somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুপার সিমেট্রির ভূত ভবিষ্যত আর হিগস কনিকার ভর!

৩০ শে মে, ২০১৩ ভোর ৪:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(ইহা একটা ব্রেন স্টর্মিং পোস্ট)


মনটা বিক্ষিপ্ত। ধ্বংসন্মুখ নগরী যখন দাবানলের কবলে পড়ে নিঃশেষ হতে থাকে তখন সাথী হয় নগরীর অবহেলিত এবং অসহায় মানুষ। সহায় সম্বল সম্পন্ন মানুষেরা কিছুক্ষন দাবানলকে রুখতে চেষ্টা করে, পরে বৃথা চেষ্টা ভেবে সবাই পালায়। নগরী পুড়ে ছাই হবেই, এটাই তার নিয়তি। মানুষ নিঃস্ব হয়, এক নগরী থেকে আরেক নগরীতে ছুটে চলে। আর অভিশপ্ত নগরী তার দগ্ধ ক্ষত বয়ে বেড়ায় সারাটা জীবন।

অনেক পুরোনো একটা কৌতুক ছিলো। গোপাল ভাড় বাজার থেকে ২ কেজি মাংস কিনে আনলো ভালোমন্দ খাবে বলে। গিন্নীকে ভালো করে কসিয়ে রাধার কথা বলে দরবারে গেলো কাজে। গিন্নি কসায় আর আর স্বাদ পরখ করে এক টুকরো দুই টুকরো মুখে দেয়। যাই হোক রান্না শেষে গিন্নী ঘুমিয়ে পড়ে ক্লান্তিতে আর গোপাল শ্রান্ত বদনে বাড়ি এসে দেখে কড়াইতে গোস্ত নাই, শুধু ঝোল। বৌকে ঘুম থেকে উঠিয়ে জিজ্ঞেস করে তরকারীর গোস্ত কই! বৌ বলে বসলো বিলাই খেয়ে ফেলেছে।
কৃপণ গোপালের ২ কেজি গোস্ত বিলাই খাবে সেটা গোপাল হজম করতে পারেনি। সাথে সাথে দাড়ি পাল্লা এনে মেপে দেখে বিড়ালের ওজন সর্বসাকূল্যে ২ কেজি। গোপাল স্ত্রীকে প্রশ্ন করে বিড়াল যদি ২ কেজি হয় তাহলে গোস্ত গেলো কই, আর গোস্ত যদি ২ কেজি হয় তাহলে বিলাই গেলো কই?

পার্টিক্যাল ফিজিক্সেও এমন সমস্যা বিদ্যমান। যার নাম হলো হাইয়ারার্কি ধাধা।

প্লাংকের ভরের সূত্রানুসারে mP= (ħc/ G)^-১/২ = ১.২২*১০^১৯ GeV/c^2 --------১

যেখানে ħ হচ্ছে ডিরাক ধ্রুবক, c হলো আলোর গতি এবং G হলো গ্রাভিটি।

প্লাংকের ভর হলো সেই ভর যেখানে বস্তুর সকল ভর এবং বল এক বিন্দুতে থাকবে এবং ফলে সেখানে একটা সিঙ্গুলারিটির উদ্ভর ঘটবে যাকে পরিশুদ্ধ ভাষায় কৃষ্ঞগ হ্বর বলে অভিহিত করি। এই ক্ষুদ্রতম ব্লাক হোলটির ভরই হলো প্লাংকের ভর।

ইকোয়েশন ১ থেকে আমরা দেখি যে দুর্বল তড়িৎ বল এবং গ্রাভিটির মানের অনুপাত নিয়ে একটা বড় ঘাপলা আছে পার্টিক্যাল ফিজিক্সে যেটা মূলত একটা ধাধার মতোই। যেহেতু কৃষ্ঞ গ হ্বরে সকল ভর একীভূত সেহেতু W এবং Z কনিকার ভরের সাথে এই প্লাংকের ভরের অনুপাত করলে পাওয়া যায় ১০^১৬ মানে ১০ এর পর ১৬ টা শূন্য। তার মানে ভরের স্কেলে এত বড় গ্যাপটা আসলেই অবিশ্বাস্য এবং এর কারনটা কি সেটাই মূলত একটা ধাধার বিষয়।

আসলে সুপার সিমেট্রির প্রয়োজনীয়তা এখান থেকেই অনুভূত হয়।বিজ্ঞানীরা এই ধাধাটা নিয়ে ৭০ দশকে আরও বড় সমস্যায় পড়লো যখন নাকি হিগসের ধারনা পাওয়া গেলো। W এবং Z বোসনের ভর যখন নির্নীত হলো নন-জিরো হিগস ফিল্ডের মাধ্যমে তখনই এই অনুপাতের মধ্যে সবচেয়ে বড় খটকা দেখা দিলো।

সোজা কথায় বলতে গেলে যেই বলে এবং কনিকার মাধ্যমে এই ভরের সৃষ্টি সেই ভরের মান বেশী হবে ঠিক আছে কিন্তু এত বেশী হবে কেন? নন জিরো হিগস ফিল্ডের মান ২৫০ GeV/c^2 যেখানে W এবং Z এর ভরের মান ১০০ GeV/c^2। কিন্তু গানিতিক ভাবে দেখা যায় (এখানে ডিরাইভেশন টা দিচ্ছি না, কেউ জানতে চাইলে মন্তব্যে সেটা দিতে পারি) সেক্ষেত্রে পুরো হিগস ফিল্ডটা আনস্ট্যাবল হয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে W এবং Z এর মান এত কম কেন? এই ধাধাকে বলা হয় হাইয়ারার্কি প্রবলেম।(ধরেন ১০^১৬ কেজি একটা বস্তা যার মধ্যে আছে সর্বোপরী ২০০*১০^৬ কেজি ওজনের চাল= তাহলে বস্তার এতো ওজন এত হলো কিভাবে)

আসলে মূল সমস্যাটা হলো দুর্বল নিউক্লিয় বল যার কারনে এই নক্ষত্র সূর্য্য জ্বলছে যার ফলে এই মহাবিশ্ব এতটা আলোকময় সেটা থাকতো না। আর সেগুলো না থাকলে এই গ্রাভিটির কারনে হয়তো আমাদের রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে যেতো বা আমাদের দেহটা মাটিতে মিশে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। এগুলো হচ্ছে না এই বিশাল ১০^১৬ অনুপাতের মানের কারনেই। তাহলে এত ভরের জোগান কিভাবে হলো সেটার ব্যাখ্যার জন্য সুপার সিমেট্রি পার্টিক্যালের জন্ম।

আমাদের এই পোস্টের উদ্দেশ্য হলো সুপার সিমেট্রির আসলে প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা। কারন এলএইচসিতে এ যাবৎ যতগুলো পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে দেখা গেলো তার মধ্যে সুপারসিমেট্রি বর্ণিত কনিকা সমূহের সুপার পার্টনার কনিকার হদিস পাওয়া যায়নি। তাহলে কি সুপার সিমেট্রি হুমকির মুখে নাকি পুরাই বাদ? যদিও পৃথিবীর তাবৎ বিজ্ঞানী এক কথায় উত্তর দেবে এই প্রশ্নের উত্তর দেবার সময় হয় নি কিন্তু সত্যি কথা বলতে সুপার সিমেট্রি বা অতিপ্রতিসাম্য তত্ব মৃত্যুর খুব কাছে বা বাতিলের খাতায়।

সুপার সিমেট্রি বা অতি প্রতিসাম্য জিনিসটা কি সেটা স হজে জানতে চাইলে এখানে যেতে পারেন। সুপার সিমেট্রিতে প্রতিটা ফারমিওনের জন্য একটি করে বোসন পার্টিক্যল থাকার কথা বলা আছে। ফারমিওন কনিকা সমূহ মৌলিকা কনিকা আর বোসনিক কনিকা মূলত শক্তিবাহী কনিকা সমূহ যারা ঐসব কনিকার সাথে সংশ্লিষ্ট বল সমুহের জন্য দায়ী। এই সুপার সিমেট্রি অনুযায়ী এক্সট্রা ডাইমেনশন এবং যৌগিক হিগস তত্বের মতো বেশ কিছু ভালো তত্ব আমাদের সামনে ছিলো যেগুলোর মাধ্যমে আমরা অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারতাম।

তার আগে একটা উদাহরন দেই:

ঢাকা শহরে অনেকগুলো ফ্রাইড চিকেনের দোকান আছে। ব্রান্ডের মধ্যে কেএফসি, বিএফসি, সল্ট গ্রীল আর নন ব্রান্ডের মধ্যে বসুন্ধরা শপিং মল থেকে শুরু করে গুলশান ২ এর গলিতে ২৫ টাকার চিকেন ফ্রাইও আছে। কিন্তু এই এক চিকেনের নানা স্বাদ, নানা ভাবে বানানো যায়। কিন্তু সব শেষে সেই চিকেন ফ্রাইটাই হবে।

এই মহাবিশ্বটাও অনেকটা চিকেন ফ্রাইয়ের মতোই। এখন এই মহাবিশ্ব তৈরী হবার অনেকগুলো সম্ভাবনাই আছে কিন্তু এর মধ্যে যেকোনো একটা পথেই এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে এবং সেটা জানবার জন্য সবগুলো পথ সম্পর্কেই সম্মক ধারনা থাকলে ব্যাপারটা আরো স হজতর হয় এবং আপনি জানতে পারবেন আমাদের মহাবিশ্বটা কেনইবা এমন হলো বা ভবিষ্যতেই বা কি হবে। সুপার সিমেট্রি হলো সেরকম একটা তত্ব যার মাধ্যমে আপনি বলতে পারেন যে এটাও একটা রাস্তা যার ফলে মাল্টিভার্সের যেকোনো ইউনিভার্স তৈরী হতে পারে। আপনি যদি সরাসরি এটাকে মানা করে দেন তাহলেও হয়তো ঠিক হবে না। তবে এই সিদ্ধান্তে আসতে আরও এক দশকের মতো সময় লেগে যেতে পারে।

আসলে সুপার সিমেট্রি কেন কাজ করছে তার কারন খুজতে গেলে নীচের দুটো কারন সামনে আসে:

১) আপ কোয়ার্ক, ডাউন কোয়ার্ক আর গ্লুওনের সুপার পার্টনারের খোজে সরাসরি পরীক্ষা চালিয়ে কিছুই পাওয়া যায়নি।ধারনা করা হয়েছিলো যে এসব প্রতি জোড় কনিকা সমূহের ভর ১TeV এর কাছাকাছি বা তার চেয়ে বেশী (যতদূর হিসাব করে বের করা গেছে প্রস্তাবিত কনিকা সবচেয়ে হালকা কনিকা নিউট্রালিয়ানো যাকে ফোটন বা Z বোসন বা হিগস কনিকার সুপার পার্টনার হিসেবে দেখা হয় তার ভর ২০০ GeV/c^2 এর কাছাকাছি হবার কথা)

২) হিগসীর ভর ১২৬ GeV/c^2 এর মতো পাওয়া গিয়েছে যার মান সুপার সিমেট্রি তত্বের চেয়ে খুবই বেশী।

এর প্রথম ব্যাখ্যাটার কথা উপরে হাইয়ারার্কি প্রবেলেমের কথাতেই কিছুটা বলা হয়েছে। এখন এই ধাধার সমাধান দুভাবে দেয়া যেতে পারে:

ক) ইকোয়েশন ১ এ গ্রাভিটির সাথে দুর্বল তড়িৎ বলের অনুপাতের মান বড় রাখতে হলে যেহেতু W এবং Z ভাগের ভাজক যদি হয় তাহলে এর মান খুবই ছোট হতে হবে তার মানে প্রায় ভরহীন
খ) অথবা ভাজকের মান বিশাল হতে হবে এই ধরেন ১০^১৬GeV (সেক্ষেত্রে W এবং Z স হ অন্যান্য কনিকারই মান যাবে বেড়ে)

সেক্ষেত্রে সমাধান হলো কোয়ান্টাম ফিল্ডে ভার্চুয়াল কনিকার উপস্হিতি যেগুলোকে মূলত কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন বা তারতম্য বা কোয়ান্টাম ক্ষেত্রের ঢেউ বলা হয় সেগুলোর ভর যদি ১ TeV/c^2 এর মধ্যে রাখা যায়। কিন্তু এগুলো স্হায়ী কনিকা হতে পারবে না কারন এরা যদি স্হায়ী হয় তাহলে দেখা যাবে ১২ কেজি বস্তার ভেতর ২৪ কেজি চাল ভরার পরও বস্তার ওজন ১২ কেজির জায়গায় ১২০০০০ কেজি হয়ে যাবে। সেই জন্য অস্হায়ী রূপ দেবার জন্য এগুলোকে ঐ টপ, বটম কোয়ার্ক আর গ্লুওনের জোড় প্রতিকনিকা হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে আর এখান থেকেই সুপার সিমেট্রি তত্বের প্রয়োজন পড়েছে।

কিন্তু ৭TeV ক্ষমতার এলএইচসিতে ১ TeV এর মধ্যে সুপার সিমেট্রির কোনো কনিকা পাওয়া যায়নি। এটলাস সিএমএসে যে নতুন কনিকা পাওয়া গেছে সেগুলো সুপার সিমেট্রির কোনো কনিকাও না।



ছবিতে উচ্চ এনার্জীর কোয়ার্ক, এস গ্লুইনোস, বা এন্টি কোয়ার্ক খুজবার জন্য খুজবার জন্য এটলাসে পরীক্ষাকৃত ডাটার গ্রাফিক্যাল ভিউ যেখানে এসকোয়ার্ক ভরের সাপেক্ষে গ্লুইনোর শক্তির স্কেল করা হইছে। হলুদ দাগের ভিতরটাই হলো দেখার বিষয় যেখানে মূলত মিসিং এনার্জীর কোথায় যায় বা কি হয় সেটা খোজ করা হবে। কেউ যদি বিষদ খোজ নিতে চান তাহলে এই লিংকে খোজ নিতে পারেন।

কিন্তু তাই বলে এখনই সুপার সিমেট্রিকে বাদ দেয়া যাবে না। কারন উপরে ঐযে বললাম চিকেন ফ্রাইন বানানোর অনেক রাস্তা। আর যেসব এক্সপেরম্যান্ট করা হইছে তাদের বেশীর ভাগ ইলেক্ট্রন বা প্রোটন সংঘর্ষের মাধ্যমে। কোয়ার্ক বা গ্লুওনের পরীক্ষাগুলো এখনও করা হয়নি আর তাদের মিথস্ক্রিয়তার ভিন্নতাও একটা বড় ফ্যাক্টর যেটা খোদ সুপার সিমেট্রির তত্ব অনুসারে খুজে পাওয়া যায়।

আর যেসব ধারনার ভিত্তিতে সুপার সিমেট্রির ধারনাকে বাদ দেয়া যায় না সেগুলো নিম্ন রূপ:

ধারনা ১) যেকোনো প্রসেসে সুপার সিমেট্রি কনিকা সমূহের সংখ্যা পরিবর্তিত হবে তাদের জোড় সংখ্যার কারনে।
ধারনা ২) সবচেয়ে হালকা কনিকা নিউট্রালিয়ানো বা এসনিউট্রিনো যেটা ধারনা ১ অনুসারে স্ট্যাবল সেটই হচ্ছে আমাদের চেনাজানা সুপার সিমেট্রির
সেই জোড় প্রতি কনিকা
ধারনা ৩) এই সুপারসিমেট্রি জোড় সমূহ শক্তিশালী বলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আরও ভারী কনিকায় পরিনত হবে অন্যান্য চেনাজানা ভারী কনিকার চেয়ে (হতে পারে সেটার মান ৭ TeV এর চেয়েও অনেক বেশী)

গত ১৫ বছর আগে এটা দেখা গেছে যে উপরের ধারনাকে সিদ্ধ করে এমন প্রক্রিয়ায় কিছু সুপার সিমেট্রি পার্টনার আসলেই মূখ্য ভূমিকা পালন করে এই হাইয়ারারকি ধাধাটার সমাধানের জন্য। উদাহরন স্বরূপ সুপার সিমেট্রির সবচেয়ে ভারী জোরগুলো হলো টপ কোয়ার্কের টপএসকোয়ার্ক আর W এবং Z আর হিগসের জন্য নিউট্রালিনোস আর এস নিউট্রিনোস আর এই কনিকা সমূহ সব সময় তৈরীও হয় না যখন প্রচুর পরিমান প্রোটন সংঘর্ষে লিপ্ত হবার পরও প্রচুর পরিমানে বিদ্যমান থাকে।

আর এসব কনিকা যেই ব্যাকগ্রাউন্ডে তৈরী হবে সেখানে প্রচুর পরিমান সিগন্যাল থাকবে আর তাদের সিগন্যালও হবে খুবই ক্ষীন। তাই এই তিনটি সুপার সিমেট্রি কনিকাকে বাদ দেয়া এখনই সম্ভব না।

হিগসের অতিরিক্ত ভরের ব্যাখ্যা:

সুপার সিমেট্রি অনুসারে হিগসের ৫ ধরনের কনিকা থাকবার কথা যার মধ্যে তিনটি হবে তড়িত নিরপেক্ষ আর বাকি দুটি চার্জিত। এই তত্ব অনুসারে কেবল একটি হিগস কনিকার ভর হাল্কা হবে যেটা স্ট্যান্ডার্ড মডেলে আমরা সচরাচর দেখেছি এবং খুব সম্ভবত এটাই এলএইচসিতে পাওয়া গেছে। কিন্তু সুপার সিমেট্রি অনুসারে এই হিগসের ভর কখনোই Z কনিকার চেয়ে বেশী হবে না। Z কনিকার ভর হলো ৯১GeV/c^২।
কারন সুপার সিমেট্রি অনুসারে দুর্বল বলের শক্তি Z কনিকার ভর আর হিগস কনিকার ভর নির্ধারন করবে। কিন্তু সমস্যা হলো এটা বাস্তবে সম্ভব না কারন কোয়ান্টাম ফিল্ডের ভার্চুয়াল কনিকা সমূহের মধ্যে হিগস ফিল্ডের হিগস কনিকা খুব বেশী হলে এই লিমিটের উপর উঠতে পারবে তাই বলে ১১৫ GeV/c^২ এর উপরে গেলে সুপার সিমেট্রি তত্বে কোনো সাম্যাবস্হা থাকে না। সেখানে ১২৬ GeV/c^২ অনেক বড় লিমিট।
সুপার সিমেট্রি তত্ব অনুসারে আমরা জানি যে সকল পার্টিক্যালের জন্য একটা সুপার পার্টনার বিদ্যমান যার সাথে ৫ হিগস কনিকা এবং তাদেরও সুপার পার্টনার থাকবে, মোটামোটি এর বাইরে আর তেমন কিছু নাই। তো এই তত্বকে সমুন্নত রেখে একটা বড় হিগস কনিকা পেতে হলে টপ এসকোয়ার্কের ভর থেকে ৫ TeV/c^2 বের করে আনতে হবে (এখানে উপরের সেই হাইয়ারার্কি প্রবলেম মানে হইলো ১২ কেজি বস্তার ভিতর খুজে পেলেন ২৪ কেজি চাল: যদি টপ এসকোয়ার্ক খুব ভারী তাহলে হিগস ক্ষেত্রের গড় মান শূন্য বা কয়েক TeV হবে না?) অথবা দুইটা টপ এসকোয়ার্ককে পরস্পরের সাথে শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে (এখানে দুটো টপ এসকোয়ার্ক বলতে টপ কোয়ার্কের কনসেপ্ট যেখানে একটা টপ রাইট এবং আরেকটা টপ লেফ্ট কোয়ার্কের দরকার) যার ফলে একটি টপ এসকোয়ার্ককের ভর খুবই হালকা হয়ে যাবে।

তত্বগত দিক থেকে এরকম ভারী ভরযুক্ত দুটো কোয়ার্কের সম্মিলনে বেশ কিছু জটিলতা দেখা যায়।যে প্যারামিটার এই সম্মিলন ঘটাবে (ইতিহাসগত ভাবে এর নাম A-term, এটা আবার সুপার সিমেট্রি তত্বের বিরোধী কারন এই টার্মের কোনো সুপার পার্টনার নাই হিগস-কোয়ার্ক-এন্টিকোয়ার্কের দিক থেকে) তার মান খুব বড় হতে হবে যেটা ছবিতে দেখানো হয় (ছবিতে দেখা যায় যে tan বেটা এর মান যথসম্ভব বড় হতে হবে নাহলে হিগসীর মান ১২৫ পাওয়া যাবে না, যারা অর্থ হলো Xt এবং At এর মধ্যকার কৌণিক দূরত্ব খুব কম হতে হবে )।


সিএমএসে সুপারসিমেট্রির কনিকা সমূহ খোজা হইছে ফোটন সহ নানা অদৃশ্য কনিকার উদ্ভব হইছে। সুপার সিমেট্রির ভিত্তিতে ডাটা গুলো কিভাবে এনালাইজ হচ্ছে সেগুলো জানবার জন্য এখানে ক্লিক করতে পারেন।

সুপার সিমেট্রির বেশ কিছু ধরনের মান খাটবে না যদি A-term বা টপ এসকোয়ার্কের ভরের মান খুব বড় হয় এবং যেহেতু হিগসের ভর ১২৫GeV/c^2 সেহেতু এই ধরনের কোনো দরকার নাই।

তার মানে পরীক্ষাগত দিক থেকে এখন যেটা খোজা দরকার সেটা হলো টপ এসকোয়ার্কের ভরের মান খুব কম হবে এবং যেহেতু ভার্চুয়াল গ্লুইনোস টপ এস কোয়ার্কের ভরে সংযুক্ত হয় সেহেতু বলা যায় যে তাদের ভর খুব খুব বেশি হবে না।

এই কথার রেশ ধরে বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরা যায় সেটা হলো

১) যদি কোনো অতিরিক্ত অজানা বল প্রকৃতিতে থেকে, তাহলে এই বলের কিছু সংযুক্তি অবশ্যই হিগস কনিকার ভরের মধ্যে থাকবে যেমনটা দুর্বল নিউক্লিয় বল হিগসীর ভরকে বাড়িয়ে দেয়।

২) যদি সত্যিকারার্থেই অতিরিক্ত হিগস কনিকা থেকে থাকে তাদেরও বড় একটা প্রভাব থাকবে (যেগুলো মূলত আংশিকভাবে সম্মিলনের কারনে নতুন কোনো হিগস ক্ষেত্রের জন্ম দেয় তাহলে) যার ফলে হিগস কনিকার ভরের মান বেড়ে যেতে পারে।

যদি আমরা অন্য দিক দিয়ে চিন্তা করি তাহলে এভাবেও বলা যায় যে হাইয়ারার্কি সমস্যার এই উদ্ভুত পরিস্হিতিটা মনে হয় আগেরটার থেকে ভালো (১২ কেজি ওজনের বস্তার ভিতর ২৪ কেজি চালের রহস্য ধইরা নিলাম যে সূতা দিয়া সিলি কইরা হইছে সেইখানেই) আর আমার মনে হয় প্রকৃতিও এইটা নিয়া খুশী। তাহলে তত্ববীদরা এখন যেইটা দাড় করাইলো সেইটা হইলো কোয়ার্ক, চার্জিত লেপ্টন আর নিউট্রিনোসের ভর তাদের সুপার পার্টনার গ্লুওনস, ফোটন, W এবং Z এবং স্বয়ং হিগস কনিকার থেকে ৩০-১০০ গুন বেশী। ইতিহাসগত ভাবে এই কনসেপ্ট টা আগেই ছুরে ফেলা হয়েছিলো এই ভেবে যে এভাবে হাইয়ারার্কি সমস্যার সমাধান হয় না। হিসাব মতে হিগসের মান শূন্য বা এসকোয়ার্কের ভরের কাছাকাছি হওয়া উচিত। কিন্তু তারা এই ধারনা থেকে সরে এসেছে এবং নতুন করে এভাবে ভাবছে যে TeV এনার্জী স্কেলে যেহেতু বলবাহী কনিকা সমূহের সুপার পার্টনার এবং হিগসীর দেখা পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু এসব কনিকার সুপার পার্টনার হয়তো TeV এর ১০০ গুন বেশী স্কেলে পাওয়া যাবে যেটা হয়তো এলএইচসিতে পাবার কোনো আশা নেই।

এসব জিনিস মাথায় রেখে হিগস কনিকার প্রাপ্ত ভরের হিসাব থেকে বের করতে হবে স্ট্যান্ডার্ড মডেলে এর প্রোডাকশন রেট কত এবং কোন রেটে এর ক্ষয় হয় যাতে করে বুঝতে পারি যে স্ট্যান্ডার্ড মডেলে কোনো ভুল আছে কিনা এবং এর সাথে এক্সোটিক ক্ষয়ের মোডটাকে বিচারের মধ্যে আনতে হবে যদি এটা হয়েই থাকে। হিগস কনিকা খুবই স্পর্শকাতর কনিকা এবং যদি সত্যিকার ভাবেই একের অধিক হিগস কনিকা থেকে থাকে তাহলে পদার্থবিজ্ঞানের অনেক গূঢ় রহস্যের সমাধান করা যাবে।

এখন আপনারা হয়তো বলতে পারেন যেহেতু ডাটা ঘেটে সুপার সিমেট্রি বর্ণিত কোনো কনিকা পাওয়া যায়নি তাহলে হিসাবের খাতা থেকে সুপার সিমেট্রি বাদ তাহলে আমার মনে হয় এটা খুব বেশী তাড়াহুড়া হয়ে যাবে কারন এখনও উপরোক্ত হাইয়ারার্কি সমস্যার একটা গ্রহন যোগ্য সমাধান দরকার। এখানে আরেকটা কথা হলো হিগসীর ভর ১২৫ যদি ১১৫ এর সাথে তুলনা করা হয় তাহলে বলা যেতে পারে এটা খুব বেশী ভারীও না। স্ট্যান্ডার্ড মডেলে W এবং Z কনিকার ভরের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নাই। এটাকে নির্নয় করা যায় ভিন্ন চিন্তাধারা থেকে এবং এই ১০ GeV/c^২ এর হিসাবের জন্য অন্য ব্যাখ্যাও দেয়া যেতে পারে। আসলে ১৯৯৮ সালে ডার্ক এনার্জীর আবিষ্কারের পর যখন আরও বড় হাইয়ারার্কি সমস্যার উদ্ভব হলো এবং তখন আরও বড় অতিরিক্ত মাত্রার কথা চিন্তায় আসলো।

এলএইচসি থেকে প্রাপ্ত সামনের সকল ডাটাগুলোকে আরও বেশী করে নীরিক্ষার মধ্যে আনা উচিত যাতে করে উপরোক্ত প্রশ্ন গুলোর সঠিক উ্ত্তর পেতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:১০
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×