# আল্লাহ বিশ্বাস
# শুধুমাত্র মুমিনদের জন্য উপস্থাপিত। অবিশ্বাসীদের এটি পাঠ ও এতে মন্তব্যের দরকার নেই
সূরাঃ ৫৭ হাদীদ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩।তিনি প্রথম, তিনি শেষ, তিনি প্রকাশ্য, তিনি গোপন এবং তিনি সব কিছু জানেন।
সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। বল, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
* আল্লাহ প্রথম।তিনি এক। গাণিতিক নিয়মে প্রথম ও একের পূর্বে শূন্যের অবস্থান। শূন্য থেকে প্রথম ও এক কিভাবে বিদ্যমাণ হলেন? কেউ কেউ বলেছে প্রথম ও একের পূর্বের শূন্যে বিবিধ ক্রিয়া-প্রক্রিয়ায় বিবিধ শক্তির উদ্ভব ঘটেছে। সেই বিবিধ শক্তির সমষ্টি সর্বশক্তিমাণ আল্লাহ। কেউ কেউ বলে, তাহলে তো ক্রিয়া-প্রক্রিয়া প্রথম। কিন্তু এমন কথা সঠিক নয়। কারণ ক্রিয়া প্রক্রিয়া কোন সত্তা নয়। সুতরাং সত্তাহিসাবে আল্লাহ প্রথম ও এক।
সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তাঁর।কে সে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর নিকট সুপারিশ করবে? তাঁর সামনে পিছনে যা কিছু আছে তা’ তিনি জানেন।তাঁর ইচ্ছা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কিছুই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না।তাঁর ‘কুরসী’ আকাশ ও পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত।এ দু’টির হেফাজত তাঁকে ক্লান্ত করে না।আর তিনি পরম উচ্চ-মহিয়ান।
* আল্লাহর পূর্বে শূন্য থাকায় তাঁর সীমা দাতা ছিলো না। সেজন্য তিনি অসীম হয়েছেন। অসীম ফুরিয়ে যায় না বিধায় আল্লাহ চির বিদ্যমাণ। আর তাঁর সত্তায় অসীম প্রাণ শক্তি থাকায় তিনি চিরঞ্জিব।
সূরাঃ ৫৫ রাহমান, ২৬ নং ও ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। তাতে সব বিলিন হয়
২৭। আর বাকী থাকে তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমাময়, মহানুভব।
* আল্লাহ দেখেছেন সবকিছু বিলিন হয়ে তিনি বাকী থাকছেন। তাঁর বাকী থাকার কারণ তিনি অসীম। আর অসীম ফুরিয়ে যায় না বলে তিনি বাকী থাকেন। তাঁর অসীম হওয়ার কারণ কেউ তাঁর সীমা দেয়নি।অন্যরা বিলিন হওয়ার কারণ তারা সসীম।সসীমের সীমা দিতে হয়। নতুবা সসীম বিলিন হয়। কারণ সীমা ছাড়া কোন সসীম হয় না।
সূরাঃ ২ বাকারা ১১৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১১৭। আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর দৃষ্টান্ত বিহীন নতুন স্রষ্টা। আর যখন তিনি কোন কিছু করতে সিদ্ধান্ত করেন তখন উহার জন্য শুধু বলেন ‘হও’ আর উহা হয়ে যায়।
* সসীমে সীমা না দিলে সসীম বিলিন হয়। সসীমে সীমা দিয়ে ‘হও’ বললে সসীম হয়ে যায়। আল্লাহ এ কাজটি করতে জানেন। সেজন্য তিনি সৃষ্টিকর্তা হলেন।অন্য কেউ এটা জানে না বিধায় তারা হয়েছে তৈরী কারক। সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেন এবং তৈরী কারক রূপান্তর ঘটায়।
সূরাঃ ২১ আম্বিয়া, ৩০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩০। যারা কুফুরী করে তারা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশেছিল ওতপ্রতভাবে। অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি। আর প্রাণবান সব কিছু সৃষ্টি করেছি পানি হতে। তথাপি কি তারা ঈমান আনবে না?
* আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীকে প্রথমে একত্রিত অবস্থায় সৃষ্ট করেছেন, তারপর এগুলোকে পৃথক করেছেন। তারপর তিনি পানি থেকে প্রাণবান সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।
সূরাঃ ২০ তা-হা, ৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫। দয়াময় আরশের উপরে সমাসীন আছেন।
সূরাঃ ৩৯ যুমার, ৬৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৭। তারা আল্লাহর যথাযথ সম্মান করে না। কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুঠোয় এবং আকাশ মন্ডলী থাকবে ভাঁজ করা অবস্থায় তাঁর ডান হাতে। পবিত্র ও মহান তিনি, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে।
* মহাজগতের উপর আল্লাহর আরশ। শেষ বিচারে আরশের সম্মুখে বিচারের জন্য আল্লাহর সৃষ্টিকুলকে হাজির করা হবে। তখন আকাশ ও জমিন আল্লাহর হাতে থাকবে। তাঁর কাজে তাঁর কোন অংশিদার নেই।
আল্লাহর কথা যারা বিশ্বাস করে যারা তাঁর ইবাদত করবে আল্লাহ তাঁদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন। আর যারা তাঁর কথা অবিশ্বাস করবে ও তাঁর অবাধ্য হবে আল্লাহ তাদের জন্য চিরস্থায় জাহান্নামের ব্যবস্থা রেখেছেন। আল্লাহর কথা অনুযায়ী আল্লাহ বিশ্বাস জান্নাতে যাওয়ায় প্রথম কাজ।
আল্লাহর কথা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীর বিপরীত কথা বিবেচ্য নয়। কারণ বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীর বিপরীত কথা বিশ্বাসে/অবিশ্বাসে জান্নাত-জাহান্নামের হিসাব নেই। সেজন্য মুমিন সেসব কথা পড়ে ও শুনে তবে তারা বিশ্বাস করে আল্লাহর কথা। কারণ তাদের লাভ ও লোকসানের হিসাব রয়েছে আল্লাহর কথায়।
বিজ্ঞানের নামে কেউ কেউ বলে মনুষ আল্লাহর সৃষ্ট নয় তারা বিবর্তনের মাধ্যমে হয়েছে। অথচ আদম সন্তান যে মানুষ তাদের আদি পিতা আদম (আ.) ও আদি মাতা হাওয়া (আ.) অন্য স্থান থেকে পৃথিবীতে আসা এলিয়েন।তাঁরা পৃথিবীর বিবর্তনের অংশ নন। তাঁদের মত যারা পৃথিবীতে ছিলো আল্লাহ তাদের বিনাশ ঘটিয়ে পৃথিবীতে আদম (আ.) ও হাওয়াকে (আ.) তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন।সুতরাং আমরা হলাম আদম (আ.) ও হাওয়ার (আ.) সন্তান মানুষ।বিবর্তনের সাথে মূলত আমাদের কোন সংযোগ নেই।
বিজ্ঞান বলে বীগ ব্যাং এ সব হয়েছে। আমরা বলি সেই বীগ ব্যাং হলো আল্লাহর কাজ। কারণ এত্ত বড় কান্ড ঘটাতে আল্লাহর মত সর্বশক্তিমানের দরকার ছিলো। কেউ কেউ বলে মহাজগত আমরা ফ্রিতে পেয়েছি। আমরা বলি আল্লাহ আমাদেরকে মহাজগত ফ্রিতে দিয়েছেন।কারণ মহাজগতের সদস্য হতে আমাদেরকে বিনময়ে কিছু দিতে হয়নি। কেউ কেউ বলে আল্লাহ কিছু সৃষ্টি করেননি সব কিছু মেনি এমনি হয়েছে। আমরা বলি সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা কি? তাঁকে আবার এমনি এমনি হতে কে বারণ করেছে? এভাবে দেখা যায় আল্লাহ বিরোধী সকল কথা অযোক্তিক। কিন্তু আল্লাহর স্বপক্ষে বলা সকল কথা যোক্তিক। বিশ্বাসের অনেক কথায়ি যুক্তি না থাকলেও আল্লাহ বিশ্বাস সংক্রান্ত সকল কথায় যুক্তি আছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৩৪