somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার যখন এখনো রাজাকার গোলাম আযমের নিচে!

৩১ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুদিন আগে বাংলা লিংকের একটা বিজ্ঞাপনে দেখিয়েছিল, একটা যুদ্ধ-বিদ্ধস্থ দেশ থেকে ফেরত প্রবাসী দেশে এসে আর রাতে ঠিক মত ঘুমাতে পারেন না। কারণ, মেশিন গান-মর্টারের শব্দ শুনে শুনে অভ্যাসে পরিণত হওয়ায় এই শুব্দের অনুপস্থিতিতে তিনি দু চোখের পাতা একই করতে পারেন না। তাই বৌ অগত্যা সারা রাত জেগে মুখ দিয়ে শব্দ করেন, ঠা ঠা ঠা ঠা...... ঠুস ঠুস ঠুস...... ঢিচিয়া ঢিচিয়া......

মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম নেত্রকোনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শত্রু সেনাদের সাথে যখন সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হন তখন পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে ছুটে আসা একটা বুলেট আবুল হাশেমের ডানে থাকা বন্ধু প্রতিম সহযোদ্ধা আজগর মিস্ত্রীর মাথার খুলী উড়িয়ে নিয়ে যায়। নিমিষেই সহযোদ্ধার নিথর দেহটা পড়ে থাকা দেখে আবুল হাশেম খেই হারিয়ে ফেলেন।
তিনি ক্রলিং করা থামিয়ে হাতের মেশিন গানটা তুলে ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন। জয়বাংলা শব্দে গলা ভিজিয়ে বৃষ্টির মত গুলি ছুঁড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

এই ধরণের অনেকগুলো অপারেশনের নায়ক আবুল হাশেম।

যুদ্ধ শেষে তিনিও ঠিক মত ঘুমাতে পারতেন না। চলতে ফিরতে মেশিন গানের গুলির শব্দ শুনতে পেতেন। দুই হাতে মাথা চেপে বসে পড়তেন। সময়ের সাথে সেই শব্দ বিদায় নিয়েছে আবুল হাশেমের কাছ থেকে কিন্তু তিনি আর স্বাভাবিক জীবন পাননি।

ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত প্রায় দুই মাস যাবত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লক বিল্ডিঙয়ের ৪০২ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করতে করতে যখন আবুল হাশেমের পরিবারটি নিঃস্ব থেকে নিঃস্বত্বর হয়ে যাচ্ছে ঠিক তখন একই বিল্ডিঙয়ের উপরেই আধুনিক রাজার সকল সুযোগ সুবিধা সমেত আছেন “একাত্তরের মীরজাফর রাজাকার গোলাম আযম”।

রাজাকার গোলাম আযমের পিছনে সরকার যে অর্থ খরচ করছে তার সিকিভাগও যদি এই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পিছনে করতো তাহলে হয়তো বিদায় বেলায় এই মুক্তিযোদ্ধা তার ফেলে আসা অতীতের (মুক্তি যুদ্ধ) জন্য একটু কম অনুশোচনা করতেন।

আমরা গণজাগরণ মঞ্চে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম দেশের উপর থেকে দায়মুক্তির জন্য, আমরা কেন ঝাঁপিয়ে পড়তে এতোটা কার্পণ্য করি তাঁদের জীবন প্রদীপ আর কিছুটা দিন জালিয়ে রাখার সাহায্যে যারা এই দেশটার কারিগর।

যতই বীজয় দিবসে কিম্বা স্বাধীনতা দিবসে গান শুনে শুনে কানের টিম্পনি পর্দাকে ক্লান্ত করে তুলি “ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলবো না”; এই দেশ আমাদের ক্ষমা করবে না।

রাজাকার রা একাত্তরেও মুক্তি যোদ্ধাদের রক্ত চক্ষু দেখিয়েছে, এখনো দেখাচ্ছে।
মাঝে কিছুটা সময় গিয়েছে, বাকি সব একই আছে।

জানি আমার এই কথা সরকারের কান পর্যন্ত পৌঁছাবে না, কারণ সরকার প্রধান এখন হয়তো নতুন রেসিপিতে ব্যস্ত প্রাণ।

তবে আমি, আপনি, আমরা যদি এই মুক্তি যোদ্ধার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতে চাই তাহলে নিম্ন ঠিকানায় যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শুধু ইচ্ছেটা থাকা দরকার।

মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ
ইমরান আহমেদ (ছেলে)
অ্যাকাউন্ট নম্বর: ১৫২০-২০২৬১৮৯৯২০০১
ব্র্যাক ব্যাংক, বাংলাদেশ।
সরাসরি যোগাযোগ: ০১৭২৯৬৯৩৯৩৯।
L
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×