somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্দোলনের ভাষা যদি তীব্র হয়, তবে তার কারণও তীব্র—উপেক্ষা, অসাম্য এবং অবহেলা

১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কোনো দাবিই শাসকগোষ্ঠী সাধারণত নিরবে মেনে নেয় না। সব দাবি হুট করে মেনে নিতে হয়ও না। মেনে নেয়ার প্রয়োজনও পড়ে না, যদি না সেই দাবি একটি বড় পরিসরে প্রতিবাদের রূপ নেয়, যদি না তার পেছনে থাকে মানুষের সম্মিলিত চাপ, যন্ত্রণার দীর্ঘ ইতিহাস, কিংবা একটি বৈষম্যের দলিল থাকে।

শোষিত, বঞ্চিত মানুষের দাবি তখনই গর্জে ওঠে যখন সেই দাবি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত হয়, অস্বীকার করা হয়, কিংবা খাটো করে দেখা হয়। তখন সেই দাবি আর কেবলই চাহিদা থাকে না—তা হয়ে ওঠে আত্মমর্যাদার প্রশ্ন, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, কিংবা কখনো কখনো অস্তিত্বের প্রশ্ন। সেই দিক থেকে বলতে গেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিছক একটি প্রশাসনিক জটিলতার বিরুদ্ধে ক্ষণিকের প্রতিক্রিয়া নয়—এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

জগন্নাথের এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায়ের ক্ষমতা কাঠামোর বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিচ্ছেন না; তারা চাচ্ছেন ন্যায্য অধিকার, মানসম্মত পরিবেশ, এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা।

সুতরাং, যখন দাবি বৈষম্যের বিরুদ্ধে হয়, যখন মানুষ নিজেকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করতে থাকে, তখন সেই দাবির ভাষা ঝাঁঝালো হতেই পারে। সেটি যদি উচ্চকণ্ঠ হয়, তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। বরং সেটিই তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য—দাবি জানানো, প্রতিবাদ করা, এবং সমাধানের পথ খোঁজা। সঙ্গে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার দুঃখপ্রকাশও আন্দোলনের সৌন্দর্য।

জগন্নাথের এই আন্দোলন তাই কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নয়; এটি বৃহত্তর অর্থে আমাদের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামো, পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গিরও এক জোরালো প্রশ্নচিহ্ন। এই আন্দোলনের ভাষা যদি তীব্র হয়, তবে তার কারণও তীব্র—উপেক্ষা, অসাম্য এবং অবহেলা।

মনে রাখা দরকার একই আইনে জগন্নাথ, কুমিল্লা ও কবি নজরুলের মতো তিনটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। ২৭(৪) নামে একটা কালো ধারা ছিলো। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কখনোই মানানসই না। সেটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির জন্যই রহিত হয়।

কোনো দাবিই শাসকগোষ্ঠী সাধারণত নিরবে মেনে নেয় না। সব দাবি হুট করে মেনে নিতে হয়ও না। মেনে নেয়ার প্রয়োজনও পড়ে না, যদি না সেই দাবি একটি বড় পরিসরে প্রতিবাদের রূপ নেয়, যদি না তার পেছনে থাকে মানুষের সম্মিলিত চাপ, যন্ত্রণার দীর্ঘ ইতিহাস, কিংবা একটি বৈষম্যের দলিল থাকে।

শোষিত, বঞ্চিত মানুষের দাবি তখনই গর্জে ওঠে যখন সেই দাবি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত হয়, অস্বীকার করা হয়, কিংবা খাটো করে দেখা হয়। তখন সেই দাবি আর কেবলই চাহিদা থাকে না—তা হয়ে ওঠে আত্মমর্যাদার প্রশ্ন, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন, কিংবা কখনো কখনো অস্তিত্বের প্রশ্ন। সেই দিক থেকে বলতে গেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিছক একটি প্রশাসনিক জটিলতার বিরুদ্ধে ক্ষণিকের প্রতিক্রিয়া নয়—এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

জগন্নাথের এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায়ের ক্ষমতা কাঠামোর বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিচ্ছেন না; তারা চাচ্ছেন ন্যায্য অধিকার, মানসম্মত পরিবেশ, এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা।

সুতরাং, যখন দাবি বৈষম্যের বিরুদ্ধে হয়, যখন মানুষ নিজেকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করতে থাকে, তখন সেই দাবির ভাষা ঝাঁঝালো হতেই পারে। সেটি যদি উচ্চকণ্ঠ হয়, তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। বরং সেটিই তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য—দাবি জানানো, প্রতিবাদ করা, এবং সমাধানের পথ খোঁজা। সঙ্গে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার দুঃখপ্রকাশও আন্দোলনের সৌন্দর্য।

জগন্নাথের এই আন্দোলন তাই কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নয়; এটি বৃহত্তর অর্থে আমাদের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামো, পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গিরও এক জোরালো প্রশ্নচিহ্ন। এই আন্দোলনের ভাষা যদি তীব্র হয়, তবে তার কারণও তীব্র—উপেক্ষা, অসাম্য এবং অবহেলা।

মনে রাখা দরকার একই আইনে জগন্নাথ, কুমিল্লা ও কবি নজরুলের মতো তিনটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। ২৭(৪) নামে একটা কালো ধারা ছিলো। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কখনোই মানানসই না। সেটা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির জন্যই রহিত হয়।



ছবি: সৈয়দ জাকির হোসেন



সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:১৮
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×