somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোটের রাজনীতিতে সব হালাল!

০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়িয়ে কারা লাভবান হচ্ছে কমবেশ সবাই জানে। আসলে ভোটের আগে সব দেশেই রাজনীতিবিদরা সাম্প্রদায়িক হয়ে যায়। এর একটা গ্রহণযোগ্য কারণ হলো সব দেশেই সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে। ভোটের আগে প্রত্যেক দেশের রাজনীতিবিদরাই ভোটযুদ্ধে জয় নিশ্চিত করতে সংখ্যাগরিষ্ঠদের সুরে সুর মিলিয়ে অথবা তাদের দিলে (হৃদয়ে) জায়গা করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অপকৌশল প্রয়োগ করে থাকে। কেউ মানুক আর না মানুক ভোটের রাজনীতিতে এটা জায়েজ আছে এবং হালালও বটে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি নিয়ে পড়ে বলছি আগে ভারত ও আমেরিকার ছোট্ট দুইটা উদাহরণ দেখা যাক।

ভারতের গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সাম্প্রদায়িকতার কৌশল বলেন বা অপকৌশল বলেন ভোটের রাজনীতিতে প্রয়োগ করেছিল এবং সফলও হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদি কঠিন হিন্দুত্ববাদির ভূমিকায় থেকে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর নানা অত্যাচার করেছিলেন এমনকি গুজরাটে মুসলমানদের বাবরী মসজিদ ভাঙার খলনায়ক এই মোদিই ছিলেন। মুসলমানদের মসজিদ ভাঙার অপরাধে মোদিকে কিন্তু জেলেও যেতে হয়নি নির্বাচনেও পরাজয় বরণ করতে হয়নি। সব মিলিয়ে সাম্প্রদায়িকতার জয় হয়েছে বললেই চলে।

আমেরিকার গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ভোটের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রদায়িকতার কৌশল বলেন বা অপকৌশল বলেন তা অবলম্বন ও প্রয়োগ করেছিলেন। সংখ্যালঘু ভীনদেশিদের নানা সুবিধা কমিয়ে আমেরিকানদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, মুসলমানদের আমেরিকায় ঢুকা নিষেধ নানা ধরনের কথা বলে আমেরিকানদের ভোট আদায় করাই ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের মূল উদ্দেশ্য। অবশেষে তার উদ্দেশ্য সফলও হলো। অন্যদিকে হিলারি ক্লিনটন ছিল পুরোপুরি অসাম্প্রদায়িক। সবার কথা বলতে গিয়ে নিজের পরাজয় নিশ্চিত করলেন।

এবার আসা যাউক বাংলাদেশে ভোটের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার বৃত্তান্ত। সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসারণ, পার্বত্য অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন, হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যন, শফী হুজুরের সাথে হাসিনার সখ্যতা গড়ে ওঠা সব মিলিয়ে দেশে এখন সাম্প্রদায়িক বনাম অসাম্প্রদায়িকতার দ্বন্ধ বিরাজ করছে। ভাস্কর্য অপসারণ নিয়ে হাসিনার অবস্থান ও বিবৃতিতে আস্তিক নাস্তিক কম-বেশ অনেকেই হাসিনার উপর ক্ষেপা। আমার প্রশ্ন হলো হাসিনা কি আদৌ সাম্প্রদায়িক? যার শাসনামলে থানার ওসি থেকে শুরু করে সচিবালয়, বিচারালয় পর্যন্ত সর্বোচ্চ পদদারী লোকটা সংখ্যালঘু সেই হাসিনা সাম্প্রদায়িক হয় কিভাবে? এটাই ভোটের রাজনীতি। নির্বাচন আসন্ন তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার তালে তাল মিলিয়ে এই যাত্রায় পাড় পাওয়ার চেষ্টা করছেন মাত্র। এটা দোষের কিছু না। আগেও বলেছি এখনও বলছি ভোটের রাজনীতিতে সবই হালাল। হাসিনা চাইছে হেফাজতের কাধে হাত রেখে ধর্মান্ধ মুসলমানদের ভোট হাসিল করতে। এতদিন হাসিনা সরকার বলতো মাদ্রাসার পোলাপান জঙ্গী এখন আবার সেই হাসিনা সরকারই কওমি মাদ্রাসাগুলোকে শিক্ষা বোর্ডের অধীন দাওরায়ে হাদিস সনদকে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি মাস্টার্স ডিগ্রীর সমমান প্রদান করেছেন। কওমি মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বীকৃতি মিলেছে এটা যেমন সত্য জঙ্গীবাদ নাটকে অনেক নীরিহ ছেলের জীবন নষ্ট হয়েছে এটাও অস্বীকার করা যাবেনা। সরকার বলেন আর বিরোধীদল বলেন সবাই সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিই করে থাকেন। বিএনপি, জামায়াতকে আকড়ে ধরে আছে, আ’লীগ, হেফাজতের হেফাজতে আছে। ভোটের রাজনীতি সব সময় সংখ্যাগরিষ্ঠদের দিকেই হেলে পড়ে। যেহেতু বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯০ ভাগ মুসলমান, তাই ভোটের আগে আর সংখ্যালঘুরা নিস্তার পাবেনা। ভোটের খেলায় সংখ্যালঘুরা বরাবরই ফুটবলের মতো। লাথিতো খেতেই হবে।

আমরা অসাম্প্রদায়িকতার যত ঢোলই পিঠাইনা কেন, ক্ষমতাসীন দল বলেন আর বিরোধী দল বলেন এখন সবাই নিজেদের ভোট যুদ্ধে জয়ের পথ নির্মানে ব্যাস্ত। রাজনীতির এই উত্তপ্ত মাঠে আমরা কেবলই দর্শক আর সাম্প্রদায়িকতার কৌশল আগামী নির্বাচনে কতটুকু কাজে লাগে এখন এটাই দেখার অপেক্ষায় থাকতে হবে।#
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ২:৩৬
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×