somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাফর ইকবাল স্যার সমাচার (পর্ব ২)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যেহেতু লেখার বিষয়বস্তু জাফর ইকবাল স্যার, তাই ১ম পর্ব পড়তেই হবে এরকম কোন ব্যাপার নেই। তবে অতি উতসাহীরা ইচ্ছা করলে সেটা পড়তে পারবে এখানে

কাজের কথায় আসি। ১ম পর্বে নিজেকে জাফর স্যারের লেখার এবং সেই সাথে জাফর স্যারের অন্ধভক্ত হিসাবে প্রমান করার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু প্রমান করতে পারি নি। দেখা যাক, এই পর্বে পারি কিনা।
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল আর একালের বিল গেটস, স্টীভ জবস এঁরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা না করেই প্রমান করতে পেরেছেন - নিজেরা কি জিনিস। তাহলে আমি পারব না কেন? আর এজন্য আমাকে প্রথমেই যেটা করতে হবে, তাহলো খুব মনোযোগ সহকারে পড়াশুনা নামক ব্যাপারটাকে ঐচ্ছিক বিষয়ে ফেলতে হবে, তারপর অন্যান্য ব্যাপার স্যাপার দেখা যাবে। মোটামুটি এই আদর্শে ভার্সিটি লাইফ পার করব, এরকম যখন ঠিক করে ফেলেছি, তখন হটাত করে মনে হলো তাহলে জাফর স্যারের অন্ধভক্ত ব্যাপারটা প্রমান করবো কিভাবে। সদ্য ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া একটা ছেলের মনে এ ধরনের উদ্ভট চিন্তা-ভাবনা আসতেই পারে - এটা নিয়ে কেউ মাইন্ড করবে না। যাইহোক, আমি পড়লাম মহা বিপদে। একে তো পড়াশুনা করা যাবে না (যেহেতু বিল গেটস, স্টীভ এরা করে নাই), তার উপর আবার স্যারের সামনে নিজেকে জাহির করা(সেটা অবশ্যই পড়াশুনার মাধ্যমে)। দুইকুল রক্ষার্থে আমি ঠিক করলাম, শুধুমাত্র জাফর স্যারের কোর্সগুলোতে আমার এপ্লাস পেলেই চলবে, বাকীগুলো ফিসাবিলিল্লাহ। ডিসক্রীট মেট নামে ১ম সেমিস্টারে আমাদের একটা কোর্স ছিল, জাফর স্যার নেন। স্যার কেমন ক্লাস নেন - এটা নিয়ে যদি আমি কিছুটা কপচাই, তাহলে অনেকে মাইন্ড করতে পারে। বলবে, এই রকম একজন স্যার যে ভালো পড়াবেন এটা কি তোমার(আমি) মতো একজন ফাঁকিবাজ ছাত্রের মুখ থেকে শুনতে হবে ? খুবই সত্য কথা। তো স্যার একদিন ক্লাসে বললেন, আমি তোমাদের টার্মটেস্টের কোন ডেট দিব না, কোন একদিন হটাত ক্লাসে এসে বলব, আজকে তোমাদের টার্মটেস্ট। তাই তোমারা সবসময় প্রস্তুতি নিয়ে রাখাবা, যেন যে কোনদিন পরীক্ষা দিতে পার। কি অদ্ভুত নিয়ম রে বাবা। অনেক বাঘা বাঘা ছাত্ররা পর্যন্ত প্রতিবাদ(খুব ই ম্রিদু সরে) শুরু করে দিল। স্যারের এককথা।
এ ঘটনার পরে যেটা হলো, স্যারের ক্লাস মানে ই আমদের কাছে একধরনের আতঙ্ক, এই বুঝি আজকে টার্মটেস্ট। যাইহোক, ঘটনা শেষ পর্যন্ত ঘটেই গেল। তখন পর্যন্ত ভারসিটিতে কোন টার্মটেস্ট দেই নাই। স্যার দেখি একদিন হাতে অনেক খাতা নিয়ে প্রবেশ করলেন ক্লাসে, বুঝলাম ঘটনা আজকেই ঘটবে। ক্লাসে ঢুকে স্যার সবাইকে একটা করে খাতা দিলেন (খাতার ভিতরেই প্রশ্ন ছিল)। পরীক্ষা দিলাম, দিতে হলো বলে। তবে পরীক্ষা ভালই হইলো।
কিছুদিন পরে স্যার দেখি আবার সেই খাতাগুলো নিয়ে ক্লাসে আসলেন এবং যথারীতি সবাইকে নিজ নিজ খাতা দিয়ে দিলেন। পরীক্ষা হয়েছিল, ১২০ মার্কের, আমি পেয়েছি ১০২। ভালো মার্ক্স ই পেলাম, কিন্তু আমি যে কিছু একটা এটা তো স্যারকে দেখাতে পারলাম না। কি করা যায়। ক্লাস শেষে স্যারের রুমে গেলাম, গিয়ে বললাম, স্যার আমি যে মার্কস পেয়েছি, সেখান থেকে ৬ মার্ক কমিয়ে দেন। স্যার বললনে, কেন? আমি বললাম, এই পরীক্ষার সময়, আমি ৬ মার্ক আমার বন্ধুর কাছ থেকে দেখে লিখেছি। আমি ভাবলাম, স্যার আমার সততায় মুগ্ধ হয়ে মার্ক তো কমাবে ই না, উপরন্তু কোন বই-টই গিফট করে দিতে পারে। আমার ধারনাকে পুরাপুরি মিথ্যা প্রমানিত করে স্যার বললেন, দেখি তোমার খাতাটা। আমি খাতা দেওয়ার পরে স্যার খুব ই নির্দয়ভাবে সেখান থেকে ৬ মার্ক মাইনাস করে দিয়ে বললনে, ঠিকাছে যাও। আমি মনে মনে বললাম, যা শালা, এইটা কি হইলো?

যাই হোক, নিজের সম্পর্কে আর ২টা তথ্য দিয়ে এই লেখাটা শেষ করব। আসলে তথ্যগুলো শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না। এক নাম্বারটা হলো, আমি জাফর স্যারের ঐ কোর্সটাতে এপ্লাস পেয়েছিলাম। দুই নাম্বারটা হলো, আমি আমার ভার্সিটি লাইফে পরীক্ষার হলে কখনো কারো কাছে থেকে কোন ধরনের হেল্প নেই নাই। দুই নাম্বার ব্যাপারটা আমি আমার বন্ধুদের কাছে খুব গর্ব করে বলি।
২৪টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×