ছবিব্লগ প্রতিযোগিতা ব্লগে প্রচুর প্রাণসঞ্চার করেছে। পুরোটা ব্লগে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ। যদিও এ প্রতিযোগিতায় আমার অংশগ্রহণের যোগ্যতা নেই, কিন্তু, প্রিয় পোস্টগুলোতে 'লাইক' দিয়ে ও 'কমেন্ট' করে সবার সাথে আমিও আনন্দের ভাগী হচ্ছি।
শাহ আজিজ ভাইয়ের একটা ট্রেন্ড আমার খুব পছন্দ হয়। তিনি চলমান ঘটনা বা খবরগুলো সবার আগে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেন, যেগুলো প্রধানত সিরিয়াস ধরনেরই হয়ে থাকে। এর মধ্যেই হঠাৎ হঠাৎ তিনি 'রম্য' নামে কিছু পোস্ট দিয়ে থাকেন, উহা পড়তে যেয়ে দেখি আমাদের বহুল-পঠিত ও পরিচিত কৈতুকই 'রম্য' নামে আমাদের সামনে হাজির হয়েছেন। আমি 'রম্য' নামে নয়, 'কৈতুক' নামেই আপনাদের বহুল পঠিত ও জানা দু-একটা কৈতুক এখানে ছেড়ে দিলাম। পাছে আপনারা এত সিরিয়াস জীবন যাপনের মধ্যে কৈতুকগুলো যাতে ভুলে না বসেন, সেজন্যই এগুলো মনে করিয়ে দেয়া আর কী।
কৈতুক আমার খুবই প্রিয় একটা পাঠ্যবিষয়। যেখানেই কৈতুক দেখি, মুহূর্তে সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ি। ব্লগার 'আমি তুমি আমরা'র কৈতুক সংকলন পোস্টগুলো আমার খুবই ফেভারিট, যেখানে তিনি এ ব্লগের প্রায় সবগুলো কৈতুকপোস্টই এক্ত্র করে রেখেছেন। আমার মনে হয় না, কৈতুকের এমন কোনো পোস্ট আছে যেটা আমি পড়ি নি। কেউ আবার তদন্ত করে বের করে আনিয়েন না- এই দেখেন, এটা আপনি পড়েন নাই। কোনো পোস্টে আমার কমেন্ট বা লাইক না থাকা মানেই যে ওটা আমি পড়ি নাই - আপনারা প্লিজ এই দৃষ্টিভঙ্গি পালটান।
কৈতুক নীচে থেকে শুরু।
--
বিয়েপাগল ছাত্র
স্যার : তুমি বড় হয়ে কী করবে?
ছাত্র : বিয়ে
স্যার : আমি বুঝাতে চাচ্ছি বড় হয়ে তুমি কী হবে?
ছাত্র : জামাই
স্যার : আরে আমি বলতে চাচ্ছি তুমি বড় হয়ে কী পেতে চাও?
ছাত্র : বউ
স্যার : গাধা, তুমি বড় হয়ে মা বাবার জন্য কী করবে?
ছাত্র : বউ নিয়ে আসবো
স্যার : গর্দভ, তোমার বাবা মা তোমার কাছে কী চায়?
ছাত্র : নাতি-নাতনি
স্যার : ইয়া খোদা…তোমার জীবনের লক্ষ্য কী?
ছাত্র : বিয়ে
স্যার অজ্ঞান…
অভিনব ও বিস্ময়কর অংকবিদ্যা
এক ছা-পোষা স্বামী আর্থিক সমস্যার কারণে স্ত্রীর কাছ থেকে দুই দফায় ২৫০ টাকা করে ধার নিলেন। একদিন স্বামীর মানিব্যাগে টাকা দেখে স্ত্রী টাকা ফেরত দিতে বললেন। স্বামী জিজ্ঞাসা করলেন, কত টাকা ফেরত পাও। স্ত্রী বললেন, দাঁড়াও, অংক করে বলি। স্ত্রী নীচের নিয়মে অংক করিলেন :
২ ৫ ০
২ ৫ ০
---------
৪ ১০ ০
স্ত্রী যোগ করে বললেন, ৪১০০ টাকা। স্বামী অবাক হয়ে সেদিন থেকে খুঁজতে লাগলেন সেই স্কুল, যে-স্কুলে তার স্ত্রী অংক শিখেছেন। যাহোক, স্বামী ৪০০ টাকা বের করে দিয়ে বললেন, এখন আর কত পাও হিসেব করো তো? স্ত্রী হিসেব করিলেন তার শেখা অংকের নিয়মে :
৪ ১ ০ ০
৪ ০ ০
----------
১ ০ ০
এবং অংক কষে স্ত্রী বললেন, ১০০ টাকা। এরপর স্বামী বাকি ১০০ টাকা শোধ করে দিলেন। তারপর তারা সুখে-শান্তিতে বাস করতে থাকলেন, শুধু মহান অংক মারা গেলেন।
৩
মেয়ে দেরি করে বাড়ি ফিরলো।
বাবা জিজ্ঞাসা করলো, ‘কোথায় ছিলে?’
মেয়ে বললো -বন্ধুর বাসায়।
বাবা মেয়ের সামনেই তার দশজন বন্ধুকে ফোন দিল।
> ৪ জন বললো - ও তো এখানেই ছিল!
> ২ জন বললো - ওহ আংকেল.. ও তো এই মাত্র বের হয়ে গেল!
> ৩ জন বললো - ও তো আমার বাসায় পড়ছে। ওকে কি ফোনটা দিব?
> একজন তো পুরাই উড়াধূরা। সে বললো, ‘হ্যাঁ বাবা, বলো!’
৪
এক লোক একটা অভিজাত রেস্টুরেন্টে ঢুকে দেখল তিনটা দরজাঃ
১ম দরজায় লিখা: চাইনিজ খাবার
২য় দরজায় লিখা: বাঙালি খাবার
৩য় দরজায় লিখা: ইংরেজ খাবার
লোকটি তার পছন্দ অনুযায়ী চাইনিজ খাবারের দরজায় ঢুকলে সেখানে আরো দুটি দরজা দেখতে পেলোঃ
১ম দরজায় লিখা: বাড়ি নিয়া খাইবেন
২য় দরজায় লিখা: হোটেলে খাইবেন
লোকটি হোটেলে খেতে চেয়েছিল, তাই ‘হোটেলে খাইবেন’ লেখা দরজায় ঢুকলে সেখানে আরো দুটি দরজা দেখতে পেলোঃ
১ম দরজায় লেখা: এসি
২য় দরজায় লেখা: নন এসি
লোকটি এসি রুমে খেতে চেয়েছিল, তাই সে এসি লেখা দরজাটায় ঢুকলে সেখানে আরো দুটি দরজা দেখতে পেলোঃ
১ম দরজায় লিখা: ক্যাশ খাইবেন
২য় দরজায় লিখা: বাকি খাইবেন
লোকটি ভাবলো, বাকি খেলেই ভালো হয়; তাই সে ‘বাকি খাবেন’ দরজাটা খুলে বেরোতেই সে নিজকে রাস্তার মধ্যে পেলো।
অ্যানিম্যালিটি
বনের রাজা সিংহ তার বাচ্চাকাচ্চা নিয়া রোদ পোহাইতেছিল। এমন সময় বান্দর আইসা তার লেজ ধইরা দুইটা ঝাঁকি দিল। সিংহ যত না অবাক তার চেয়ে বিরক্ত হইল বেশি। বান্দর তারে কয়েকটা ভেংচি দিয়া হাসতে হাসতে চইলা গেল। সিংহের পোলা বাপেরে কইলো -এত্তবড়ো বেয়াদবি, কিছু কইলা না? সিংহ কইলো- ওয়েট অ্যান্ড সি।
কয়েকদিন পর বান্দর সামনে পড়লো। এক থাপ্পরে তারে শহীদ কইরা দিল সিংহ। পোলা অবাক হইয়া জিগাইলো- ও মোর আব্বা, সেদিন হালার বান্দরে এতো আকাম-কুকাম করলো, কিছু কইলা না। আজকে কিছু করে নাই, অথচ এক্কেবারে যম্মের ঘরে পাডাইয়া দিলা? সিংহ গম্ভীর কণ্ঠে কহিল, দিস ইজ পলিটিক্স, মাই সান। সেদিনের পর বান্দর ভালুকরে পাছায় লাথি মারছে, হাতির শুঁড় ধইরা দুলছে, গণ্ডারের পিডে চইড়া নাচছে, হায়েনারে কাতুকুতু দিছে, জিরাফরে থাপ্পড় দিছে। সবাইরে বলছে রাজারেই মানি না, তুই কেডা! সেদিন ওরে মারলে সবাই কইতো আমি ক্ষমতা দেখাইতেছি, স্বৈরাচারী খুনি আমি। আজকে একটু পর দেখবি- সবাই আইসা কইবো- থ্যাংক ইউ রাজা সাহেব। গেট জব ফর দ্য অ্যানিম্যাল কাইন্ড।
মোরাল: বড়ো বেয়াদবরে মাঝে মাঝে লাই দিয়া মাথায় তুলতে হয়, যাতে আছাড় দিলে ব্যথাটা একটু বেশিই পায়।
জানা কৈতুকের প্রতিক্রিয়া
এ কৈতুকটা আপনারা সবাই জানেন। কিন্তু এটা পড়ার পর অনেকেই হয়ত কেঁদে ফেলবেন। কেন কাঁদবেন তার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা আমার জানা নাই। কৈতুকটা নীচে পড়ুন।
একবার এক রাজা তাঁর গাধাকে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করালেন। রাজার গাধা প্রতিযোগিতায় জিতে গেল।
পরেরদিন সংবাদপত্রের নিউজ হেডলাইন : রাজগাধাটা দৌড়ে জিতেছে।
রাজা পত্রিকার পাতায় গাধার খবর দেখে খুশি হলেন। গাধাটা সেলিব্রেটি হইয়া গেল মনে করে তিনি রানিকে গাধাটা উপহার দিয়ে দিলেন। রানি দিনরাইত ফেইসবুকে পইড়া থাকে, নতুন গাধার সাথে ছবি তুইলা ফেইসবুকে দিলে লাখখানেক লাইক/শেয়ার তো পাইবেনই, রাজা ভাবলেন।
তো, পরেরদিন সংবাদপত্রের নিউজ হেডলাইন : শহরের সবচাইতে বড়ো গাধাটা এখন রানির দখলে।
রাজা হেডলাইন দেখে মূর্ছা গেলেন। কারণ, সাংবাদিকরা যে রাজাকেই গাধা হিসাবে কটাক্ষ করেছে, এটা গর্দভ রাজার বোঝার আর বাকি রইল না।
তবে, রানিও এতে কম ব্যথিত হলেন না। তার জামাই যে একটা গাধা, এটা তার পক্ষে সহ্য করা কষ্টকর ছিল। মনের দুঃখে বনে না যাইয়া রানি তার গাধাটাকে এক গরিব মহিলাকে বিনা মূল্যে দান করে দিলেন।
সংবাদপত্রের নিউজ হেডলাইন : রানির গাধাটা এবার এক দরিদ্র নারীর দখলে।
এ হেডিং দেখে রানি মূর্ছা গেলেন। রানি ভাবছেন, প্রজারা ভাবছে- রাজা এখন আর রানির আয়ত্তে নাই। সে এক দরিদ্র নারীর প্রেমে মশগুল। তাই, রানি সাথে সাথে সামুব্লগের অ্যাডমিনের কাছে অভিযোগ করলেন। সামু অ্যাডমিন সবাইরে নিয়া জুম মিটিং করলেন। অ্যাডমিনের পরামর্শে রাজা পরেরদিন রানিকে আদেশ দিলেন গাধাটাকে দরিদ্র নারীর কাছ থেকে কিনে নিয়ে জঙ্গলে ছেড়ে দিতে।
সংবাদপত্রের নিউজ হেডলাইন : রানির গাধা আজ থেকে স্বাধীন এবং মুক্ত।
রাজা এই নিউজ দেখে আমাদের আলুক্ষেত থেকে একডজন পটল তুললেন।
---
এবার বলুন, যারা অরিজিন্যাল কৈতুকটা জানেন, তারা প্রতিটা নিউজ হেডলাইন পড়েই বলে ওঠেন নি- ওহ নো, দিস ইজ এ ফেইক নিউজ!!!
আচ্ছা, এটা কিন্তু সোনাবীজের ভার্সন, কোথাও শেয়ার করলে তার গুরুর নামটা উল্লেখ না করলে কপিরাইট মামলায় ধরা খাইবেন কিন্তু
এই যে জুতা বগলে
এটা সেই আকালের গল্প, যখন বাজারে পিঁয়াজের দর বাইড়া আসমানে উঠে গেছিল, সেই দুক্ষে মানুষ ভাত খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল। পিঁয়াজের সেই আকালের দিনে একদিন ধলামিয়া বাজারে পিঁয়াজের দর ৫ টাকা সের দেখে পিঁয়াজ না কিনে ভ্যাগা ভ্যাগা হইয়া বাড়ি ফিরে এলো। পিঁয়াজের দুঃখে কান্তে কান্তে তার দুই গাল বাইয়া চোখের পানিতে বুক ভাইষ্যা গেলো। সে সারাদিন কিছু খাইলোই না। পিঁয়াজই নাই তরকারিতে, এই হাদের তরকারি খাইয়া কি বাঁইচা থাকোন যায়? সন্ধ্যার সময়ও কিছু খাইল না। তার বদলে হাঁটতে হাঁটতে গেল প্রাণের বন্ধু চান্দামিয়ার বাইত্তে। চান্দামিয়া তারে দেখে খুব খুশি হইল। বললো, আয় দেখি, বয়, পিঁয়াজের সুখদুক্ষের দুই-চাইরডা প্যাঁচাল পাড়ি। ধলামিয়া বসতে বসতে চান্দা মিয়া বললো, বাত্তিডা তাইলে নিভাইয়া দেই, গল্প করতে গেলে তো আর বাত্তি লাগবো না। এই বলে সে কুপি বাতিটা ফুঁ দিয়া নিভাইয়া দিল।
হেরপর দুইজন পিঁয়াজ নিয়া কত্ত গল্প করলো! ছোডোবেলায় তাগো ক্ষেতে প্রচুর পিঁয়াজ হইত। পিঁয়াজের মরসুমে তারা পেট ভইরা পিঁয়াজ খাইত। ক্ষেত থেকে উঠাইয়া কাঁচা পিঁয়াজ খাইত, আবার বাড়িতে সিদ্ধ কইরাও পিঁয়াজ খাইত। পিঁয়াজ খাইয়া নেশায় টাল হইয়া দুপুরে ঘুম দিত। রসুন, কাঁচামরিচ আর ভাতের গুঁড়া দিয়া পিঁয়াজের ভর্তা বানাইত। সেই ভর্তা খাইয়া সাধ মিটতো না। আহ্হারে, কোথায় গেল সেই মনমাতানো পিঁয়াজের দিন! গল্প করতে করতে তারা নস্টালজিক হইয়া যায়।
গল্পগুজব শেষ হইলে চান্দামিয়া তার স্ত্রীকে বললো, গিন্নি, ম্যাচটা দেও, বাত্তিডা জ্বালাই।
ধলামিয়া একটু ধড়ফড়াইয়া উঠে বললো, চান্দু বাই, একটু সবুর করো, লুঙ্গিটা পইরা লই। আন্ধার দেইক্যা লুঙ্গি খুইল্যা রাখছিলাম। আন্ধারে লুঙ্গি পইরা খামোখা ঐডার আয়ু কমামু ক্যা?
এটাও কিন্তু প্রচলিত কৈতুকের স্বরচিত ভার্সন এটাও শেয়ার করার সময় সোনাবীজের গুরুর নাম উল্লেখ করিয়েন
০৬ ডিসেম্বর ২০১৯
অপি আক্তার
জীবনে তার মতো ভাগ্যবান আর কেউ নাই, যারা ব্লগার অপি আক্তারের পোস্টে কমেন্ট করতে পেরেছেন।
এদের চাইতেও ভাগ্যবান ব্যক্তি হলেন তারা, যারা অপি আক্তারের পোস্টে কমেন্টের রিপ্লাই পেয়েছেন।
কিন্তু, তারাই কেবল বলতে পারেন, তাদের মানব-জন্ম সার্থক, যাদের পোস্টে স্বয়ং অপি আক্তার কমেন্ট করেছেন।
--
'অপি আক্তার' নামে একটা গল্প আসতেছে। পড়ার জন্য ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকুন
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২১ রাত ৮:১৯