হাজারও মানুষের স্বপ্ন- নিজের একটি ফ্ল্যাট থাকবে। ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে জাল কাগজপত্রের খপ্পরে অসংখ্য মানুষের জন্য সেই স্বপ্ন পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে
সঞ্চয়ের টাকা খুইয়ে এখন তারা দিশেহারা। প্রতিনিয়ত চক্কর কাটছেন থানার বারান্দায়। বলছিলাম আইকন গ্রুপের কথিত মালিক প্রতারক নুরু হুদার কথা। অত্যান্ত সুকৌশলে সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। বাদ পড়েনি সরকারি চাকরিজীবী, দেশী ও বিদেশী ব্যাংক কর্মকর্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি চাকরিজীবী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থাকেন প্রধান টার্গেটে। প্রথমে প্লট দেখিয়ে নন জুডিসিয়ারি স্ট্যাম্পে চুক্তি করে। এরপর দাম কষাকষির পালা। দাম ঠিক হওয়ার পর টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট বা প্লট দেওয়া নিয়ে শুরু হয় নানা টালবাহানা। শেষমেশ মামলা ও নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভুক্তভোগীর উপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। দেওয়া হয় প্রাণনাশের হুমকি। নিজেরদের প্রাণ রক্ষা করতে আর কোন উপায় অন্তর না পেয়ে বাধ্য হয় চেপে যেতে।
এখানেই শেষ নয়। গেল বছর ৫জানুয়ারি “রূপগঞ্জে আবাসন কোম্পানির বিরুদ্ধে জমি মালিকদের ঝাড়ু মিছিল”এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে ঢাকা টাইমস। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পশি মৌজার গোয়ালপাড়া এলাকায় আইকন সিটির বিরুদ্ধে জমি না কিনেই বালু ভরাট করে জমি দখল করে আইকন গ্রুপের এমডি নুরুল হুদা। এর প্রতিবাদ করেন স্থানীয় জমি মালিকরা। তারা দাবি করেন, পূর্বাচল ২নং সেক্টরের পাশে তাদের ফসলি জমিতে আইকন প্রতিষ্ঠানের নামে এর কথিত মালিক নুরুল হুদা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনি জোর করে বালু ভরাট করে নেয়। পরে ওই জমি নামেমাত্র মূল্যে কিনে কিংবা জালিয়াতি করে আত্নসাত করে। আবার জমি মালিকদের তাদের নিজের জমিতে কাজ করতে নামতে দেয় হয় না। জমিতে কাজ করতে গেলে হামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। প্রতিবাদ করলে উল্টো জমির মালিকদের বিরুদ্ধেই মিথ্যে অভিযোগ ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
নিজের শ্বশুরবাড়ী নাটরও বাদ পড়েনি এই প্রতারকের হাত থেকে। উচ্চ লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে শেয়ার ও ফ্ল্যাট কেনার প্রস্থাব দিয়ে সুকৌশলে হাতিয়ে নেয় অর্ধকোটি টাকা। এর প্রতিবাদে নাটরে ২০২২ সালের ২৫ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে প্রতারিত ৭ ভুক্তভোগী। এছাড়া গুরুদাসপুর উপজেলার এক ডজন ভুক্তভোগী রয়েছেন এই তালিকায়। জানা যায়, পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম উপজেলার বামিহাল গ্রামের সামসুদ্দোহা হাজীর ছেলে প্রকৌশলী নূরুল হুদা তাদের এলাকার জামাই। এরই সূত্র ধরে তার শাশুড়িও স্ত্রীর মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে এলাকার মানুষকে ডেভোলোপার কোম্পানী আইকন গ্রুপে উচ্চ লাভে শেয়ার ও ফ্ল্যাট কেনার প্রস্তাব দেয়। তাদের এ প্রস্তাবে সরল বিশ্বাসে নিজেদের জমিজমা, সহায় সম্বল বিক্রি করে টাকা তুলে দেয় নুরুল হুদার হাতে।
সুনিদৃষ্ট সময় ফুরিয়ে গেলেও তাদের লভ্যাংশ বা ফ্ল্যাট কিছুই দেয়নি হুদা। প্রথম দিকে নানা কথা দিয়ে সময় ক্ষেপন করলেও এখন তার সাথে আর কোন যোগাযোগই করতে পারছেন না ভুক্তভোগীরা। তার অফিসে গেলেও দেখা মেলেনা তার।
প্রায় ৩’শ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্নসাৎ করে সেই টাকা বিদেশে পাচার করেছে সে। এর সাথে তার পুরো পরিবার সরাসরি যুক্ত রয়েছে বলে একাধিক সূত্রের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অনুসন্ধানকালে আরও জানা যায়, গেল ছয় মাসে ১৩ বারেরও বেশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাই ও আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন হুদা। ধারণা করা হচ্ছে, আত্নসাৎ করা প্রায় ৩’শ কোটি টাকা সেখানেই পাচার করেছে সে। এছাড়া গোপন গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, দেশের টাকা পাচার করে আমেরিকাতেও টাকার পাহাড় জমিয়েছে হুদা।
প্রতারণার কৌশল বদলে এখন সে একই জমি বারবার দেখিয়ে মানুষের থেকে টাকা নিয়ে ফেরার হয়ে যাচ্ছে। এই প্রতারণার বিষয়ে ঢাকার একাধিক ডিসি অফিসে জমা পড়েছে অসংখ্য অভিযোগ। এ কথা জানতে পেরে অতি গোপনে গা ঢাকা দিয়েছে সে। একাধীক গোয়েন্দা সংস্থা তার সন্ধান অব্যাহত রেখেছে।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ছাত্রজীবনে শিবিরের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন নুরুল হুদা। কোম্পানি শুরুর পর গত ১২ বছর ধরে কোম্পানির আয় ব্যায়ের কোন হিসেব দেয় না বলে কোম্পানি সূত্র জানিয়েছে।
তারা আরও জানায়, অন্যান্য ডাইরেক্টরদের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে সকল অর্থ তুলে নেয় কোম্পানির জয়েন্ট একাউন্ট থেকে। যার সুস্পষ্ট তথ্য প্রমান আছে
https://www.facebook.com/mn.huda.585
#আইকন #নুরুল #হুদা #আইকন_গ্রুপ #icon #nurul_huda #nurul #huda
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৪৬