ছোট বেলায় আমাদের "মডেল ইস্কুলে" (পোশাকি নাম ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ) জুনিয়র/সিনিয়র উইং মিলিয়ে পাঁচটি হোস্টেল ছিলো (এখনো আছে সম্ভবত)। পাঁচ মনীষীর নামে পাঁচটি হাউজ - কুদরত-ই-খুদা, জয়নুল আবেদীন, ফজলুল হক, নজরুল ইসলাম আর লালন শাহ হাউজ। ক্লাস ফোরে পড়ি - সব মনীষীর অবদান কিছু না কিছু জানা থাকলেও লালন শাহ কে বা তিনি কী করেছেন, সেসব কিছু জানতাম না, জানার ইচ্ছেও ছিলো না। এই লোকের নামে কেন হোস্টেল করতে হবে? (তার থেকে দেশের প্রেসিডেন্ট এরশাদের নামে হোস্টেল থাকলেই তো ভালো!!!) নামগুলো যিনি বা যারাই রাখুন, হয়তো চেয়েছিলেন ছেলেদের চরিত্রে তাঁদের প্রভাব পড়বে। ধীরে ধীরে প্রভাব পড়েছিলো হয়তো। মুগ্ধ বিস্ময়ে তার গান শুনেছি, তাকে জেনেছি অনেক বড় হয়ে। মনে হয়েছে, এইতো আমার ঐশ্বর্য্য! এইতো আমার একান্ত নিজস্বতা। আমাকে যদি সুযোগ দাও সেই পাঁচ মহীষীর একজনের সঙ্গলাভের, আমি অবলীলায় লালন বেছে নিতাম।
ফাস্ট ফরোয়ার্ড অনেক কয়েকটা বছর। ভাস্কর্য নিয়ে অনেক নাটক হলো। সরকারের মাথা নত করলো। কেন করলো কিছুটা আন্দাজ করতে পারি। পুরোপুরি দোষ দেই না। মিনার দাঁড়িয়ে গেলেও অবাক হবো না। যারা বলেছেন আমাদের দেশে এটি অপচয় ছাড়া কিছু নয়, তারা কোন সরল অংকে মিনারটা জাস্টিফাই করছেন জানার বড় ইচ্ছা। বহুদূর থেকে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলা ছাড়া কিছু করতে পারছি না। তবে ভাস্কর্য থাকুক আর না থাকুক লালন জীবিত আছেন। নিযুত হৃতস্পন্দনে তিনি জীবিত থাকবেন। কোন **বিমানবন্দর গোলচত্বর মুর্তি প্রতিরোধ কমিটি** সেই লালন দড়ি দিয়ে টেনে নামাতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১০:০০