somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এখনি ভাবার সময়, বেশি দেরি হয়ে যাবার আগে।

১০ ই মে, ২০১৩ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১, মাদ্রাসার ছেলেরা ( যারা কোরআন পড়ছে এবং হেফজ করছে অথবা কোরআন -এ তাফসির ) তাদেরকে আমাদের বাংলাদেশে অর্থনৈতিক একটা মাপকাঠিতে মাপার চিন্তা ভাবনা অনেকেই করছেন যা ইদানিং আমিও ভাবছিলাম। এখানে আমার কিছু ভাবনা রয়েছে।
• যেসব শিক্ষক বাংলা বা ইংরেজি পড়াচ্ছেন তারা উৎপাদন ভিত্তিক কোনও খাতে কি জড়িত আছেন , অবশ্যই না, বরং আমি জীবনে আমি যত শিক্ষকদের কাছে পরেছি( স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়) সবাই একটা বিষয় পড়ানোর জন্য এত টাকা নিতেন ( একসাথে এক ব্যাচ এ ৩০ জন ) সপ্তাহে তিন দিন দের ঘণ্টা করে প্রতি ক্লাস। এভাবে সকাল বিকাল তিনটা ব্যাচ তিন দিন , বাকি তিনটা ব্যাচ বাকি তিন দিনে। তিন তিরিশে নব্বই হাজার করে ছয় ব্যাচে এক লাখ আশি হাজার। কলেজ এর বেতনের কথা বাদ দিলাম। আমার এই হিসাব কোন কল্পিত হিসাব নয়, গভ ল্যাবরেটরি , ঢাকা কলেজ, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সিটি কলেজ ইত্যাদির এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করুন, উত্তর পেয়ে যাবেন। একবার ভাবুন দুই লাখ টাকা খুব সহজেই পকেটস্থ, বাংলাদেশে ব্যবসা বাদে আর এই পরিমান টাকা মাসে কামানোর চাকরি খুবই কম সংখ্যক। এরা উৎপাদন কাজে অংশগ্রহণ করছে না কিন্তু টাকার অঙ্কটা একবার বিবেচনা করুন। পৃথিবীর আর কোন দেশে এই ভাবে বাড়তি পড়িয়ে টাকা কামানোর সুযোগ বা নিয়ম আছে কি? থাকলে জানতে চাই। শিক্ষকদের উপর পুরোপুরি সম্মান রেখেই আমি আজ বলছি সব বাবা মা কি সমানভাবে টাকার যোগান দিতে পারে? এরকম উদাহরন বেশি যেখানে বাবা যা ইনকাম করছে তা দিচ্ছে তার চাইতে দশ গুন বেশি টাকা কামানো তার সন্তানের শিক্ষককে। আমি স্কুল এ থাকতে দেখেছি শিক্ষকদেরকে মাসিক বেতনের টাকার জন্য আমার সহপাঠীদের বেত দিয়ে মারতে- যাক সেসব কথা, তাদের সেই মার আমাদের জন্য আশীর্বাদ বলেই আমি এখনও ভাবি। আল্লাহ তাদের ভাল রাখুন সুস্থ রাখুন। কিছু প্রাইমারি স্কুল ছাড়া এখন আর সেই অনেক দিন আগের পড়া পণ্ডিত মশাইদের জীবন নেই যে নিজের বেতন তুলনা করেছিল এক সাহেবের তিন পা ওয়ালা কুকুরের সাথে। ইংরেজি মাধ্যম বাদই দিলাম যেগুলো বাংলা ইংলিশ মিলানো স্কুল সেখানেও এটা সিউর লেখাপড়া এখন আর বাংলালিংক দামে নাই!

• একজন কোরআনে হাফেজ কত টাকা বেতনে সপ্তাহে ছয় দিন কোরআন শিক্ষা দিয়ে থাকেন বাসায় এসে, তা আর এখানে আমি আলোচনা করব না । আমার প্রশ্ন এখানে নয়, আমার কথা হচ্ছে , ইংরেজি শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে মাদ্রাসার শিক্ষার জন্য, খুব ভাল কথা, কিন্তু তারা যাতে এটা শিখে কোন কাজে লাগতে পারে সেজন্য – এখানেই আমার আপত্তি, তারা কি কাজ করবে, তারা শুধু শিক্ষক থাকুক, যেমন রয়েছে আমাদের বাংলা ইংরেজির অনেক শিক্ষক, এবং তাদের বেতন আরও ভাল করা হউক – আরও অনেকে সেক্ষেত্রে পড়তে চাইবেন, এছাড়া যেহেতু এটা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, ইসলামের ইতিহাস এবং আরবি ভাষা সম্পর্কিত আরও কিছু বিষয় রাখা হউক মুল কারিকুলামের পাশাপাশি । এতে ইসলাম সম্পর্কে আমাদের এই প্রজন্মের যে বোঝার কমতি তা দূর হবে এবং একটা সমতা বিধান হবে, মাদরাসা শিক্ষাকে আরও উন্নত করা হউক কিন্তু তাদেরকে আলো ছড়াতে তৈরি করা হতে পারে। সবাই কি নৌকা টানে, কারও না কারোর তো আলো জ্বালাতে হয়, পথ দেখাতে হয়, তারা হতে পারেন আমাদের পাঞ্জেরী।

• যারা কোরআনে হাফেজ, তাদের প্রতিনিয়ত এটা চর্চা করতে হয় , পড়তে হয়, যারা তাফসির সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ তাদেরও লেখাপড়া করতে হয় এবং তা অনেক। এই কাজ বাদ দিয়ে যদি তারা অফিস আদালতে কাজ শুরু করেন , তারা কি তাদের শিক্ষা ধরে রাখতে পারবেন, এক্ষেত্রে এটা ডান বাম কিছুই হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এখন অতিমাত্রায় উৎসাহী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য, কোথায় তাদের নিজেদের লেখাপড়া , কোথায় গবেষণা। মানি ইজ ম্যাটার , ডিয়ার। এখন পড়াশুনার মান কোথায় নেমেছে এসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া) তা আমরা জানি।

• ইংরেজি একটা ভাষা মাত্র, এটা শিখে আরেকজনকে নাক সিটকানোর কিছু নাই, আমরা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল তাই আমরা আরেকজনের ভাষা শিখছি। ,কোরিয়া , জাপান ফ্রান্স বা সাউথ আমেরিকায় যাইয়া ইংরেজি বলেন,টের পাইবেন। ভাষা শিখা দরকার প্রয়োজনে, এটা শিখে মানসিক উন্নতি হয় না , মানসিক উন্নতির জন্য মূল্যবোধের উন্নতির দরকার যার জন্য জানা প্রয়োজন নিজেকে ??

• সময় এখন আরেকজনকে বোঝার , তাকে তাচ্ছিল্য করা নয়, বোঝার চেষ্টা করুন তাকে , তার কাজকে , তার মূল্যবোধকে, তার শিক্ষাকে , এখনই ভাবুন , আপনার এবং আরেকজনের লক্ষ্য কি ভাবুন। এখন ক্রান্তিকাল , হুট করে আরেকজনকে গালি না দিয়ে , বোঝার চেষ্টা করা উচিত। আমাদের সময় খুব কম, এত এত প্রতিযোগিতার মাঝে পরে মাঝে মাঝে কি মনে হয় না সব অনর্থক, মনে হয় না সোনালি ডানার চিল হয়ে ধানসিঁড়ি নদীটির তীরে উড়ে বেড়ানোই আমার জীবনের উদ্দেশ্য, এত ছোট জীবনে অনেক বেশি কিছু কি আপনি শেষ করতে পারেন !!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×