somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার অন্তর আত্মা বলে, ব্রাজিল

১৩ ই জুন, ২০১০ সকাল ৮:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রাজিল মহাবন আমাজানের দেশ। ব্রাজিল সাম্বা নাচের দেশ। ব্রাজিল সাদা, কালো, স্বর্ণকেশী, মিশ্রবর্ণের মানুষের দেশ। ব্রাজিল ল্যাটিন আমেরিকার সর্ববৃহৎ এবং স্পেনীশ বলয়ে একমাত্র পর্তুগীজভাষী দেশ। এগুলোর যেকোন একটি বৈশিষ্টই ব্রাজিলকে বিশ্ব মানচিত্রে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু যে বৈশিষ্টটি এসব বৈশিষ্টকে অনায়াসেই অতিক্রম করে তা হচ্ছে ব্রাজিল ফুটবলের দেশ। ব্রাজিল এডসন অরান্তেস দো নাসিমেনতো নামের কালো চামড়ার এক মহান ফুটবল সম্রাটের দেশ।

কোন রকমের রাখ-ঢাক না রেখেই বলতে পারি যে, আমি ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের ভক্ত এবং এটা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। ছিয়াশির মেক্সিকো বিশ্বকাপে ব্রাজিলভক্ত বাবার সাথে রাত জেগে ব্রাজিলের খেলা দেখতে দেখতে কখন যে, ব্রাজিল আমার আত্মার অংশ হয়ে গেছে তা বুঝে উঠতে পারিনি। আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়তাম। রাত জেগে খেলা দেখার জন্য বয়সটা মোটেও পরিপক্ক নয়। তারপরেও ব্রাজিলের প্রতি অদম্য ভালবাসা কোন রকমেই আমার বয়সের অপরিপক্কতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। গভীর মনোযোগ দিয়ে আমি ম্যাচগুলো দেখেছি। ব্রাজিলের সবগুলো ম্যাচ বিশেষ করে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের সাথের ম্যাচটি এখনো চোখের সামনে ভাসে। প্রথমার্ধে ব্রাজিলের এগিয়ে যাওয়া, দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্সের সমতা আনা, সাবসিটিউট হিসেবে জিকোর মাঠে নামা, তাঁর পেনাল্টি মিস এবং সবশেষে ট্রাইবেকারে ব্রাজিলের পরাজয়-কে এখনো মনে হয় গত রাত্রের ঘটনা। বয়সের অপরিপক্কতার কারণে সে মুহুর্তে বুঝে উঠতে পারিনি যে এই একটি মাত্র পরাজয়ের কারণে ব্রাজিলকে বিদায় নিতে হবে। পরের প্রত্যেকটি ম্যাচে ব্রাজিলকে খুঁজতাম। বাবা বলত, ওরা হেরে গেছে। তবে চার বছর পরে আবার খেলবে এবং অবশ্যই জিতবে। আমি বলতাম, বাবা ওরাতো সব ম্যাচ জিতেছে। শুধুমাত্র একটি ম্যাচ হেরেছে বলেই বাদ পড়ে গেল! বাবা বলতো এটাই নিয়ম। বয়সটা অল্প ছিল বলে ব্রাজিলের এই পরাজয়ের ব্যাথা অতোটা মর্মস্পর্শী হয়নি। বরং জয়ের অদম্য ইচ্ছা নিয়ে থাকিয়ে ছিলাম চার বছর পরের বিশ্বকাপের দিকে।

তবে চার বছর পরের নব্বইয়ের ইটালি-বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতাটা ছিল আরো বেশি মর্মস্পর্শী। সম্ভবতো কৈশোরের চরম আবেগটাই এর জন্য বেশি দায়ী ছিল। এ বিশ্বকাপে মাত্র দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যায়। এ অবিশ্বাস্য পরাজয় এবং হতাশা আমার কিশোর হৃদয় সহ্য করতে পারেনি। ফলশ্রুতিতে বহু রাত আমি ঘুমাতে পারিনি। নিজের ব্যক্তিগত কোন ক্ষতির চেয়ে আমার কাছে তা ছিল আরো অনেক বিরাট কিছু। পুরো নব্বই মিনিট ব্রাজিল একচেটিয়া খেলে। ক্যারেকা, মুলার, আলেমাওদের শটগুলো কখনো বারের উপর দিয়ে, কখনো বারের পাশ ঘেষে, আবার কখনোবা বারে আঘাত করে ফিরে আসছিল। সারা খেলাতে আর্জেন্টিনা কেবলমাত্র দুটো সুযোগ পায়। এর একটিতে ম্যারডোনার বাড়িয়ে দেয়া বলে ক্যানেজিয়া গোল করেন। দ্বিতীয়টিতে, বড় ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেয়া ম্যারাডোনার ফ্রিকিকটি ব্রাজিলের গোলরক্ষক টাফারেল পাঞ্চ করে কোনরকমে ফিরান। প্রিয় দলের এই অনাকাংখিত বিদায় আমাকে এমনভাবে টাচ করেছিল যে, বিষাদের মাত্রাটা অন্যদিকে কনভার্ট করার জন্য সপ্তাহখানেক পরে পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও আমি অসময়ে নানাবাড়িতে বেড়াতে যাই।

বিষাদের এই ক্ষতগুলো চার বছর পরে ১৯৯৪ সালে ইউএসএ-বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জয় দিয়ে পূরণ হয়। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দের মাত্রাটা নিজের ব্যক্তিগত কোন অর্জনের চেয়ে অনেক বড় কিছু ছিল। আনন্দের এই রেশ বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার বহুদিন পরও বিদ্যমান ছিল। তবে ৯৮ ও ২০০৬ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে ব্রাজিলের শোচনীয় পরাজয় আমাকে আর আগের মতো শোকে আচ্ছাদিত করেনি। ঠিক যেমনটা ২০০২ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয় আগের মতো উচ্ছসিত করতে পারেনি। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, ফুটবল বা ব্রাজিলের প্রতি আমার আবেগ কমে আসছিল। ফুটবলের প্রতি আবেগ আগের মতোই ছিল। তবে বয়সটা পরিণত হওয়ার সাথে সাথে আমি বুঝতে পেরেছি ফুটবল একটি খেলামাত্র। খেলাতে জয়-পরাজয় থাকবে। এখানে প্রতিবার জয়ী হওয়া অসম্ভব। ব্রাজিল বারবার জিতবে না।

ফুটবল একটি বিশ্বজনীন এবং নিঃসন্দেহে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই এর চর্চা আছে। তাই এতে প্রতিযোগিতাও ব্যাপক। পৃথিবীর প্রায় সব রাষ্ট্রই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়ে এর পৃষ্ঠপোষকতা করেন। কাজেই এমন একটি খেলাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া চাট্রিখানি কথা নয়। এখানে সবাই সর্বশক্তি দিয়ে লড়েন। পৃথিবীতে অন্তত ডজনখানেক দল আছেন যারা মানে প্রায় সমপর্যায়ের। এর মধ্য থেকে একটি দল চ্যাম্পিয়ন হবে। এসব পর্যালোচনা আর পরিণত বয়সের ভাবনা আমাকে এটা বুঝিয়েছে ব্রাজিল বারবার চ্যাম্পিয়ন হবেনা। আর সব সময়ে যোগ্যদল চ্যাম্পিয়ন হবে এমন কথাও নেই। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে গেলে ভাগ্যের সহায়তাও লাগে, যার উপর আমাদের কারো হাত নেই। ব্রাজিলের ইতিহাসে পেলে-গারিঞ্চা-আলবার্তো পেরেরার সত্তরের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটিকে সবচেয়ে প্রতিভাধর বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এরপরের স্থানেই রয়েছে সক্রেটিস-ফ্যালকাও-জিকোর ১৯৮২ এর বিশ্বকাপ দল। কিন্তু এই প্রতিভারা ব্রাজিলকে কোন সাফল্য দিতে পারেনি, যেটা দিয়েছেন তাদের চেয়ে অনেক কম প্রতিভার অধিকারী ৯৪-এর বিশ্বকাপের রোমারিও-বেবোতোরা। ঠিক তেমনি ২০০২ এর রোনাল্ডো-রিভাল্ডোদের ব্রাজিলের চেয়ে ২০০৬ সালে ফ্যানটাস্টিক ফোর বলে পরিচিত রোনাল্ডো-রোনালদিনহো-আদ্রিয়ানো-কাকাদের ব্রাজিল অনেক শক্তিশালী ছিল। ২০০২ সালেতো ব্রাজিল অতিকষ্টে বাছাই পর্বের বাধা এড়ায়। ইনজুরির কারণে রোনাল্ডো বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহ ছিল। শেষপর্যন্ত ইনজুরি নিয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিলেও তিনি বেশিরভাগ ম্যাচগুলোতে পুরো নব্বই মিনিট খেলতে পারেননি। অথচ এই অনিয়মিত ও ইনজুরি-বিধ্বঃস্ত রোনাল্ডোই টুর্ণামেন্টের সেরা গোলদাতা হন এবং ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ এনে দেন। কিন্তু ২০০৬ সালে ফ্যানটাস্টিক ফোর বলে পরিচিতি রোনাল্ডো-রোনালদিনহো-আদ্রিয়ানো-কাকারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও ফর্মের তুঙ্গে থাকা সত্ত্বেও ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ দিতে পারেননি।

বয়সের পরিপক্কতা বা পরিনত ভাবনা হয়তো আমাকে আবেগহীন করেছে। কিন্তু ব্রাজিলের প্রতি যে অন্তরের টান ছিল তা একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে। ব্রাজিলের পরাজয়ে আমি এখন হয়তো কৈশোরের মতো বালিশে মাথা গুজে কাঁদবোনা। কিন্তু হৃদয়ে যে কান্নার স্রোত বয়ে যাবে তা নিশ্চিত। তবে এটা সত্যি যে, হৃদয় ছুয়ে যাওয়া ব্রাজিলের সেই শৈল্পীক ফুটবল এখন আর নেই। ফুটবল সম্রাট পেলে একসময় গর্ব করে বলতেন, ইউরোপিয়ানরা ফুটবল খেলে মস্তিস্ক দিয়ে আর ব্রাজিলিয়ানরা খেলে হৃদয় দিয়ে। আমি নিশ্চিত ব্রাজিলের বর্তমান ফুটবল দেখে মহান পেলে এ কথা বলার সাহস আর দেখাবেন না। ব্রাজিলকে এখন ইউরোপীয় আদলের একটি দল বলেই মনে হয়। কোচ দুঙ্গার অধীনে ব্রাজিল কোপা আমেরিকা এবং কনফেডারেশন কাপ জয় করলেও তাঁদের খেলাতে ছন্দময় ফুটবলের লেশমাত্রও ছিলনা।

তাই ব্রাজিলের বর্তমান দলটি নিয়ে আমি মোটেও রোমাঞ্চিত নই। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ ইতিহাসে এই প্রথম কোন স্কোয়াডে বিশ্বমাতানো তারকা নেই। শক্তির বিচারে স্পেন বা প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের চেয়ে অনেক শক্তিশালী দল। সত্যি বলতে ইন্টারমিলানের রাইট উইংগার মাইকন ছাড়া নির্ভর করতে পারি এমন কোন খেলোয়ার বা ব্যক্তিত্ব এ ব্রাজিল দলটিতে নেই।

তবে এতো সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমার বিশ্বাস ব্রাজিলই জিতবে। একথার মাঝে হয়তো ফুটবল সেন্সের চেয়ে আবেগই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে এটাও মিথ্যা নয় যে, কখনও কখনও মানুষের আবেগের কাছে চরম বাস্তবও হার মেনে যায়। ব্রাজিল যদি এবার জিতে তাহলে সেটা হবে তেমনই কিছু। তেমনটাই ঘটুক, ব্রাজিলই জিতুক।

----------------------------------------------------------------------------------
Related Post (Click This Link)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১০ সকাল ৮:৩১
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×