somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিলেটের স্বর্গ বিছনাকান্দি

৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ভ্রমন তারিখ : ১৪ই আগস্ট ২০১৫
যাত্রা পথ : রাতারগুল - হাদারপার বাজার(মাইক্রো বাস) , হাদারপার বাজার - বিছনাকান্দি (ট্রলার)




এই সময়ের সিলেট এর আকর্ষনিয় জায়গাগুলোর মধ্যে বিছনাকান্দি উল্যেখ যোগ্য । প্রকৃতির আপন লীলাখেলায় মেতে আছে বিছনাকান্দি। বন্ধুরা অনেকেই ঘুরে এসেছে বিছনাকান্দি । আমাদের ভ্রমন লিষ্ট থেকেও তাই বাদ পরলনা ।অবসরে বেড়াবার আদর্শ জায়গা এটি। অপার সৌন্দর্যের জলপাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি! দৃষ্টির শেষ সীমানা পর্যন্ত রয়েছে শুধু পাথর আর পাহাড়।



মাইক্র করে রাতারগুল থেকে চলে আসলাম হাদারপার বাজার - সময় লাগলো ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট । হাদারপার বাজার থেকে হেটেও বিছনাকান্দি যাওয়া যায় , মাঝে ১০ টাকায় নৌকা পারাপার । কিন্তু আমরা ১৬০০ টাকায় ঘাটে থাকা একমাত্র ট্রলারটি ভারা করে বিছনাকান্দি আসলাম (সাধারনত আপ-ডাউন ভাড়া ৪০০-৫০০ টাকা, পরে বুঝতে পারলাম হেটে আসাই ভাল ছিল), দেখতে পেলাম গোয়াইন নদী থেকে সিমানার ওপারের পাহাড় থেকে ঝরে পরছে ৮/১০ টি ঝরনা । এমন দৃশ্য আমি আগে কখনও দেখিনি । আকাশে ওনেক বেশি মেঘ থাকায় , ঝরনাগুলো ছিল অনেক প্রানবন্ত। সবুজ পাহাড় বেয়ে ঝরে পরা ঝরনাগুল প্রকৃতিকে করে দিলো আরো বেশি স্নিগ্ধ এবং মনোরম । ৩০ মিনিট এ মনোরম দৃশ্য দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম সপ্নের বিছনাকান্দি। দুর থেকে চোখে পরলো শত শত মানুষের ভির । তখনই বুঝেগিয়েছি কাছ থেকে কতনা সুন্দর হবে বিছনাকান্দি।



(ইদানিং পর্যটক বেশি দেখে নৌকার কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে নৌকা ভাড়া বেশি নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে ১০০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত চাইতে পারে। তাই উঠবার সময় দামাদামি করে উঠবেন, কারণ হাদার বাজার থেকে বিছনাকান্দির দূরত্ব খুব একটা বেশি না। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যেতে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগে।)



ঘাটে ট্রলার বিড়ার সাথে সাথে লাফিয়ে পরি বিছনাকান্দির বালিতে ।সামনে চোখে পড়ল অসংখ্য পাথর, মনে হচ্ছিল - এটি যেন পাথরের বিছানা।ছুটে চললাম পাহাড়ের মাঝদিয়ে বয়ে আসা পানির দিকে। খুবই সাবধানতার সাথে অনেক গুল পাথর পেরিয়ে একদম শেষ প্রান্তে চলে গেলাম । যেখানে মানুষের কোলাহল কম । ইতোমধ্যে ইন্ডিয়ার সিমানায় চলে এসেছি সোবাই । কে দেখে সিমানার লড়াই , আমরা বেস্ত গা ভিজানোতে । মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার শীতল পানিতে পা ফেললেই মনে হবে পৃথিবীর সব শান্তি যেন এখানে।



প্রবল বেগে বয়ে আসা শীতল পানি আমাদের শরীরও মন কে স্তব্দ করে দিল । গা ভাসিয়ে প্রকৃতির নিরব সৌন্দর্য উপভোগ করলাম অনেকটা সময় ধরে।এ যেন এক অপূর্ব সৌন্দর্য, যা নিমিষেই আপনার ক্লান্তি দূর করতে বাধ্য। এর পর আমি এবং জুয়েল ভাই যা করেছি , দয়া করে আপনারা কেও করার চেস্টা করবেন না । আমরা দুজন পার হয়ে গেলাম প্রবল বেগে বয়ে আসা জলধারা। পানির নিচে থাকা পাথরের সাথে ধাক্কা লেগে ছিলে গেছে হাত পায়ের অনেক খানি। ফেরত আসটা ছিল আর অনেক কঠিন । স্রোতেরে বেগ ছিল আরো প্রখর । ২০১৪ সালে আমিয়াখুম ঘুরে আসার অভিঘ্যতা ছিল বলেই এ সাহস নিয়েছি । যাই হোক ফিরে এসে অনেক ক্লান্ত হয়ে পরলাম । ঘরিতে সময় তখন ৪ টা । ভ্রাম্যমান হোটেল গুলোতে খাবার প্রয় শেষ । ৫০ টাকা করে ডিম দিয়ে ভাত , কেও কেও খেলো ছোলা বিড়িয়ানি (সুধু সিলেটে পাওয়া যায়)। খাওয়া দাওয়া শেষে ট্রলার করে হাদারপার ফিরে আসতে ঘরি বলে দিল , এখন সময় বিকেল ৫টা । যেতে হবে পাং থু মাই - সময় লাগবে প্রায় ২ ঘন্টা । ৫ টা ১৫ মিনিটে রওয়ানা হলাম পাং থু মাই এর উদ্দ্যেশ্যে ।








(যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সিলেটে আপনি ট্রেনে বা বাসে করে যেতে পারেন। সিলেট শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে রিজার্ভ করা সিএনজি নিয়ে জেতে হবে হাদার বাজার, ভাড়া নেবে বড়জোর ৫০০ টাকা। সিলেটের আম্বরখানা থেকেও যাওয়া যায় আলাদাভাবে। সেখানে প্রতি সিএনজিতে চারজন করে নেয়া হয় হাদার বাজার পর্যন্ত। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মত। হাদার বাজার নেমে নৌকা ঠিক করতে হবে বিছনাকান্দি পর্যন্ত। ভাড়া নেবে ৪০০-৫০০ টাকা আপ ডাউন। তবে স্থানীয়রা)

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
১৬টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইরান ইসরাইলের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ আর আমাদের সুন্নী-শিয়া মুমিন, অ-মুমিন কড়চা।

লিখেছেন আফলাতুন হায়দার চৌধুরী, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

(ছবি: © আল জাযীরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক)

শ্রদ্ধেয় ব্লগার সামিউল ইসলাম বাবু'র স্বাগতম ইরান পোষ্টটিতে কয়েকটি কমেন্ট দেখে এই পোষ্ট টি লিখতে বাধ্য হলাম।
আমি গরীব মানুষ, লেখতে পারিনা। তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯




আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতী যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য, নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দিয়েছি। এখানে মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান চাকমা মারমা তথা উপজাতীরা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপমহাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×