দিবে!
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×