somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনুষ্যজাতির শ্রেষ্ঠ আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মনুষ্যজাতির শ্রেষ্ঠ আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা।

শুরু থেকেই নানা অপেশাদার কথাবার্তায় সোশাল মিডিয়া ছয়লাপ। ভয়ভীতি প্রদর্শন থেকে ভারতবিদ্বেষ বা ভূমি দখলের হুমকি জাতীয় নানা কথার জালে প্রতিবেশী যেন আর প্রতিবেশী নেই। মহাশ্ত্রুতে পরিণত। তাই বলতে হয় অনেক হয়েছে। প্রতিবেশী প্রতিবেশীই থাকবে, বদলানো যাবে না। প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে প্রতিবেশীও নিরাপদ থাকে না। ফলে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদে উভয় প্রতিবেশীরই নগদ ক্ষতি। তার উত্তম উদাহরণ ভারত পাকিস্তান সম্পর্ক। দীর্ঘ সময় জুড়ে এই খারাপ সম্পর্কের কারণে পাকিস্তানের ক্ষতি চোখে পড়ার মত। ভারতের ক্ষতি কি হয়নি? অবশ্যই হয়েছে। বিগত সাতাত্তর/ আটাত্তর বছর ধরে চলা এই শত্রুতায় ভারতের বিলক্ষণ ক্ষতি হয়েছে। সামরিক খাতে তাকে অনেক অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। অথচ এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো থাকলে আমার ধারণা ভারত বহু আগে একটি উন্নত দেশে পরিণত হতে পারত। অবশ্য এটা ঠিক যে পাশাপাশি থাকলে মাঝে মধ্যে বিবাদ হওয়াটা বিচিত্র কিছু নয়। তাতে সম্পর্কটা রিফ্রেশ হয়ে যায়। কিন্তু এটা একটা যৌক্তিক সময়ের পর থেমে যাওয়া উচিত। ভারত পাকিস্তানের ভেতর দীর্ঘকালীন বৈরিতা থাকলেও তখনকার পূর্বপাকিস্তানে এক তরফা হিন্দু নির্যাতন হওয়া সত্ত্বেও যুদ্ধ লাগার মতো তেমন বৈরিতা ছিল না। কারণ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একটি জোরালো কণ্ঠস্বর ছিল তখন। পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে এতগুলো যুদ্ধ হলেও, অন্তত ১৯৭১ এর আগে অবধি পূর্বপাকিস্তানকে লক্ষ্য করে কখনো একটি গোলাও ছুটে যায়নি ভারত থেকে। এমনকি এই পূর্ব ভূখণ্ডটিকে প্রায় অরক্ষিত অবস্থায় রেখে ১৯৬৫ সনের যুদ্ধের সময় পূর্বপাকিস্তান থেকে সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তান। ভারত সেই সুযোগ নেয়নি। এটাই ছিল সম্পর্ক। তারপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ভারতের প্রত্যক্ষ সাহায্য সহায়তা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ক্ষেত্রে। বলতে গেলে সম্পর্ক খারাপ করার চেষ্টা করা শুরু হয় স্বাধীনতার কয়েকবছর পর থেকেই। বলা হয় মনুষ্যজাতির শ্রেষ্ঠ আকাঙ্ক্ষা স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। এর তুল্য আর কিছু নেই। অথচ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটে। স্বাধীন, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের বদলে কতিপয় ক্ষমতাশালী মানুষের আকাঙ্ক্ষা জাগে ধর্মরাষ্ট্র তথা ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। শুরু হয় সংঘাত। সেই সংঘাত নিজেদের মধ্যে থাকলে এক কথা; কিন্তু সেই সংঘাতের লক্ষ্য গোটা বিশ্ব। অনেক নামে, অনেক বিশেষণে সেই মূল কথাটিকে আবরণে ঢাকার চেষ্টা হলেও কথার অভিমুখটি বেরিয়ে পড়ে যে, যেন তেন উপায়ে গোটা বিশ্বে একটি ধর্মের কায়েম। এক বিশ্ব, এক ধর্ম। রাষ্ট্র, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এসব কথার অলঙ্কার মাত্র।
একটি সম্পূর্ণ বানানো বিদ্বেষের নাম ' ভারত বিদ্বেষ'। যেমন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ভারতে এবং বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে বাম আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল মার্কিন বিদ্বেষ । সেটাকে সাজানো হয়েছিল 'মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ' কথাটি দিয়ে। একসময় পোস্টারিং এর বাবুরা গ্রামের গোয়ালঘরের দেয়ালেও লিখে আসতো 'মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক'। কিন্তু তাদের প্রায় সকলেরই অভীষ্ট ছিল মার্কিন দেশের জীবন, মার্কিন অভিবাসন, মার্কিন উৎকৃষ্টতা ইত্যাদি। তেমনি বাংলাদেশের পক্ষে ভারত বিদ্বেষও সবটা না হলেও অনেকটা একই রকম। কিন্তু এই বিদ্বেষের দুই থেকে তিন পাতা ওলটালেই ধরা পড়ে বিদ্বেষের মূল কারণ ভারত হিন্দুদের দেশ । হিন্দু ভারত তার শত্রু হবে এ আর বেশি কি। কিন্তু ভারতে মুসলমান থাকে ২০১৯ এর হিসেবে প্রায় ২২ কোটি। সংবিধানগত ভাবে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। ভারত বিদ্বেষ নিশ্চয়ই থাকতে পারে। কিন্তু সেটাকে ধর্ম দিয়ে প্রতিস্থাপন করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত ভাবার বিষয়। বিগত দিনের অনেক উদাহরণ না টেনেও এটা বলা যায় এবারে ক্ষমতার পালা বদলের সুযোগে একটা মোক্ষম কোপ ওদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘাড়ে পড়েছে । প্রশ্ন কেন? যদিও এখন সেটা কিছুটা প্রশমিত কিন্তু সম্পর্কের এই অপরতা ঘুচবে কবে?
@ রাজা সরকার।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:০৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×