# মহানবির (সা.) নামে প্রচারিত কথার কোটি হাদিস আর কোনটি হাদিস নয়, সেটা কারা বলবেন?
# শুধুমাত্র মুমিনদের জন্য উপস্থাপিত। অবিশ্বাসীদের এটি পাঠ ও এতে মন্তব্যের দরকার নেই
সূরাঃ ১৬ নাহল, ৪৩ ও ৪৪ নং আয়তের অনুবাদ-
৪৩।তোমার পূর্বে আমরা পুরুষ ভিন্ন (বার্তা বাহক) প্রেরণ করিনি। আমরা তাদের প্রতি ওহি প্রেরণ করেছিলাম।অতএব আহলে যিকরকে জিজ্ঞাস কর, যদি তোমরা না জান।
৪৪।সুস্পষ্ট প্রমাণ ও কিতাব সমূহ সহ।আর মানুষকে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা, সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আপনার প্রতি নাজিল করেছি যিকর। যেন তারা চিন্তা ভাবনা করতে পারে।
* মহানবির (সা.) নামে প্রচারিত কথার কোটি হাদিস আর কোনটি হাদিস নয় সেটা আহলে যিকর বলবেন। কারা আহলে যিকর?
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৯ নং আয়াতের অনুবাদ।
৯। হে মুমিনগণ! জুমুয়ার দিন যখন সালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর যিকিরের দিকে দৌড়িয়ে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বুঝ।
সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৭। আর যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতি সাধন, কুফুরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং ইতিপূর্বে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছে তার গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের জন্য, তারা শপথ করেই বলবে তারা ভাল কিছু করার জন্যই ওটা করেছে; আর আল্লাহ সাক্ষি দিচ্ছেন নিশ্চয়ই তারা মিথ্যাবাদী।
সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৯৫০ নং হাদিসের (ফিতনা অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৯৫০। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.)বলতে শুনেছি আমার উম্মত পথভ্রষ্টতার উপর একত্রিত হবে না। যখন তোমরা উম্মতের মাঝে মতপার্থক্য দেখতে পাবে, তখন সর্ববৃহৎ দলের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।
* যাদের দায়িত্বে সম্পন্ন যিকিরে সামিল হতে আল্লাহ দৌড়ে যেতে আদেশ করেছেন সেই জুমুয়ার খতিবগণের সর্ববৃহৎ দল আহলে যিকর। কারণ মুসলিমদের মাঝে বিভেদ তৈরী করতে যেসব মসজিদ তৈরী করা হয়েছে সেসব মসজিদের জুমুয়ার খতিব আহলে যিকর নয়। সুতরাং জুমুয়ার খতিবগণের সর্ববৃহৎ দলের সাথে মতভেদকারী জুমুয়ার খতিব আহলে যিকর নয়।
সহিহ আবু দাউদ, ৪৫৭৭ নং হাদিসের (সুন্নাহ অধ্যায়) অনুবাদ-
৪৫৭৭। হযরত সাফীনা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, নবুয়তের খেলাফতের সময়কাল হলো ত্রিশ বছর। তারপর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রাজত্ব বা বাদশাহী দান করবেন।
হযরত সাঈদ (র.) বলেন, সাফীনা (রা.) আমাকে বলেন, তুমি হিসাব কর। আবু বকরের (রা.) শাসনকাল দু’বছর, ওমরের (রা.) দশ বছর, ওসমানের (রা.) বার বছর, আলীর (রা.) ছ’বছর।হযরত সাঈদ (র.) বলেন, আমি সাফীনাকে (রা.) জিজ্ঞেস করি যে, বনু মারওয়ান ধারণা করে যে, আলী (রা.) খলিফাদের অন্তর্ভূক্ত নন। তিনি বলেন, বনু-মারওয়ানরা মিথ্যা বলেছে।
সহিহতিরমিযী, ৩৭০১নংহাদিসের[ রাসূলুল্লাহ (সা.) ওতাঁরসাহাবীগণেরমর্যাদাঅধ্যায়] অনুবাদ-
৩৭০১।হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আলআব্বাসকে (রা.) বললেন, আগামী সোমবার আপনি আমার কাছে আসবেন এবং আপনার সন্তানদেরকেও সাথেনিয়ে আসবেন।আমি আপনার জন্য এবং আপনার সন্তানদের জন্য একটি দোয়া করব, যার দরুন আল্লাহ আপনাকেও উপকৃত করবেন এবং আপনার সন্তানদেরও।সকালে তিনি গেলেন এবং আমরাও তাঁর সাথে গেলাম।তিনি আমাদের গায়ে একখানা চাদর জড়িয়ে দিলেন, এরপর বলেন, হে আল্লাহ! আল আব্বাস ও তাঁর সন্তানদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকে এমনভাবে মাফ করেদিন, যারপর তাদের আর কোন অপরাধ বাকি না থাকে।হে আল্লাহ! তাঁকে তাঁর সন্তানদের অধিকার পূরণের তৌফিক দিন।
রাযীন এবাক্যটি অতিরিক্ত বলেছেন, খেলাফত এবং রাজত্ব তার সন্তানদের মধ্যে বহাল রাখ-মেশকাত ৫৮৯৮ নং হাদিস।
* প্রথম আহলে যিকর হলেন রাসূল (সা.)। তাঁর পর আহলে যিকর হলেন তাঁর নবুয়তের খলিফাগণ তথা খেলাফায়ে রাশেদা। তারপর খোলাফায়ে রাশেদার নিয়োগকৃত জুমুয়ার খতিবগণ। তারপর তিপ্পান্ন জন আব্বাসীয় খলিফা। আব্বাসীয় খলিফা আল মামুন, আল মাসুম ও আল ওয়াসিক আহলে যিকর নন। কারণ তাঁদের খেলাফতের শুদ্ধতা আহলে যিকর স্বীকার করে না। সুতরাং তিপ্পান্ন জন আব্বাসীয় খলিফার নিয়োগকৃত জুমুয়ার খতিবগণও আহলে যিকর। সেই সব আহলে যিকরের সিলসিলায় এখন যারা জুমুয়ার খতিব তারাও আহলে যিকর। এর বাইরে কেউ আহলে যিকর নয়।নিয়োগ দাতা সঠিক নয় এবং সিলসিলা সঠিক নয় এমন জুমুয়ার খতিব আহলে যিকর নয়। উমাইয়াদের নিয়োগকৃত জুমুয়ার খতিব যারা হযরত আলীর (রা.) প্রতি লানত প্রদান করতো তারা আহলে যিকর নয়। শিয়াদের অনুসারী জুমুয়ার খতিব যারা প্রথম তিন খলিফার প্রতি লানত প্রদান করতো তারা আহলে যিকর নয়। খারেজীদের নিয়োগকুত জুমুয়ার খতিব যারা হযরত আলীর (রা.) প্রতি লানত প্রদান করতো তারা আহলে যিকর নয়।
মেশকাত ২২৪ নং হাদিসের (ইলম অধ্যায়) অনুবাদ-
হযরত আওফ ইবনে মালেক আশজায়ী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, স্বয়ং আমির অথবা আমীরের পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত ব্যক্তি অথবা কোন অহংকারী ব্যতীত অপর কেউ ওয়াজ করতে পারে না।
* হাদিস সংকলিত হয়েছে পরে এবং হাদিস সংকলিত হওয়ার আগেই হাদিস আহলে যিকরের আমলে এসেছে। সুতরাং যে হাদিস আহলে যিকরের আমলে ছিলো সেটাই মূলত হাদিস। আর যা মুসলিমদের মাঝে বিভেদ তৈরী করতে তৈরী করা হয়েছে যা আহলে যিকরের আমলে ছিলো না তা’ মূলত হাদিস নয়।হাদিস সংকলনের সমগ্র যুগে আল্লাহ শুদ্ধ আমিরুল মুমিনিন খেলাফতের আসনে অধিষ্ঠিত রেখেছেন। সুতরাং তাফসির, হাদিস ও ফিকাহ সংকলকদের দায়িত্ব ছিলো তাদের তাফসির, হাদিস ও ফিকাহ সংকলন আমিরুল মুমিনিন কর্তৃক অনুমোদন করিয়ে নেওয়া। তারা সেটা না করে অহংকারী সাব্যস্ত হয়েছেন।সুতরাং আমিরুল মুমিনিন কর্তৃক অনুমোদন বিহীন কোন তাফসির, ফিকাহ ও হাদিস সংকলনকে সহিহ মানার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু হানাফী ফিকাহ আমিরুল মুমিনিন হারুনুর রশিদ অনুমোদন করায় এবং আহলে যিকরের আমলে তা’ স্থান লাভ করায় হানাফী ফিকাহ সহিহ নয় বলার কোন সুযোগ নেই। হানাফী ফিকাহ ফিকহে আকবর নয়, হানাফী ফিকাহ হলো আমিরুল মুমিনিন হারুনুর রশিদ কর্তৃক নির্দেশ প্রাপ্ত খেলাফতের প্রধান বিচার প্রতি ইমাম আবু ইসুফ (র.) কর্তৃক প্রচারিত ফিকাহ। যা আহলে যিকরের আমলে বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং হানাফী ফিকার সাথে গরমিল কোন হাদিস মূলত কোন হাদিস নয়।
সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৫ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৫। হযরত এমরান ইবনে হুছাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হলো আমার যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা। অতঃপর তার পরবর্তী যামানা।এমরান বলেন রাছুলুল্লাহ (সা.) তাঁর যামানার পর দু’ যামানার উল্লেখ করেছেন, না তিন যামানার উল্লেখ করেছেন ত’ আমার সঠিকভাবে মনে নেই।এরপর তোমাদের পর এমন কিছু লোকের আবির্ভাব যারা সাক্ষ্য দান করবে অথচ তাদের নিকট সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা বিশ্বাস ঘাতকতা করবে। সুতরাং তাদেরকে কখনও বিশ্বাস করা যাবে না। তারা খুবই মোটা সোটা ও হৃষ্টপুষ্ট দেহের অধিকারী হবে।
সহিহ আল বোখারী, ৩৩৮৬ নং হাদিসের (আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়) অনুবাদ-
৩৩৮৬। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লোকদের মধ্যে সর্বোত্তম সময হলো আমার সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। অতঃপর তৎপরবর্তীদের সময়। তারপর এমন একদল লোকের উদ্ভব ঘটবে যাদের কেউ শপথ করার পূর্বে সাক্ষ্য দিবে এবং সাক্ষ্য দিবার পূর্বে শপথ করবে। ইব্রহীম নখয়ী (র.) বলেন, আমাদের মুরুব্বঈরা আমাদেরকে সাক্ষ্য দিবার জন্য ও ওয়াদা করার জন্য প্রহার করতেন। তখন আমরা ছোট ছিলাম।
* হনাফী ফিকাহ ও আহলে যিকরের আমলের গরমিল কথাকে যারা হাদিস বলেছে তারা মূলত কোরআনের বিশ্বাসঘাতক। মহানবি (সা.) তাদের কথা বিশ্বাস করতে নিষেধ করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৩