somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বিধা

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল । ঘড়ির দিকে তাকালাম । রাত ৩:১৭ মিনিট । প্রচন্ড সিগারেটের তৃষ্ণা হচ্ছে । কিন্তু সিগারেটের প্যাকেটটা খুজে পাচ্ছি না । রিমি মাঝে মাঝে এই কাজ টা করে । সিগারেটের প্যাকেট টা লুকিয়ে রাখে । যাতে সিগারেট খেতে না পারি । যখন খুব সিগারেট খেতে ইচ্ছে করে তখন খেতে না পারলে নাকি পরে আগ্রহ কমে যায় –রিমির ধারনা । তাই সে মাঝে মাঝে এই কাজ করে ।
প্রচন্ড সিগারেটের তৃষ্ণা হচ্ছে । কিন্তু রিমিকে ডেকে জিজ্ঞাস করতে ইচ্ছে করছে না যে প্যাকেট টা কোথায় । মেয়েটা গুটিশুটি মেরে ঘুমাচ্ছে ।শেুধু সিগারেটের প্যাকেট টা কোতায় এটা জিজ্ঞাস করার জন্য ওর ঘুম ভাঙ্গানোটা অন্যায় হবে । খুব মায়া কাড়া চেহার ওর । ঘুমালে চেহারায় মায়া ভাবটা আরো চলে আসে ।
আলসে লাগছে , উঠতে ইচ্ছে করছে না । কেউ যদি একটি সিগারেট এনে দিত ! কিন্তু এটা সম্ভব না । তবে এমনটি হলে ভালো হতো । রিমি সব সময়ই আমাকে সিগারেট খেতে বারন করে । অবশ্য মাঝে মাঝে সেই আমাকে অনুমতি দেয় সিগারেট খেতে । রিমি সিগারেটের গন্ধ একেবারে সহ্য করতে পারে না ।
সিগারেট খেয়ে ওর কাছে গেলে ও নাক কুচকায় ।নিজের কাছেই খারাপ লাগে । কিন্তু দীর্ঘ দিনের অভ্যাস । বদলাতেও পারছি না ।
কিন্তু শান্তা এমনটি ছিল না । শান্তা আমার সাথে দেখা করতে এলে প্রায়ই সিগারেট নিয়ে আসত । ও এক প্যাকেট করে নিয়ে আসত । আমাকে সিগারেট খেতে দেখলে শান্তা বলত এ্যাই তোমাকে না সিগারেট টানলে পন্ডিত পন্ডিত লাগে ।
শান্তা খুব হাসত এই বলে । শান্তা মেয়েটা অন্য রকম ছিল । ও অবশ্য সিগারেট দিতে খুব করুন সুরে বলত প্লিজ কম করে খেয় । অন্তত আমার কথা ভেবে কম করে খেও । তোমার কিছু হলে আমি তো থাকতে পারব না ।
রিমির দিকে তাকালাম কি আশ্চর্য রিমিকে পাশে রেখে আমি শান্তা কে ভাবছি । আচ্ছা আমি কি রিমিকে কে ঠকাচ্ছি ? আমি তো সময় পেলেই শান্তাকে ভাবি । আমার চিন্তা চেতনা জুড়ে আছে শান্তা । তবে কি আমি শুধু শারিরিক টানে রিমির কাছে আসি ? না না তা কেন ? রিমি আমাকে যথেষ্ট ভালোবাসে । রিমির ভালোবাসা আমি উপেক্ষা করতে পারি না ।
আসলে হৃদয়ের চাহিদা আর শারিরীক চাহিদা আলাদা । নতুবা আমার শরীর রিমিকে পেয়ে শান্ত থাকে কেন আর শান্তার স্মৃতি ভেবে আমি তৃপ্তি লাভ করি কেন ? বামা মা আর আমাদের সমাজের সনাতন ধারনায় সবাই বিশ্বাস করে একরাত একসাথেই থাকলে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়ে যাবে । তাদের কি তাহলে ধারনা ভালোবাসা দৈহিক ? হৃদয়ঘটিত না ?
কিন্তু সব ঠিক থাকার পরও কেন শান্তাকে পেলাম না ? বাসা থেকে ঠিক মেনে নেয়নি শান্তা কে । শান্তা অনেক খাটো ছিল । আর বাসার সবাই এমন ভাবে ইমোশনালি আঘাত করল যে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হলাম । হয়ত আমি কাপরুষ , ঠিক বাস্তবতাকে ফেস করতে পারি না ।

রিমির দিকে তাকালাম, কি দারুন লাগছে মেয়েটাকে । মেয়েটা দিন দিন সুন্দর হচ্ছে । মায়াকাড়া ভাবটা আরো বাড়ছে দিন দিন । মেয়েটার দিকে তাকালে আটকে যাই । আচ্ছা এটা কি মায়া নাকি ভালোবাসা ?
রিমির ভালোবাসার কিছু গুন আছে , যার জন্য আমি খুব দ্রুত নিজেকে সমলাতে পেরেছি । ওর ভিতর ছেলেমানুষি বেশী । খুব আবেগ প্রবন । একটা কিছু হলে তার চোখ টলমল করে । দেখতে আমার ভারী ভালো লাগে । অবশ্য মাঝেমাঝে আমি ইচ্ছে করেই তাকে কাদাতে চেষ্টা করি । শুধু তার চোখের জমে ওঠা জল দেখার জন্য । অবশ্য পরক্ষনেই টেনে নিই তাকে কাছে । ওরে অনেক বেশী ভালোবেসে ফেলেছি হয়ত ।


সিগারেটের তৃষ্ণা আর বোধ হচ্ছে না । আমি শুতে গেলাম । রিমি এখন ও গুটি শুটি মেয়ে শুয়ে আছে । আমি রিমির উপরে হাত রাখলাম । ঘুমের ঘোরেই রিমি আমাকে জড়িয়ে ধরল । আমি আরেকবার তার ভালোবাসার বন্ধনে বাধা পড়লাম ।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×