somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদিগের ভালোবাসা হইয়া গেলো ঘাস, খাইয়া লইলো গরু দিইয়া গেলো বাঁশ।{একটি পুরুষ নির্যাতন বিরোধী লেখা}

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধুমহলে একমাত্র জীবিত হিসাবে এখন পর্যন্ত তুই -ই ব্যাটিং করিতেছিস। বাকি সকলে লেন্জা কাটিয়া বিবাহিত হইয়া গিয়াছে। তাহার মানে গার্ল মার্কেটে আজো তোর শেয়ার উদ্ধমুখী। বাকি সকলের সুচক ধরাশায়ী হইয়া গিয়াছে। আহারে তোর কতো আনন্দ!! তোর সুখ দেখিয়া আমরা সকল লেন্জা বিসর্জনকারীরা অসুখে ভুগিতেছি। অথচ, তুই তো সিধা কথা কইবি না। খলবলাইয়া বলিয়া উঠিবি , "আরে বিবাহ করিয়া তোরা যে সুখের সাগরে পাড়ি দিতাছিস তাহা কি আমি জানিনে? তোদের জায়াগণ তোদেরকে মজার মজার রান্না-বান্না করিয়া খিলাইতেছে।শ্বশুড়বাটীতে জামাই আদরে দিনানিপাত করিতেছিস। শ্যালক-শ্যালিকারা গদগদ হইয়া নেঁকি সুরে জামাইবাবু-দাদাবাবু করিয়া কতইনা রংগ করে। আর আমাকেই বলিস আমার সুখে তোদের অসুখ হইতেছে। " আহারে ভাই, তুই চিরকালই এইরকম অবুঝ। লেন্জা যাহার কাঁটা পড়ি্যাছে তাহার দূঃখ অন্য কেউ কিভাবে বুঝিবে? তাই তো কবি কহিয়াছেন: "কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে/ কভু আশীবিষে দংশনি যারে।"

তোর সুখের বর্ণণা করিতে গেলে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ভরিয়া যাইবে তবুও শেষ হইয়াও শেষ হইবেনা। ফেসবুকে যখন তুই যখন কোনো বালিকার প্রোফাইল মজা মারিয়া দেখিস তখন কেহ পিছন হইতে ফুঁক দিয়া কহিবেনা, "একটাতে মিনসের আঁশ ভরেনা, আরো চাই? " অথচ রমনীকুল কি বুঝিবে ফেসবুকে বালিকাদের ছবি দেখিতে কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে। তুই যেভাবে ঘন্টাক্ষেপন করিয়া মাফিয়া ওয়ার করিতে পারিস, লেন্জা কাটার দল তাহা করিতে গেলে মূর্খ রমনীকুল পরকিয়া প্রেমের অভিযোগ দাখিল করিয়া সাড়ে বারোটা বাজাইয়া দিবে। যাহাকে খুশী পোক(poke) করিতে পারিস আবার যাহাকে খুশী এ্যাড করিতে পারিস। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো তো তোর জন্য ছেলের হাতের মোয়া।অথচ, বিবাহিত বন্ধুগণ তাহা করিতে গেলে ফেইক অ্যাকাউন্ট হইতে করিতে হয়। নচেৎ যখন স্ত্রীগণ বাসায় থাকে না কিংবা ঘুমন্ত থাকে তখন গিয়া ফেসবুকে উঁকি-ঝুঁকি মারে। এইতো সেইদিন একজনকে বাংগাল দেশের রাত্রি দ্বিপ্রহরে ফেসবুক হইতে হাতে-নাতে পাকড়াও করিয়াছি যে কিনা তাহার স্ত্রীর ভারী ঘুমের ফায়দা উঠাইতেছিলো। পরে অবশ্য ঘুষের বিনিময়ে তাহাকে মুক্তি দিয়াছি। যদিও সময়-সুযোগ হইলে তাহার নাম ফাঁস করিয়া দিবার প্রবল সম্ভাবনা আছে। অতএব, সাধু সাবধান। তোর অবশ্য সেই ঝামেলা নাই। ইহার চাইতে সুখ কি কিছু আছে?

বউয়ের হাতের মজার রান্না??? আহারে ভাই তাহার পিছনের করুণ কাহিনীর কথা জানিলে তুই বিবাহের নামে তওবা খাইবি। আকালের যুগে মাছ-মাংশ, তরিতরকারীর দাম কিংবা তেল কিনিতে গেলে যে ছাল খুলিয়া যাইবার উপক্রম হয় তাহা গিন্নি বুঝিতে চায়না। তারপরে আজিকে বড় কুটুম আসিবে, কালিকে শ্যালক পত্নী আসিবে আর পরশু স্বয়ং শ্বাশুড়ি মাতা আসিবেন তাহাতে বাজার হইতে মাছের বড় মুড়োটি না কিনিলে লজ্জ্বায় গিন্নীর নিজের মুড়ো কুরবানী হইবার উপক্রম। সুতরাং শতেক উপদ্রব সহ্য করিতে হয় রমনীর উপাদেয় খাদ্য গিলিবার লাগি। তোর তো সেই ঝামেলা নাই। আজ অমুক ভাবী তো কাল তমুক বউদি। হাত-খানা ধৌত করিয়া খাবার টেবিলে বসিয়া পড়িলেই হইলো। অথচ প্রায় প্রতিদিন একই রমণীর রন্ধনকৃত খাদ্য গলদঃধরণ করিতে করিতে জীবনখানা হাসঁফাস করিতেছে।

তোর মন চাহিলো আর তুই পাংখা মেলিয়া যেইখানে খুশী সেইখানে উড়াল মারিতে পারিস। অথচ লেন্জাকাটার দলকে বলিয়া দেখ, কাহারও সন্তানের পড়ালেখার চিন্তা, কাহারও কুটুমবাড়ীতে অনুষ্ঠান, কিংবা আপিসের জরুরী কর্মে মহাব্যস্ত হইয়া পড়িবে। আবার, কিছু লোক যাইবে বলিয়া শেষ মুহুর্তে বলিয়া উঠিবে, টিকিট একখানা কম করিস বাপু। অথচ মূল কথা হইলো অপরদিকে নজর না ফেলিবার জন্য বাবুগণের ধূতিতে গিন্নীদের কড়া ব্রেক লাগানো রহিয়াছে।

শালাশালীদের রং-তামাশার কথা ভাবিতেছিস??? ওই কথা যতই ভুলিয়া থাকিতে পারা ততই মংগল। তা না হইলে পকেটে ঝড় উঠাইয়া গড়ের মাঠ বানাইয়া দিবে। শ্যালিকা দুই মিনিট বলিয়া যেই মোবাইলখানা হস্তগত করিবে তাহার বিল মূসা ইব্রাহীমের মতো এভারেস্টের চূড়ায় না উঠা না পর্যন্ত সৎকার চলিতে থাকিবে।

জামাই আদরের কথা বলিতেছিস??? ওহে ভ্রাতা, শ্বশুড়বাটীতে গমন করিবার সময় দুই হাত ভরিয়া নাস্তা-পানি লইয়া না গেলে ওই বাড়ীর কুকুরও একটু পুঁচিয়া ঘেউ করিবেনা। একখানা আন্ডার দাম যদি মাত্র আট টাকা হয় তাহলে কমপক্ষে দুই কেজি মিষ্টির দাম কত? হিসাব কষিতে গেলে পাটি-গণিতের বেচারা বানরের কথা মনে পড়ে। বেচারা বিবাহিত মাত্রই তৈলাক্ত বাঁশ হইতে ধপাস শব্দে চিৎপটাং হইয়া পড়িবে। সারাজীবনটা বাশঁময় হয়ে থাকে। একজন বিবাহিত পুরুষ মাত্রই গলায় দড়ি বাঁধা অবোধ প্রানীর মতো । আশেপাশে মশা-মাছি বিরক্ত করিলেও তাড়াইতে পারে না। কারণ কবুল বলিবার সাথেই তাহার লেন্জা কটিয়া লওয়া হয়।

পরিশষে, বিবাহ হইলো অতীব শরমের বিষয় তয় ইহার প্রয়োজন রহিয়াছে। তবে যতকাল সম্ভব ততদিন পর্যন্ত লেজযুক্ত জীবন উপভোগ করিয়া লওয়া শ্রেয়। বান্দর খাঁচা অপেক্ষা বৃক্ষশাখায় অতীব উত্তম।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ ভোর ৬:১৬
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×