somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একদিন খাগড়াছড়িতে [ছবি ব্লগ]

২৬ শে জুলাই, ২০১০ রাত ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


৩৬ ঘন্টায় একদমই ঘুমাই নাই। ট্রেকিং আর ভয়াবহ এক জার্নির পর শরীর একটু রেস্ট চাচ্ছিলো। সারাদিন আজ ঝিমানোর উপর ছিলাম, বাসায় এসে যেই না ঘুমাতে গেলাম ওমনি ঘুম গায়েব হয়ে গেল। অনেকক্ষন এই পাশ ঐ পাশ করেও ঘুম আসলো না। বিরক্ত হয়েই তাই লিখতে বসে গেলাম...।
গত ১৫দিন ধরে শুধু দৌড়ের উপর আছি। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে বান্দারবানে একটি ব্যর্থ অভিযানের পর মনোবল অনেক ভেঙে পড়েছিল। বাংলাদেশ আর্মির সাথে সামান্য কথা কাটাকাটির ফলে বান্দারবানের আলিকদম অভিযান থেকে মাঝ পথেই আমাকে ফেরত চলে আসতে হয়। ২ মাস ধরে এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, সব মাঠে মারা গেল। এর জন্য আমাকে চরম মূল্যও দিতে হয়েছে, এই কাহিনী টা পরে অন্য আরেকদিন বলব (সফল অভিযানের পর)। বান্দারবনের নতুন কোন ছবি আপাতত দেখাতে পারছি না, কেননা এক আর্মি অফিসার আমার মেমোরী কার্ড বুটের নীচে পিষে ফেলছিল।
মন মেজাজ খুব খারাপ ছিল এই কয়েকদিন। হঠাত করেই খাগড়াছড়ি যাওয়ার ডাক পাই। খাগড়াছড়ি আগেও একবার গেয়েছিলাম, কিন্তু এবারের ট্রিপের একটি নতুন বেপার ছিল আমি এবার একজন গাইড হিসেবে গিয়েছিলাম। টাকা তো লাগেই নি, উলটা বিনা খরচে কয়েকদিন ঘুরাঘুরি করা যাবে, তা আর না করি নাই। বেরিয়ে পড়লাম পাহাড়ের পথে
খাগড়াছড়ির পাহাড় গুলো ছোট ছোট। শহরটি অবস্থিত পাহাড় দিয়ে ঘেরা একটি বিশাল উপত্যকায়। বান্দারবান আর রাঙামাটির তুলনায় একটু কম উন্নত আর মানুষ জন বেশ কম। ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির সরাসরি বাস সার্ভিস আছে। প্রায় সব কয়টি পরিবহনের-ই বাস আছে। ভাড়া নিবে মাত্র ৩০০টাকা। খাগড়াছড়ির রাস্তায় নাকি বেশ ডাকাতি হয়, তাই সকাল হবার আগে আপনি খাগড়াছড়ি পৌছাতে পারবেন না। বাস থেকে নামে যাবেন “রিসা ঝড়না”। এখান থেকে আপনাকে প্রায় ২ কিলোমিটারের মত হাটতে হবে।এবার গিয়ে দেখলাম আমাদের সরকার বাহাদুর এখানে কিছু কাজ করেছে (কাজ তো করে নাই, জায়গা টা কে পুরা নষ্ট করে দিসে। শহর থেকে পালাতে মানুষ পাহাড়ে আসে একান্তই প্রকৃতির টানে। সেই প্রকৃতির মাঝে যদি ইট-সুরকির সিড়ি, রেলিং, রাস্তা দিয়ে ঘরে ফেল্লে মেজাজ ঠিক রাখা মুসকিল। অনেকেই বলে এসব করা হয় পর্যটক দের আকর্ষন করার জন্য। তারা যেন সহজেই এসব জায়গা ঘুরতে পারেন আর নোংরা করতে পারেন। আমার মনে হয় প্রকৃতির দূর্গমতাকে জয় না করে এসব জায়গায় ঘুরতে যাবার আমাদের কোনই অধিকার নেই। প্রকৃতিকে নষ্ট করার কোন অধিকার নেই আমাদের। আমাদের এমন পর্যটকদের কোন প্রয়োজন নেই যারা সিড়ি দিয়ে পাহাড়ী ঝর্নায় নেমে লাক্স সাবান দিয়ে শরীর ডলবে, চিপস এর খোসা ভাসিয়ে দেবে, নিজের বাপের সম্পত্তি ভেবে জায়গায় জায়গায় জ্বলন্ত সিগারেটের বাড ফেলে দেবে। আগের বার বনের মধ্য দিয়ে ট্রেক করে যেই থ্রিল টা পেয়েছিলাম সেটা এবার পাই নি। আর পাওয়া সম্ভব ও না। পুরো এরিয়া টাই এখন কৃত্রিম কৃত্রিম লাগে।ঘুমের অভাবে মেজাজ খারাপ তাই মনের ক্ষোভ টা লেখে ফেললাম...)

রিসাং ফলস এর পথে ১

রিসাং ঝর্না থেকে ঝিড়ি বয়ে যাচ্ছে

রিসাং ফলস এর পথে ২

দূর থেকে রিসাং ফলস

রিসাং ফলস

প্রায় ২০ ফুটের মত এই slope থেকে স্লাইড ক্রা যায়। বেপার টা কিন্তু অনেক ই রিস্কি। হাত-পা ভেংগে যেতে পারে। এমনকি পাথরের সাথে মাথা বাড়ি খেয়ে আপনি মারা ও যেতে পারেন। তবুও চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী।

রিসাং ঝর্নার থেকে মেইন রোডে ৫ কিমি হাইকিং করে গেলেই আপনি আলু টিলায় পৌছে যাবেন। এখানেও সরকার পর্যটকদের সুবিধার্থে বেশ কিছু ব্যবস্থা করে রেখেছে। আলু টিলা সম্ভবত খাগড়াছড়ির সবচেয়ে উচু পাহাড়। এখান থেকে পুরো শহর টাই দেখা যায়।

আলুটিলা পাহাড় থেকে খাগড়াছড়ি

পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় মেঘেদের অভিমান, এখনি কেঁদে দেবে

আলু টিলার সেই বিখ্যাত সুড়ঙ্গ, সামনে গেলে এখন ও হাত-পা ছমছম করে।

সুড়ঙ্গে ঢুকার আগে জ্বালিয়ে নিলাম হাতের মশাল

নিচে ঠান্ডা পানির স্রোত, ছমছমে পরিবেশ আর অজানা ভয়

বাদুঁরের রাজ্যে আমাদের অনুপ্রবেশ

চিঁ চিঁ শব্দে ভয় পেয়ে আমাদের পলায়ন

ঐ দূরে দেখা যায় আলোর সন্ধান

সুড়ঙ্গের শেষ মাথায় পৌছে গেছি

ফেরার পথে মেঘেদের অঝোর কান্না....।

একদিন রাঙামাটিতে [ছবি ব্লগ]- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:০৬
৫৪টি মন্তব্য ৫৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×