somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস--৫

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাষার দাবীটি ছিল জাতীয় দাবী। ফলে ভাষা আন্দোলন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় আন্দোলনের রুপ পরিগ্রহ করে। কোন একক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে এ আন্দোলনকে সীমিত না রেখে একে সর্বদলীয় রুপ দেয়ার ব্যাপারে তমদ্দুন মজলিস এর কোন আপত্তি ছিল না। ফলে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। বলতে গেলে তখন থেকেই ভাষা আন্দোলনে রাজনীতিবিদদের সরাসরি ও বলিষ্ঠ আগমন ঘটে। ১৯৫০ সালে বামপন্থী ছাত্রনেতা আব্দুল মতিনকে আহবায়ক করে বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কমিটি গঠিত হ্য়। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের ফলে আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে ঠিকই কিন্তু স্বার্থান্ধ মহলের জন্য তা নতুন দ্বারও উম্মূক্ত করে। কাজী গোলাম মাহবুবকে আহবায়ক করে ৪০ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৫১ সালে রাষ্ট্রভাষা দিবস উপলক্ষে ২১ শে ফেব্রুয়ারী সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী সর্বাত্মক হরতাল ওপ্রতিবাদের প্রস্তুতির প্রেক্ষিতে সরকার ২০ শে ফেব্রুয়ারী রাত্রি থেকে ঢাকা জেলার সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারী করেন। সর্বদলীয় কর্ম পরিষদ আন্দোলনের পিঠে ছুড়িকাঘাত করে ১৪৪ ধারা ভংগ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ২১ শে ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক সমাবেশে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদ এর পক্ষ থেকে জনাব শামছুল হক ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার আবেদন জানালে সাধারন ছাত্রদের প্রতিবাদের মূখে তিনি তার সহকর্মীসহ বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন।
বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কমিটির আহবায়ক আব্দুল মতিন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের দায়িত্ব ছাত্রদের উপর ছেড়ে দিয়ে পরবর্তী পরিস্থিতির দায়িত্ব থেকে ণিজেকে মুক্ত করে নেন। শেষ পর্যন্ত ছাত্রসমাজ অনমনিয় সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে এবং সৃষ্টি হয় নতুন এক রক্তাক্ত ইতিহাস----।
ভাষা আন্দোলনের সংগঠক গাজিউল হক ঢাকা ডাইজেস্ট , জুন/৭৮ সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন,''ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে এবং তা দুদিক থেকে। এক দিকে কিছু নতুন দাবীদারকে প্রতিষ্টাকরার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে ও অন্যদিকে কারো কারো নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তাধারার কাঠামোতে ফেলার জন্য এ মহান আন্দোলনের ইতিহাস কে ভিন্নরুপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন অনেকে।
১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী ১৪৪ ধারা ভংগের যে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সাধারণ ছাত্র-জনতা কর্তৃক , সে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন মুহাম্মদ সুলতান। ঢাকা ডাইজেষ্ট , জুন/৭৯ এর এক সাক্ষাৎকারে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে টিভি সাক্ষাৎকারে ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে আলাপ করছিলেন শেখ মুজিব ও কে জি মোস্তফা। এক পর্যায়ে শেখ মুজিব তাকে জিঞ্গেস করেন- তোমার মনে নেই মোস্তফা ৫২ এর ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে আমি ১৪৪ ধারা ভাংগার নির্দেশ দিয়েছিলাম। -এমনি অনেক ধরনের কথা। মোস্তফা কখনো মাথা নেড়ে , কথা বলে শেখ মুজিব এর কথার সমর্থন দিচ্ছিলেন, অথচ শেখ মুজিব তখন জেলে।" কিন্তু ৬৩ সালে প্রকাশিত কে জি মোস্তফার 'একুশে ফেব্রুয়ারী' বইতে লিখেছেন "শেখ মুজিব তখন জেলে, ১৯৪৯ সালের মার্চ থেকেই তিনি জেল খাটছিলেন"
চলবে---
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×