somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাঈদীর ছেলেরা কিন্তু তাদের বাবার জন্য প্রাণ দেয়নি! মরেছে ব্রেইনওয়াশড কিছু সাধারণ মানুষ।

০২ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পর এ পর্যন্ত কত লোক নিহত হয়েছে সেটা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তবে রায় ঘোষণার পর সারা দেশে জামায়ত-শিবির যে তান্ডব চালিয়েছে সেটা ১৯৭১ কে মনে করিয়ে দেয়! কেন প্রাণ দিলো এত মানুষ? বাংলাদেশ পুলিশ কি এতই নির্বোধ যে এভাবে মানুষ হত্যা শুরু করবে? আর যারা প্রাণ দিলো তারা কিসের আশায় রাস্তায় নেমেছিলো? তারা যদি ভেবে থাকে যে রাজাকার, খুনী, ধর্ষক, মিথ্যাবাদী সাঈদীর জন্য প্রাণ দিলে বেহেশত পাবে তাহলে তাদের জন্য করুণা ছাড়া আর কিছুই বলার নাই। আসুন জেনে নিই জামায়াত-শিবিরের হামলা ও হত্যাযজ্ঞের একটি লোমহর্ষক ঘটনা:

গুলি ছুড়তে ছুড়তে উদ্ধারকারী পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে না গেলে ১৯ পুলিশ সদস্য পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আমিরাবাদে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে এই দলেরই এক কনস্টেবলকে কুপিয়ে হত্যা করে জামায়াত-শিবির। হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে লোহাগাড়ার আমিরাবাদের তিনতলা ভবনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে পুলিশের বাকি ১৯ জন আশ্রয় নেন। কমিউনিটি সেন্টারের কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয় জামায়াত-শিবির। ভবনে অবরুদ্ধ ১৯ পুলিশ সদস্যকে পুড়িয়ে মারতে এই আগুন দেওয়া হয় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরই স্থানীয় জামায়াত-শিবির বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ওই দিন বেলা তিনটা থেকে শত শত নেতা-কর্মী লোহাগাড়া সদরে জড়ো হয়ে রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জামায়াত-শিবিরের একটি জঙ্গি মিছিল লোহাগাড়া সদরের আমিরাবাদের ‘জমির কমপ্লেক্স’ নামের তিনতলার একটি কমিউনিটি সেন্টার অতিক্রম করছিল। এ সময় চারজন পুলিশের উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ২০ পুলিশ সদস্য জমির কমপ্লেক্সের দিকে ঢুকে যান। বিক্ষোভকারীরা কমিউনিটি সেন্টারের লোহার কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। এর আগ মুহূর্তে টানাহেঁচড়া করে তারেকুল ইসলাম নামের এক কনস্টেবলকে নিয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা। বাকি ১৯ পুলিশ সদস্য দ্বিতীয় তলায় অবস্থান নেন।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) মো. ইলতুৎ মিশ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা বিকেল পাঁচটার দিকে জমির কমপ্লেক্সের ফটকে তালা ঝুলিয়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে অবরুদ্ধ ১৯ পুলিশ সদস্য বেতার বার্তার মাধ্যমে আমাদের সাহায্য চান। আমি আরও ১৮ পুলিশ নিয়ে চায়নিজ রাইফেলের গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘটনাস্থলে যাই। বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে অবরুদ্ধ ১৯ পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’
ইলতুৎ মিশ আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা জমির কমপ্লেক্স থেকে আমাদের কনস্টেবল তারেকুল ইসলামকে ধরে নিয়ে কোপাতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁর মাথায় লোহার খন্তা ঢুকিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।’
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. হাফিজ আক্তার বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাদের ১৯ পুলিশ সদস্যকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। পুলিশের আরেকটি দল গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে না গেলে তাদের বাঁচানো সম্ভব ছিল না। এই দলের আমাদের আরেক কনস্টেবলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মী, যাঁদের অনেককে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি।’

সূত্র: প্রথম আলো

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকবাহিনী ঠিক এভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো আমাদের পুলিশদের উপর। পুলিশ বাহিনী এমন একটি বাহিনী যারা মানুষের নিরাপত্তার জন্য দেশব্যাপী কাজ করে। এ ধরণের হামলা চালানোর উদ্দেশ্য মূলত পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়া। যে বাহিনী সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাকে ভীত করতে পারলে দেশে অরাজকতা করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায় এটা জামাত-শিবির তাদের পাকিস্থানী প্রভুদের কাছ থেকে ভালো মতোই আয়ত্ত করেছে। সে জন্যই তারা একের পর এক পুলিশের উপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। একদিনে তারা কুপিয়ে, পিটিয়ে হত্যা করেছে ৪ জন পুলিশ সদস্যকে, আহত করেছে ৭০ জনকে! এদের মধ্যে নয়জনের অবস্থা গুরুতর। যেহেতু পুলিশ তাদের নাশকতামূলক কর্মকান্ড গুলো পন্ড করে দিচ্ছে সেহেতু অনেকটা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়েও তারা হামলা করছে। আর পুলিশের উপর হামলা হলে পুলিশ বাহিনী গুলি চালাবে এটাই স্বাভাবিক, যা আরো কিছু মানুষকে লাশে পরিণত করবে। ভারি হবে তাদের লাশের রাজনীতি! উপরের ঘটনাটি থেকেই বোঝা যায় কিভাবে তারা বিনা উষ্কানীতে হামলা করছে পুলিশের উপর। এমনিতে আমাদের দেশে প্রয়োজনের তুলনায় পুলিশ কম। তার উপর এভাবে হামলা হতে থাকলে একসময় জনসাধারণকে রক্ষার জন্য পুলিশ পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ! পুলিশের উপর প্রাণঘাতী হামলা হবে আর পুলিশ নিরবে মরবে এটা আশা করাটা মূর্খতার পরিচয় ছাড়া আর কিছু নয়।

অনেকেই সাঈদীর আল্লামা নাম ধারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আল্লামা শব্দের অর্থ শিক্ষাবিদ বা শিক্ষক। আর গত কয়েক দিনে জামায়াত-শিবিরের কর্মকান্ড দেখে এটা পরিষ্কার বোঝা যায় যে রাজাকার, খুনী, ধর্ষক, মিথ্যাবাদী সাঈদী তার অনুসারীদের ভালোই শিক্ষা দিয়েছেন! তাই আমি মনে করি "আল্লামা দেলোয়ার হোসেন" নামটি যথার্থ!

অনেকেই জামায়াত-শিবির কর্মীদের প্রাণ দেওয়া কে মহান আত্মত্যাগ হিসাবে গণ্য করছেন! আমাদের বিরোধীদলীয় নেত্রী এবং দুই দুইবারের নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রী একে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ তো একে একাত্তর ছাড়িয়ে গেছে বলও মন্তব্য করছেন! আপনারা কি ভুলে গেছেন একাত্তরের কথা? আপনারা কি ভুলে গেছেন ৩০ লক্ষ শহীদের কথা? আপনারা কি ভুলে গেছেন সাড়ে ৪ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর কথা? ভুলে গেছেন হাজার হাজার গৃহহীন মানুষের আহাজারি? এতকিছুর পরও ৪২ বছর ধরে তারা এই দেশে বাস করার সুযোগ পেয়েছে। উত্তরাধিকার জন্ম দিয়েছে। এই দেশের আলো-বাতাসে বড় হয়েছে তাদের সন্তানরা। এই জন্যও তো বাঙালীর উপর তাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত! সাড়ে সাত কোটি বাঙালী একাত্মা হয়ে নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীণ করেছে এই দেশ। এই দেশ কোন রাজাকারের দেশ নয়, এই দেশ কোন খুনীর দেশ নয়, এই দেশ কোন ধর্ষকের দেশ নয়! জামায়াতে ইসলাম আর ইসলাম এক জিনিস নয়। জামায়াতে ইসলাম মওদুদী নামক এক নরকের কীটের স্বপ্নে পাওয়া উদ্ভট ত্বত্ত্ব! যে মওদুদীর কারণে পাকিস্থানে প্রায় ৫০০০ হাজার মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিলো। যাকে আদালত মৃত্যুদন্ড দিয়েছিলো, কিন্তু পরবর্তীকালে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিছুদিন জেল খেটে সে বের হয়ে আসে। এ ধরণের একটি মানুষের মতাদর্শ থেকে যে দলের সৃষ্টি সে দল কিভাবে ইসলাম রক্ষা করতে পারে? ইসলাম একটি পবিত্র ধর্ম, ইসলামের কোথাও নিরীহ মানুষকে হত্যার কথা বলা নাই। জামায়াতে ইসলামী মুখে ইসলামের কথা বলে ফেনা তুললেও ইসলামের নিয়ম ভাঙতে তাদের মতো পটু আর কাউকে খুজে পাওয়া যাবে না!

যে সকল জামায়াত-শিবির কর্মী গত কয়েকদিনে নিহত হয়েছেন তারা কি একবারো ভেবে দেখেছেন তাদের পরিবারের কথা? তাদের বাবা-মার কথা? সাঈদীর ছেলেরা কিন্তু তাদের বাবার জন্য প্রাণ দেয়নি! মরেছে ব্রেইনওয়াশড কিছু উন্মাদ! যারা রাষ্ট্র ও ধর্মের সকল আইন ভঙ্গ করে সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে! এরা নিজেদের পরিবারকে যেমন কষ্ট দিয়েছে তেমন খালি করেছে অন্য মায়ের বুক। আর যাদের জন্য এরা প্রাণ দিয়েছে তারা নিরবে হেসে লাশ গুনছে!

আসুন, আমরা দেশের শত্রু, ইসলামের শত্রু, বাঙালীর শত্রুদের চিনি। এই দেশ আমার, এই দেশ আপনার, এই দেশ কোটি বাঙালীর প্র্রাণ। একদল হিংস্র দানবের হাতে একে বিপন্ন হতে দেওয়া যাবে না।

বাঙালী জেগে আছে, বাংলা জেগে আছে সবখানে.....।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×