somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম ও বিজ্ঞান

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আল্লাহ নবি (সা.) ও পরকাল ইসলামের প্রধান আলচ্য বিষয় কিন্তু বিদ্যমান জীবন ও জগৎ বিজ্ঞানের আলচ্য বিষয়।আল্লাহ নবি (সা.) ও পরকাল বিষয়ে যার পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই ইসলাম তার নিকট গৃরুত্বপূর্ণ নয়।কিন্তু বিজ্ঞানের উপকার সবার জীবনে দৃশ্যমান বিধায় এটা সবার নিকট গুরুত্বপূর্ণ। তবে পরকাল বিষয়ে বিজ্ঞান তেমন কাজের বিষয় নয়। কারণ বিজ্ঞান এখনো পরকালের সঠিকতা আবিষ্কার করতে পারেনি।তবে বিজ্ঞানে থাকা বা না থাকা সঠিকতার জন্য জরুরী নয়।কারণ অনেক কিছুই বিজ্ঞানে না থাকলেও সঠিক ছিল বা আছে। যেমন পানির ভরতত্ত্ব আবিষ্কার হওয়ার আগেও এর কার্যকারিতা ছিল। আবার বিজ্ঞান এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি এমন অনেক কিছু আছে সেটা যে কি তা’ আবিষ্কারের পরে বুঝা যাবে। যেমন আবিষ্কারের আগে ভরতত্ত্বও বোধগম্য ছিলনা। বিজ্ঞান যা আবিষ্কার করতে পারেনি তা’ সঠিক নয় বলা বেকুবি। যেমন এক বিজ্ঞান ভক্ত বলছে কেয়ামত রূপ কথা। তো কেয়ামত বিষয়ের সঠিকতা নির্ণয়ে তার বিজ্ঞান অপারগ হওয়া কি কেয়ামতের দোষ? এরপর কোন এককালে যখন তার বিজ্ঞান কেয়ামতের সঠিকতা আবিষ্কার করবে তখন সে কি বলবে? তো তার বিজ্ঞান কোন কালে কি আবিষ্কার করবে তার জন্য আমরা কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ছাড়া বসে থাকব নাকি? কেউ যদি বলে কেয়ামতের সঠিকতা না জেনে বিশ্বাস করবেন কিভাবে? কিন্তু কেয়ামতের সঠিকতা জানতে বিজ্ঞানই লাগবে এটা এমন জরুরী নয়। কারণ বিজ্ঞান ছাড়াও বহু বিষয়ের সঠিকতা জানা যায়। যেমন আমার জমিতে আমি যে গাছ লাগিয়েছি সেটা আমার গাছ এটা জানতে বিজ্ঞান লাগেনা।

ইসলাম বিশেষ কারো জন্য নয় বরং ইসলাম সাধারণভাবে সবার জন্য।কাজেই ইসলামের সঠিকতা নির্ণয়ে সাধারণ জ্ঞান যথেষ্ট হওয়ার কথা। একজন নিরক্ষর সাধারণ মানুষের পক্ষে বিজ্ঞান বা বিশেষ জ্ঞান দিয়ে ইসলামের সঠিকতা নির্ণয় সম্ভব নয়। অথচ তার জন্য ইসলাম স্বীকার করা ও ইসলাম মান্য করা ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য।আল্লাহ বলেছেন,‘লা ইউ কাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসয়াহা-আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পন করেন না যা তার সাধ্যাতীত’। সূরাঃ২ বাকারা, আয়ত নং-২৮৬।সংগত কারণে ইসলামের সঠিকতা অকাট্যভাবে নির্ণয় করতে বিজ্ঞান বা বিশেষ জ্ঞানের প্রয়োজন না হওয়ার কথা। আর কেউ যদি বিজ্ঞান দিয়েও ইসলামের বিরোধীতা করে তবে সাধারণ জ্ঞান দিয়েই তাকে থামাতে পারার কথা।কেউ কেউ বিগ ব্যাংগ, জেনেটিক্স, স্ট্রিং খিওরী, কোয়ান্টাম মেথড ও বিবর্ত ইত্যাদি উপস্থাপন করে বলে সৃষ্টিকর্তার আর দরকার নেই। দেয়ার ইজ নো গড- সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছুই নাই। ধর্মসব মানুষের বানানো।তারা যে সব কাজের কথা বলল এসব যে সৃষ্টিকর্তার কাজ নয় সাধারণ জ্ঞানের এ প্রশ্নের জবাব তারা বিজ্ঞান দিয়ে কিভাবে প্রদান করবে? বিজ্ঞান অনেক সমস্যার সমাধান দিয়েছে কিন্তু সব সমস্যার সমাধান কি বিজ্ঞান দিয়েছে? আর বিজ্ঞান বিশেষ জ্ঞান হোক আর অশেষ জ্ঞান হোক এটা যেহেতু মানুষের জ্ঞান, যেহেতু মানুষ মাত্রই ভুল আছে, সেহেতু বিজ্ঞানেও ভুল আছে এটা অস্বীকারের উপায় নেই।সংগত কারণে অনেকে বিজ্ঞানকে যতটা গুরুত্ব প্রদান করছে বিজ্ঞান আসলে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ জ্ঞান বিজ্ঞান হতে গুরুত্বপূর্ণ।যেমন বাবু ও মাঝির গল্পে বাবুর বিজ্ঞানের জ্ঞান মাঝির সাঁতার জানার সাধারণ জ্ঞানের কাছে তুচ্ছ প্রমাণীত হয়েছে। বিজ্ঞানের জ্ঞান না থাকায় বাবু মাঝির জীবন বার আনা মিছে বলেছে। আর বাবুর সাঁতার জানার সাধারণ জ্ঞান না থাকায় মাঝি বাবুর জীবন ষোল আনা মিছে বলেছে।হাসরের দিন আল্লাহ যখন বিচারকের আসনে বসে বিজ্ঞানীর কাজের হিসেব নিবেন তখন বেচারা বিজ্ঞানী কোন বিজ্ঞানে এ কঠিন অবস্থা থেকে বেঁচে যাবে? আর বিজ্ঞানীকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে তখন কোন বিজ্ঞানে বেচারারা জহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে? সংগত কারণে বেহুদা বিজ্ঞানকে গুরুত্ব প্রদান করতে গিয়ে বিপদে পড়ার কোন যুক্তি নেই। যে বিজ্ঞানে উপকার হয় সে বিজ্ঞান মানা হবে আর যে বিজ্ঞানে ক্ষতি সে বিজ্ঞান অবশ্য পরিত্যাজ্য। এবার সেটা বিশেষ জ্ঞান হোক আর অশেষ জ্ঞান হোক ক্ষতিকর কোন জ্ঞানের কোন দরকার নেই। যে জ্ঞান আল্লাহর পথ ছেড়ে শয়তানের পথে চলতে বলবে সে জ্ঞান থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা বাঞ্চনীয়।

বিজ্ঞান হলো বিশেষ জ্ঞান।কেউ যদি ইসলামকে ভুল প্রমাণ করার জন্য বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী নিয়ে হাজির হয় এবং তার বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী যে ভুল সেটা যদি বিজ্ঞান দিয়ে বুঝালে সে ভাল বুঝে ঘটনা এমন হয় তবে সে ক্ষেত্রে ইসলামের স্বপক্ষে বিজ্ঞান উপস্থাপন করা যেতে পারে।তবে ইসলামের সাধারণ জ্ঞান এতটাই শক্তিশালী যে ইসলাম অস্বীকারকারীদের বিজ্ঞানও সে সাধারণ জ্ঞানের সাথে কুলাতে পারেনা। তবে এটা ঠিক যে ভুল বিজ্ঞান সাধারণ জ্ঞানের চেয়ে নিম্নমানের।ভুল বিজ্ঞান বলতে যেটা মূলত বিজ্ঞান নয় নাম দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞান এমন বিজ্ঞান সাধারণ জ্ঞান থেকে উঁচুমানের হতে পারেনা।কারণ ওটা মোটে বিজ্ঞানই নয় বরং ভুয়া কথা তবেতো ওটা জ্ঞানও নয় আর সাধারণ জ্ঞান তবু জ্ঞান কাজেই এমন ভুয়া বিজ্ঞান সাধারণ জ্ঞানের সামনে দাঁড়াতে পারে কেমন করে? কাজেই সত্যিকারের সাধারণ জ্ঞান ভুয়া বিজ্ঞান থেকে শক্তিশালী। সংগত কারণে সত্যিকারের সাধারণ জ্ঞান দিয়েই ভুয়া বিজ্ঞানকে পরাজিত করা যায়।সংগত কারণে ইসলামের সাধারণ জ্ঞানের সামনে দাঁড়ানোর যোগ্যতা ভুয়া বিজ্ঞানের নেই।

বিবর্তন হয় এটা কেউ প্রমাণ করেছে, তাই বলে বিবর্তন হয়েছে এটা কি প্রমাণ হলো? কেউ ভাত খায় বলে এটা কি প্রমাণ হলো যে কেউ ভাত খেয়েছে? যেখানে দেখাগেল যে ভাত প্লেটেই রয়ে গেছে পেটে ঢুকেনি।তবে প্লেটে ভাত ছিল এখন প্লেটে ভাত নেই এমন হলে বুঝা যায় ১। ভাত সে খেয়েছে, ২। অন্য কেউ ভাত খেয়েছে, ৩। ভাত সে ফেলে দিয়েছে, ৪। অন্য কেউ ভাত নিয়ে গেছে (সে দিয়েছে বা জোর করে নিয়েছে)।কাজেই বিবর্তন হয় এমন প্রমাণ দ্বারা বিবর্তনের মাধ্যমে সব হয়েছে এমন কথা প্রমাণ হয়না। আর এটাও প্রমাণ হয়না যে বিবর্তন সৃষ্টিকর্তার কাজ নয়। কতিপয় লোককে আল্লাহ বলেছেন, ‘কুনু কিরাদাতান খাসেইন-তোমরা অধম বানর হয়ে যাও’। এখানে মানুষ থেকে বিবর্তন হয়ে বানর হয়েছে এটা মূলত আল্লাহর কাজ ছিল।কাজেই বিবর্তন কোরআন স্বীকার করলেও এটা আল্লাহর কাজ নয় কোরআন এটা স্বীকার করেনা আর বিবর্তন বাদের মাধ্যমে সব হয়েছে এটাও কোরআন স্বীকার করেনা। একজন বলল কারা নাকি কোথায় কি বিবর্তন হতে দেখেছে।তো তাতে হয়েছে কি? কিছু একটা বিবর্তনের ফল এর মানে কি সব কিছু বিবর্তনের ফল? আটার গোল্লা থেকে রুটি হয় এটা আমরা দেখছি এটা মানুষের কাজ। এমন বিবর্তন এমনি এমনি হয় না। কাজেই বিবর্তনই যদি এমনি এমনি না হয় তবে এ বিবর্তন দিয়ে আল্লাহকে অস্বীকার কারা যায় কেমন করে? কাজেই বিবর্তন আবর্তন আর প্রর্তন যাই হোক তা’ কিন্তু মোটেও আল্লাহ নবি (সা.) ও পরকাল বিশ্বাসের অন্তরায় নয়। কাজেই বিবর্তন হয় হোক বা না হয় না হোক তাতে আল্লাহকে অস্বীকারের কোন সুযোগ নেই।

ইসলামকে সাধারণ জ্ঞানেই অকাট্যভাবে সঠিক প্রমাণ করা যায়। আর বিজ্ঞান দিয়ে ইসলামকে বেঠিক প্রমাণ করার কোন যোগ্যতা বিজ্ঞানের নেই। আর তেমন যোগ্যতা কোন কালে হবেও না। কাজেই বিজ্ঞানকে ইসলামের বিপরীতে দাঁড় করার চেষ্টা অহেতুক। আর ইসলামের কোন কিছুকে রূপকথা বলা বেকুবী। এমন বেকুবের কথা কোন মুসলমান মান্য করতে পারেনা। কারণ ইসলামের সব কিছু যথাযথভাবে সঠিক প্রমাণ করা যায়। কোন ব্যক্তি তেমনটা না পারা তার নিজের অপারগতা। কোন ব্যক্তির তেমন না পারা ইসলামের অপারগতা নয়। কাজেই ইসলাম বিরুদ্ধ কথা সঠিক হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

বিঃদ্রঃ ‘ইসলামের সঠিকতার অকাট্য প্রমাণ’ গ্রন্থের একটি অধ্যায় হিসেবে লেখাটি লেখা হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:৫৭
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×