গাজি স্যার মানুষটা সত্যি সরল ।
মুজিব ভাই বেড়িয়ে যেতে যেতে স্যারকে সাবধান করেছিলো,
- ওর কথা বিশ্বাস করবেন না একটাও, ও নিজেই খবর তৈরি করে !
স্যার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন আমাকেই, সত্যি নাকি ??
- নাহ কখ্খনো না। নেভার ।
কথায় কথায় 'কোটা প্রথার' কথা উঠলো । আমি বললাম , 'মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেয়ার জন্য সন্তানদের আলাদা সুবিধা দেয়াটা মুক্তিযোদ্ধাদেরই অপমান করা , তাদের সন্তানদের এবিলিটিকেও অসম্মান করা । আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধ করে নিজেকে প্রমান করেছেন ,তার ছেলে হয়ে আলাদা সুবিধা নিয়ে নিজেকে কি অপদার্ধ প্রমান করবো?'
- 'তা ঠিক বটে ।'
- 'তবে হ্যা, যদি আসে কখনো শাহবাগের গনজাগরন কোটা, সেই কোটার এক্সট্রা ফ্যাসিলিটি নিতে আপত্তি নেই । আমি যে গনজাগরণ মন্ঞের সাথে নিবিঢ় ভাবে জড়িত ছিলাম তার সচিত্র প্রমান আছে ।'
- 'সত্যি নাকি ? বাহ !'
নেটবুকটা ওপেন করে আমার ছবিটা স্যারকে দেখিয়ে দিলাম ।কপালে ফাসি চাই লিখা ব্যান্ড । হাসি মুখে আমি আঙুলে ভি সাইন দেখাচ্ছি । পিছনে জাতীয় জাদুঘর আর পায়ের কাছে সালাম করার ভঙ্গিতে হাসিমুখে আছেন ইমরান এইচ সরকার ।
স্যার হতভম্ব গলায় বললেন , 'এইটা কে? ডাঃ ইমরান না?'
- 'জি ।'
- 'তোমার পায়ের কাছে কেনো?'
- 'কদমবুচি করতেছে ।'
- 'সে তোমাকে কদমবুচি করছে কেনো? বয়েসে তোমার থেকে বড় না?'
- 'অসম্ভব শ্রদ্ধা করে আমাকে তাই কদমবুচি করতেছে , প্রগাঢ় শ্রদ্ধার কাছে বয়েস কোনো ব্যাপার না ।' আমি উদাস গলায় বলি । স্যার মুগ্ধ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন ।
টিচার্স রুমের দরজা একটু ফাক করে সালাম উকি দেয় , 'স্যার ক্লাসের টাইম ...।'
গাজি স্যার ব্যস্ত হয়ে উঠে যান ,
- 'অনন্ত, যেও না কিন্তু, আমি ক্লাসটা শুরু করে দিয়েই আসছি ।'
আমি নেটবুকটা ক্লোজ করে ফোনে টেম্পল রান খেলতে থাকি ।
মনে মনে বলি, 'ফটোশপ জিন্দাবাদ ।'