somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি ছিল?" - এক অর্বাচীন বালকের জিজ্ঞাস্য।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" এই ধারণা বিক্রয় করিয়া কতক মনুষ্য বাজার মাত করিয়া রাখেন। এই ব্লগটাকেও তাহারা মাত করিয়া রাখিয়াছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক, বাহক ও লালনকারী বলিয়া নিজদিগকে প্রকাশ করিতে উহারা কোনরূপ শংশয় করেননা। ইহা নিঃসন্দেহে একটি মহত্‌ কর্ম। আমরা উহাদিগকে এরূপ কর্মে লাগিয়া থাকিবার জন্য সাধুবাদ জ্ঞাপন করি। ব্লগ-লিখন যে একটি ইন্টারনেট শিল্প তাহা উহাদের কল্যাণে এই ব্লগ সাইটে নতুন মাত্রা লাভ করিয়াছে।

যাহা হউক, আমি অদ্য পর্যন্ত "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" কি তাহা বুঝিতে সক্ষম হইয়া উঠিতে পারি নাই। ইহার মূল কারন ব্যক্তিগত ভাবে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করিতে পারি নাই এবং উহা দেখিবার সামর্থও আমার হয় নাই। আর যাহারা সর্বদা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরি করিয়া থাকেন তাহারাও কখনো এই চেতনার কথাটা উন্মুক্ত করিয়া বলিয়া দেন নাই। উহারা সব সময় "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" বাগরীতিটি ব্যবহার করিয়া থাকেন। কিন্তু চেতনাটি কি ছিল তাহা বলিয়া আমাদিগের অজ্ঞতা দূর করিবার চেষ্টা করেন নাই।

ব্যক্তিগতভাবে এই অর্বাচীন বালক কিছু মুক্তিযোদ্ধাকে দেখিবার সৌভাগ্য অর্জন করিতে পারিয়াছে। বড় হইবার পর একদিন শুনিলাম আমাদিগের গ্রামের একলোক মুক্তিযোদ্ধা। দরিদ্র মনুষ্যটি অন্যদের ক্ষেত্রে শ্রমিকের কর্ম করিয়া কোনরূপে জীবিকা নির্বাহ করিয়া থাকে। তাঁহাকে কদাপিও নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলিয়া পরিচয় দিতে আমি দেখি নাই। তাহার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা শুনিবারও সুযোগ হয় নাই। ইহা ছাড়াও বড় হইবার পর আরো জানিলাম আমাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক এবং আমাদিগের দূর সম্পর্কের ভগিনীপতিও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দলপতি ছিলেন। তাঁহাকেও আমি কখনো মুক্তিযুদ্ধের কোন চেতনার কথা বলিতে কদাপি শুনিতে পাই নাই। আমার মাতার ৪ জন পিসতুতো ভাই যুদ্ধপূর্ব কালে ইস্ট-বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক ছিলেন যাহারা যুদ্ধ শুরু হইতেই মুক্তিযোদ্ধাদের দলে ভিরিয়া গিয়াছিলেন। ইহাদেরকেও আমি কদাপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলিতে শুনিতে পাই নাই। ইহারা যে কেহ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাহাও আমি অবগত হইয়াছি তখন যখন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িতে শুরু করিয়াছি। আরেকবার এক মুক্তিযোদ্ধার গৃহসঙ্গী (হাউস মেট) হইবার সৌভাগ্য হইয়াছিল যিনি আহসান উল্লাহ্‌ কারিগরি কলেজ (বর্তমানকালের বুয়েট) হইতে পাশ করা প্রকৌশলী। তবলীগ জামাআতের সাথে থাকিয়া লম্বা শশ্রু ধারণ করিয়াছেন বলিয়া মুক্তিযুদ্ধকালে মাতৃগর্ভেও আসেন নাই এমন কিছু "মুক্তিযোদ্ধা" কর্তৃক অপমানিত হইয়াছিলেন। এই ভদ্রলোকও এই অর্বাচীনকে কদাপি বলেন নাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি ছিল। স্বদেশের বাহিরে আসিয়া আরেক মুক্তিযোদ্ধার সাথে পরিচিত হইলাম যিনি মসজিদের নামাজের আহবানকারী। এই ভদ্রলোক, যাহাকে আমরা চাচা বলিয়া সম্বোধন করি, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তাহা আমি কষ্মিনকালেও কল্পনা করিতে পারি নাই। একদিন একজন ভ্রাতা জানাইলেন আমাদিগের চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। চাচার প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ ছিল তাহা আরো বাড়িয়া গেল। চাচার সহিত বাক্যালাপ করিয়া জানিলাম যে তিনি মেজর রফিকের সেক্টরে যুদ্ধ করিয়াছেন। আর চাচা আমাদের "শেখ মুজিব" বলিতে পাগল। চাচাকে আমি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম "কিসের লাগিয়া আপনারা যুদ্ধ করিয়াছিলেন?" তিনি একখানা উত্তর দিয়াছিলেন, যাহা আমি আপাতত পাঠকদিগকে জানাইতেছিনা? তবে কোন বিশেষ চেতনার কথা চাচা আমাকে জানাইতে অপারগ হইয়াছিলেন।

তাই অদ্য "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" বণিকদিগের কাছে এই অর্বাচীন বালকের জানিবার ইচ্ছা, "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" বলিতে আপনারা প্রকৃতই কি বুঝাইয়া থাকেন? অনুগ্রহপূর্বক প্রকৃত অর্থটা আমাদিগকে জানাইয়া বাধিত করিবেন, যাহাতে আমাদিগের অর্বাচীনতা দূরীভূত হইয়া যায়, আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরাও সমুদ্ভাসিত হইয়া উঠিতে পারি।

যাহারা মন্তব্য করিবেন তাহাদের জন্য দ্রষ্টব্যঃ "মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" এই ধারণাটার সংজ্ঞাই শুধু মন্তব্যে প্রদান করিবেন। অন্যকিছু লিখিলে তাহা মুছিয়া ফেলিতে বাধ্য হইব।
বিজয়ের এই মাসে মুক্তিযুদ্ধ বণিকরা খুব সরব থাকেন। আশা করি তাহারা আমাদিগকে "মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা" সম্পর্কে অবগত করাইয়া বাধিত করিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১০:২৫
৬১টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতিশ্রুতি দাও

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯

প্রতিশ্রুতি দাও
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব হয়নি
প্রতিশ্রুতি কেউ দেয়নি
ভালোবাসা খুব দরকার
কিন্তু তা খুব দুর্লভ!
তোমার প্রীতি খুব প্রয়োজন
ঠিক আমারও চাই এখন!
যদি মনোমত, পছন্দ হই
প্রতিশ্রুতি দাও, সাড়া দাও।
বাগানে অজস্র ফুল ফোটে
সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাস্টিসের পক্ষে আছি, মবের পক্ষে নই!

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

ব্লগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কি চিরকাল বিদেশি শক্তির ক্রীড়নক হয়েই থাকবে? আপনার কি মনে হয়?

লিখেছেন গেঁয়ো ভূত, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:১৭

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বাস্তবতায় কোনো দেশই পুরোপুরি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, বিশেষত যখন দেশটি ভূকৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা বাংলাদেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের শবে বরাতের দিন গুলো সব বদলে যাচ্ছে....

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৪

যখন ছোট ছিলাম তখন শবে ই বরাত এলে আমাদের বাসায় বাসায় একটা উৎসবের মত অবস্থা হত। ঈদের আগের উৎসব এই দিন দিয়েই শুরু হত তখন । যতই ধর্মীয় গাম্ভীর্যের ভাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিজেপির বাংলাদেশি শাখা.....

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:২৭


হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে এমন মন্তব্য করেছেন কলকাতার সাংবাদিক ও লন্ডন ভিত্তিক একটিভিস্ট অর্ক ভাদুড়ী। ফাইনালি কলিকাতার একজন দাদা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। যে হারে কলিকাতার ফাটাকেস্ট শুভেন্দু ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×