somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফটোগ্রাফির নবম পাঠ

০৯ ই নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আহ বহুত দিন পর আবার লেখনের পিলিংসটা পিল করতাসি। শেষ লেখায় কইসিলাম এর পর আলুচনা করুম লেন্স লইয়া। কিন্তু মনে হইতাসে লেন্স এর আগে ক্যামেরার ই আরেকটা জিনিষ বুঝন দরকার। সেইটা হইলো "মিটারিং"।

মিটারিং এ যাওনের আগে আরকবার মনে করায়া দেই যে ক্যামেরা কেমতে ফটুক তুলে। এই ফটুকটা দেহেন:



এইহানে দেখন যাইতাসে যে আলোর উৎস থেইকা আলো আইসা সাবজেক্টের উপর পরতাসে। সাবজেক্ট থেইকা আলো প্রতিফলন হইয়া আবার ক্যামেরায় আইতাসে। (ধইরা লন এই ক্যামেরা বাজারের সবচেয়ে নিম্নমানের চাংকি পান্ডে মুবাইলের ক্যামেরা। ) এহন ক্যামেরা চাচু এই প্রতিফলিত আলোর উপর নির্ভর কইরা ঠিক করতাসে ছবিডা কেরম হইবো। খেয়াল করেন সাবজেক্টের উপর আলো কতটুকু পরতাসে তার উপর কিন্তু ক্যামেরা চাচু কিসু করতাসে না, করতাসে কতটুক আলো বাড়ি খায়া বাইরইতাসে তার উপর।

এই যে ছবি তুলার আগে আলো মাপামাপির বিষয়ডা, এইডারে কয় মিটারিং। আর যেই যন্ত্র এই আলো মাপার কামডা করে তারে কয় লাইট মিটার। লাইট মিটার দুই কিসিমের আসে:

১) এক্সটার্নাল লাইট মিটার : হাতে ধইরা আলো মাপা যায় এরম একখান জিনিষ। উপরে নীল বলটার উপরে ছবি আসেন দেহেন। এইডা সরাসরি সাবজেক্টের উপর রাইখা কি পরিমান আলো সাবজেক্টের উপর আইতাসে তা মাপন যায় (তয় বাঘের ছবি তুলতে গিয়া এই মিটার ব্যবহার করলে পরবর্তি ঘটনাগুলার জন্য লেখক দায়ি থাকবে না :P)। একুরেসির হিসাবে এইডা সবচেয়ে ভালা তাই দামটাও সেইরাম। ভবিষ্যতে একখান কিনার ইচ্ছা রাখি। দুআ রাইখেন।

২) ইন ক্যামেরা লাইট মিটার: এইডা ক্যামেরার ভিৎরে থাকে। আর এইডা মোটামুটি সব ডিজিটাল ক্যামেরার লগো ফিরি হিসাবে আসে। ভালা ছবি তুলতে হইলে এইডা কেমনে কাজ করে তা বুঝনটা খুব দরকার। তাই লন এট্টু এইডা লইয়া গপশপ করি।

একটু আগেই কইতাসিলাম যে ক্যামেরা প্রতিফলিত আলোর উপর নির্ভর কইরা ছবির এক্সপোজার (এক্সপোজার কি জিনিষ, আগের একটা পাঠে কইসিলাম, মনে আসে আশা করি) ঠিক করে। কিন্তু সব জিনিষ থেইকা তো একি রকম আলো আসেনা তাইনা? আপনের সবুজ প‌্যান্ট আর গুলাপি শার্ট পরা বন্ধুর ছবি তুলান সময় ক্যামেরা তো কনফিউজড হইয়া যাইবো যে, শার্ট এর থেইকা প্রতিফলিত আলোটারে স্ট্যানডার্ড ধরবো না প‌্যান্ট এর টা? না চিপা দিয়া উকি মারা লাল আন্ডিটারে ধরবো? :D

এই ধরনের কনফিউশন থেইকা রেহাই পাওয়ার জন্য বিগ গ্যায়ানিরা ইন ক্যামেরা লাইট মিটার ডিজাইন করসে একটা বিশেষ রং থেইকা প্রতিফলিত আলোরে স্ট্যানডার্ড ধইরা। এই বিশেষ রংটা হইলো ১৮% গ্রে।


18% Gray

মানে উপরের রংটা ওয়ালা কোনো বোর্ড যদি সাবজেক্টের উপর ধরেন, তারপর ক্যামেরার এক্সপোজার (শাটর স্পিড, এপারচার, আই এস ও)ঠিক করেন, তারপর বোর্ডটা সরায়া ছবিটা তুলেন তাইলে সেইটা সবচেয়ে পারফেক্ট এক্সপোজারে ছবি তুলা হবে।

তার মানে হইলো ক্যামেরার লাইট মিটার আসলে কালার ব্লাইন্ড। সে সামনে যা দেখে তা আসলে সব ওই ১৮% গ্রে এর সাথে তুলনা কইরা দেখার চেষ্টা করে। এই জন্য যেই ছবিতে কালারের ভ্যারিয়েশন বেশি থাকে সেইখানে মিটারিং ভুল হয় সবচেয়ে বেশি। কারন ক্যামেরার মিটার ই তখন ভুল রিডিং দিতেসে সামনের যেই রংটা ১৮% গ্রে এর কাছাকাছি, তার উপর নির্ভর কইরা।

তাইলে ওখন কি করবেন? ২ টা কাম করতে পারেন। এক, সাথে একটা গ্রে কার্ড লইয়া ঘুরবেন। ছবি তুলনের আগে গ্রে কার্ডের এক্সপোজার নিয়া তারপর ছবি তুলবেন। মাগার খিয়াল রাইখেন, গ্রে কার্ড কইলাম দামি জিনিষ।

অথবা দুই, নিজের হাতের পাতার এক্সপোজার নিবেন। কারন, এশিয়ান হওয়ার সুবিধা হিসাবে আমাদের হাতের পাতা থেইকা প্রতিফলিত আলো প্রায় ১৮% গ্রে এর কাছাকাছি এক্সপোপার দেয়।

যাইকগা মিটারিং বিষয়টা কি তা যদি বুইঝা থাকেন তাইলে আহেন এইটার আরেকটু ভিতরে ঢুকি। আমগো ক্যামরা কয়েক রকম ভাবে মিটারিং করতে পারে। ছবির ধরনের উপর এই রকম গুলা নির্ভর করে। মানে আমি কইতে চাইতাসি যে আপনে যদি বুঝতে পারেন যে কোন ছবি তুলার সময় কোন মিটারিং ব্যবহার করবেন তাইলে ছবিটাও সেরম ভালা হইবো।

১) Evaluative Metering (ইভালুয়েটিভ মিটারিং): ক্যাননের Evaluative Metering অথবা নাইকনের Evaluative/Matrix Metering হইলো এই ক্যামেরা গুলার ডিফল্ট মিটারিং। এই ধরনের মিটারিং এ ক্যামেরা সামনের সিনটারে কয়েকটা জোন এ ভাগ কইরা প্রত্যেকটা জোনের আলো মাপে, তারপর সেইগুলা এনালাইসিস কইরা একটা রিডিং দেয় (মানে ক্যামেরায় দেখায় ছবি আন্ডার এক্সপোজড না ওভার এক্সপোজড হইবো) । এই মিটারিং এর সুবিধা হইলো, যহন আপনে শিউর না যে কোন মিটারিং ব্যবহার করবেন, তহন এইডা মাইরা দিবেন, কাম হইয়া যাইবো । আর অসুবিধা হইলো, ক্যামেরা ওভারওল আলোকিত একটা ছবি তুলে ফলে আলো ছায়ার খেলাটা ঠিক মতো খেলা যায় না। নিচের ছবিটা দেহেন, ইভালুয়েটিভ মিটারিং এ তুলা হইসে। কিন্তু মনে হইতাসে না যে কাঠের উপর আরেকটু ডিটেইল থাকলে ভালা হইতো?



২) Partial Metering/Spot Metering (পারশিয়াল মিটারিং আর স্পট মিটারিং): এই ধরনের মিটারিং এ ক্যামেরা ফ্রেমের একেবারে মাঝখান থেইকা রিডিং লয়। কিসু কিসু ক্যামেরায় ডাইনে/বামে/উপরে/নিচে কোন একটা ফোকাসিং পয়েন্ট সিলেক্ট কইরা দিলে সেই পয়েন্টের রিডিং লয়। যহন আপনের ফ্রেমের বিশেষ কোনো জায়গার আলো আপনে একদম ঠিক ঠাক দেখাইতে চান, বাকি জায়গা মুটামুটি হইলেই হইলো, তখন এইডা ইউজ করবেন। উপরের ছবিটাই পারশিয়াল মিটারিং দিয়া তুল্লে এরম হইবো:



আমি পারশিয়াল মিটারিং ইউজ করি পোর্টেইট তুলতে। তাইলে ব্যাক লাইট আমার সাবজেক্টের চেহারার এক্সপোজার রে কনফিউজড করতে পারে না। আর স্পট মিটারিং ইউজ করি যখন সিন এ শুধু একটা আলোকিত জায়গা থাকে। ধরেন মুমবাতির ছবি অথবা চান্দের ছবি।

Center-Weighted Average Metering (সেন্টার ওয়েটেড এভারেজ মিটারিং): এই ক্ষেত্রে ক্যামেরা ফ্রেমের মাঝখানের এক্সপোজার নেয়, তারে একটা ওয়েটেজ ভ্যালু দেয়, আবার সেন্টারের চারপাশের এক্সপোজার নেয়, একটা ওয়েটেজ ভ্যালু দেয় তয় প্রথমটার চেয়ে কম। এইবার এই গুলার একটার এভারেজ কইরা রিডিং দেয়। যখন সাবজেক্ট ফ্রেমের এক্কেরে মাঝখানে থাকে তহন এইডা সবচেয়ে ভালা কাম করে।




হফফফফফফফফফফফ.... বিশাল লেখা লিখলাম। এল্লা থামি।

আগের লেখার লিংক:

Hmmm
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×