somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গানের খাতার স্মৃতি

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


:|:|:| আমি ছোটবেলা থেকেই প্রচণ্ড গান শুনতে পছন্দ করি। তো তখন মাঝে মাঝেই গুনগুন করে গান গাইতাম। প্রথম ভালো লাগা গান গুলোর মধ্যে ছিল “হাওয়া হাওয়া” এবং “মুকাবেলা” টাইপের হিন্দি গান। একটু বুঝার পর শুনতাম পপগুরু আযমখান এর “ওরে সালেকা ওরে মালেকা”, “রেল লাইন এর বস্তিতে”, “ আলাল আর দুলাল” ইত্যাদি। আরও একটু বড় হয়ে শুনতাম আশ্রাফ বাবু এবং চারুর র্যাতপ গান। আমি যখন যে ধরনের গান শুনতাম তখন আমার বন্ধু মহলে ওই গান গাওয়ার জন্য আমি বিখ্যাত ছিলাম। আর একটু বড় হয়ে শুনতাম আর্ক, জেমস, আয়ুব বাচ্চু। আয়ুব বাচ্চুর চেয়ে আর্ক এর হাসান এবং জেমস খুব প্রিয় ছিল। যখন ৭ম/৮ম শ্রেণীতে পড়ি তখন পরিচয় হয় ভারতীয় জীবনমুখী বাংলা গানের অন্যতম শিল্পী নচিকেতা, অঞ্জন দত্ত এবং সুমন চট্টপাধ্যায় এর সঙ্গে। তখন ওনাদের গান ছাড়া কিছু বুঝতাম না। এখনও নচিকেতার গান গুনগুন করে গাই।

S.S.C এর সময় পরিচয় হয় বাউল গান বা দেশি গান এর সাথে। তখন বারী সিদ্দিকির “আমার গায়ে যত দুঃখ সয়” এবং “সোয়া চান পাখী” গান গুলো চমৎকার ভাবে গাইতে পারতাম। তখন একটা সময় চলছিলো যখন এধরনের গান খুব চলত। এরপর যে গান গুলো চলত সেগুলো হোল “কৃষ্ণপক্ষ কালপক্ষ”, “আমার একটা নদী ছিল”, “মাক্ষি গিরা গরম তেল মে”, “ঘাটে লাগাইয়া ডিঙ্গা”, “বাজারে মন এই দেহ মাদল”, এবং জেমস এর “পাগলা হাওয়ার তোড়ে” ইত্যাদি।

B-)B-)B-) কলেজে পড়ার সময় আমার সাথে পরিচয় হয় “হীরা” নামক একটি ছেলের সাথে। খুব মিশুক ও চটপটে স্বভাবের কারনে অর সাথে আমার বন্ধুত্ব হতে দেরি হয় না। আমাদের বন্ধুত্ব হবার আরও একটা বড় কারন ছিলো, ও ভালো গান গাইতে পারত। বন্ধু মহলে মাইক্রো কনসার্ট করার ক্ষেত্রে একজন কো-পারফরমার পেলাম। এরপর আমরা দুজন খুব দ্রুতই পুরো কলেজে আমাদের কথা জেনে গেলো। কলেজের ২য় বর্ষে থাকাকালীন একটা নবিন বরন অনুষ্ঠানেও আমরা গান গেয়েছিলাম।

:):):) এমনিভাবে চলতে চলতে একদিন আমরা দুজনেই খেয়াল করলাম দুষ্টামির ছলে আমরা অনেক কথা সুরে সুরে বলছি। সেখান থেকে গান লেখার আইডিয়া এলো। আমি অল্পবিস্তর কবিতা লিখতাম। সিদ্ধান্ত হোল আমার একটা কবিতা দিয়েই গান এর শুরু করতে হবে। এক ছুটির দিনে আমি, হীরা আর ববি (..;)...... ও বলতে ভুলে গেছি, ববি আমার প্রাক্তন গার্লফ্রেন্ড এবং বর্তমান স্ত্রী, আমরা তিনজনই বন্ধু ছিলাম।) আমার বাসায় বসে একটা টেপ রেকর্ডার, কাঠের টেবিল (বিট এবং রিদম দেয়ার জন্য), অর্ধ ভর্তি ষ্টীলের মগ এবং চামচ (পানির ঢেউ এর মতো আওয়াজ করার জন্য আমার আইডিয়া), একটা বাশের বাকা কঞ্চি (পায়ে বেজ দেয়ার জন্য), ইত্যাদি যন্ত্রপাতি বা মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে রেকর্ড করতে বসলাম আমাদের প্রথম গান এর ডেমো। গানটি ছিল “যতদিন রইবে ওই আকাশ, যতদিন রইবে ওই বাতাস, যতদিন রইবে সুর আমার, ততদিন রইব আমি তোমার” আমাদের প্রথম গান তাই এর প্রতি ভালবাসাটা ও অনেক বেশী ছিল। যদিও এখনও এই গানটা অন-এয়ারে যায়নি কিন্তু আমার বন্ধু মহলে বেশ জনপ্রিয়। এর পর আমি আর হীরা আমার বাবার বকা উপেক্ষা করে কত রাত জেগে জেগে গানের সুর করেছি তার কোন হিসেব নেই। বেশির ভা রাতেই প্রথম ভাগে আমি জাগতাম এবং ওকে উৎসাহ দিয়ে গান ধরিয়ে দিতাম এবং এরপরই আমি ঘুমিয়ে পরতাম। এই নিয়ে ওর বিরক্তির অন্ত ছিল না। পরবর্তীতে আমাদের এই কার্যকলাপে মাত্র দু দিনের জন্য যুক্ত হয়েছিল একটা খেলনা কীবোর্ড। আমরা তখন তার পরিপূর্ণ ব্যাবহার করেছিলাম। সেই ঘটনা গুলো মনে পড়লে খুব ভালো লাগে এবং খুব হাসি পায়।

হীরা, BAFA(bulbul academy of fine arts) থেকে নজরুল সঙ্গীত এর উপর ৪ বছরের কোর্স সম্পন্ন করে বর্তমানে মিউজিক ডিরেক্টর চঞ্চল মাহমুদ ভাই এর কাছে মিউজিক ডিরেকটিং এর উপর তালিম নিচ্ছে।

আমাদের দুজনের লেখা ও সুর করা প্রায় ৪০টির ও বেশী গান আছে। হয়তো কখনও কোন একসময় অন-এয়ারে শুনতে পাবেন। এখন যদিও সেই কলেজ জীবনের মতো গানের চর্চাটা নেই। তারপরও বন্ধুরা একসাথে হলে গান আর আড্ডা খারাপ চলে না।
:):);):P;):P;):)

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×