সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬৫ ও ৬৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৫। হে নবি! মু’মিন দিগকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ কর। তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশতজনের উপর বিজয়ী হবে।তোমাদের মধ্যে একশত জন থাকলে এক হাজার কাফিরের উপর জয়ী হবে।কারণ তারা বোধশক্তিহীন সম্প্রদায়।
৬৬। আল্লাহ এখন তোমাদের ভার লাঘব করলেন।তিনিতো অবগত আছেন যে তোমাদের মধ্যে দূর্বলতা আছে।সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশত জন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশতজন উপর বিজয়ী হবে।তোমাদের মধ্যে এক হাজার থাকলে আল্লাহর অনুমতিক্রমে তারা দুই হাজারের উপর বিজয়ী হবে।আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
সহিহ বোখারী ৭ নং হাদিসের (কিতাবুল ঈমান) অনুবাদ-
৭। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচটি ভিত্তির উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত। ১। সাক্ষ দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল ২।সালাত কায়েম করা ৩।জাকাত দেওয়া ৪। হজ্জ ৫। রমজানের রোজা রাখা।
# হজরত আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার শেষ -উম্মতের মাঝে মাহদি প্রকাশ পাবে। আল্লাহ তাআলা তাদের উপর কল্যাণের বারিধারা বর্ষণ করবেন। ভূ-পৃষ্ঠ গচ্ছিত সকল খনিজ সম্পদ উন্মোচন করে দিবে। ধন-সম্পদের সুসম বন্টন নিশ্চিত করবে। গবাদিপশু বৃদ্ধি পাবে। মুসলমানদের হারানো মর্যাদা ফিরে আসবে। সাত বা আট বছর তার রাজত্ব হবে। (মুস্তাদরাকে হাকিম-৪/৫৫৭-৫৫৮)
সহিহ তিরমিযী, ২২১৫ নং হাদিসের (কলহ ও বিপর্যয় অধ্যায়) অনুবাদ-
২২১৫। হযরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, খোরাসানের দিক থেকে কালো পতাকাবাহীগণ বের হবে (মাহদীর সমর্থনে)। অবশেষে সেগুলো ইলিয়া (বায়তুল মাকদিস) এ স্থাপিত হবে এবং কোন কিছুই তা’প্রতিহত করতে পারবে না।
* ইমাম মাহদী (আ.) আসবেন সারাবিশ্বে ইসলাম কায়েমের জন্য। ইসলাম কায়েম হতে বিশ্বের ১০% লোকের মাঝে দীনের পাঁচ ভিত্তি কায়েম হতে হবে। এমন লোক তৈরী হলে তারা লড়াইয়ের ময়দানে ধৈর্যশীল হবে। তারা লড়াই ছেড়ে পালিয়ে আসবে না।বিশ্বের ১০% লোকের ইমাম মাহদীর (আ.) পক্ষে লড়াইয়ে ধৈর্যশীল জানার পর আল্লাহ ইসলামের বিজয়ে ইমাম মাহদীকে (আ.) পাঠাবেন। তার এক মূহুর্ত পূর্বেও আল্লাহ ইমাম মাহদীকে (আ.) পাঠাবেন না।বিশ্বের ১০% লোকের মাঝে দীনের পাঁচ ভিত্তি কায়েম করতে কি করতে হবে?
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি তোমাদের অন্তরে প্রীতি সঞ্চার করেছেন, ফলে তাঁর দয়ায় তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে।তোমরাতো অগ্নি কুন্ডের প্রান্তে ছিলে, আল্লাহ উহা হতে তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ স্পষ্টভাবে বিবৃতকরেন যাতে তোমরা সৎপথ পেতে পার।
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।
# হজরত উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মাহদি আমার বংশে ফাতেমার সন্তানদের মধ্যে হবে। (আবূ দাউদ-১১/৩৭৩)
* বিশ্বের ১০% লোকের মাঝে দীনের পাঁচ ভিত্তি কায়েম করতে তাদেরকে একটি জামায়াতে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। কোন বিষয়ে তাদের মধ্যে কোন মতভেদ থাকবে না। তারা সবাই একই নিয়মে ইবাদত করবে। সেই জামায়াতের ইমাম হবেন ফাতেমার (রা.) বংশের।বিশ্বের ১০% লোকের মাঝে দীনের পাঁচ ভিত্তি কায়েম হওয়ার পর হজ্জ্বের সময় সেই জামায়াতের ইমাম অথবা অন্য কোন ফাতেমার (রা.) বংশের লোককে আল্লাহ ইমাম মাহদী (আ.) হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিবেন। তারপর তাঁর জয়যাত্রা শুরু হবে।
ইমাম মাহদীর (আ.) আসার পরিবেশ তৈরী করার জন্য যে জামায়াত প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, সেই জামায়াতের লোকেদের মাঝে হত্যা, চুরি, জিনা, সুদ-ঘুষ, মতভেদ, গীবত, চোগলখুরী ইত্যাদি কবিরা গুণাহ থাকবে না। তাদের মাঝে হক আদায়সহ নামাজ কায়েম থাকবে। তারা সংগঠিকভাবে জাকাত আদায় ও বন্টন করবে। তারা হক আদায় সহ রোজা রাখবে। তারা তাদের আমিরের নেতৃত্বে প্রতি বছর হজ্জ্ব করতে যাবে। এমতাবস্থায় ইমাম মাহদীর (আ) আগমন ঘটলে তিনি তাঁদের নেতৃত্ব গ্রহণ করবেন। তখন সারা বিশ্বে ইমাম মাহদীর (আ.) সাপোটারদের সাথে অন্যদের সংঘাত শুরু হয়ে যাবে। মাহদী (আ.) নিজে বায়তুল মাকদাস গিয়ে সে এলাকা ইহুদী মুক্ত করবেন। তখন সারা বিশ্বে ইমা মাহদীর (আ.) বাহিনীর জয় হবে।
কেউ কেউ মনে করে মাহদী আসার ৯৬% আলামত সম্পন্ন হয়েছে।বিশ্বের ১০% লোকের মাঝে দীনের পাঁচ ভিত্তি কায়েম না হলে ১০০% আলামত সম্পন্ন হবে না। ইমাম মাহদী (আ.) আসার পরিবেশ তৈরীর কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। অথচ কিছু লোক এখনই ইমাম মাহদী(আ.) আসার সময় ক্ষণ গণনা শুরু করেছে। আমার হিসাব মতে আগামী এক হাজার বছরেও ইমাম মাহদী (আ.) নাও আসতে পারেন।
মুসলিমদের যারা আল্লাহর বিধানে রাষ্ট্র পরিচালনা করে না ইমাম মাহদী (আ.) আসার আগে তাদের সবাই অমুসলিমদের নিকট পরাজিত হবে। কারণ আল্লাহ অমুসলিমদের থেকে তাদেরকে বেশী ঘৃণা করেন। কারণ তারা আল্লাহ ও নবি (সা.) বিশ্বাসী হয়েও আল্লাহর বিধানকে উপেক্ষা করে।
সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬০। তোমরা তাদের মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে, এছাড়া অন্যদেরকে যাদের সম্পর্কে তোমরা জাননা, আল্লাহ জানেন।আল্লাহর পথে তোমরা যা ব্যয় করবে এর পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে এবং তোমাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।
* মাহদী (আ.) বাহিনী যখন যুদ্ধ করবেন তখনকার সেরা অস্ত্রই তাদের দখলে থাকবে। সেজন্যই অন্যরা তাদের নিকট অসহায় হয়ে পড়বে। সে অস্ত্র তাদের অন্যদের থেকে কেড়ে নেওয়া অস্ত্রও হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯