somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প: তেলাপোকা কি কমলা খায়?

৩০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটা তেলাপোকা ঘুরঘুর করে আশেপাশে। বিপলু খুব আগ্রহ নিয়ে ঘরের ঠিক মাঝ বরাবর একটা কমলা রেখে অন্য এককোণে মেঝেতে পাতা তােষকে বসে তেলাপোকার ঘােরাঘুরি দেখে। তেলাপোকাটা একবার কাছাকাছি আসে আবার সরে যায় কিন্তু কখনো কমলাকে স্পর্শ করে না। বিপলু ভাবতে থাকে, ‘আচ্ছা তেলাপোকা কি কমলা খায়?’ এ প্রশ্নের উত্তর সে পায় না কারণ তেলাপোকা কমলা খায় না, আশপাশ দিয়ে ঘােরাফেরা করে। বিপলুর সামনে পরীক্ষা তাই মাঝে মাঝে বই তুলে নেয় হাতে কিন্তু মনোযোগ দিতে পারে না, মাথায় বারবার ঘুরতে থাকে- তেলাপোকা কি কমলা খায়? তেলাপোকাটাও মনে হয় বিপলুর মনের কথা বুঝতে পারে তাই কমলার আশপাশ দিয়ে ঘােরাফেরা করে কিন্তু খায় না। ঠিক তখনি বাইরে কােথাও ঠাশ ঠাশ করে কয়েকবার শব্দ হয় আর বিপলুর মনোযোগ ছিন্ন হয়। শব্দটা সে প্রায় প্রতি রাতেই শােনে, রাত বারোটা পার হবার আগে অথবা পরে। অনেকটা বন্দুকের গুলির শব্দের মতো। পরপর কয়েকটা গুলি করলে যেমন শব্দ হবার কথা অনেকটা তেমন। কিন্তু সে নিশ্চিত হতে পারে না, কারণ এর আগে বাস্তবে কখনো গুলির শব্দ শােনেনি। বিষয়টা একটা রহস্য হয়ে থাকে। শুধু ওর কাছে নয় ওর বন্ধু রাহাতের কাছেও ব্যাপারটা রহস্যময় হয়ে ওঠে, যে ওরই মতো ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শেষে গ্রাম থেকে ঢাকা এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কােচিং করার জন্য। সম্ভবত শেখেরটেকে বসবাসরত ঐ বয়সের কিংবা অন্য বয়সের অনেকের কাছেও রহস্যময় হয়ে ওঠে কারণ শব্দটা হয়তো তারা শােনে কিন্তু উৎপত্তিস্থল বের করতে পারে না। চার নম্বর রােডের মাথায় প্রবাল হাউজিং-এর সামনে তখনো টং দােকানটা বর্তমান ছিল যেখানে ওরা নিয়মিত চা-সিগারেট খেত আর বিভিন্ন বিষয়ে আড্ডা দিত। জাপান গার্ডেন সিটির ফ্ল্যাটগুলোতে মানুষজন বসতি শুরু করছে মাত্র আর রিংরোডটা ছিল ডিভাইডারবিহীন সরু রাস্তা। ঐ টং দােকানটা ছিল রিংরোডের পাশেই যার সামনে ছিল ম্যাক্সি স্ট্যান্ড যেখান থেকে ওরা নিয়মিত ফার্মগেটের ম্যাক্সি ধরতো। চায়ের আড্ডায় মাঝে মাঝে রহস্যময় শব্দ নিয়ে আলাপ হতো। রাহাতের ধারণা, এসব ক্রসফায়ারের শব্দ। বেড়িবাঁধের ওপারে কিংবা গৈদারটেকের কােনো এক অংশে ক্রসফায়ার করা হয়। যেহেতু আশেপাশে বিল্ডিং কম তাই শব্দ ভেসে চলে আসে। রাহাতের ব্যাখ্যা বিপলুর মনোপুত হয় না যদিও সে অন্য কােনো ব্যাখ্যাও দিতে পারে না। কয়েকবার শব্দ হবার পর আবার থেমে যায়। সে আবার মনোযোগ দেয় তেলাপোকার দিকে- তেলাপোকা কি কমলা খায়?

তেলাপোকা কমলা খায় কি না সেটা জানা যায় না, তবে বিপলুর চাচাতো বােনের কেজি ওয়ানে পড়ুয়া মেয়ে রােদসী, যাদের বাসায় সে আশ্রয় নিয়েছে সে কমলা খায়। শুধু খায় বললে ভুল বলা হবে, সে খাদকের মতো কমলা খায়। ইতিমধ্যে ওর নাম হয়ে গেছে- বাচ্চা খাদক। কিন্তু সেদিন বিপলুর কেনা কমলা সে খেতে পারে না কিংবা খেতে চায় না। কমলা কেনার সময় বিপলুর সঙ্গে রাহাত না থাকায় সে কি খানিকটা দ্বিধাগ্রস্থ ছিল? সাধারণত সঙ্গীর উপস্থিতিতে কেনাকাটা করে ওরা, হয়তো খানিকটা সাহসী হয়ে ওঠে কিংবা সিদ্ধান্তহীনতায় ভােগে না। তবে মাঝে মধ্যে হিতে যে বিপরীত হয় না তা নয়। আগের মাসের কােনো এক সকালে ওরা নীলক্ষেতে বই কিনতে যায়। ক্লাশ নাইনের বাংলা ব্যকরণ বই কিনবে বলে ঠিক করলেও একাধিক বই দেখে খানিকটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তারপর ব্যকরণ বই না কিনে শমরেশ মজুমদারের মােটা মােটা কয়েকটা উপন্যাস কেনে, এতে বাজেটের তুলনায় বেশি খরচ হয়ে যায়। বিপলুর কাছে একটা পাঁচ টাকার নােট আর রাহাতের কাছে সাকুল্যে নব্বুই টাকা অবশিষ্ট ছিল। তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয় রিক্সায় না উঠে মােহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত বাসেই ফিরবে। তারপর সেখান থেকে শেখেরটেক পর্যন্ত রিক্সা ভাড়া বাবদ আট বা দশ টাকাও ওরা খরচ না করার সিদ্ধান্ত নেয়, এতে তাদের খানিকটা পথ হাঁটতে হবে। নীলক্ষেত মােড়ে তেরো নম্বর বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পরও ভীড়ের জন্য কােনো বাসে উঠতে পারে না, তখন ওরা সাইন্সল্যাব পর্যন্ত হেঁটে যাবার মতো অতিরিক্ত সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানেও স্কুল কলেজ ফেরত মানুষগুলোর জটলা কম নয়। ফলাফল সেখান থেকে আসাদগেট পর্যন্ত হেঁটে যাবার নতুন সিদ্ধান্ত নেয়, তারপর রাজধানী এক্সপ্রেস বাসে চড়বে যেটা মতিঝিল থেকে ফার্মগেট, আসাদগেট, শ্যামলী হয়ে শিয়া মসজিদ পর্যন্ত যায়। ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বর পর্যন্ত হেঁটে এসে উভয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শেখ সাহেবের বাড়ির গেটের বিপরীত দিকের বাঁধানো ফুটপাথে বসে ওরা ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করে। কাঁধ ব্যাগ থেকে বােতল বের করে ফুটানো নিরাপদ পানিতে চুমুক দিয়ে রাহাত বলে, ‘দােস্ত, চল ফুচকা খাই।’ উভয়ই ফুচকার ভ্যানগুলোর দিকে তাকায়। কয়েকজন ভ্রাম্যমান বিক্রেতা ফুচকার ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। দীর্ঘক্ষণ নীলক্ষেতে ঘুরে ও র্দীঘপথ হেঁটে আসার ফলে পেটে তখন ছুঁচো দৌঁড়াচ্ছে তবুও বিপলু কিছু বলে না। রাহাত এরই মধ্যে উঠে গিয়ে দুই প্লেট ফুচকার অর্ডার দেয়। বিপলু বলে, কত করে প্লেট?
- কত আর হবে? সব জায়গায় তাে দশ টাকা করে, এখানে বেশি হলে পনেরো টাকা করে হবে।
- তুই জিজ্ঞেস করিস নি?
- নাহ। ছােটলোকের মতো জিজ্ঞেস করবো নাকি খাওয়ার আগে?
- জিজ্ঞেস করলেই কি ছােটলোক হয়ে যাবি নাকি?
- আরে ধূর, বাদ দে।
দুই প্লেট গরম গরম ফুচকা আসে। ওরা দীর্ঘ সময় নিয়ে ফুচকা খায়। টক-এ তেঁতুলের উপস্থিতি সন্তোষজনক। ঝাল-লবণও পরিমাণ মত। ওদের মনে হয় এমন মজাদার ফুচকা ওরা আগে কখনো খায়নি। ফুচকার কারিগর নিশ্চয় স্পেশাল কােনো মসলা ব্যবহার করেছে। বিল দিতে গিয়ে রাহাত জানতে পারে প্রতি প্লেট ফুচকার মূল্য তিরিশ টাকা তখন ওর মন খারাপ হয়ে যায়। যতটা না টাকার শােকে তারচেয়ে বেশি মন খারাপ হয় বিপলুর আসন্ন টিপ্পনির কথা ভেবে, কারণ এরকম সুযোগ পেলে সে নিজেও ছেড়ে কথা বলতো না। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে সেদিন বিপলু কিছু বলে না। ষাট টাকার একটা অনাকাঙ্খিত ধাক্কা খাবার পরে বাকি পথটা ওরা রিক্সায় ফেরে। দর-কষাকষির পর পঁয়ত্রিশ টাকা ভাড়া ঠিক হয়। রিক্সায় ওঠার খানিকক্ষণ পর বুকপকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে জ্বালায় রাহাত। আয়েশ করে সিগারেটের অর্ধেক পর্যন্ত টানে সে, তারপর এগিয়ে দেয় বন্ধুর দিকে। অনিয়মিত ধূমপান করলেও সিগারেট নেয় বিপলু। একটা টান দিয়েই বুঝতে পারে এটা ওদের রেগুলার ব্র্যান্ড গােল্ডলিফ নয়, তাকিয়ে দেখে সিগারেটটা- বাংলা ফাইভ। অভিজাত ব্র্যান্ড, যদিও পরবর্তীতে বাজার থেকে সিগারেটটা তুলে নেয় ব্রিটিশ আমেরিকান টােবাকো কােম্পানী। অভিজাত সিগারেটে সুখটান দেয় বিপলু। রিক্সা এরই মধ্যে মােহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড পেরিয়ে বাঁশবাড়ি রােডে ঢুকে পড়ে। শিয়া মসজিদ মােড়ের আগে বামদিকের ভাসমান বস্তির দিকে তাকায় সে। ভাসমান ঘরগুলোর সামনে প্রায় নেংটা বছর পাঁচেকের এক শিশু দাঁড়িয়ে আঙ্গুল চুষছে আর কিছুক্ষণ পরপর মা-মা বলে চেঁচাচ্ছে। ওর মা হয়তো কারো বাসা-বাড়িতে ঝিয়ের কাজে গিয়েছে। ফেরার পথে ছেলের জন্য এক প্লেট বাসি ভাত নিয়ে আসবে, ভাগ্য ভালো হলে হয়তো কিছু তরকারিও জুটে যেতে পারে সাথে। শিশুটি আঙ্গুল চােষা বন্ধ করে আবার মা-মা বলে চেঁচায়। বস্তিবাসী এক কিশোরী শিশুটির পাশ দিয়ে যায়। যাবার সময় শিশুটির পাছায় একটা থাপ্পড় মারে। এতে শিশুটি ক্ষিপ্ত হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে গালি দেয়- ‘খানকি মাগী।’ কিশোরীটি গালাগালি গায়ে মাখে না, বলে, ‘তাের মায়ে আরেক ব্যাটার লগে ভাইগা গ্যাছে।’ শিশুটি কথাটা বিশ্বাস করে না, চেয়ে থাকে কিশোরীর দিকে। কিশোরীটি চলে যেতে শুরু করে। শিশুটি আবার একটা গালি দেয়। কিশোরীটি দাঁড়িয়ে যায়, ওর দিকে ঘুরে আরেকটা মার কষতে উদ্যত হয় এতে শিশুটি বিপরীত দিকে দৌড়ে পালায়। এর মধ্যেই রিক্সা পেরিয়ে যায় শিয়া মসজিদ মােড়। জাপান গার্ডেন সিটির দিকে তাকায় ওরা। সুউচ্চ দালান কােঠা দাঁড়িয়ে আছে। এখানে নাকি এক সময় বস্তি ছিল, অথচ এখন প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের জন্য তৈরি হয়েছে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ফ্ল্যাট! বিপলুর মনে হয়, আগেও বস্তি ছিল এখনো বস্তিই আছে; আগে ছিল গরীবের বস্তি আর এখন বড়োলোকের বস্তি। এই বড়োলোকের বস্তির পেছনে থেকেই রহস্যময় শব্দ আসে কিনা- সে বুঝতে পারে না। সামনে থেকে দাঁড়ালে সুউচ্চ দালানের পেছনে কিছু দেখা যায় না, তবুও ফাঁক দিয়ে পেছনে দেখার একটা ব্যর্থ চেষ্টা চালায় বিপলু। রহস্যময় শব্দের উৎস বের করা সম্ভব হয় না। একইভাবে উৎসের সন্ধানে মাঝে মাঝে ওরা শেখেরটেকের মেইন রাস্তা ধরে হেঁটে যায়। দশ নাম্বার মােড়ের হােটেলে দাঁড়িয়ে এক টাকা দামের আলু পুড়ি খায় ঝােল দিয়ে। তারপর আবার হাঁটতে থাকে। অনেকগুলো ফাঁকা প্লট দেখে, আর অনেকগুলো প্লটে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট বাড়ি দেখে। আরো এগোতে থাকে। বায়তুল আমান চৌদ্দ নাম্বার পেরিয়ে যাবার পর আর দেখার মতো তেমন কিছু পায় না। ওরা ফিরে আসে। শব্দের কােনো কূল কিনারা বের করতে না পারলেও কেনাকাটা করার সময় সঙ্গীর উপস্থিতিকে ওরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। কিন্তু সেদিন কমলা কেনার ঘটনাটা আকস্মিক ঘটে। বিপলু কােচিং থেকে একাই ফিরছিল। রাহাত কেন কােচিং-এ যায়নি তা সে জানে না। নির্দিষ্ট সময় ম্যাক্সি স্ট্যান্ডে ওকে না দেখে একাই ফার্মগেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। তারপর কােচিং-এ গিয়েও অপেক্ষা করে বন্ধুর, কিন্তু রাহাত যায় না। অগত্যা ফেরার পথেও সে একাই ছিল। লাইনে দাঁড়িয়ে যাত্রীতে পরিপূর্ণ ম্যাক্সিতে উঠে সে। সাধারণত আসাদগেট পেরোতেই হেল্পার ভাড়া তুলে। এরকমই এক সময় হেল্পার ভাড়া তুলতে শুরু করে। বিপলুর পাশের সিটে বসা মাঝবয়েসী ভদ্রলোক ভাড়া পরিশোধ করতে পারেন না। সম্ভবত ম্যাক্সিতে ওঠার সময় কিংবা তারও কিছু সময় আগে পিক পকেট হয়েছে। ভাড়া দিতে গিয়ে পকেটে হাত দেবার পরে তিনি ব্যাপারটা ধরতে পারেন। এখন তিনি ভাড়াও দিতে পারেন না, নেমেও যেতে পারেন না। অন্যদিকে হেল্পার তার কথা বিশ্বাস করে না। তখন তিনি তার হাতে ধরে রাখা নীল পলিথিন ব্যাগটা দেখান। ব্যাগে এক ডজন কমলা আছে। তিনি কমলাগুলো ভাড়া হিসেবে দিতে চান কিন্তু হেল্পার রাজী হয় না। ক্যাঁচাল চলতে থাকে। বিপলুর কাছে ব্যাপারটা ভালো লাগে না। সে উদ্যোগী হয়ে ভদ্রলোকের ভাড়াটা দিতে চায়। কিন্তু তিনি রাজী হন না। তিনি জানান তিনি সৈয়দ বংশের লােক, তিনি কারো দয়া নেন না। তবে কেউ যদি তাঁর কমলাগুলো কিনে নিতে চায় তাহলে তিনি রাজী আছেন। আশেপাশের কেউ এই প্রস্তাবে রাজী হয় না। হেল্পারও ভাড়া মাফ করে না। অগত্যা দয়াপরবশ হয়ে বিপলু কমলা কিনতে রাজী হয়। তারপর সেই কমলার ব্যাগটা ডান হাতে ঝুলিয়ে সে বাসায় ফেরে। কমলার মূল্য নিয়ে খুব একটা ভাবতে হয়নি, ভদ্রলোক বাজার দরেই দিলেন। সৈয়দ বংশের মানুষের প্রতি ওর একটা ভালো লাগা জন্মায়। আজকের বাজারে সচরাচর এমন মানুষ পাওয়া যায় না। এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে প্রবাল হাউজিং পেরিয়ে শেখেরটেকের রাস্তা ধরে বিপলু। পাঁচ নাম্বার রােডের কয়েকটা বাসা পেরিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ট্রাক দেখে। অপরদিক থেকে একটা রিক্সা বের হতে গিয়ে আটকে গেছে, ট্রাকের পেছনেও কয়েকটা রিক্সা আটকা রয়েছে। ছােটখাট একটা জ্যাম লেগে গেছে এরই মধ্যে। ট্রাক ড্রাইভারকে সবাই দােষারপ করছে কারণ রাত দশটার আগে ট্রাক ঢােকার কথা নয়। কােনোরকম ট্রাক-রিক্সার জ্যাম পেরিয়ে সামনে এগেলো সে। হঠাৎ একটা শব্দ শুনে দাঁড়িয়ে পড়ে। অবিকল রাতের সেই রহস্যময় শব্দ! পেছনে তাকিয়ে দেখে একদল মানুষ ট্রাক থেকে ইট নামিয়ে দেয়ালের মতো করে সাজিয়ে রাখছে। প্রত্যেক শ্রমিককে ট্রাক থেকে আনুমানিক দশ-বারোটা ইট মাথায় তুলে দেয়া হচ্ছে, ওরা কয়েক কদম হেঁটে রাস্তা পাশে সাজানো দেয়ালে ফেলছে। সেখানেই তৈরি হচ্ছে রহস্যটা! প্রথমে একজন, তারপর আরো কয়েকজন। মুচকি হেসে বাসার দিকে রওয়ানা দেয় বিপলু।

তেলাপোকা কমলা খায় কি না- এ প্রসঙ্গে আসার আগের সন্ধ্যায় রােদসী আবিস্কার করে বিপলু মামার কেনা কমলাগুলো পঁচা! কােনটাই খাবার যােগ্য নয়। কাজেই সে খুব মন খারাপ করে। অন্যদিকে ভাগ্নির মন খারাপ বিপলুর মধ্যে সংক্রমিত হয়। সে খানিকটা বিরক্তও হয়। সৈয়দ বংশের মানুষের কাছে সে এরকমটা মােটেও আশা করেনি, পাশাপাশি নিজের বােকামীর কথাও ভুলতে পারে না। তবে রাতে যখন রহস্যময় শব্দ তৃতীয়বারের মতো ওর মনোযোগ নষ্ট করে, তারপরও সে তেলাপোকার গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে। জগতের অন্য সকল বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে সে কেবলি ভাবতে থাকে- তেলাপোকা কি কমলা খায়?

ছবি: গুগলমামা।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:২৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×