somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সন্ত্রাস এবং মহানবী(স:)-এর ছবি

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৭ই জানুয়ারি,বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটা,একটি সাদা রংয়ের গাড়ী প্যারিসে অবস্থিত রম্য ম্যাগাজিন "শার্লি হেবদো"-এর অফিসের অনতিদূরে এসে থামল। গাড়ী থেকে নামল কালো পোশাক পরিহিত দুজন লোক। তাদের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল আর হাতে ছিল অটোমেটিক অস্ত্র। তারা পাশে কর্মরত লোকের কাছে "শার্লি হেবদো" -এর অফিসের অবস্থান জানতে চাইল এবং গুলি করল। এতে একজন মারা গেল।

বিল্ডিং-এর তৃতীয় তলায় ম্যাগাজিনটির অফিস। প্রবেশমুখের প্রথমেই 'নিউজরুম'। প্রতি বুধবার ম্যাগাজিনটি প্রকাশিত হয়, এইজন্য নিউজরুমে সম্পাদকসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা খুব ব্যস্ত ছিল। এইসময় মুখোশ পরিহিত হাতে অস্ত্রসহ লোক দুইজন প্রবেশ করল। প্রবেশ করেই অস্ত্র উঁচিয়ে মহিলাদেরকে পুরুষদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যেতে বলল। এরপর পুরুষদেরকে নাম জিজ্ঞাসা করেই গুলি করা শুরু করল। সাথে সাথে সম্পাদকের দেহরক্ষী একজন পুলিশ সহ মোট দশজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।

গুলির শব্দ শুনে নীচ থেকে এক পুলিশ উপরে আসার পথে তাদের মুখোমুখি হল এবং শুরু হল দুপক্ষের গুলি বিনিময়। পুলিশটি এতে আহত হয়ে পড়ে গেল, মুখোশ পরিহিত দুজনের একজন তখন কাছে যেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় পুলিশটির কপালে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করল এবং কোন বাধা ছাড়া স্থান ত্যাগ করল।

হত্যাযজ্ঞ শেষে চলে যাওয়ার সময় তারা চিৎকার করে বলেছিল "আমরা মহানবী(স:)-কে অবমাননা করার প্রতিশোধ নিয়েছি"।

মুখোশ পরিহিত দুজনের একজন সাইদ কোশি,আরেকজন শরিফ কোশি। তারা আপন দুভাই। সাইদের বয়স যখন ১৪বছর,আর শরিফ কোশি ১২বছর তখন তাদের আলজেরিয়ান পিতামাতা মারা যায়। তারা প্যারিসের শহরতলীতে বাস করত। পিতামাতার মৃত্যুর পর তাদের দায়িত্ব নেয় প্যারিস সোস্যাল সার্ভিস এবং তাদেরকে মধ্য ফ্রান্সে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সাইদ হোটেল বিষয়ে ডিপ্লোমা করে আর শরিফ হয় একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান। হত্যাযজ্ঞ ঘটানোর আগে তারা জিহাদি গোষ্ঠীর সংস্পর্শ লাভ করে এবং এইজন্য তাদের জেলেও যেতে হয়।

রম্য ম্যাগাজিন "শার্লি হেবদো" মহানবী(স:)-এর কাল্পনিক ছবি ছাপিয়ে মুসলিম বিশ্বের রোষানলে পড়ে-এই হত্যাযজ্ঞের এটি একটি অন্যতম কারণ।

ইসলাম ধর্মে একমাত্র আল্লাহ্‌র উপাসনা করা মুসলমানদের জন্য জায়েজ, আর কারও উপাসনা করা নিষিদ্ধ। মহানবী(স:) একজন রক্ত-মাংসের মানুষ। সবাই শুধু তার জীবনযাপনের পদ্ধতি অনুসরণ করবে,তাঁর কথা মেনে চলবে কিন্তু তাঁর উপাসনা করবেনা-যেটা খ্রিস্টধর্মে হয়ে থাকে, যীশুখ্রীস্টকে সৃষ্টিকর্তার পুত্র হিসাবে তাঁর উপাসনা করা হয়।

মহানবী(স:) নিজে এই ব্যাপারে সাবধান ছিলেন। নিজের ছবি আঁকা তিনি নিজেই নিষিদ্ধ করেন, কারণ তিনি ধারনা করেছিলেন তার ছবিকে একসময় হয়ত মানুষ উপাসনা করবে।

"দ্যা ম্যাসেঞ্জার" নামক একটি চলচ্চিত্র -যেটি মুসলিম সমাজে খুব জনপ্রিয় হয়েছিল-তাতে মহানবী(স:)-কে একটি "ছায়া" দ্বারা বুজানো হয়েছিল।

অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয় থেকে মুসলমানদের উপাসনালয় পৃথক। মুসলমানদের উপাসনালয় "মসজিদ"-কে কোন ছবির পরিবর্তে পবিত্র কোরানের আয়াত দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×