স্যুপের পেয়ালা থেকে ধুমায়িত সুবাস আসছিল। জানতে পারলাম ইউরোপ থেকে পাঠিয়েছে আমাদের এক আত্মীয়। সবাই মজা করে খাচ্ছে। পেয়ালা সামনে নিয়ে হঠাৎ মনে হল মুরগির গোস্ত থাকতে পারে। কাফেরদের হাতে জবাই করা মুরগি। আল্লাহর নামে জবাই করেনি। মুহূর্তে বিষ মনে হল সুবাসিত স্যুপ। আমাকে বলা হল এগুলোর মধ্যে ফ্লেভার দেয়া হয়, মুরগির গোস্ত থাকে না। প্যাকেট দেখতে চাইলাম। উভয় পিঠে চামড়া ছাড়ানো মুরগির ছবি। ফিরিয়ে দিলাম স্যুপের বাটি। লোকজন মনঃক্ষুন্ন হল কিনা জানি না। তবে আল্লাহ তায়ালা খুশি হয়েছেন। বিষ থেকে আমার শরীর বেঁচে গেছে। লোভে পড়ে যদি খেয়ে ফেলতাম তাহলে এ বিষ বের করার জন্য কত বছর আগুনে পোড়াতে হত!! সাথে লোভের শাস্তি পেতে হত। সাথে আল্লাহ তায়ালার হুকুমকে অমান্য করার শাস্তি। আর যদি মানুষ কি মনে করবে এটা ভাবতাম তাহলে শিরকের শাস্তি হত। একবাটি স্যুপ আমার ইহকাল পরকাল দুটাই নষ্ট করে ফেলত। ইহকালে লোভের কাছে বন্দী হয়ে থাকতাম। পাশ্চাত্য কাফেরদের কাছে নৈতিকভাবে বন্দী হয়ে থাকতাম। তারা জেনে যেত মুসলমানরা সামান্য স্যুপের কাছে ঈমান বিক্রী করে দেয়। এখন জানবে সব মুসলমান একরকম নয়। যাদেরকে স্যুপ দিয়ে কাবু করা যাবে না তাদের জন্য অন্য পরিকল্পনা নিবে। কি সে পরিকল্পনা তা জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম - আল্লাহ তায়ালার প্রতি ভয় ও মহব্বত নিয়ে।
আসুন কুরআন শরীফের কিছু মর্মার্থ অধ্যয়ন করিঃ
"শয়তান আল্লাহ তায়ালার উদ্দেশ্যে চ্যলেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ঃ আপনি যদি আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত অবকাশ দান করেন তবে আমি আদমের বংশধরদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ছাড়া অধিকাংশকেই আমার বশিভূত করে ফেলব।
আল্লাহ তায়ালা উত্তর দেনঃ চলে যাও তাদের মাঝে যারা তোমার অনুসরণ করবে। তবে নিশ্চিত যে তোমাদের শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম।
আল্লাহ তায়ালা তার প্রকৃত বান্দাদের আশ্বস্ত করেনঃ আমার প্রকৃত বান্দাদের ওপর শয়তানের কোন ক্ষমতাই নেই।
আল্লাহ তায়ালা অতঃপর মানবজাতিকে সাবধান করেনঃ হে আদম সন্তান! শয়তান যেন তোমাদের ফেতনায় না ফেলে, যেমনিভাবে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করে এনেছিল।"
(সূরা বাকারার ২৭ নং আয়াত ও সূরা বনী ইসরাঈলের ৬১-৬৫ নং আয়াত ও আরো অন্যান্য আয়াতের বক্তব্য অনুসরণে)
এক নিষিদ্ধ ফল খেয়ে আমাদের মাতা-পিতাকে জান্নাত থেকে বের হতে হয়েছিল। এক বাটি হারাম স্যুপ খেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে না জানি আমার কত বছর দেরী হয়ে যেত!! আল্লাহ তায়ালা হেফাজত করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ!!